গ্রাম্য বধুয়া-১
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ০১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০১:৫০:১৫ দুপুর
আয়েশা বিবি মনে মনে আল্লাহকে ডাকে আর কাজের ফাঁকে ফাঁকে।বড়ছেলে এত সন্দর করে মরণকে তুলে ধরেছে কাল।কত বোজে পোলাপাইনরা।চোখ মুদলেই সাদা কাফনে ঢাকা একটা মরাকে উঠানের এক কোণায় নিশ্চুপ থাকতে দেখেন তিনি।কার বা কেডা যে পরে রয়েছে হয়ত তারই হবে।বড় ছেলে নামাজ থেকে এসেই পিড়াটা লয়ে চুলার পিঠে বসে হাত শেখবে আর দুনিয়ার কত যে কথা তার মায়ের সাথে।মাঝে মাঝে আয়েশা বিবি অবাক হয় পোলাটারে দেখে।বাপের সাথে তার মত, ভাইবোনদের সাথেও কেমন করি যেন মন বুজি কথা বলে।কেউ যাতে কষ্ট না পায় সে ব্যাপারে এত বেশি তার সংসারের সকলের ভাবে।খুব আনন্দ লাগে।এটা যে বড় পোলাটায় সাজাতে পারছে তা আয়েশা বিবি খুব খেয়াল করে দেখেছে।
ও মা ভাপা পিঠা কবে বানাবেন তোরা বলেন ত।চমকে বাস্তবে ফিরে আসে আয়েশা বিবি।
বাপরে আটার চাউল কিনে,ঠেকিত পাদ দিয়ে,শুকাইতে হয়বে, তারপর বাপ।চা মুড়ি তইরি হইছে।
সবার চা সাজিয়ে বড় পোলাটা পরিবারের আসরে চলে যায়।যাবার আগে কয়েকবার মাকে তারা দেয়।পড়ে কাম করেন আগে আসেন ত।ঝাল ঝাল মুড়ি মাখা আর ধোয়া উড়ানো চা।সকাল সকাল সকলের প্রিয় নাস্তা।
পকপকি বেগম ওরফে সাবিলা(অর্থ ঝর্ণা) কতখন ধরে খুব অস্থির।তার সবকথা খুলে বলবে কখন তা নিয়ে অধৈর্য হয়ে আছে সে।হঠাত্ সুযোগ পেয়ে যায় সাবিলা।এবার শুরু করে দেয় তার রঙ্গ গল্প।পুরো পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্বাধীনচেতা এই বুড়িটা।সবাই ভাল বাসে বলেই হয়ত একদম সহজে মনের সব প্রশ্ন অভিজ্ঞতা বলে ফেলে সবার কাছে।অবশেষে সুযোগ মেলে,বড়দের কথার সময় খুব মনোযোগ দিয়ে কথা গেলে সাবিলা।বাবা আর ভাইয়া কথা শুনতে খুব ভালবাসে।ঝর ঝর করে কথার ঝর্ণা ঝরতে শুরু করে,
মা কালকে কলেজে একটা মজার ঘটনা ঘটছে শোন।কলেজ থেকে ক্লাস করে বের হইছি।ঠিক তখন।কি হল?একটা খুব চমত্কার রহস্যময়ী আপু আমার পাশে এসে মিষ্টি কন্ঠে সালাম দিল।আমি
অবাক হয়ে তাকিয়ে সালামের উত্তর দিলাম।
এরপর কেমন আছি ?
তোমরা কেমন আছ ?
পড়াশুনা কেমন হচ্ছে ?
কি পছন্দ? ক্যালাসের বাইরে কোন বই পড়ি কিনা কত কিছু যে জিজ্ঞাস করল।
আমি সন্দেহ নিয়ে বড়বড় চোখ তুলে তার দিকে তাকিয়েই উত্তর দিলাম।কি আর দেখব দুটি জ্বল জ্বল চোখ তাকিয়ে আছে শুধু।
বললাম আপনি আমাকে কোন রাজনীতিতে জড়াতে চাচ্ছেন নাকি। আমি কিন্তু অনেক কিছু বুঝি।
আমি আমার পরিবারের অনুমতি ছাড়া একটা কথাও আর বলব না এই বলে দিলাম।
আপুটা বলে তাই নাকি অনেক বোঝেন।
আপুটা আমাকে অবাক করে দিয়ে বললঃতুমি পড় ফাস্ট ইয়ারে আমি পড়ি সেকেন্ড ইয়ারে ভোটারি ত হয়নি ।কেন তোমাকে রাজনীতিতে ডাকব।
তাহলে এত প্রশ্ন করেন কেন?আর একটা কথাও আমি অনুমতি ছাড়া বলব না।
ওনি হেসে বললেন ধর একটা সুদর্শন ছেলেকে দেখে তোমার খুব পছন্দ হল হঠাত্।
আমি কি যে লজ্জা পেলাম এ কথা শুনে ওনার দিকে তাকতেই পারছিলাম না।
ওনি বলে উঠলেন হতেই পারে বয়ঃসন্ধিকাল চলছে এ বয়সে এমনটা কি হতে পারে না।
সাবিলার বড়ভাই একথা শুনে সাথে সাথে মাথায় একটা বাড়ি মারল বোনের তারপর বললঃ
বল,বল, এমন যদি কাউরে ভাল লাগে তোর আমরা বিয়ে দিয়ে দিমুনে বোন। তাও ফ্রেম করিস না।
ভাইয়া তোরে কিন্তু অনেক সন্মান করি।আমার সাথে বাতলামি করবি না।যখন একটা বড় রোগ হবে আর ঠুস করে মরে যামু তখন ঠিক বুজবি হু।
ভাইবোনের খুনশুটি দেখে হেসে ফেললেন আয়েশা বিবি।মাইয়ারে আবার জিগালেন তারপর কি বলল মেয়েটা।
সাবিলা আবার শুরু করলঃআমি ধীরে বললাম এমন কেন হবে।এমনটা কি কেউ করে?
আপুটা হেসে বললেনঃএমনটার বর্তমান সমাজে সবাই করে।
এমন তখনই হবে না যখন ঐ নফসে দমন করার প্রকৃত কৌশলটা তোমার জানা থাকবে সঠিকভাবে।
তুমি যদি নাই যান কিভাবে তুমি তোমাকে এ থেকে বিরত রাখবে তখন তুমি কিভাবে নিজেকে কন্ট্রোল করবে।যেহেতু তুমি তোমার নফসের চাহিদার ব্যাপারে পিতা মাতার অনুমতি না নিয়েই বিপদগামী হচ্ছ।আমরা ত হতে পারি তাই না।সেক্ষেত্রে কেন তুমি নিজের নফসকে দমন করার কৌশল শিখবা কি শিখবা না তা পিতা মাতার অনুমতির অপেক্ষায় ঝুলিয়ে রাখছ।
এরপর হঠাত্ আমার উত্তর না শুনেই আপুটা হাওয়ায় মিশে গেল।
বল ত মা কেমন খ্রাপ লাগে।
কি করব বলত?আপুর সাথে যাব।সাবিলা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখল অকূল দরিয়ার মাঝে ফেলে দিয়ে আস্তে করে সরে পরেছে তার পরিবারের সদস্যরা।কেউ বাড়তি উপদেশ দিল না সাবিলার উপর ছেড়ে দিয়ে গেল।একটু রাগ অভিমানের মাঝেও তার প্রশান্তি লাগল।হ্যা সাবিলা বড় হয়েছে ও ওর সিদ্ধান্ত অনায়াশে নিতে পারে।
সত্যি ঐ আপুটা বেশ বলেছে।খুব তাড়াতাড়ি ঐ আপুটার সাথে দেখা করতে হবে।তার মা কেন এত বুঝতে পারে ওদের।
(এমন ঘটনা আমি কার কাছে শুনিনি বানিয়ে লেখছি।দূর্বল গ্রামের ভাষার ব্যবহার।কারণ গ্রামের সঠিকভাষা মনে নাই।)
(নতুন মস)
(চলবে)
ইনশাআল্লাহ
বিষয়: বিবিধ
১৪২৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন