ঈদ সংখ্যা (রান্নার শৈল্পিক সৌন্দর্য)
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ১৬ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:৩২:০৭ দুপুর
পৃথিবীতে হাজারও শিল্প রয়েছে।এর মধ্যে রন্ধন শিল্প অন্যতম।পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক শিল্প হিসেবে একে আখ্যায়িত করা যেতে পারে(আমার মত যারা এই শিল্প থেকে দুরে থাকতে পছন্দ করেন তাদের জন্য উক্ত লাইন প্রযোজ্য।গরুর রচনা আপাতত এই পর্যন্ত লিখে দাড়ি টানলাম।
আমার জীবনে মাত্র পাঁচটি পরিবারের সাথে ঈদ করার সুবর্ণ সুযোগ হয়েছিল এবং কোন ক্ষেত্রেই রান্না ঘরে ত্রি সীমানায় থাকার সামান্য ইচ্ছে জন্মায় নি অল্প স্বল্প দরকার ছাড়া।
তবে আব্বু যখন মিষ্টান্ন জিনিস রন্ধন করিতেন তখন পাশে দাড়িয়া দাড়িয়া দেখতাম।বলা যায় ঈদে এটা বিশেষ একটা আনন্দ অনুভূতি।
রন্ধন যে চমত্কার একটা শিল্প অতঃপর আজি তা ভাল ভাবে টের পেলাম।
বড় ভাইয়া আব্বু আলাদা যায়গায় আমরা আম্মুসহ ভিন্ন যায়গায়।
বড় ভাইয়া কি কি রান্না করছেন তা জানালেন কয়েকটি খাবারের রেসিপি বললেন তার রান্নাও বেশ মজাদার।আনন্দের ব্যাপার তার কাছ থেকে রান্নার রেসিপি শুনে রান্না করতে হয় আমাকে।
এবারের ঈদ মুলত বলব চমত্কার কষ্টদায়ক।
আম্মু অসুস্থ তাই কষ্টদায়ক।আর রন্ধন শিল্প নিয়ে গবেষণা করাতে বাধ্য হওয়ায় একদিক দিয়ে চমত্কার।
রান্না করতে যেয়ে মনে হচ্ছিল এই জটিল কাজটি মানুষ কেন করে এবং ভাল রান্নার পিছনে কোন রহস্য আদৌ আছে কিনা?
সেদিন আব্বুকে বলেছিলাম যে রান্নাবান্না শেখার জিনিস না বরং এটা সহজাত ব্যাপার।মাতৃভাষা শুনতে শুনতে যেমন ভাষা শিখে ফেলে তেমনি রান্না চুলায় কিছু চড়ায় দিলেই রান্না হয়ে যায়।
আব্বু আমার কথার তীব্র প্রতিবাদ করলেন ব্যাপারটা মোটেও তা নয়।রান্নার মাঝে রূচিবোধের ব্যাপার থাকে।তারপর তিনি কয়েকজনের রান্নার উদাহরণ দিলেন।তাদের মধ্যে আমার দাদী মা অন্যতম।
তাদের যেকোন রান্নায় অতি সুস্বাদু।আমি আর আমার দাদী যখন বর্শি দিয়ে পুকুর থেকে মাছ এনে শুধু লাউয়ের ডাল পাতা দিয়ে রাধতেন সেই স্বাদ আজও মনে রাখার মত।
আসলেই রান্নায় একটা শৈল্পিক ব্যাপার স্যাপার আছে
কয়েকটা ভাবে বর্ণনা করা যেতে পারেঃ
১)যারা খেতে পছন্দ করে(আমাদের ক্লাসে একটা ছেলে সেদিন ম্যামকে বলছিল সে খেতে পছন্দ করে ফলে সে নিজের রান্না নিজেই করে)
২)যারা খাওয়াতে পছন্দ করে(আমার দাদী মা)
৩)প্রিয় ব্যক্তির প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে মাঝে মাঝে(আমার আব্বা ঈদে তাই তিনি রান্না করেন)
৪)বাধ্য হয়ে খাবারের অভাবে যাতে মানুষ না মারা যায় সেই উদ্দেশ্য(এই দলে আমি রয়েছি রান্নার ভয়ে নিজের চা টাও আমি বানায় না)
৫)কিছু জন্মগতভাবে অতি ভাল রাধুনী হয়
৬)রান্নার চর্চা করতে করতে
৭)দায়িত্ব থেকে
যাইহোক জগাখিচুরী ঐ ব্যাখ্যাটি হলেও রান্না ব্যাপারটি মোটেও ফানের বিষয় নয়।
রান্নার বইয়ের রেসিপি দেখে রাধলেই রান্না অসাধারণ হয়ে যাবে তা বলাটা আমার মতে ঠিক না
এক্ষেত্রে তিনটি পয়েন্ট গুরুত্বপূর্ণ
১)চর্চা
২)মানসিক প্রশান্তি এবং
৩)প্রিয় ব্যক্তিদের প্রতি ভালবাসা
এত বড় লেকচার শেষ করে একটাই কথা থেকে যায় তা হচ্ছে
পৃথিবী থেকে রান্নাবান্না আর পরীক্ষার হল বিলুপ্ত করতে পারলে মানুষের প্রতিটি দিনই ঈদ হবে।
ঈদ মুবারক
বিষয়: বিবিধ
১২২৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন