গ্রাম্য বধুয়া

লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ৩০ নভেম্বর, ২০১৩, ০১:৪৩:৪৬ দুপুর

ফজরের আজানের পূর্বেই মোছাঃআয়েশা খাতুন জান্নাত বিবিকে মাথার চুল আটসাট করেই চুলোর পিঠে বসে পড়তে হয়।সকালে সূর্য ওঠার আগেই রান্না শেষ করতে হবে।সবাই বেড়িয়ে পড়বে যে কাজে।

এক বস্তা শুকনা পাতা নিয়ে আস্তে আস্তে একরাশ ধোয়া উড়িয়ে চুলা ধরানো খুব একটা সহজ কাজ নয় তাও আবার শীতকালে।শীতকালে পাতাগুলো কেমন যেন স্যাতস্যাতে ভেজা ভেজা হয়।কি যে কষ্ট?কালো ধোয়ায় যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম টপ টপ করে পানি পড়ে চোখ দিয়ে কেবা দেখে এ সমাজে চোখের জল।গতকালও শালবাগান থেকে অনেক অনুরোধ করে এক বস্তা শুধু পাতা যোগাড় করে আনতে পেড়েছেন আয়েশা বিবি।ঝগড়াঝাটি তারে দিয়ে মোটের হয় না কিন্তু গ্রামে ঝগড়া ছাড়া চুলার আগুনও ধরতে চায় না তা সে বুঝে।সারাজীবন শহরে থেকে হঠাত্‍ গ্রামের পরিবেশ কেন যেন বেশ বেখাপ্পা লাগে,

খাপ খেয়ে থাকা খুব কষ্ট হয়ে দাড়ায় আয়েশার জন্য।তবুও সাজিয়ে নিয়েছে ও ওকে

তার নিত্য নতুন কর্মে, বন্ধন,ভালবাসার সৌরভে এক খন্ড জমিতে।

সারা দিন পর সবাই যখন ঘরে ফেরে তখন তারা সকলে নিজেদের পরিবারের মাঝে আসর সাজিয়ে মন খুলে আলোচনায় মেতে ওঠে।

আরেকটা কাজ হচ্ছে তার গ্রামের এক ঝাঁক মহিলারা এক আসরে পানের পিক ফেলতে ফেলতে ছটলা পাকা ফাতুয়া বিষয়ে গল্পকরে চুপচাপ আসরের কথা শুনতে খুব ভাল লাগে তার।অনেক জ্ঞানী মনে হয় পরিবারের সদস্য আর গ্রামের সরল সহজ মহিলাগুলোকে।

শীতের প্রকটতা বেড়ে গিয়েছে উত্তরাঞ্চলের ছোট্টগ্রাম মরিচবাড়িতে।এখন এত সকালে কম্পনরত হাত পা নিয়ে চুলা ধরাতে ব্যস্ত আয়েশা।এরপর চায়ের পানি চড়াতে চড়াতে আজানের সুমধুর ধ্বনি কানে চলে আসে।কলের পাড়ে চলে যায়।শহরে কোনদিন নলকুপ দেখেনি তিনি তবুও শিখে ফেলেছে ধীরে ধীরে হয়ত শিখতে হয়।ওযু করে নামাযে দাড়ানোর আগে সবাইকে ডেকে উঠানোই প্রথম কাজ।ছেলেরা সব চলে যায় মসজিদে আর মেয়েরা ঘরে নামাযে দাড়িয়ে পড়ে।

একরাশ প্রশান্তি একে যায় আয়েশার ছোট্ট কুড়ে ঘরের মনের জানালাতে।মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে করতে দিনের কাজে লেগে পড়ে আয়েশা।লেগে পড়ে গ্রামবাংলা।

তখনও কানে ভেসে আসে চারপাশ থেকে কোরআনের সুমধুর ধ্বনি।

চলবে(গরুর গাড়ির মত)

ইনশাআল্লাহ

(নতুন মস)

বিষয়: বিবিধ

১২৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File