আসিফ নজরুলরা জাতি বিভাজনের দায় এড়াতে পারবেনকি?
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তবাতাস ১৪ মার্চ, ২০১৩, ০২:২৫:০৫ রাত
আসিফ নজরুলকে আমি ব্যাক্তিগত ভেবে শ্রদ্ধা করি তার সাহসী বক্তব্যের জন্য। বিনয়ের সাথে বলতে চাই আপনার কলামে যে ধংসযজ্ঞের শেষ জানতে চেয়েছেন তার সুচনা তো আপনারাই করেছেন।
নব্বই এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দলনের মাধ্যমে যে গনতন্ত্রের সুচনা তার অন্যতম অংশিদার ছিল জামাত। নির্বাচন পরবর্তী যে সুস্থ গনতান্ত্রিক আবহের সৃষ্টি হয় তারই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখি আওয়ামিলীগের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর অধ্যাপক গোলাম আজমের সাথে সাক্ষাৎ। আমরা দেখতে পাই সব দলের সম্মিলিত ভোটে সংসদীয় গনতন্ত্রের পুনরুদ্ধার। জাতি তখন আশায় বুক বেধেছিল সুন্দর ভবিষ্যতের।
কিন্তু জাতির কাল হল ইসলাম পন্থি তথা জামাতকে পসন্দ করায়। যে ইসলামের দীপ শিখাকে আপনারা স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ফুঁৎকারে নিভিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তারই প্রজ্জলিত শিখা আপনাদের হিতাহিত জ্ঞান শুন্য করে দিল। গনতন্ত্রের সমস্ত শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে ও বিচার বাবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাস্তায় বসালেন গণআদালত। আর ৩০ লক্ষ শহীদের সাথে তামাশা করে নেত্রী বানালেন এমন একজনকে যিনি কিনা পাকিস্তান রেডিওতে সৈরাচারের সাফাই গেয়েছেন পুরোটি স্বাধীনতার সময়। স্বাধীনতার ধারক বাহক বনে গেলেন পাকিস্তান আর্মি তে মুরগী সাপ্লাইকারি আর যুদ্ধের সময়ও যারা পাকিস্তান সরকারের বেতন খেয়েছেন তারা। ও হা একটি জায়গায় অবশ্য আপনাদের সবার মিল ছিল। আপনারা সবাই ছিলেন বামপন্থি আর কেউবা স্বঘোষিত নাস্তিক। আপনারা বিচার চাননি ১৯৫ জন চিণ্হিত যুদ্ধাপরাধীর। এমনকি যে ৩৪০০০ ব্যাক্তিকে দালাল আইনে আটক করা হয়েছিলো তাদের একজনেরও না। বিচার চাইলেন জামাত নেতাদের। এমনকি ৭১ এ যার মুক্তিযুদ্ধ বা জামাতের সাথে দুরতম সম্পর্কও ছিলোনা সেই মাওলানা দেলওার হোসাইন সাঈদীকেও যুদ্ধাপরাধী বানিয়ে দিলেন শুধুমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার জন্য। অন্যদিকে কুখ্যাত রাজাকারকে আওয়ামীলীগ মন্ত্রী বানালেও আপনাদের কোন প্রতিবাদ আমরা শুনিনি। এর একমাত্র কারন হচ্ছে ইসলামী আদর্শের প্রতি ঘৃণা আর আপনাদের আদর্শিক দৈন্যতা। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন “যতটা ঘৃণা তাদের মুখে তার থেকে বেশী ঘৃণা তাদের বুকে”(সুরা আলে ইমরান ১১৮)
এই ঘৃণার যে বিষ বৃক্ষ আপনারা রোপণ করেছিলেন বিশ বছরে তাই আজ ফ্রাঙ্কেস্টাইন হয়ে জাতিকে বিভক্তির চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এমনকি তাদের অপ্রিয় কথা বলায় আপনাকেও তারা স্বাধীনতা বিরোধী বলতে দ্বিধা করছেনা। এর দায় কি আপনাদের ওপরও পড়েনা?
আর জামাত কে তো আমরা এর মোকাবেলায় দায়িত্বশীল ও সহনশীল আচরণ করতে দেখেছি। তারাতো কখনই বলেনি তারা যে আশঙ্কা করেছিল স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তারই বাস্তব প্রতিফলন জাতি দেখেছে ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত। যেখানে ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে আইন করে ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম থেকে আল্লাহর কালামকে মুছে দেয়া হয়েছিলো। ইসলামের নামগন্ধ পর্যন্ত সহ্য করা হয়নি। যার প্রমান কাজী নজরুল ইসলাম একাডেমী থেকে ইসলাম শব্দ কেটে নজরুল একাডেমী রাখা। বরং জামাত যখন ক্ষমতার অংশিদার ছিল তখন তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখিয়েছে। ৯৬ এ আওয়ামীলীগের সাথে যুগপৎ আন্দোলন করেছে জাতীয় সংহতির আশায়। আপনি আজ যে জাতি বিভক্তির কথা বলছেন জামাত সেই আশংকার কথা বলে আসছে গত বিশটি বছর ধরে।
আর আপনারা ঘৃণার বিষ বাষ্প ছড়িয়েছেন গত বিশটি বছর। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির নামে ফাটল ধরিয়েছেন জাতীয় ঐক্যে। সেই নাৎসিবাদী উগ্র জাতীয়তার কালো ছায়া আজ বাংলার আকাশে। এই উগ্র জাতীয়তার বিষ বাষ্পে হাজার হাজার মুসলমান আজ গোমরাহির পথে। প্রিয় নবীর বিদ্রুপ কারীর পক্ষ নিতেও তাই তাদের অন্তর কাঁপেনা।
কিন্তু আল্লাহ আপনাদের ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দিয়েছেন। যেমনটি আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন ‘‘তারা আল্লাহর বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করে, আল্লাহ ও তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করেন। নিশ্চয় আল্লাহ মহা পরিকল্পনা কারি’’। ( সুরা আলে ইমরান ৫৪ )
ইসলাম প্রিয় তৌহীদী জনতা আজ ফুঁসে উঠেছে এই ধর্ম বিদ্ধেষী আর তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে। তাদের রোখার সাধ্য কারো নেই। শুনে নিন আল্লাহর ওয়াদা “তারা আল্লাহর দ্বীনের আলোকে ফুঁৎকারে নিভিয়ে দিতে চায় কিন্তু আল্লাহ তার দ্বীনের আলোকে প্রজ্জলিত রাখেন যদিও মুশরিকরা অপসন্দ করে”। ( সুরা আল সফ ৮ )
বিষয়: বিবিধ
১৯৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন