চূর্ণ বিচূর্ণ রহস্যময় ভুবন-৮
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ২০ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:৩৪:৩৬ দুপুর
আবির এখন ভয়ানক প্যাচে পড়েছে।বৃদ্ধা দাদুর জীবনীতে সৃর্য সাহেব ডুকলেন এরপর সূর্য সাহেবের দাদাও ডুকে পড়ছেন।ভেবে কাজ নেই যতটুকু তথ্য জানা দরকার তা জানতে পারলেই সে খুশি।
বৃদ্ধা আবার বলতে শুরু করল*
-সূর্যের দাদার প্রসঙ্গ আসায় তুমি কি বিরক্ত হচ্ছ আবির।কি করব বল আমার সাথে সূর্য জড়িত তেমনি সূর্যের সাথে তার দাদা।
~না না আপনি আপনার মত করে বলুন।আমার ত গল্পটা শুনতে বেশ ভাল লাগছে।
-প্রায় সূর্য আর তার দাদা ভ্রমণে বের হতেন।ঐ সময়টা নাকি সূর্যের সবচেয়ে প্রিয় সময়।জীবনের নানান অভিঞ্জতা সে সেই জগত থেকে পেয়েছে।ঐ দর্শনটি তার সারা জীবন কাজে লেগেছে।
ও বলত,
ছোট বেলায় যদি একজন অভিভাবক চিন্তা করেন যে তার সন্তানকে রাজপুত্র বানাবেন আর রাজপুত্রের গুনাবলি গুলো একটু একটু শিখানো হয় ,
বুঝানো হয় তবে সত্যিই বড় হলে ঐ সন্তানটির ব্যক্তিত্ব রাজপুত্রের মত হবে।
একবার সূর্য খুব উদাস কন্ঠে আমাকে বলছিল, তুমি সবসময় একা একা প্রশান্তি নগর ভ্রমণ কর কেন?
আমিও গম্ভীরভাবে বললাম দোকলা কোথায় পাব আমার ত এখনও বিয়ে হয়নি।
সূর্য হাসতে হাসতে বলল আমরা অনেক স্বার্থপর শুধু নিজের সুখ আর চাহিদার কথা ভাবি আমাদের আশে পাশের ব্যক্তিদের আনন্দের সাথী হতে আমরা সব সময় সেখানেও স্বার্থ খুজি।
একবার ভাব তুমি তোমার ভ্রমণ সঙ্গী হিসেবে বউকে চিন্তা করছ কিন্তু যে বাবা মা এখন অলস বিষণ্ন সময় পার করছেন তাদের কথা ভাবছ না।তাদের কি সারাটা সময় ঘরে বসে থাকতে মন চায় বল ।তাদের কি বিনোদনের প্রয়োজন নেই।তাদের প্রতি আরও বেশি নজর দেওয়া উচিত।এটা কি কখন তোমার মনে হয়।
এরপর সময় পেলেই বাবা মাকে নিয়ে ঘুরতাম বিভিন্ন নগরীতে তাদের হাসিমুখগুলো আমার মাঝে প্রশান্তি ঝড় তুলত।
কি চমত্কার তাদের ফোকলা দাতের তৃপ্তির হাসি।
সূর্য এক ঝাঁক প্রশান্তি একে বলল,
আমি আমার বাবাকে খুব ভালবাসি।
-আবিরও বলে উঠল আমিও।
~বৃদ্ধা বলল আমি বোকার মত সূর্যকে প্রশ্ন করলাম কেন?
সূর্য বলল,
আমার দাদা দাদী অনেক বয়স পযন্ত বেঁচে ছিলেন।একদম বিছানায় খাওয়া দাওয়া গোসল এমনি সকালে দাত ব্রাশ আর মুখ ধৌত করার কাজটি একা একা করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।বাবাকে আমি দেখেছি দাদা দাদীকে জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত সেবা করতে।
সকালের নাস্তা খাওয়ানো থেকে শুরু করে রাতের ভাতটিও যত্ন করে দুজনকে খাওয়ায় দিতেন তিনি।আমি অবাক হতাম ,আমার উপর দ্বায়িত্ব যদিও পড়ত কিন্তু কখনই মাকে তিনি বাধ্য করেন নি।বরং অসুস্থ মানুষজনের রান্না করতে করতে মা ক্লান্ত হচ্ছেন কিনা সে ব্যাপারে নজর দিতেন।
মাঝে মাঝে সারা রাত দাদা ঘুমাতে পারতেন না। নিঃশ্বাসের সমস্যা হত বাবা মাথার কাছে বসে আস্তে আস্তে বুলিয়ে দিতেন।আবার ঘুমহীন ভোর থেকেই দ্বায়িত্ব পালন করতেন।প্রায় দু তিন বছরের একটানা রুটিন।
আমার স্মৃতির পাতায় যখনই ভাসে এই দৃশ্যগুলো আমার বাবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা আসে।
কি অদ্ভুত না সূর্য
বাবা মার জীবনের প্রতিটি কর্মই সন্তানের কাছে কতটা স্পর্শকাতর।
ভাল কর্মগুলো হৃদয়ের ক্যামেরায় বন্দী করে রাখি আমরা ভালবেসে।
তুমি যাই বল না সূর্য, খারাপ আচরণগুলোও কিন্তু আমরা সন্তানেরা অজান্তেই নিজেদের স্মৃতিতে রেখে দেই।যেহেতু প্রত্যেকের জীবনটিই চক্রাকারে একই নিয়মে ঘোরে।সুতরাং যা আমরা শিখি তাই প্রয়োগ করি পরবর্তিতে কিন্তু তা ঠিক ঠিক কি হয় সর্বক্ষত্রে বিভিন্ন পরিস্থিতি আর পরিবেশে।
সূর্য বলল,
যদিও তুমি ঠিক বলেছ তবুও আমার কেন যেন মনে হয়
"নিজের ভাল পাগলেও বোঝে"
হয়ত অনেক চমত্কার কিছু শিক্ষার সুযোগ পরিবার থেকে আমরা পাইনি।আমার মতে বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে পড়াশুনা করে ভাল আচরণটি শিখে নেওয়া উচিত।
সুন্দর জীবনের সন্ধানে।
(চলবে)
ইনশাআল্লাহ
বিষয়: বিবিধ
১০৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন