আজকের রাজধানী পর্বঃ১ (থমথমে যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব)
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ২৪ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:০৪:৫৯ দুপুর
রাজধানীকে আজ কেন যেন যুদ্ধক্ষেত্র মনে হচ্ছিল..
যদিও আমার ঢাকার রাস্তায় নামলেই মনে হয় আমি যুদ্ধে নেমেছি।আজ একটু বেশিই লাগল।আজকে বেশ থমথমে পরিবেশ।আম্মুকে ঔষধ খাইয়ে লবণহীনা এক পাতিল খিচুরী আর ডিম ভাজি রেধেই
দে ছুট।রান্না যতই খারাপ হোক না কেন এক হাল হেসে সবাই মুখে কসটেপ লাগিয়ে খেয়ে ওঠে ।আম্মু অসুস্থ আর আমাকে গালি দিয়ে লাভ নেই আমার চামড়াতে লাগবে না।আবার রান্নার প্রশংসা করেও লাভ নাই সেটাও আমার কানের ফুটো দিয়ে ডুকবে না।
সকালে যখন বাসা থেকে বের হলাম তখন রোদ উঠে গেছে।হাটতে হাটতে বাস স্টপের সামনে এসে রোদ ছায়ায় মাঝে দাড়িয়ে রইলাম পৌনে একঘন্টা। আলহামদুলিল্লাহ তারপর বাসে উঠলাম।নিত্য দিনের যুদ্ধ হচ্ছে লোকাল বাসে ওঠা।বাসে উঠার পূর্বে ও বাসায় আসার আগ পর্যন্ত কয়েকটি দৃশ্যের আচমকা সাক্ষী হলাম।
দৃশ্য ১:
হাটতে হাটতে হঠাত্ একটি অ্যক্সিডেন্ট।ছুটে গেল কাঁধে ব্যাগ ওয়ালা এক তরুণ যুবক
বয়স্ক ভদ্রলোকটিকে দ্রুত রাস্তা থেকে তুলে আইল্যান্ডের উপর বসানো হল।সি এন জি চালক পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও দ্রুত বৃদ্ধের কাছে ছুটে এলেন রাস্তার মাঝে সি এন জি থামিয়ে।কিছু কৌতুহলী লোক আর চোখ ছুটে গেল সেই স্থানে।পৌনে একঘন্টা দাড়িয়ে ছিলাম।দুর থেকে দেখলাম কিছু সময় জুড়ে পায়ে পানি দিয়ে প্রাথমিক চিকিত্সা শেষ করার পর সবাই চলে গেল।আমার বাস এল আমি চলে আসলাম।কিন্তু আইল্যান্ডের দুই রাস্তার মাঝে অসহায় বয়স্ক ভদ্রলোক পড়ে রইল তখনও।
দৃশ্য ২:
গলি থেকে রাস্তা বের হয়ে ভার্সিটিতে প্রবেশের আগ পযর্ন্ত রাস্তার দুইধারে দু কদম ফাঁক ফাঁক অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে বুলেট ফ্রুভ পোশাক পরিহিত অজস্র পুলিশ, র্যাব আর বর্ডার গার্ড দাড়িয়ে আছে।সবার হাতে লাঠি ছিল।২০০৮ সালে ২৮শে অক্টোবর যেন।একটা ভিডিও ক্লিপ ছিল বাসায় বহুদিন আমি পুরো ভিডিওটা দেখিনি।শুধু টেলিভিশনে দৃশ্য কয়েকটি দেখেছি।আবার আসছে২০১৩ সালে ২৮শে অক্টোবর।পুলিশের টহল দেখে মনে মনে আমি ভাবছি!ইনশা আল্লাহ এবার ২০০৮ হবে না আর যেন ২০১৩ আসে।এখনকার যোদ্ধারাও অনেক সাহসী।
এবার সেই পরিবেশের অনেকে সাক্ষী হবে।
দৃশ্য ৩:
দীর্ঘ ছুটির পর রাস্তায় নেমেছি।ত চারিদিকে মানুষের চোখের দিকে গভীরভাবে তাকালে লক্ষ করলাম ড্যাম কেয়ার ভাবের গভীরে ভীতি।অনেকটা
ওয়েস্টার্ণ বই গুলোর পরিবেশের মত।আসে পাশে সবাই খুনি। পড়ছিলাম সেদিন 'সন্ধান' নামে একটা বই,
ওখানে নারীরাও বন্দুক আর ঘোড়া চালতে পারে মনে হচ্ছিল আমিও যদি শিখতাম ভাল হত।এত যানজটকে পাশ কেটে ঘোড়া নিয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌছাতাম।
পরিচিত দু একজন আপুকে আল্লাহর রহমতে রাস্তায় খুঁজে পাই।আজ একজন পেলাম তার সাথে যেতে যেতে বলছিলামঃ চারিদিকে কেমন যুদ্ধ যুদ্ধ থমথমে শান্ত ভাব।
কেমিস্টিতে পড়ুয়া আপুটি বললঃহ্যা কালকে ত সমাবেশ বাতিল করেনি।
আমি বললামঃনিজেকে যোদ্ধা যোদ্ধা মনে হচ্ছে।
বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে রসিকতা হাসি হাসতে হাসতে গন্তব্যে পৌচ্ছালাম আমরা।
দৃশ্য ৪:
আলহামদুলিল্লাহ আসে পাশে কিছু মানুষের সহযোগিতা আসলে ভোলার মত না।ভার্সিটিতে কাজ শেষ করে ঘরে ফেরার পথে আমার ক্লাসমেট আপুটির একটা কথা বেশ ভাল লাগল
'তুমি ত হেল্পারকে ঐ নোটটা দিলা এখন আমি ত আগেই আজকে নেমে যাব।তুমি ত টাকা চেয়ে নিতে ভুলেই যাবা।'
বেশ অবাক হয়েছি এই সত্য কথাটি শুনে।ওনার আমার প্রতি টেক কেয়ারটি বেশ ভাল লাগল।ইনশা আল্লাহ আপু মনে করে নিব।দরদ মাখা কথা শুনলেই দাদার কথা মনে পড়ে।
দৃশ্য ৫:
এক ভদ্র(-)মধ্য বয়স্ক লোক বাসে ওঠে মেয়েদের সিটে এসে বসে পড়লেন।খুব বিরক্তকর যাত্রা পার করল আমার পাশে বসা অপরিচিত আপুটি।লোকটাকে ওঠতে বললাম কিন্তু উঠলেন না বরং ওল্টো গলার জোর খাটালেন।
আসলে তখন লোকটাকে খুব জোরে সরে ধমক দিতে খুব ইচ্ছে করছিল আর যদি বাস থেকে নামিয়ে দিতে পারতাম আর ভাল হত।
কিন্তু মুখের শব্দগুলোর ও সন্মান আছে সুতরাং চুপ করে থাকতে বাধ্য হলাম।
দৃশ্য ৫:
ফুলের মত কিছু ফুটন্ত শিশু কেউ বাবার আঙ্গুল ধরে কেউ বা মামণীর কেউ বা দাদা দাদুর হাত ধরে ঘরে ফিরছে।একটা প্রশান্তি একে দিয়ে যায় কচি শিশু।
আলহামদুলিল্লাহ
যাত্রা শেষ ঘরে ফিরলাম।
নতুন মস
বিষয়: বিবিধ
১২১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন