অগোছানো কথনমেলা-৮
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ২৩ আগস্ট, ২০১৩, ০৬:৪৭:২৪ সন্ধ্যা
যখন আমরা গ্রামে থাকতাম তখন মিডিয়া বা বিনোদন বলতে রেডিও আর বই।
রেড়িওতে বিবিসি চারটা অধিবেশনই মুলত শুনতেন দাদাসহ সবাই।আমরা মাঝে মাঝে চ্যানেলের ঘুরাতে গান শুনার চেষ্টা করতাম।সেই সময় কোন একবার বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা শুরু।পরিবারের সবাই ক্রিকেট প্রেমিক ত কয়েকটি নির্দিষ্ট দলের চরম ভক্ত মনে আছে আব্বু আম্মুসহ সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে খেলা শুনতাম পারিবারিক টিমের সাপোর্ট দিচ্ছে সবাই।হ্যা এটা কিন্তু রেডিও তেই শুনতাম।ছক্কা অথবা আউট হলেই উল্লাস হত মোটামুটি।
তবে খুব মজা হত।আর চাচার ঘরে টিভি ছিল তখন "ইত্যাদি" প্রোগ্রামটি সবাই দেখত।
যখন শহর আসলাম তখনও বাসায় টিভি ছিল না।মনে আছে সবচেয়ে ছোট সাইজের টিভি কিনে ফেললো ছোট ভাইয়া।আসলে এক সময় বেশ জনপ্রিয় প্রোগ্রাম ছিল
"লাল গোলাপ"
আমরা সবাই মিলে ঐ ছোট্ট টিভিতেই দেখতাম।
বাংলা সিনেমাও মাঝে মাঝে দেখতাম আমি।তবে ক্লাস টেন থেকে শুরু কলেজ পযর্ন্ত এত ব্যস্ত ছিলাম পড়াশুনা নিয়ে যে মাঝে গল্প উপন্যাস আর ইসলামিক বই,সংগঠন ছাড়া তেমন কিছুই দেখার উপায় ছিল না।
তবে অল্প চাহিদার মধ্যেও বেশ ভালই লাগত মুহুর্ত্বগুলো।
তবে গান শুনতে খারাপ লাগেনি কখনই।
ঢাকাই এসেই এক কাজিন খুব ভর্রসা করে বলেন গ্র্যারাম থেকে আসতি বলে,
"ঢাহা শহর আইসা আমার প্রাণ জুরাইল লাল নীল বাত্তি দেইখা পরান জুরাইলো"
সুযোগ পেলেই অপমান করা মানুষ জনের বদঅভ্যাস।
তবে ধীরে ধীরে বুঝলাম ঢাকা শহর গ্রামের মানুষ দিয়ে ভরা।
গ্রামের মানুষ অনেক শান্তিতে আছে ঢাকার মানূষ জনের চাইতেও।
তবে ঢাকায় এসেই যে ভাবে টেলিভিশনের একনিষ্ঠ দর্শক হতে শুরু করলাম।তা সত্যিই দুঃখজনক।আমরা যে রুমে থাকতাম দেখতাম আমার বয়সি,আমার চেয়ে ছোট, এবং আমার চেয়ে কিছু বড়দের কিভাবে জীবনকে রঙ্গিন থেকে রঙ্গিন ঢং এ নাচাচ্ছে।কেবলই কলেজ পাশ করে সদ্য ভার্সিটিতে পড়ুয়া আমার আবেগ অবশ্যই টইটম্বুর।
তবে এত সুযোগ জীবন উপভোগ করার
দুই কানিজ আমরা থাকি একজন রংপুরের
আরেকজন বরিশালের ঐ আপু আমার চেয়ে বছর দুই বড় হবেন।আমরা দুজনেই পুরোপুরি স্বাধীন যেহেতু আমাদের কারই বাবা মা ঢাকাতে ছিলেন না
ওনি ভর্তি হন প্রাইভেটে আর আমি পাবলিকে।আর যাদের বাসায় থাকতাম একজন আমার সাথে ও ভর্তি হল প্রাইভেটে আর ছোট্টটি ক্লাস সেভেন।
সবগুলো মেয়ে আমরা সারাদিনের অবসরে কার্ড (তাস) কম্পিউটার আর টেলিভিশন বই চল ছিল জীবন বেশ।
আমি বরাবরই তখনই থেকেই ইন্টারনেটে ফেসবুকে আর সামু ব্লগে ডুকলাম।দেখতাম ঢাকার অভিজাত এলাকার
চাকচিক্যময় আর চমত্কার বিল্ডি গুলোর ভিতরে কত বিচিত্র অনুভূতির মানুষজন বাস করে।যারা শান্তি খুঁজতে মরিয়া।
তবে পরিবেশের একটা কালো ছায়া ত অবশ্যই আছে পাশাপাশি পূর্বে আমার পারিবারিক শিক্ষা সবসময় একান্তভাবে পাশে ছিল।
টেলিভশনে দেখতাম মুভি,সিরিয়াল আর কত কি।কাজ ত নাই অফুরন্ত সময়।ঐশীরা কি করবে প্রেম করা ছাড়া ত উপায় নেই।মানুষ একটা ভয়ংকর যন্ত্র।এই মানুষের চিন্তার ফল মাইক্রো মিনি কত ধরনের কম্পিউটার আবার এই মানুষই আজও অনেকই 'অ আ ই' না জেনেই মারা যায় গিয়েছে।একদল জানার পরিবেশ পেয়েছে আরেক দল পাইনি।
ধীরে ধীরে আমাকে যদিও টেলিভিশনের নেশা পেয়ে বসেছে আমি ভার্সিটিতে সংগঠনে যোগ দিলাম।একটা কথা আছে না,
"সত্ সঙ্গে স্বর্গে বাস অসত্ সঙ্গে সর্বনাশ"
আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলাম।
কি চমত্কার হিন্দি মুভির অভিনয় আর কতই না চমত্কার সিরিয়াল আর ইংলিশ মুভি
এই সদ্য অভিনয়গুলো তারুণ্যের বয়সে আমি বলছি যে কোন মহা ধার্মিক ব্যক্তিও যদি দেখে প্রতিদিন চরিত্রে অবশ্যই ধুতরা ফুল ফুটবে।
আর যারা ক্লাস ওয়ান থেকে দেখে দেখে বড় হয়েছে তাদের কাছে ১০ বা ১২ টি বয়ফেন্ড কিছুই না ওটা ত স্বাভাবিক কর্ম।আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে একটা প্রাইভেট পেলাম একটু ব্যস্ত জীবন শুরু হল।(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৮৭১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন