অগোছানো কথনমেলা-৪
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ২১ আগস্ট, ২০১৩, ১১:৫০:৩১ রাত
ছোট্ট বেলা থেকেই আমার হরেক রকম নামের সাথে পরিচয়।
তবে বুড়ি ডাকের সাথে আমি মধুরভাবে জড়িত।
ভর্তি হলাম গ্রামের কিন্টার গার্ডেন স্কুলে।
পড়তাম খেলতাম ঘুমাইতাম আর টই টই করে ঘুরতাম।
আমার স্মৃতি জুড়ে আমার নানা বাড়ির টানটি অনেক যত্ন দিয়ে আঁকা আছে।
একদম ছোট্ট বেলায় বরিশাল গিয়েছিলাম।
বরিশালের প্রকৃতি সম্পর্কে আমার ধারণা নেই বললেই চলে,
যেমনটি নেই নানাকে নিয়ে কারণ নানাকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি।
আমরা আসতাম ঢাকায় বেশি,নানু ঢাকায় থাকতেন।
চমত্কার চমত্কার দুটি ভিন্ন অঞ্চল দুটি ভিন্ন ধারার পরিবার ভিন্ন আঞ্চলিক ভাষাকে জড়িয়ে
আমার বেড়ে ওঠা।
অনেক গুলো স্মৃতি আছে।
তবে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নের সম্মুখিন হয়েছি স্কুল কলেজে স্যারদের কাছে কিভাবে বরিশাল-রংপুর
বিয়ে হল
তোমার আব্বু আম্মুর।
এরপর দীর্ঘ উত্তর ত দিতেই হত।
হ্যা দীর্ঘ উত্তর দিবার আগে একটু পিছনে যেতে হবে আমার দাদার জন্মের আগেই তার বাবা ইন্তেকাল করেন ত দাদার একজন বড় বোন ছিলেন।
কৌকুরির এক খুব পরিচিত তালুকদার সাহেবকে ছোট্ট ছেলে ছিলেন দাদা খুব পছন্দ হয়েছিল ঐ ব্যক্তিকে দাদার তখন দাদা নাকি বলেছিলেন আমার বোনকে আপনি বিয়ে করবেন।
তারপর বিয়ে হয়ে গিয়েছিল।
আমার বাবা ৭৪ সাল থেকেই ইসলামী সংগঠনের সাথে জড়িত ত প্রথমে আমার ফুপির বিয়ে হয় বরিশালে বাবার মারফতে এরপর ফুপায় বিয়ে দেন আব্বুকে কত সুন্দর ক্যালকুলেশন।
সবাই বড় বড় চোখ তুলে বলেন রিলেশন করে বিয়ে।
আমার উত্তর যদি হত "হু" ওখানে আল্লাহ নির্ধারণ করে রেখেছিলেন।
এটায় ত রিলেশন তাই না।
আব্বুর কিছু শক্তিশালী অনুভূতি আছে যা হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়।
ছোট বেলায় নাকি আব্বু একবার খুলি(বাড়ির সামনের অংশ)থেকে একটা আম কুড়ে
এনেছিলেন।
খুলিতে আমাদেরও আম গাছ আছে তবে আম দেখেই দাদী বলেছেন বাবা এটা ত আমাদের গাছের আম না
যাও যেখানে পেয়েছ রেখে আস।আব্বুও বাধ্য ছেলের মত রেখে এলেন।
আর আব্বু ছিলেন বই এর পোকা এখনও আছেন।
তার নানা বাড়িতে ছিল অনেক ধরনের বই একটা বই পড়তে পড়তেই রাত কাভার করতেন।
একবার তার খালু নিয়ে যান সিনেমা হলে আব্বু মুভি শেষ না করেই বেরিয়ে আসেন।তার নাকি এই কল্প কাহিনী ভাল লাগেনি।
তবে আম্মু ত ব্যাংকারের মেয়ে ফ্রি ফ্রি অনেক মুভি দেখেছেন।
তবে আমার এখনও সিনেমা হলে যাওয়া হয়নি।
তবে দাদা দাদীর কাছে শুনেছিলাম পর্দায় কিভাবে যেন তারা মুভি দেখেছিলেন।
আব্বু যখন কারমাইকেলে পড়তেন তখন মেসে থাকতেন একবার তাদের মেসে একটা ছাগল ডুকে পড়ে, সবাই মিলে ছাগলটিকে জবাই করে রান্না করে কিন্তু আব্বু বলেছিলেন ওরা কেউ আব্বুকে একটা মাংসের টুকরো খাওয়াতে পারে নি।
আরেক ঘটনা ঘটে BA পরীক্ষার সময় হলে ডুকে খাতা নেওয়ার পর দেখলেন সবাই নকল করছে
কেউ কেউ আবার টেবিলের উপর বই খুলে লিখছে।
আব্বু খাতা জমা দিয়ে বাসায় চলে এলেন তখন রংপুরের বাসায় দাদা দাদী ছিলেন।
=দাদী বললেন এত তাড়াতাড়ি তোমার পরীক্ষা শেষ হল বাবা।
না মা খাতা দিয়ে চলে এসেছি।
=কেন বাবা?
সবাই নকল করছে।আপনি কি চান আমি নকল করে পাশ করি।
=নকল না করে পরীক্ষা দিতি।
ঐ পরীক্ষার কোন মূল্য নাই।
কারো বুঝ আর কারো তরমুজ
শুনে আমার দাদীও চুপ।
দাদা অবশ্য আব্বুর সিদ্ধান্তকে বেশি প্রশ্রয় দিয়েছিলেন।
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১১৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন