আমি আর আমার ভারতীয় জগত...
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০১:১৪:০৩ রাত
রংপুরে কলেজ জীবন পযন্ত সিরিয়াল বা ভারতীয় জগত সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল প্রায় শূণ্য।
মাঝে মাঝে ঢাকায় আসলে হয়ত দুই একটা হিন্দী মুভি দেখেছি কিন্তু আসলে ভাসির্টি ভর্তির পর যখন স্থায়ীভাবে মামার বাসায় থাকা শুরু করলাম তখন
যা দেখেছি তার বাস্তব ব্যাখ্যা করছিঃ
১.কখনই আমি ঐ বাসার কোন সদস্যকে বাংলা চ্যানেল দেখতে দেখিনি।যখন আমি দিগন্ত টিভি নিয়ে বসতাম তখন সবাই খুব বিরক্ত হত। তারপর দেখেছি মামা দিগন্তের খবর দেখছেন।
২.বাসায় অধিকাংশ সদস্যকে দেখতাম সন্ধ্যার পর থেকেই সিরিয়ালে মুখ ডুবে থাকত ঠিক বারটা পর্যন্ত।এবং এই দেখা পর্ব পরের দিন দেখতে থাকত দেখতেই থাকত।
৩.একটা গ্রুপ শুধু হিন্দী মুভিই দেখতে থাকে।
৪.আরেকটা গ্রুপ রিয়ালিটি শো দেখতে যেমন রডিস।
৫.আরেক গ্রুপ শুধু হিন্দী গান শুনতেই থাকে।
এখন ফলাফল ব্যাখ্যা করিঃ
১.আমার কোন কাজিনকেই পাঁচের কম প্রেম করেননি একজন মাত্র ২০টি প্রেম করেছেন তার এই স্বল্প জীবনে এবং অনেক বার সুইসাইড করার ট্রাই চালিয়েছেন।
আমার দেখা বাস্তব উদাহরণ।প্রত্যেকটি মেয়ে এত মেধাবী ছিল।আমি এখন ওদের কথা ভাবি।যেমন সুন্দর তেমনি পড়াশুনায় দক্ষ ছিল।পরবর্তীতে কেমন করে যেন ছিটকে পড়ে গেল।
২.ভয়ংকর একটা সিরিয়ালের ডুপলিকেট একটা জগত।খুব কাজ থেকে দেখে এসেছে।সত্যি ওখানে ভারতীয় নারীরা চাকচিক্য কাটায় সিরিয়াল মুভিগুলোতে ঠিক
ব্যাখ্যা করতে পারব না।আল্লাহর কাছে আবার শুকরিয়া জামাতের ঘরে জন্ম গ্রহণ করেছিলাম।আর ঐ বিখ্যাত দাদাকে পেয়েছিলাম।
৩.গত দু বছর ধরে টিভি দেখার সুযোগ তেমন হয়নি কি বলব আমি আমার স্কুল কলেজ জীবন যেমন চমত্কার করে কাটিয়েছি এখন তার চেয়েও বেশি চমত্কার কাটাচ্ছি।তবে অসম্ভব আবার বলছি ঘরে ডিস টিভি আছে আর সেই ঘরের সন্তান হিন্দুয়ানী হবে না,
তা কি করে সম্ভব।এই সেদিন ইসলামিক পরিবারগুলোতে এই ভাইরাসের প্রভাব দেখে আসলাম।
৪.সত্যি অধিকাংশ ঘরের সন্তানরা ভারতীয় নায়ক নায়িকাকে নিয়ে বিভর স্বপ্ন আগলে রেখে পৃথিবী সাজায়।নারী সাজ গোজে ব্যস্ত আর সাংসরিক কুটকৌশল করতে ব্যস্ত।
আপনারা বিশ্বাস না করলে আমার কিছুই করার নেই।এটা চরম সত্য কথা।
৫.কোন নিজ্বস ব্যক্তিত্ববান ব্যক্তি পাওয়া দায় এ সমাজে।তবু অনেককে দেখেছি ব্যক্তিত্ববান।
আমি চার পাশে নারী পুরুষদের ভারতীয় মিডিয়া আর ইংলিশ মিডিয়ার ফটোকপি দেখেছি।
৬.শেষ কথাটি না বললেই নয় এখনও আমি ভারতীয় কোন লেখকের লেখায় নাক ডুবিয়ে আছি হেডফোনে শুনছি ঐ ভারতীয় গায়কদের গান।
কি করব?
আমার চারপাশে স্বল্প খরচে উন্নত মানের বই আর আমাদের বাংলাদেশী গায়ক গান শুনে মুগ্ধ।
আমি হুমায়ন আহমেদের বই পড়ি।পড়ি তিন গোয়েন্দা।ওখানেও জগত খুঁজে পাচ্ছি।
সুবীর নন্দী বা পথিক নবীনের গানকে প্রধান্য দিচ্ছি।
কিন্তু সময় কিন্তু থেমে থাকছে না।যুগ বদলে যাচ্ছে।সেই আমার দাদার যুগে কেউ যেতে চাবে না যদিও মাঝে মাঝে ঐ যুগে গেলে বেশি শান্তিতে থাকতাম।
হয়ত আমার দাদার যুগ বাবার যুগ পেরিয়ে আমার যুগ এসেছে।এর পরের যুগটি গড়ার দ্বায়িত্ব কিন্তু আমাদের।একান্ত আমাদের।
ফেলানী ত বিশাল সৌভাগ্যবান নারী।
কিন্তু বাংলাদেশের ঘরে ঘরে যে নারীরা সিরিয়াল আর বিশ্ব মিডিয়া নিয়ে জন্ম নিচ্ছে তারা কিন্তু গলাফাটা এই ভারতী বিদ্বেষী ইসলামী মনাদের ঘরে যাবে।সুতরাং নিজেকে এমন করে তৈরি করা হয়ত দরকার যে চেষ্টা অভ্যাহত রেখে জগতের প্রথমে ঘরে প্রশান্তির আধার হিসেবে গড়ার চেষ্টা করা।
হয়ত সঠিক পরিবেশ পেলে অমানুষও মানুষ হয় তবে একটা ব্যাপার এতো দিন সাইকোলজি পড়ে যতটুকু বুঝেছি যে একজন পাগলকে হয়ত পুরোপুরি ভাল করা যায় কিন্তু ব্যক্তিত্বের গোলযোগ যদি ছোটবেলা থেকেই কার মধ্যে থাকে তবে তা পুরোপুরি দুর করা আদৌ কোন চিকিত্সকের পক্ষে সম্ভব নয়।
সাবধান হতে হলে অল্প বয়স থেকে হতে হবে।একটা গ্রাম্য প্রবাদ আছে
"কাঁচায় না বাঁকালে বাঁশ পাকলে করে ঠাস ঠাস"
হয়ত পরিবার বেড়ে ওঠা ছোট্ট ছেলে বা মেয়েটার প্রতি নজর দেওয়ার সময় ঠিক এখন।
নতুন মস
রাতঃ১:১১
বিষয়: বিবিধ
১৪২৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন