এবারের ঈদ হিমুর হলুদ পোশাক দিয়েই করব
লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ০২ আগস্ট, ২০১৩, ০৬:১৩:৫৩ সকাল
ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে ক্লাস ত করতেই হবে তার উপর আবার দুই দিন পর পর মিডটার্ম,প্রেজেন্টেশন,তার উপর Psychology পড়ার সুবাদে মানুষকে নিয়ে প্রাকটিকেল করা যে কি পরিমাণ ব্যস্ততা পড়াশুনা না করলেও এর থেকে কোন রেহায় নেই।সবচেয়ে বিপদে ছাত্র ছাত্রীরা পরে পরীক্ষণ পাত্র হিসেবে মানুষকে নিয়ে আসা নিয়ে।পাগলকে যেমন টেনে হিছড়ে আনতে হয় এখন আমাদের সুস্থ মানুষদের টেনে আনতে ঝামেলায় পড়তে হয়।কেউ আসতে চায় না।
যাইহোক...
মিডটার্ম পরীক্ষার আগের রাত ১১টার দিকে ফোন দিলাম এক ফেন্ডকে কি কি পড়তে হবে জানতে।
-আমি বলছি কিরে পড়াশুনা শেষ
কি কি পড়ব?
=আমি ত শপিং করতে এসেছি।
-এত রাতে:-O।
ভাবি....
কিভাবে একটা মেয়ে বাবা মা ছাড়া হোস্টেলে থেকে বা মেসে থেকে এত রাত বিরাতে শপিং করতে সাহস পায়।
যদিও এটা আশ্চার্যের ব্যাপার তথাপি অধিকাংশ আমার বয়সী মেয়েদের কাছে এটা কোন ব্যাপার না আমি তা জানি।
আমিও ঢাকা থেকে দীর্ঘ পথ রংপুরে একা একা কত বার গিয়েছি যেটা অনেকের কাছেই সম্ভব নয়।
এটায় স্বাভাবিক।
পরিস্থিতি আমাদেরকে একা একা পথ চলতে এক প্রকার চমত্কার উত্সাহ আর সাহস দিয়ে দেয়।
= কিরে শপিং করেছিস? কি কি কিনলি?
-না করিনি।মুলত তখনও কিছু কেনাকাটা করা হয়নি।
মার্কেট আমার এখন পযর্ন্ত পছন্দের তালিকায় আসতে পারেনি ।এর অন্যতম কারণ শপিং করতে আমার ভাল লাগে না।
ঈদ উপলক্ষ্যে বিশেষ করে পোশাক কেনার উত্সাহ আশ্চার্য হলেও কবে যে মরে গেছে তাও বলতে পারব না।
তবে এবার আমাদের বাবুর কাপড় কিনতে গিয়ে হঠাত্ হলুদ একটা কাপড়ের প্রতি দৃষ্টি আটকে গেল ৫০ টাকা গজের দুই গজ কাপড় নিয়ে নিলাম কারণ আমার হিমুর এই পোশাকটা বেশ পছন্দ।
এখন যদি ঈদের আগেই আম্মু বানিয়ে ফেলেন তবেই ইনশাআল্লাহ
পড়তে পারব।
ছয় হাজার টাকা আমি নিজেই টিউশনি করে আয় করতাম তবে আমার যুক্তি হচ্ছে
এত এত জামা কাপড় থাকা সত্ত্বেও কেন নতুন নতুন জিনিস পত্র কিনতেই হবে।
আমার একটা স্পেশাল ব্যাগ আছে আমার চেয়ে একটু ছোট হবে।বলা যায় বেশ বড়।ব্যাগটা বয়স মাত্র দুই বছর হতে যাচ্ছে।
ত ক্লাসে একজন বলেই ফেলল
=ব্যাগটা পরিবর্তন করবিনা তুই।
-হ্যা অবশ্যই করব ছিঁড়ে গেলেই করব।
=কবে ছিঁড়বে এটা।
-জানি না।আমিও চাচ্ছি ছিড়ুক:-P!
আমার আবার লোক লজ্জা খুবই কম।
কেউ কিছু বলিলে এক কানের ফুটো দিয়ে ডুকে অপর ফুটো দিয়ে বের করে দেই।
কেউ গেয়ো বললে আমার কিছুই এসে যায় না।কারণ আমি সত্যি সত্যি গেয়ো।গ্রামের মাটির ঘ্রাণ আমি প্রতি নিহিত পাই।
সত্যি তালুকদার পরিবারে তেমন অভাব কখনই ছিল না কিন্তু আমার এই পরিবার ছোট থেকেই আমাদেরকে জড় বস্তু পোশাক আশাক প্রতি মনকে এতটাই উদাস করে দিয়েছে যে সত্যি এখন শুধুই প্রয়োজনীয় ছাড়া কোন আকষর্ণই জন্মায় না।আমি এ ব্যাপারটা নিয়ে বেশ আনন্দিত।যত কম আকর্ষণ ততই কম অপচয়।
আর হাজার হাজার টাকার শপিং করেও অনেকের শপিং শেষ হচ্ছে না কেন ঈদের।মনও খারাপ হয়ে বসে থাকার কি আছে।ঈদ মানে আনন্দ।তাই বলে এই জড় পদার্থের ভিতর কেন পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
কত্ত কত্ত আনন্দ উপভোগের বিষয় আছে।
আগে দাদার হাত ধরে দাদা বাবার সাথে মাঠে যেতাম।তারপর দাদীকে দেখতাম আমাদের বাড়ির পাশে যে মসজিদ ছিল শেখানে নামায পড়তে যেতেন তার সাথে যেতাম।তার পর টই টই করে গোটা গ্রাম ঘুরতাম ।আমি বলতে পারব কোন প্রতিবেশীর কোন রান্নাটি বেশি মজাদার।
আর প্রতি ঈদেই আব্বু মিষ্টান্ন খাদ্যগুলো রান্না করতেন।
আব্বু রান্না দেখতেই মজা মাঝে মাঝে হেল্প করতে হয় এটা ত আরও মজা।
আরেকটা মজাদার কাজ হচ্ছে...
আব্বু অনেকগুলো বারতি সেমাই চিনি আর দুধ কিনতেন আর আমার কাজ ছিল আশে পাশে যত গরীব প্রতিবেশী আছে তাদের বাসায় যেয়ে যেয়ে দেওয়া।আমার এই কাজটি করতে খুব ভাল লাগল কারণ তাদের বাড়িতে গেলেই এত আন্তরিকতার সাথে খেতে দিত যে আমার পিড়িতে বসে সেই ঝাল ঝাল খাবার খেতে ভাল লাগত।
চারিদিক থেকে এত ভালবাসারা আঁকড়ে ধরে সুতরাং পোশাক আশাক নিয়ে চিন্তা করার সময় পেলাম না আজও।
যদিও এখন ঈদ শহুরি পৃথিবীর ঘরেই বন্দি।
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন