আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে আনীত ২০টি বানোয়াট অভিযোগ এবং এর দাঁতভাঙ্গা জবাব। Waiting EVERYONE MUST KNOW Frustrated

লিখেছেন লিখেছেন মাওহিবা তাকিয়া ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:২৫:৩৬ সকাল

(প্লিজ লেখাটি যত জায়গায় পারবেন শেয়ার করুন এবং প্রিন্ট করে মানুষকে দিন।)

অভিযোগ-১:

৪ মে ১৯৭১ সকাল বেলা পিস কমিটির মেম্বার হিসাবে মধ্য মাছিমপুর বাস ষ্ট্যান্ডের পেছনে মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার জন্য জমায়েত হওয়া ২০ জন বেসামরিক ব্যাক্তিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা।

এই বক্তব্যের সমর্থনে রাষ্ট্রপক্ষ (প্রসিকিউশন) কোন সাক্ষী উপস্থাপন করেনি। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট দেয়া ৪ জনের বক্তব্য প্রমান হিসাবে দাখিল করেছেন যা গ্রহন যোগ্য হওয়ার কোন যুক্তি সঙ্গত কারণ নাই।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

রাষ্ট্রপক্ষের ঐরুপ বক্তব্য গ্রহন যোগ্য নয়। কারণ তদন্তকারী কর্মকর্তা তার জেরায় বলেন যে, পিরোজপুর এলাকার স্থানীয় লোকজন, স্কুল, কলেজে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের কোন ব্যাক্তি বা ছাত্র নিখোঁজ হওয়ার কোন তথ্য তিনি তদন্তকালে পান নাই। উপরন্তু রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী (পিডব্লিউ-৮) তার জেরায় জানান যে ঐ দিন সাঈদী সাহেব পাড়েরহাটে ছিলেন। উক্ত ঘটনাস্থল মেজর জিয়ার বাড়ীর পিছনে হওয়া সত্ত্বেও এই ঘটনা মেজর জিয়া তার লিখিত বইতে বলেন নাই। উক্ত ঘটনাস্থলে ১৯৭১ সালে কোন বাসষ্টান্ডই ছিল না।

সংশ্লিষ্ট সাক্ষী- ১। আশিস কুমার মন্ডল ২। সুমতী রানী মন্ডল ৩। সমর মিস্ত্রী।

৪৭ দিন সেইফ হাউজে থাকার পরেও তারা সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজী না হওয়ায় তাদের কে সাক্ষী হিসাবে আনা হয়নি।

অভিযোগ-২:

৪ মে ১৯৭১, মাছিমপুর হিন্দুপাড়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে পাকিস্তানী আর্মীদের সহায়তায় লুটপাট করে তাদের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করেন এবং পলায়ন পর অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের মধ্য হতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে শরত চন্দ্র মন্ডল, বিজয় মিস্ত্রি, উপেন্দ্রনাথ, জগেন্দ্রনাথ মিস্ত্রি, সুরেন্দ্রনাথ মিস্ত্রি, মতিলাল মিস্ত্রি, জগেশ্বর মন্ডল, সুরেশ মন্ডলসহ আরো অজ্ঞাত নামা ৫ জনসহ মোট ১৩ জনকে হত্যা করেন।

চার্জ-১ এর ন্যায় এই চার্জের সমর্থনে রাষ্ট্রপক্ষ কোন সাক্ষী উপস্থাপন করে নাই। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট দেয়া ৪ জনের বক্তব্য প্রমান হিসাবে দাখিল করেছেন যা গ্রহন যোগ্য হওয়ার কোন যুক্তি সঙ্গত কারণ নাই।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

রাষ্ট্রপক্ষের ঐরুপ বক্তব্য গ্রহন যোগ্য নয়। কারণ তদন্তকারী কর্মকর্তা তার জেরায় বলেন যে পিরোজপুর এলাকার স্থানীয় লোকজন, স্কুল, কলেজে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের কোন ব্যাক্তি বা ছাত্র নিখোঁজ হওয়ার কোন তথ্য তিনি তদন্তকালে পান নাই। উপরন্তু রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৮ তার জেরায় জানান যে ঐ দিন সাঈদী সাহেব পাড়েরহাটে ছিলেন। তাহলে সাঈদী সাহেবের পক্ষে এ ধরনের কাজ করা কিভাবে সম্ভব?

অভিযোগ-৩:

৪ মে ১৯৭১ সালে মাছিমপুর হিন্দুপাড়ায় লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যাকান্ডের পর কালিবাড়ি, মাছিমপুর, পালপাড়া, শিকারপুর, রাজারহাট, কুকারপাড়া, ডুমুরতলা, কদমতলা, নবাবপুর, আলমকুঠি, ঢুকিগাতি, পারেরহাট এবং চিংড়াখালী গ্রামে ধর্মীয় কারণে বেসামরিক জনগোষ্ঠির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

রাষ্ট্রপক্ষ হতে কোন সাক্ষী উল্লেখিত ১২টি গ্রামের হাজার হাজার লোকের মধ্য হতে ১ জন সাক্ষীকেও সাক্ষ্য হিসেবে হাজির করে নাই, শুধুমাত্র ১৯ (২) ধারায় গৃহিত সাক্ষী আশিষ কুমার মন্ডল, সুমতি রানী মন্ডল, সাক্ষী সমর মিস্ত্রী ও সাক্ষী সুরেশ চন্দ্র মন্ডলের তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট প্রদত্ত জবানবন্দী ছাড়া। যা বিশ্বাস করার কোন যৌক্তিক কারণ নাই। কেননা উল্লেখিত আশিষ কুমার মন্ডল, সুমতি রানী মন্ডল, সাক্ষী সমর মিস্ত্রী ও সাক্ষী সুরেশ চন্দ্র মন্ডলদেরকে দীর্ঘ ৪৭ দিন সেভ হাউজে আটকিয়ে রাখার পরও তারা সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী প্রদানে রাজী হয় নাই। উপরোক্ত রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ৮ গোলাম মোস্তফা এর জেরা হতে দেখা যায় সাঈদী সাহেব ঐদিন পারের হাটে উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগ- ৪:

ধোপা বাড়ির নিকটস্ত হিন্দু পাড়া এলজিইডির পেছনে অবস্থিত। ৪ মে ১৯৭১, সাঈদী সাহেব কর্তৃক দেবেন্দ্রনাথ মন্ডল, জগেন্দ্রনাথ মন্ডল, পুলিন বিহারী, মুকুন্দ বালাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

এই বক্তব্য সমর্থনেও রাষ্ট্রপক্ষ হতে কোন সাক্ষীকে আদালতে (ট্রাইব্যুনাল) হাজির করা হয় নাই। বরং সুরেশ চন্দ্র মন্ডলের তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট প্রদত্ত জবানবন্দী উদ্ধৃতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ৮ গোলাম মোস্তফা জেরায় প্রদত্ত বক্তব্য অর্থাৎ ঐ তারিখ সাঈদী সাহেব পারেরহাটে উপস্থিত ছিলেন এটা বিবেচনায় আনা হলে রাষ্ট্র পক্ষের বক্তব্য বিশ্বাস করা যায় না।

অভিযোগ-৫:

৫ মে ১৯৭১ তারিখে সাঈদী সাহেব ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সাঈফ মিজানুর রহমানকে প্রকাশ্য আটকের ঘোষণা দিয়ে হাসপাতালের পিছন হতে মন্নাফের সহায়তায় গ্রেফতার করে আর্মিদের জিপে চড়ে বলেশ্বর নদীর ঘাটে যেয়ে সেখানে এসডিও ভারপ্রাপ্ত আব্দুর রাজ্জাক ও এসডিপিও ফয়জুর রহমান আহমেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

এই বক্তব্যের সমর্থনে রাষ্ট্রপক্ষ শুধুমাত্র ১ জন সাক্ষী অর্থাৎ নিহত সাইফ মিজানুর রহমানের ভাই রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-২৭ সাইফ হাফিজুর রহমানকে উপস্থাপন করেছেন। তিনি ঘটনা দেখেন নাই, ঘটনার ১৫/১৬ দিন পর পিরোজপুরে গিয়ে মন্নাফ এবং খান বাহাদুর সৈয়দ মোঃ আফজালের নিকট শোনেন যে, দেলোয়ার হোসেন নামক ব্যক্তি মিজানুর রহমানকে আটক করার সময় উপস্থিত ছিলো। পরবর্তী কালে অর্থাৎ ২৫/৩০ বছর পরে তিনি শুনেন ঐ দেলোয়ার হোসেনই সাঈদী সাহেব। ঐ সময়ে যাওয়ার পরে তিনি আর কোনদিনই পিরোজপুরে যান নাই। তার বাড়ি নড়াইলে এবং সেখানে তিনি বসবাস করেন। তিনি পিরোজপুরের কোন ব্যক্তির নিকট ঐ দেলোয়ার হোসনই যে সাঈদী সাহেব তা যাচাই করেন নাই। সেক্ষেত্রে তাকে বিশ্বাস করা অযৌক্তিক। উপরন্তু রাষ্ট্র পক্ষের সাক্ষী এসডিপিও ফয়জুর রহমান এর জামাতা এ্যাডভোকেট আলী হায়দার খান ১৯৭৩ সনের একটা চিঠি হতে দেখা যায় উল্লেখিত ৩ ব্যক্তিকে তৎকালিন পিরোজপুর থানার ওসি তোফাজ্জাল হোসেন ষড়যন্ত্রমুলকভাবে ডেকে আনার পর তাদের সঙ্গে পাকিস্তানী আর্মি মিটিং করে তাদেরকে বলেশ্বর নদীর ঘাটে নিয়ে হত্যা করে। যা আসামী পক্ষ হতে প্রদর্শন করা হইয়াছে। এ কারণেই আলী হায়দার খান রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হলেও তাকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী করেন নাই।

অভিযোগ-৬:

৭ মে ১৯৭১ তারিখে পাকিস্তান আর্মিরা পারের হাটে আসলে সাঈদী সাহেব শান্তি কমিটির সদস্য হিসেবে তাদের স্বাগত জানিয়ে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণে পারের হাটের আওয়ামী লীগ নেতা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে প্রবেশ করে জৈনিক মাখন লাল সাহার দোকান হতে ২২ সের সোনা ও রুপা লুট করে নেন।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

এই বক্তব্যের সমর্থনে রাষ্ট্র পক্ষ মাহবুবু আলম হাওলাদার, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-২ রুহুল আমিন নবীন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৩ মিজানুর রহমান তালুকদার, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৪ সুলতান আহমেদ হাওলাদার, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৫ মাহাতাব উদ্দিন হাওলাদার, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৬ মানিক পশারী, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৮ মোস্তফা হাওলাদার, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৯ আলতাফ হাওলাদার, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-১২ এমপি একেএমএ আওয়াল, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-১৩ গৌরাঙ্গা চন্দ্র সাহা এ সম্পর্কে আলোচনায় বলা যায় পারের হাটের লুটপাট বা ক্ষতি সাধন বিষয়ে রাষ্ট্র পক্ষ হতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দেয়া হয়েছে। যথা: অভিযোগ ৩-এ ৪ মে ১৯৭১ তারিখে পারের হাটের বাড়ি ঘরে অগ্নি সংযোগ করার কথা বলা হয়েছে অথচ রাষ্ট্র পক্ষের মতে ৭ মে-র আগে পারের হাটে পাকিস্তান বাহিনী যায় নাই। ৭ মে তারিখে পাকিস্তান আর্মি ও সাঈদী সাহেবসহ স্থানীয় রাজাকাররা স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও হিন্দু লোকজনের বাড়ি ঘর ও মাখন লাল সাহার দোকান লুটপাট করেছে বলা হলেও রাষ্ট্র পক্ষ দাখিলে সামছুল আরেফিন এর দাখিল কৃত এসোসিয়েটস অব পাকিস্তান ১৯৭১ হতে দেখা যায় মাখন লাল সাহার দোকান ১৯৭১ সালের নবম মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসে লুট হয়েছে। এছাড়াও চার্জ ৮ এর শেষাংশে বলা হয়েছে ৮ মে সাঈদী সাহেব পাকিস্তানী আর্মির সহায়তায় পারের হাটের হিন্দু পাড়ার অঞ্চলে বাড়ি ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এক্ষেত্রে ৪টি বক্তব্যের কোনটি গ্রহনযোগ্য? উপরন্তু যে সমস্ত সাক্ষীর বক্তব্য এই অভিযোগকে সমর্থন করা হয়েছে বলা হয় তাদের মধ্যে মাহবুবুল আলম হাওলাদার ও রুহুল আমিন নবীন মাখন লাল সাহার দোকান হতে ২২ সের স্বর্ণ রুপা লুটের কথা বললেও তারা উক্ত ঘটনা দেখে নাই বলে জানায়। অন্যান্য সাক্ষীগণও উক্ত ঘটনার বিষয়ে কোন বক্তব্য না দিয়ে সাধারণভাবে ঘটনার বর্ণনা দিলেও মুল ঘটনা তারা দেখে নাই বলে জানিয়েছে। এছাড়াও মাহাবুবুল আলম হাওলাদার খলিলুর রহমানের নিকট হতে শুনে পারের হাট বাজারে আসার কথা বলেছে। তথ্য অনুসন্ধান করে দেখা যায় খলিলুর রহমান ১৯৭২ সালে জন্ম গ্রহন করেছে। মাহাবুবুল আলম নিজে ঐ সময় ছাত্র থাকার কথা বলেন তবে কোন ক্লাসের ছাত্র ছিলেন তা বলেন নাই। তবে ১৯৭৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন এ কথা বলেন। সে মতে,ঐ সময় অর্থাৎ ১৯৭১ সালে মাহবুবুল আলম ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। অথচ তিনি একাত্তর সালে তার বয়স ২০ বছর বলে দাবি করেছেন। এছাড়াও তিনি যৌতুক দন্ড আইনে দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-২ রুহুল আমিন নবীনের বক্তব্য গ্রহনযোগ্য নয়। কারণ তিনি যদিও ৭ মে পারের হাটে উপস্থিতির দাবী করেছিলেন কিন্তু অন্য সাক্ষীর জেরা হতে দেখা যায় ৭ মে এর আগেই তিনি পারের হাট এলাকা ত্যাগ করেছেন। উপরন্তু তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বগি ও সরনখোলা ইউনিটের রেশন অর্থাৎ রশদ সংগ্রহের জন্য সুদুর সুন্দরবন থেকে এসে ২৫/৩০ সের মালামাল কেনা বিশ্বাসযোগ্য নয়। রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিতীয় সাক্ষী রুহুল আমিন নবিনের বিরুদ্ধে বিদ্যুতের মিটার টেম্পারিংয়ের কারণে বিদ্যুৎ চুরির মামলায় জেল খাটার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া তিনি পূবালী ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বরফকল স্থাপন করেন এবং ব্যাংক লোন শোধ না করার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। নথি পত্র হতে দেখা যায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলায় অনার্স পাশ দাবি করলেও তাহাকে অনার্স পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করা হতে বারিত করা হয়েছে, যার কাগজ পত্র আসামী পক্ষ দাখিল করেছে। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সপ্তম সাক্ষী মফিজ উদ্দিন পসারী আদালতে স্বীকার করেছেন তিনি কোনো মুক্তিযোদ্ধা নন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হবার জন্য দরখাস্ত করেছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৮ মোস্তফা হাওলাদার জেরার সময় স্বীকার করেছেন, ভাইয়ের পরিবারে হামলার কারণে তার ভাবী তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। তবে সে মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন। জন্মসনদ অনুযায়ী ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৮ মোস্তফা হাওলাদারের বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। জবানবন্দী শেষে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৮ মোস্তফা হাওলাদারের জেরায় বের হয়ে আসে চুরির মামলায় পিরোজপুর আদালত তাকে তিন মাসের সাজা দেন। সে সাজা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন বলে জানান।

অভিযোগ-৭ ও ৮:

৮ মে ১৯৭১ তারিখ বেলা দেড়টার সময় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম খান সেলিমের পুত্র শহিদুল ইসলাম এর বাড়িতে প্রবেশ করে লুটপাট পূর্বক অগ্নি সংযোগ করে সাঈদী সাহেবরা।

. ৮ মে ১৯৭১, দুপুর ৩টার দিকে পাক সেনাদের নিয়ে মানিক পশারীর বাড়িতে সাঈদী সাহেবের প্রবেশ এবং সেখান থেকে মফিজউদ্দিন ও ইব্রাহিম কুট্টিকে আটক করার পর মানিক পশারীর বাড়িতে লুটপাট ও তার বাড়িতে অগ্নি সংযোগ এবং উল্লেখিত আটক দুই ব্যাক্তিকে নিয়ে এসে পাড়েরহাট বন্দরে ইব্রাহিম কুট্টিকে গুলি করে হত্যা করা এবং মফিজউদ্দিনকে রাজলক্ষী হাইস্কুলের রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে সে পালিয়ে আসে।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে পিরোজপুর আদালতে দায়ের করা মামলার বাদী মানিক পসারী জবানবন্দিতে বলেছেন, ইবরাহিম কুট্টি তাদের কাজের লোক ছিল। ১৯৭১ সালের ৮ মে পাক হানাদার বাহিনী ও মাওলানা সাঈদীসহ রাজাকার এবং শান্তি কমিটির লোকরা তার বাড়িতে হামলা করে। বাড়ির সবাই পালিয়ে গেলে তারা কাজের লোক ইবরাহিমকে ধরে নিয়ে যায় এবং বাড়িতে আগুন দেয়। ইবরাহিমকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পাড়েরহাট বাজারের কাছে ব্রিজের ওপর নিয়ে গুলি করে হত্যা করে পাক সেনারা। এ সময় পাক সেনাদের কানে কানে মাওলানা সাঈদী কি যেন ফিসফিস করে বলছিলেন।

অথচ ইব্রাহিমের স্ত্রীর দায়েরকৃত মামলায় সাঈদীর নাম নেই : মানিক পসারীর এ বক্তব্যের জবাবে সাঈদীর আইনজীবীরা আদালতে একটি হত্যা মামলার এজাহারের কপি পেশ করেন। এ এজাহারটি পিরোজপুর সদর থানায় ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই দায়ের করা হয়। নিহত ইবরাহিমের স্ত্রী মমতাজ বেগম এ এজাহার দায়ের করেন। স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে মমতাজ বেগম তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আমি ও আমার স্বামী ইবরাহিম কুট্টি আমার বাবার বাড়ি পিরোজপুরের বাদুরা গ্রামে বসবাস করি। ১৯৭১ সালের ১ অক্টোবর আমাদের বাড়িতে (ইবরাহিম কুট্টির শ্বশুর বাড়ি) ভোর রাতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা আমার স্বামীকে হত্যা করে এবং আমাকে জখম করে। হামলাকারী ও ইবরাহিমকে হত্যাকারী হিসেবে মমতাজ বেগম ১৩ জন আসামির নাম উল্লেখ করেছেন। এদের মধ্যে দেলাওয়ার হোসেন কিংবা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নামে কেউ নেই। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা আদালতে এ এজাহারের সত্যায়িত কপি আদালতে ও সরকার পক্ষকে দিয়ে বলেন, প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে এই এজাহার। একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে মাওলানা সাঈদীর মতো একজন দেশবরেণ্য আলেমে দ্বীনকে জড়ানোর মতো নোংরা ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। ইবরাহিম কুট্টির মর্মান্তিক হত্যা ঘটনার দায় এখন মাওলানা সাঈদীর ওপর চাপানোর অপকৌশল থেকে সাক্ষী সরকারের সাজানো মিথ্যা বক্তব্য আদালতে দিয়েছেন।

অভিযোগ-৯:

২ জুন ১৯৭১ সালে সকাল ৯টায় সাঈদী সাহেবের নেতৃত্বে পাক সেনারা নলবুনিয়ায় আবদুল হালিম বাবুলের বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট ও অগ্নিসংযোগ করে।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

আব্দুল হালিম বাবুলের সাক্ষ্য ও জবানবন্দী আলোচনা করলে বোঝা যায় যে, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তিনি সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন। তার বক্তব্য মোটেও গ্রহন যোগ্য নয়।এ বিষয়ে তার মামা আব্দুর রাজ্জাক আকন সাঈদী সাহেবের পক্ষে সাক্ষী দিয়ে বলেন যে,তার ভাগ্নে আব্দুল হালিম বাবুল এই ট্রাইব্যুনালে এসে সাঈদী সাহেবের মতো একটি ভাল লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। এই অসত্য সাক্ষ্য দেয়ার কারণে আমার বড় বোন বাবুলের মা ঐ ছেলের ঘর থেকে রাগ করে বেরিয়ে তার দ্বিতীয় ছেলের বাসায় চলে গেছে এবং আমাকে সত্য কথা আদালতে এসে বলার জন্য অনুরোধ করেছে। ৮৫ বছর বয়স এবং অসুস্থ হওয়ার কারণে আমার বোন সাক্ষ্য দিতে আসেনি। সুস্থ থাকলে সে নিজেই আসতো। আব্দুর রাজ্জাক আকন আরো জানান, ১৯৭১ সালে বাবুলের বাড়িতে পাকসেনা, রাজাকাররা যায়নি, কোনো প্রকার লুট হয়নি, কেউ আগুনও দেয়নি।

অভিযোগ-১০:

সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে ১০ নম্বর অভিযোগ হলো- উমদেপুর হিন্দুপাড়ায় প্রবেশ করে ২ জুন ১৯৭১ তারিখে উমদেপুর হিন্দুপাড়ার ২৫টি বাড়ীঘর পুড়িয়ে দিয়ে বিশাবালীকে গুলি করে হত্যা করা।

অভিযোগ-১১:

২ জুন ১৯৭১, পাক সেনাদের সাথে নিয়ে টেংরাখালী গ্রামের মাহবুবুল আলম হাওরাদারের বাড়িতে গমন এবং তার ভাই আব্দুল মজিদ হাওলাদারকে আটক ও নির্যাতন এবং বাড়িতে র্স্বন অলংকার সহ নগদ টাকা লুট ও ভাঙচুর।

[u]অভিযোগ-১৩:[/u]

যুদ্ধ শুরু হওয়ার ২/৩ মাস পরে একদিন পাক সেনাদের সাথে নিয়ে নলবুনিয়া গ্রামের আজহার আলীর বাড়িতে গমন, সেখানে আজহার আলী ও তার ছেলে সাহেব আলীকে নির্যাতনের পর সাহেব আলীকে পিরোজপুরে প্রেরণ এবং সেখানে তার ছেলেকে গুলি করে হত্যা।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

[প্রথমে(৬,৭,৮) প্রকাশিত অভিযোগ গুলোর additional খণ্ডনও আছে]

অভিযোগ ৬,৭,৮,১০,১১ এবং ১৩-এর সমর্থনে রাষ্ট্রপক্ষ সাধারণভাবে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-১ হতে 12 পর্যন্ত, মাহবুবুল আলম হাওলাদার হতে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-১২ এ কে এম এ আউয়ালের বক্তব্যের উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও তদন্তকারী কর্মকর্তা তার তদন্তকালে মানিক পশারী ও আলমগীর পশারীর বাড়ির হতে পোড়া কাঠ ও টিন জব্দ করেছে এবং বিভিন্ন পত্রিকা ও Associates of Palkistan Army in 1971 by Samsul Arefin নামক বইটি দাখিল করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-১ মাহবুবুল আলম হাওলাদারেরে জবান বন্দী অনুযায়ী তিনি ৭ মে ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। সে ২ মে এর ঘটনারও প্রত্যক্ষদর্শী। তার উপস্থিতিতেই মানিক পশারীর বাড়ীর আলামত জব্দ করা হয়। তার জবানবন্দী অনুযায়ী ১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল ২০ বছর। সে সুন্দর বনের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের গোয়েন্দা ছিলেন। সে জেরায় স্বীকার করে ১৯৭১ সালে সে ছাত্র ছিল। ১৯৭৬ এস এস সি পরিক্ষা দিয়েছে।

1. রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-১ মাহবুবুল আলম হাওলাদারের এস এস সি রেজিস্ট্রেশন কার্ড অনুযায়ী তার জন্ম ১৯৫৯ সালে। তার পিঠে পিঠী বড় বোনের জন্ম ১৯৫৭ সালে। কাজেই ১৯৭১ সালে তার বয়স ২০ বছর থাকা গ্রহন যোগ্য নয়। সে জেরায় স্বীকার করে যে তার বাড়ী লুট ও তার বড়ভাইকে নির্যাতনের ঘটনা সে নিজে দেখে নাই। তার বাড়ী লুটের ঘটনা প্রকাশ্য দিবালোকে হওয়া সত্তেও রাষ্ট্রপক্ষ কোন প্রত্যক্ষ্যদর্শী সাক্ষী হাজির করতে পারে নি। তিনি এও স্বীকার করেছেন যে মানিক পশারীর বাড়ীর আলামত ৮ই মে জব্দ করা হয়েছে। অথচ প্রদর্শনী-২ ও ৩ অনুযায়ী মানিক পশারী ও আলমগীর পশারীর বাড়ির আলামত জব্দ করা হয় ১৮-৮-২০১০ তারিখে।

2. মাহবুবুল আলম হাওলাদার দাবী করেন ২ জুন ১৯৭১ তারিখে পাক আর্মি তার বাড়ীতে যাওয়ার ঘটনা সাক্ষী খলিলুর রহমান তাকে জানান। অথচ নথিপত্রে পাওয়া যায় খলিলুর রহমানের জন্ম ১৯৭২ সালে

3. তিনি দাবী করেন সাক্ষী মিজানুর রহমান তালুকদার তাকে ২০-০৭-২০১০ তারিখে তদন্ত সংস্থার অফিসে নিয়ে যান অথচ সাক্ষী মিজানুর রহমান জেরায় বলেন ২০-০১-২০১০ পূর্বে তিনি তদন্তসংস্থার অফিসে যান নাই।

1. ইহা ছাড়াও মাহবুবুল আলম হাওলাদার জেরায় স্বীকার করেন যে পিরোজপুর কোর্টে তার দাখিল করা মামলায় তার ভাইকে নির্বাচনের কথা বলেন নি। তিনি ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর নিকট সাহায্যের আবেদনে তার বাড়ি লুটপাট ও ভাংচুরের কথা বলেন নি। বরং তার ভাইদের কতৃক তার বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন। কাজেই আদালতে তার বক্তব্য কোন ভাবেই গ্রহন যোগ্য নয়। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-২ রুহুল আমীন নবীন ৭ ও ৮ মে এবং ২১ জুনের ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী দাবী করে সাক্ষ্য প্রদান করলেও জেরা ও জবানবন্দী পর্যালোচনায় দেখা যায় যে ৮ মে রৈজুদ্দিন পশারী, সৈজুদ্দিন পশারী ও মানিক পশারীর ৭/৮ টি ঘর লুটপাট করার পর পুড়িয়ে ভস্মীভুত করা হয়। কিন্তু মানিক পশারীর বক্তব্য অনুযায়ী মানিক পশারী, আলমগীর পশারী ও চান মিয়া পশারীর কাচারী ও গোলা ঘর ছাড়া চিথলিয়া গ্রামের অন্য কোন বাড়ী- ঘর পোড়ানো হয় নাই। মানিক পশারীর বাড়ী বিকাল ৩টায় পোড়ানো হয় বলা হলেরও রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষী-২ রুহুল আমীন নবীন তার জেরায় বলেন তিনি মানিক পশারীর বাড়ীতে বেলা ১১টায় আগুন দেখেছেন পাড়েরহাট থেকে। ২ ঘন্টা পর তিনি নিজে গিয়ে ঘটনা দেখেন। তিনি পাড়েরহাটে উপস্থিত থাকলেও মাখনলাল সাহার দোকান লুটের ঘটনা দেখেন নাই।

2. তিনি (রুহুল আমীন নবীন) সুলতান তালুকদারের দোকান দখল করে পাঁচ তহবিলের গোডাউন স্থাপনের কথা বললেও আইও তার জেরায় বলেন ১৯৭১ সুলতান তালুকদার পাড়েরহাটের কোন দোকানের মালিক ছিলেন না। রুহুল আমীন নবীন, মাহবুবুল আলম হাওলাদার, মাহতাব উদ্দিন হাওলাদার এবং আরো অনেক সাক্ষী দাবী করেন যে সাঈদী সাহেব পাড়েরহাটের দোকান ভেঙে তার শ্বশুর বাড়ীতে নিয়া যান। এবং যুদ্ধ শেষ হলে নবীন এবং অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা উদ্ধার করে তাকে ফিরিয়ে দেন। আইও জেরায় বলেন যে মদন সাহা যুদ্ধের সময় দেশ ত্যাগ করে ভারতে যাবার পর আর ফেরত আসে নাই। তাহলে তাকে বাড়ী কিভাবে ফেরত দিলেন?

3. তিনি যুদ্ধের সময় ২১ জুন সুন্দরবনের বগী ও শরনখোলা ক্যাম্পের রসদ সংগ্রহের জন্য পারেরহাটে আসেন অথচ তার কেনা মালের পরিমান ২৫/৩০ সের। এ ছাড়া তিনি সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে পিস কমিটির সদস্য নুরুল হক মৌলভীর নিকট অভিযোগ দেন ইহাও বিশ্বাস যোগ্য নয়।

1. রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৩ মিজানুর রহমান তালুকদার তার জবানবন্দীতে বলেন- মুলত তিনি তার জবানবন্দীতে কোন ঘটনা দেখার কথা বলেন নাই কেননা তিনি ১৭ /১৮ ই মে পর্যন্ত পারেরহাটেই ছিলেন না। এছাড়া তিনি সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে যে সমস্ত বক্তব্য দিয়েছেন তা আই ও এর কাছে বলেন নাই। তিনি মুলত তার ভাই আব্দুল মান্নান তালুকদারকে ধরেনিয়ে নির্যাতন করা এবং চরখালী গ্রামে লুটপাটের কথা বলেছেন। উক্ত ২টি বিষয়ে কোন অভিযোগ গঠন হয়নি। উপরন্তু মান্নান তালুকদারকে এই কারণে নির্যাতন করা হয় যেন তিনি মিজানুর রহমান তালুকদারকে আর্মি দের নিকট তুলে দেন। অথচ মান্নান তালুকদার স্বাধীনতার পুরো সময় বিনা বাধায় পায়ে হেটে অফিস করেছেন। উক্ত মিজান তালুদকদার নাম মাত্র মূল্যে মোহাম্মদ পুরে ফ্ল্যাট পেয়েছেন তাই তাকে বিশ্বাস করা যায় না।

2. রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৪ সুলতান আহমেদ তালুকদার কোন ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী নয় যদিও তিনি তার জবানবন্দীতে ঘটনার আংশিক প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেছেন। বিশাবালীকে তার সামনে হত্যা করে হলেও হত্যা কারী কে তার নাম বলতে পারেন নাই।

1. তিনটি চুরি মামলার আসামী সুলতান আহমদ হাওলাদার রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে। কলা চুরির মামলায় পিরোজপুর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জেল দেন সুলতান আহমদকে। পিরোজপুর জজ আদালত সেই সাজা বহাল রাখেন। হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে মামলাটি।

1. এছাড়া সুলতান আহমদের বিরুদ্ধে ট্রলার চুরির দায়ে অপর দু’টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বরিশালে।

2. সাঈদীর আইনজীবীদের জেরায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৫ মাহতাব উদ্দিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে কাঠ চুরির অভিযোগের বিষয়টি বের হয়ে আসে। জেরার সময় প্রশ্নের মাধ্যমে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী আদালতকে জানান, মাহতাব উদ্দিন ও তার অন্য ভাইয়েরা মিলে টেংরাটিলার শাহাদাত হোসেনের বাড়ি থেকে বিপুল কাঠ চুরি করে। পরে পুলিশের সহায়তায় তার বাড়ি ঘেরাও করে সে কাঠ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত কাঠ মামলার বাদি ও এক নম্বর সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদারের জিম্মায় রাখা হয়। পরে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সে কাঠ শাহাদাত হোসেনকে ফেরত দিয়ে বিষয়টি সুরাহা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-৬ মানিক পশারী জবানবন্দীতে বলেন ৮ মে বেলা ৩ টার সময় পাক আর্মি ও রাজাকাররা তার বাড়ীতে গিয়ে লুটপাট ও অগ্নিংযোগ করে ও তার ফুফাতো ভাই মফিজ পশারি ও তার কাজের লোক ইব্রাহিম কুট্রিকে ধরে নিয়ে যায়। কুট্টিকে হত্যা করে ও মফিজ কে ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে। মফিজ পরে পালায়ে আসে। তার বাড়ীর আগুন দেবার ঘটনা তিনি বাড়ির পাশের জঙ্গলে লুকায়ে দেখেছেন। তিনি আরো জানান ১৮-৮-২০০৯ তারিখে তার বাড়ী থেকে আলামত জব্দ হয়েছে।

3. জেরায় পাওয়া যায় তিনি যে টিভি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাতে তিনি বলেন তার বাড়ী পোড়ার কোন চিহ্নই ছিলনা। তিনি বলেন তার ভাই আলমগীর পশারী তার থেকে ৩০ বছরের ছোট। তাহলে বোঝা গেল ১৯৭১ সালে তার বাড়ি পোড়া তো দুরের কথা তার বাড়ী থাকাই অবাস্তব। একই ভাবে সাক্ষী ১১- আব্দুল জলিলের জবানবন্দীও বিশ্বাস করা যায় না। কেননা তিনিও ১৯৭১ সালে আলমগীর পশারির বাড়ী পুড়তে দেখেছেন। মানিক পশারির ঘটনা দেখার দাবী আরো অযৌক্তিক হইয়ে যায় যখন দেখা যায় যে বাসুদেব মিস্ত্রি বলেন মানিক পশারীর বাড়ীর সকল সদস্য সকাল ৮টার সময় বাড়ী ছেড়ে চলে যায়। আলামত জব্দের কাহিনী তুলনা মূলক বিচারে দেখা যায় যে প্রদর্শনী-২ ও ৩ অনুযায়ী আলামত উদ্ধার হয়েছে বেলা ১১টার সময় চিথলিয়া মানিক পশারীর বাড়ী থেকে। তার জেরায় বলেন যে ১৮ তারিখে তিনি ১২টা ৫৫ মিনিটের পুর্বে ঐ গ্রামে যান নাই। তাই আলামত উদ্ধারের কাহিনী কল্পনা প্রসুত।

4. সাক্ষী মফিজ উদ্দিন পশারী ট্রাইবুনালে সাক্ষ্য দানকালে নিজেকে প্রত্যক্ষদর্শী দাবী করলেও তিনি পিরোজপুর আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দেয়া জবান বন্দীতে বলেন, ইব্রাহিম কুট্টি কিভাবে কোথায় মারা যান তা তিনি দেখেন নি। সুতরাং মানিক পশারীর বাড়ীর যে ঘটনার বর্ননা দেয়া হয়েছে তার কোন প্রত্যক্ষ্যদর্শী সাক্ষী নাই। ঘটনা বাণোয়াট।

5. ডিফেন্স প্রদর্শনী থেকে দেখা যায় যে ইব্রাহিম কুট্টিকে নলবুনিয়ায় তার শশুর বাড়ীতে হত্যা করা হয়। এবং ঐ সময়ই সাহেব আলীকে ধরে পিরোজপুর আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং হত্যা করে। এই ঘটনার অভিযোগকারী আর কেউ নয় ইব্রাহিম কুট্রির স্ত্রী মমতাজ বেগম এই বিষয়ে ৭২ সালে একটি মামলা করে এজাহার দায়েরের পর চার্জশিট হলেও কোথাও সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ ছিলনা। বিশাবালীর ভাই সুকাবালীকে সরকার অপহরন করে নিয়ে যায়।

অভিযোগ-১৪:

যুদ্ধ শেষের দিকের কোন একদিন ৫০/৬০ জন রাজাকারের বাহিনী নিয়ে হোগলাবুনিয়া গ্রামের হিন্দুপাড়ায় গমন, সেখানে মধুসুদন ঘরামীর স্ত্রী শেফালী ঘরামীকে জনৈক রাজাকার কর্তৃক ধর্ষণ ও তাতে বাধা না দেয়া, পরবর্তীতে হোগলাবুনিয়া গ্রামের হিন্দুপাড়া হিন্দুদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর তাকে যুদ্ধের শেষের দিকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

*অথচ মধুসুধন ঘরামীর বক্তব্য অনুযায়ী শেফালী ঘরামী অগ্রাহায়ন মাসে কন্যা সন্তান প্রসব করে

*সাক্ষী গৌরাং কে বিশ্বাস করার কোন কারন নাই। তিনি তার ভাই-বোন ও সন্তানদের কোন খোজ খবর রাখে না। অথচ ৪০ বছর পর তাদের বিচারের জন্য আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। স্বাধীনতার শেষ দিকে তিনি পালিয়ে যশোরে রওশনের বাড়ীতে থাকতেন।

অভিযোগ-১২ ও ১৫

মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের রাজাকার দল হোগলাবুনিয়া গ্রামের ১৪ জন হিন্দু নাগরিককে ধরে। পাকিস্তানি সেনারা এদের সবাইকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

হোগলাবুনিয়া হিন্দু পাড়ায় অগ্নিসংযোগ এবং হত্যা এ বিষয়ে কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নাই। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-২৩ বলেন তিনি ঘটনা দেখেননি, শুনেছেন। তবে কে ঘটনা ঘটিয়েছেন তা তিনি জানেন না।

অভিযোগ-১৬:

যুদ্ধ শেষের দিকের কোন একদিন ১০/১২ জন রাজাকারের বাহিনী নিয়ে পাড়েহাট বাজারের গৌরাঙ্গ সাহার বাড়িতে গমন, সেখানে তার ৩ বোন মহামায়া, অন্নরানী ও কমলা রানীকে আটক করে পিরোজপুরে পাক সেনাদের ক্যাম্পে প্রেরণ এবং সেখানে তাদেরকে ৩ দিন আটকে রেখে ধর্ষন।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

গৌরাঙ্গ কে বিশ্বাস করার কোন কারন নাই। তার তিন বোন তার চেয়ে ছোট ছিল, অথচ তার জন্ম ১৯৬৩ সালে। ইহার সমর্থনে রাষ্ট্রপক্ষের ডকুমেন্ড থেকে দেখা যায় পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলায় কোন ধর্ষণের শিকার নারী নাই। উপরন্তু সে সাক্ষী দেবারপর সেফ হাউজে যাবার পর মিষ্টি খেতে চান। এবং তাকে মিষ্টি খাওয়ানো হয়

অভিযোগ-১৭:

যুদ্ধচলাকালে পাড়েরহাট বাজারের বিপদ সাহার মেয়ে ভানু সাহাকে আরো কিছু রাজাকার সাথে নিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করা।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

এ বক্তব্য সম্পূর্ণ অগ্রহনযোগ্য কারণ রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-২ রুহুল আমীন নবীন বলেন যে পাকিস্তানী বাহিনী ভানুসাহাকে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন। সবচেয়ে বড় কথা সে আল্লামা সাঈদীকে আদালতে চিনতেই পারেনি। মাহতাব সাক্ষীর জেরায় বের হয় যে ওলামা লীগের মোসলেম উদ্দিন মাওলানা সবসময় ভানু সাহার সহিত থাকতেন!!!!

অভিযোগ-১৮:

যুদ্ধকালে ভাগীরথী পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে কাজ করতেন। সাঈদী এক দিন খবর দেন, ভাগীরথী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত নানা খবরাখবর দেন। পাকিস্তানি সেনারা তাঁকে হত্যা করে লাশ বলেশ্বর নদে ফেলে দেয়।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

এ অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নাই। এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গত ২৩ অক্টোবর এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার অবতারণা হয়। গণেশচন্দ্র সাহা নামে রাষ্ট্রপক্ষের এক সাক্ষী সাক্ষ্য দেন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে। তিনি ১৯৭১ সালে পিরোজপুরে বর্বরোচিত হত্যার শিকার ভাগীরথী সাহার ছেলে। গণেশচন্দ্র সাহা শুধু যে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী,তাই নয়। যে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন,সেই ১৫ জনেরও একজন তিনি। যে ভাগীরথীকে হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে,সেই ভাগীরথী সাহার ছেলে এসে সাক্ষ্য দিলেন মাওলানা সাঈদীর পক্ষে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় আদালতকে জানান, মাওলানা সাঈদী তার মাকে মারেননি।

অভিযোগ-১৯:

যুদ্ধচলাকালে সাঈদী প্রভাব খাটিয়ে পারেরহাটসহ অন্য গ্রামের ১০০-১৫০ জন হিন্দুকে ইসলাম ধর্মে রূপান্তর করে। তাঁদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে বাধ্য করা হতো।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

এক্ষেত্রে যারা নিজেদেরকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরের দাবী করেন তার কেউ সংশ্লিষ্ট মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন কে চেনেন না। এ ছাড়াও তদন্তকারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট মসজিদের কোন মুসল্লিকে সাক্ষী করেন নাই।

অভিযোগ-২০:

নভেম্বরের শেষ দিকে সাঈদী খবর পান সাধারণ মানুষ ভারতে পালিয়ে যাচ্ছে। তাঁর নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র দল পরিকল্পিতভাবে ইন্দুরকানি গ্রামের তালুকদার বাড়িতে আক্রমণ চালায়। ৮৫ জন ব্যক্তিকে আটক করে তাঁদের কাছ থেকে মালামাল কেড়ে নেওয়া হয়। ১০-১২ জন বাদ দিয়ে বাকিদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের মুখে চুনকালিঃ

রাজাকার থাকা, ঘরজামাই থাকা, তেল, নুন,লবন বিক্রি করা ইত্যাদির জবাব: রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী -১৩ বলেন সাঈদী সাহেব পাড়েরহাটে ভাড়া থাকতেন। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-২৮ এর জেরায় পাওয়া যায় যে সাঈদী সাহেব সাহব স্বাধিনতার পুর্ব থেকেই তফসির করতেন। এম এ হাসানের তালিকায় সাঈদী সাহেবকে রাজাকার বলা হয়। তালিকা প্রস্তুকারীকে সাক্ষী করা হয় নাই। এই তালিকায় পিস কমিটির তালিকায় পিস কমিটির চেয়ারম্যানেরও নাম নাই। রাজাকার লিষ্টেও অনেক কুখ্যাত রাজাকারদের নাম নাই। এই তালিকা তদন্তকারী কর্মকর্তা যাচাইয়ের দাবি করলেও জেরায় জানা যায় ১৭-০৮-২০১০ তারিখে তিনি এই তালিকাটি পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের নিকট থেকে যাচাই করেন। অথচ অন্য এক জায়গায় বলেন তিনি ১৮-৮-২০১০ তারিখে সর্ব প্রথম পিরোজপুরে যান। যশোরে পালিয়ে থাকার বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ডকুমেন্ট থেকে ৪ ধরনের কথা পাওয়া যায়: ১। রওশনের বাড়ীতে ছিলেন। ২। যশোর কালেক্টরের রশিদ মিয়ার বাড়ীতে ছিলেন। । খুলনায় ছিলেন। ৪। ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত সাউথখালীতে পালিয়ে যায়। (পিরোজপুর এসবি রিপোর্ট) ৫। সৌদি আরবে পালিয়ে যায়। ডিফেন্স বক্তব্যঃ ১৯৭৩ সালে ঢাকার আর্মানি টোলা মাঠে তাফসির করেন। ১৯৭৪ সালে মতিঝিলের পি এন্ড টি কলোনী মাঠে তাফসির করেন। ১৯৭৫ সালে তাকে সরকার গ্রেপ্তার করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি হজ্জ করেন। নিজ ঠিকানা থেকে পাসপোর্ট ও করেন। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী-১০ তার জেরায় বলেন যে সকাল বেলা তিনি মানিক পশারীর বাড়িতে আগুন দেখেন।

সাঈদীর পক্ষের সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীকে ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে অপহরণ সুখরঞ্জন বালী নামে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষের একজন সাক্ষীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে অপহরণ করে ডিবি পুলিশের লোকজন। তিনি ছিলেন মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের তালিকাভুক্ত সাক্ষী। ৫ নভেম্বর, ২০১২ সোমবার তিনি এসেছিলেন ট্রাইব্যুনালে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে। সাক্ষ্য দিতে আসার সময় ট্রাইব্যুনালের প্রবেশপথে তাকে ডিবি পুলিশের লোকজন ধরে নিয়ে যায়। মাওলানা সাঈদী পক্ষের আইনজীবীরা এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন সাক্ষীকে ধরে নিয়ে পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় তাকে থাপ্পড় মেরেছে ডিবি পুলিশের লোকজন। সুখরঞ্জন বালী রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে ঢাকা এসেছিলেন। সুখরঞ্জন বালী টিভিতে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন, “আমার ভাই ১৯৭১ এ শহীদ হয়েছে। আমাকে সেফহোমে আদালতের লোকজন কিছু কথা শিখিয়ে দিতে চেয়েছে, কিন্তু আমি বলেছি যে, না আমি মিথ্যা কথা বলতে পারবো না আমি সত্য বলতে চাই”। তার এ জবানবন্দী ইন্টারনেটে ভিডিওসহ আছে। উল্লেখ্য, সুখরঞ্জন বালী এখনো নিখোঁজ। তাকে গুম করা হয়েছে ধারণা করছে তার শংকিত পরিবার।

জীবিত থাকাকালে সুখরঞ্জন বালীর সাক্ষাতকার Exclusive

এছাড়াও ঘুরে আসুন এখানে : আসুন দেখি সাইদীর বিচার কতটা ফেয়ার এন্ড লাভলী মার্কা ফেয়ার

বিষয়: বিবিধ

২৪২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File