চূর্ণ বিচূর্ণ রহস্যময় ভুবন-৭
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ১৮ অক্টোবর, ২০১৩, ০৫:২৯:৩৫ বিকাল
আবির এখন অধিক আগ্রহে বসে আসে বৃদ্ধার মস্তিষ্কে বাকী বর্ণনা শুনবে বলে।
-আবির পৃথিবী অনেক সুন্দর সূর্য প্রায় বলত।সূর্য আমি প্রায় রাতের আকাশে ঘুড়ি উড়াতাম।
~রাতে?
-হু পূর্ণিমার রাতে।বলতে পার সূর্যের একটা পাগলামী।একদিন সূর্য বলেছিল তার রাতে ঘুড়ি উড়ানোর ইতিহাস কিভাবে শুরু হয়।
~ওনার দেখি পুরো জীবনটা ইতিহাসে ভরপুর।
-হা হা ভালই বলেছ।
সূর্য বললঃবয়স ১৪ কি ১৫ বছর।একদিন খেতে বসে দেখি ভাত প্রচন্ড নরম এবং প্রতিটি তরকারী লবণে ভরপুর বাড়ির সবাই বাক্য ব্যয় না করে তাতেই খেয়ে উঠেছে।আমার প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হল ভাতের কাঁচের থালাটি সামনে ফেলে দিলাম মা পাশেই ছিলেন কাঁচ ভাঙ্গার শব্দে সবাই ছুটে এল।
আমি বললামঃতোমার মত ভদ্র ছেলে এটা আদৌ সম্ভব।
ও বললঃঐ সময় কেন যেন প্রচন্ড আবেগ আর জেদ ছিল।নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।
তারপর বাবা এসে আমাকে কোমল কন্ঠে বললেন তুমি কি খাবে বাবা আমাকে বল আমি করে দিচ্ছি তোমার মা ত একটু অসুস্থ।বাবা জানতেন আমি কি খেতে পছন্দ করি তিনি খাবার তৈরি করে এনে আমাকে দিলেন।এত লজ্জা পেয়েছি যে আমি একবারের জন্যেও চোখ তুলে তাকাতে পারছিলাম না।হঠাত্ বাবা আমার পাশে বসে থাকা নিশ্চুপ মার হাত ধরে বললেন,আমি জানি তুমি অসুস্থ তোমাকে কোন কাজেই সাহায্য করতে পারিনি জীবনে এমনি আজ আমার সন্তানও বুঝতে পারছে না তোমার কষ্ট।আমি যদি বুঝতাম হয়ত আমার দেখে আমার সন্তান বুঝত।তুমি কষ্ট পেয়ে না এত কষ্ট সহ্য করার ফলে হয়ত তোমার পুজি জমা হচ্ছে।আমি কেঁদে ফেললাম আর মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আর মাকে কষ্ট দিব।সেদিন রাতে খুব মনমরা হয়ে পুকুর পাড়ে বসে আছি পূর্ণিমার চাঁদ আলোকিত করে রেখেছে চারিধার।হঠাত্ দাদা এসে হাজির হাতে তার দুটি ঘুড়িসহ নাটায় আমাকে বলল চল ঘুড়ি উড়ায়।আমি বলি এই বুড়ো বয়সে ভিমরতি ধরেছে যে অন্ধাকারে ঘুড়ি উড়াতে চাও।না আমার দাদা বলেন দেখ চাঁদের আলোয় আলোকিত চারপাশ উঠে আগ ঘুড়ি উড়ায়।
তারপর দাদা আমি ক্লান্ত হওয়ার পর পাশাপাশি বসলাম।
দাদা বলছিলেন তখন তোর বেয়াদবি দেখে ঠাস করে থাপ্পর দিতে মন চেয়েছিল।তোর বাবা অবশ্য বড়সড় থাপ্পর দিয়েছে।
মানে বাবা ত গায়ে হাতেই দেন নি।
দাদা হাসতে হাসতে বললেন সবকিছুতে মারপিট দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয় বরং কৌশলে শিক্ষা দিলে তা মাঝে মাঝে কার্যকর হয় বেশি।
তুই ভেবে দেখ এত মন খারাপ হল তোর যে পুকুর পাড়ে মনমরা হয়ে বসে আছিস।
সূর্য তোকে নিয়ে আমি অনেক স্বপ্ন দেখি।আমি চাই তুই ঐ চাঁদকে ছুতে ঘুড়ির চিকন রশি বেয়ে শূন্যে ভেসে যা।
কিভাবে দাদা?
দুনিয়াবী ছোট খাট বিষয়ের প্রতি অনীহা তৈরি কর।প্রচুর সাহিত্যচর্চা কর।এখন থেকে একটু একটু চারপাশ নিয়ে লেখালেখি কর।সামান্য খাওয়া ঘুম নিয়ে আর কত পড়ে থাকবি।ক্লাসের বই এর পাশাপাশি বাইরের বই পড়।
হুম ঠিক বলেছেন দাদা।
সূর্য আকাশের মত উদার যদি না হতে পারিস তাহলে পদে পদে কষ্ট পাবি।দুনিয়াতে কিছুই স্থায়ী নয়।"অভাগা যেদিকে তাকায় সেদিকে খরা হয়ে যায়"।
মানে কি দাদা এ কথার।
হতাশ ব্যক্তি।কোন বন্ধনকেই অথবা কোন কাজকেই নিজে পরিশ্রম করে করবে না আশা করে বসে থাকে আপনা আপনি হয়ে যাবে।এক সময় কিছুই হয়না হবে কি ভাবে একবার ব্যর্থ হবার সাথেই হাল ছেড়ে দিয়েছে।তুই পদে পদে ব্যর্থ হবি তবুও হাল ছাড়বি না।ধৈর্য্য সহকারে গন্তব্যের দিকে ছুটে চলবি।
(চলবে)
ইনশা আল্লাহ
বিষয়: বিবিধ
১৩০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন