যেথায় তাকায় দেখি বোবা অবলা নারীর নিরব আর্তনাদ...

লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ১৯ অক্টোবর, ২০১৩, ১২:২৭:৫৪ দুপুর

স্বাধীনভাবে চলা ফেরার মাঝে অসাধারণ একটা আনন্দ আছে।চারপাশের প্রকৃতি আর মানুষকে পর্যবেক্ষণ করতে সবাই কম বেশি অদ্ভুত ভাল লাগে।যখন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়

দুই ধারে মানুষের ঢেউ কোথাও নিরবতা নেই।তবে খুব ভাবতে ভাল লাগছে প্রত্যেকটা জীবনের একটা অদেখা, অজানা, অপ্রকাশিত, গল্প আছে।সেই গল্পের নানান রং আছে।প্রজাপতির ডানার মত ভিন্ন নকশা আছে।আর নীল আসমানের মত অজস্র বেদনা আছে।

পুরো একটা রান্ডল দিলাম নানান ধরনের মানুষ।এক ফ্রেমের ভিতর অনেক বেশি স্মৃতি ধারণ করা যায় চেতনাতে।

অসূস্থ পৃথিবীতে বাঁচতে হবে ভাবতেই আমার অসুস্থ লাগে।

একটা গানের কিছু কথা তীব্র ব্যাকুলতা......

"মেঘ পিয়নের ব্যাগের ভিতর

মন খারাপের দীস্তা মন খারাপ হলে কুয়াশা হয় ব্যাকুল হলে তিস্তা।২

মন খারাপের খবর আসে

বন পাহাড়ের দেশে

চৌক্ষুস সব বাক্সে

যেথায় যেমন থাকে

সে

মন খারাপের

খবর পড়ে

দারুণ ভালবেসে

মেঘের ব্যাগের ভিতর ম্যাপ রয়েছে

মেঘ পিয়নের বাড়ি পাকদন্ডে পথ বেয়ে তার বাগান ঘেরা বাড়ি

বাগান শেষে

সদর দুয়ার

বারান্দাতে আরাম চেয়ার গোল চে পাতার

বিচানাতে

ছোট্ট রোদের ফালি

সেথায় এসে

মেঘ পিয়নের

সমস্ত ব্যাগ খালি"

শ্রীকান্তের একটা চমত্‍কার গানের কিছু অংশ।

আহ! কি সুন্দর স্বপ্নীল জীবন।

মুলত যে তিনটি ঘটনা শুনে একটু বিচলিত আর মনকষ্টে ভুগছি তার পরিপেক্ষিতে উপরোক্ত রঙ্গিন একটা ভূমিকা লিখলাম।

তিনটি ঘটনা প্রায় একই রকম তবে কষ্ট দুই রকম।

(ঘটনার নামগুলো কাল্পনিক।দুটি ঘটনা সত্য।শুনেছি পরিবারগুলো দেখেছি বর্ণনা আমার মত করে দিচ্ছি)

প্রথম ঘটনাঃ

রহিম সাহেবের কোন কিছুতে এলার্জি নেই শুধু তার বউ(জান্নাত) এর বাবা বাড়ি থেকে বাবা বোন কাউকে দেখলেই রহিম সাহেবের মেজাজ চরমে উঠে যায়।জান্নাত আপা খুব কষ্ট পেয়ে বলছেন আমরা শুধু দুই বোন।মা মারা যাবার পর বাবা একদম একা।আমার ছোট বোনের বাসায় বেশির ভাগ থাকেন।একদম বয়স্ক মানুষ একা একা গ্রামে কিভাবে থাকবেন।যদি বাবা বা বোন আসে তবে আমার জামাই খুব খারাপ আচরণ করে এমনি কি আমার বাবা বোনের সাথে কথাও ঠিকভাবে বলেনা।বাবা যেদিন আমার বাড়িতে থাকেন তখন গভীর রাতে বাসায় ফেরেন।

আমার প্রশ্ন আমি যদি তার বাবা মা ভাই বোন সবার সাথে হাসিমুখে কথা তাদের রান্না বান্না সব করে খাওয়াতে পারি সে কেন আমার বাবার সাথে একটু ভাল আচরণ করতে পারবে না।এই বিষয়টি নিয়ে প্রায় তুমুল দ্বন্দে লিপ্ত থাকে স্বপ্নীল সুখের পরিবারটি।একটা সমাধান যতদিন অবলা মহিলা এবং তার বাবা বেঁচে থাকবে এই অশান্তি চিরস্থায়ী থাকবে।পাশাপাশি ক্যামেরার সামনে মুখে স্মাইল ধরে রাখা হ্যাপি পরিবারের ছবি ঘরে দেওয়ালে ফ্রেমে বন্দী থাকবে।কেউ ঘরে ডুকলে দেখেই বলবে ওয়াও চমত্‍কার পরিবার।

ঘটনা দুইঃ

জামাই বউ একটা ফুটফুটে একবছরের বাচ্চার ছবি জল জল করছে ল্যাপটপের পর্দায়।মনে হয় এত সুখি পরিবার পৃথিবীতে আর একটাও নেই।

তারপর হঠাত্‍ আবার প্রেগনেন্ট হয়েছে আলিয়া ত সে রান্না করতে পারে গন্ধে আবার বাচ্চাটি এত চঞ্চল ঠিকভাবে ঘুম হয় না।এবং শ্রদ্ধেয় জামাই জামাল সাহেব তার কাজ নিয়ে ৪৮ঘন্টা ব্যস্ত।বাবার বাসা কাছে হওয়ায় দুই একদিন পর পর দুই এক ঘন্টার জন্য এসে বাচ্চাকে মায়ের কাছে রেখে একটু বিশ্রাম নেন।বেচারী এটায় কাল হল।

যাওয়ার জন্য বের হয়েছে হেটেই যাওয়া যায় যেহেতু

ভদ্রলোক বাচ্চাটাকে কেড়ে নিলঃ

"তুই আমার বাচ্চাকে রেখে এক বারেই বাপের বাড়ি চলে যা।তোর এত বাবার বাড়ি যাওয়ার দরকার কি পড়ে।"

প্রচন্ড চিত্‍কার মহিলা করে অঝোরে কাদছে।আর কোলের বাচ্চাটি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আজব লাক্ষ পতি শিক্ষায় শিক্ষিত বাবার দিকে ছল ছল চোখে তাকিয়ে আছে।দুটি জলন্ত চোখ।

তৃতীয় ঘটনাঃ

আমি জামশেদ আলীকে রোবট মানব বলব।ছোট্ট ছেলে তার কত বয়স হবে চার কি পাঁচ হঠাত্‍ গাছ থেকে পড়ে হাত ভেঙ্গে গেছে।সারারাত বিলাপ করে কাঁদছে একবারের জন্য জামশেদ রোবট মানব পাশে আসলেন না ডাক্তারের কাছে নেওয়াত দুরের কথা।অবলা নারী নিজের ভাইকে কষ্ট করে খবর দিয়ে পরের দিন ছেলেকে ডাক্তার দেখালেন।উচ্চ মধ্যবিত্ত শিক্ষিত শিক্ষক পিতা ছেলের ভাল ফলাফল জন্য প্রচন্ড জ্বরে বাধ্য করতেন পড়াশুনা করাতে।

অনেক কষ্ট সহ্য করা সত্ত্বেও সমাজের নোংরা নীতির জন্য অবেলা নারীরা কেঁদে যায় নিরবে।কাউকে বলে না।আমার ঘৃণা নয় করুণা হয় এ সমাজকে।

বিষয়: বিবিধ

১৩৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File