ক্ষমতা মানুষকে অন্ধ করে
লিখেছেন লিখেছেন মাওহিবা তাকিয়া ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৪:৪৪:৪৯ বিকাল
ক্ষমতা মানুষকে অন্ধ করে। শেখ মুজিবকেও তা করেছিল। শেখ হাসিনাকেও।
রাষ্ট্র এখন তেমন এক অন্ধকারাচ্ছন্ন জংশনে পৌঁছে গেছে। শেখ হাসিনা দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, প্রায় অনির্বাচিত লোকদের নিয়ে এক সরকার গঠন করেছেন। আর তার মুখপাত্র একাধিক ‘অশিক্ষিত’ লোক, যাদের কোনো পরিমিতি বোধ নেই। সম্ভবত তার বিবেচনায় সেটা থাকারও দরকার নেই। যেমন হালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম খা আলমগীরের সংসদ সদস্যপদ যায় কি যায় না এমন অবস্থায় তিনি মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। যদি আদালত যথাযথ বিচার করতে পারতেন তাহলে ইতোমধ্যে ম খা আলমগীরের সংসদ সদস্যপদ বাতিল হতো। কিন্তু তিনি আদালতের রায়ের আগে প্রধান বিচারপতির সাথে সাক্ষাৎ করে কী একান্ত আলাপ করলেন, সেটি প্রকাশিত হয়নি। তিনি সংসদ সদস্যপদে বহাল আছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে তিনি কাণ্ডজ্ঞান একেবারেই হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেছেন, জামায়াত-শিবিরকে প্রতিরোধের জন্য ছাত্রলীগ, যুবলীগকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে। সর্বশেষ বলেছেন, জামায়াত-শিবির প্রতিরোধে পাড়ায়, মহল্লায় স্কোয়াড গড়ে তুলে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে। এই ‘ভদ্রলোক’কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলা যায়? একে বলতে হয় সন্ত্রাসীদের গডফাদার। তিনি যেন জানেন না যে, তার ছাত্রলীগ কী করে। পাড়ায়, মহল্লায় প্রতিরোধ গড়তে গিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর যে নির্যাতন নেমে আসবে, যে কাউকেই জামায়াত-শিবির আখ্যায়িত করে যে পুলিশে সোপর্দ করা হবে না, তা নিয়ে যে বাণিজ্য হবে না, তার গ্যারান্টি কী? এটা কী তার মূর্খতার নিদর্শন নয়?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ সভায় ঘুমিয়ে থাকেন। সে ছবি ছাপা হয়েছে ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আরো কে এক মন্ত্রী, তারা ঘুমোচ্ছিলেন। পিকেএসএফ কর্ণধার আওয়ামী ঘরানার আপনজন ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমাদ বক্তৃতা করছিলেন। খলিকুজ্জামানের সাথে আমি টেলিভিশনে অনেক প্রোগ্রাম করেছি। সন্দেহ নেই, তিনি অতি ভদ্রলোক। কিন্তু সেখানে দেখলাম সব মন্ত্রীই ঘুমিয়ে আছেন, যাদের উদ্দেশে তিনি বক্তৃতা করছিলেন। সে রকম একজন মন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম খা।
কখনো কখনো মনে হয়, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সমাজের ভেতরে এ ধরনের অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে, যাতে দেশ অনিবার্যভাবে সঙ্ঘাতের দিকে যায়। সে ক্ষেত্রে সব দায় বিরোধীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া সম্ভব, কিংবা জামায়াতে ইসলামী নির্মূলের নামে তাদের কঠোর অবস্থানের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সাথে সরকারের সম্পর্ক এখন হিমশীতল। যদি জামায়াতে ইসলামীকে কঠোর অবস্থানের দিকে ঠেলে দেয়া যায়, তবে পশ্চিমা দেশগুলোকে বলা যাবে যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখলে তারা এ জঙ্গিবাদ নির্মূল করে দিতে পারবে। অতএব পশ্চিমারা যেন আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে যায়। এসব অপকৌশল সফল হবে কি না বলা মুশকিল। তবে তাতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠতে বাধ্য। আর সে ক্ষেত্রে জনতার প্রতিরোধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবেই। জনতার প্রতিরোধের সামনে শেষ পর্যন্ত কোনো স্বৈরশাসকই কোনো দিন টিকতে পারেনি। এরাও পারবে না।
বিষয়: বিবিধ
১২৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন