সেই একই ভুল, তবে ফলাফল ভিন্ন ও কঠিন,

লিখেছেন লিখেছেন মুক্তবাতাস ২৮ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৯:৪০:২৭ সকাল

১৯৪০ সালে জামায়াতে ইসলামী একটি সংগঠন হিসেবে পাকভারত উপমহাদেশে পথ চলা শুরু করে, যার মুলুত উদ্দেশ্য ছিল একদল মানুষ তৈরি করা যারা ইসলামকে ভালবেশে নিজেদেরকে একজন পুর্ন মুসলিম হিসেবে দেশের জন্য কাজ করবেন, তাই নিজেদের আইডোলজি হিসেবে ইসলাম কে বেছে নেয়, শুরু হল বাতিলের সাথে যুদ্ধ, কারণ তৎকালীন মুসলিম নেতারা নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে ঘোষণা দিলেন , তবে একজন মুসলিমের মত ইসলাম কে মেনে ছলতেন না, জামায়াতে ইসলামী যখন এসব দুমুখি চরিত্রের বিরুদ্ধে বলা শুরু করল তখন ই দেখা দিল বিপত্তি। জামাত হয়ে গেল সবার চোখের শর্শে ফুল, কিন্তু জামাত এসবের দিকে না তাকিয়ে তাদের সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যেতে লাগল, খুব কম সময়ের মধ্যে উচ্চ শিক্ষিত মানুষের মধ্যে নিজেদের একটি অবস্থান পেয়ে গেল, ব্রিটিশ বিরুধি আন্দোলন সহ সব কিছু জনগনের কাছে তুলে ধরল, এই ভাবে সমাজের সব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে,

৪৭ এ যখন দেশ ভাগ হয়ে পাকিস্তান ও ভারত নামে ২ দেশ করার সিদ্ধান্ত হয়, জামায়াতে ইসলামী এই বিভাজনের পক্ষে চিলনা, পাকিস্থান মুসলিম ও ইসলামের নামে দেশ ভাগ করতে এগিয়ে গেল কারণ ভারতিয় হিন্দুরা দাঙ্গার মাধ্যমে কয়েক হাজার মুসলিম হত্যা করে , যার কারণ এই দুই জাতি এক সাথে থাকা সম্ভব নয়, ব্রিটিশরা এই সুযোগ কাজে লাগালো, মুসলিমের হাত থেকে ওরা ভারত দখল করেছিল, কিন্তু মুসলিমের হাতে সারা ভারত না দিয়ে একটি দাঙ্গা লাগিয়ে ওরা বিধায় হল, জামায়াতে ইসলামী কিছু সারা ভারত এক রাখার পক্ষে ছিল এই কারনে যে সারা ভারত ছিল মুসলিমের , তাই ভারত এক রেখে ইসলামের কাজ করা সহজ হবে, কিন্তু দেশের মেক্সিমাম মানুষ ভাগের পক্ষে , জামায়াতে ইসলামী দেশ ভাগের বিরুধিতা করে কংগ্রেসকে সাপোর্ট করেছিল,তবে শেষ পর্যন্ত ৪৭ এ পাকিস্থানের জন্ম হল, তখন জামায়াতে ইসলামী ও স্বাভাবিক ভাবে ই নিজেদের কে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্থান ও ভারতের জন্য জামায়াতে ইসলামী হিন্দ নামে ভাগে হয়ে কাজ করতে লাগল, কিন্তু জামায়াতে ইসলামী পাকিস্থানেক কখনও পাকিস্থানের স্বাধীনতা বিরুধি বলেনি কেউ, জামায়াত এখন আর নতুন উদ্দ্যেমে কাজ চালাতে লাগল,

এখন শুরু হল দেশের একদিকে সরকার ও ওপর দিকে ধর্মনিরেপেক্ষ , বামদের সাথে জামায়াতে ইসলামীর আদর্শিক লড়াই, এত দিন ছিল ভারত ভাগের পক্ষে বিপক্ষে নিয়ে , তাই কারো সাথে আদর্শিক সমস্যা হয়নি, জামায়াত যে আইডলজি নিজদের উদ্দেশ্য হিসেবে নিয়েছে , সেই আইডলজির বিরুদ্ধে সেই ১৫০০ বছর আগে থেকে ই আবু জেহেলের উত্তরসূরি যুদ্ধ করে আসছে, যে নেতারা দেশ ভাগ করলেন ইসলামের নামে, সেই নেতারা নামাজ , কালাম না করে , ইসলামকে অনুসারি না হয়ে কিভাবে দেশের মানুষকে ইসলামী রাষ্ট্র দেবেন? জামায়াতের পক্ষ থেকে যখন এসবের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ভাবে কথা বলা শুরু হল দেশের সরকার ও বামপন্থি রা হয়ে গেল শত্রু, সরকার জামায়াতের উপর চালাল স্টিম রুরাল, সেই সাথে আওয়ামীলীগ ও বাম পন্থিরা শুরু করল মিছিল, মিটিং্যে আক্রমন , ৬৫ সালে পল্টনে জামায়াতের প্রোগ্রামে আওয়ামীলীগ, ও বাম পন্তিরা আক্রমন করে ভঙ্গ করে দেয় সমাবেশ, কয়েকজন কর্মি কে শহীদ করে দেয়, কিন্তু জামায়েত ইসলামীর পক্ষ থেকে আর বিচার ছাওয়ার মত কেউ ছিলনা, কারণ সরকার ও তাদের আদর্শিক বিরুধি, সরকার এই বিরুধিতা এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল, যে সাজানো মামালায় জামায়াতে ইসলামীর আমিরে আ'লা কে ফাসির অর্ডার দিয়ে দেয়, পড়ে বিশ্ব মুসলিমদের কারনে তা বাস্তবায়ন না করে উনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় জালিম সরকার, পাকিস্থানের ২৩ বছরে জামায়াতের সাথে কোন সরকারের ই সম্পর্ক ভালো ছিলনা, জামায়াত হল ইসলাম কে কেন্দ্র করে একটি দল, আর অন্যরা ইসলামকে ব্যবহার করে নিজেরা ক্ষমতায় থাকতে চায়, যার কারনে এই ২ পন্তি বিশ্বাসী একে অপরের সাথে চলতে পারেনি,

৭০ নির্বাচনে যখন নিখিল পাকিস্তানে আওয়ামীলীগ জয় লাভ করল, সরকারের খামখেয়ালির কারনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সময় ক্ষেপন করার বিরুদ্ধে আবার আওয়ামীলীগ, জামায়াতে ইসলামী তৎকালীন ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে আন্দুলোন করে, কিন্তু ইয়াহিয়া ক্ষমতা থেকে সরে গিয়ে আওয়ামিলিগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে আলী ভূট্টোর কাছে ক্ষমতা দিয়ে সরে দাড়ায়, তারপর ও চলতে থাকে মিটিং, কিন্তু কোন সমাধান হয়নি, আর সকল আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী অগ্রনি ভুমিকা রাখে, জামায়াত নিজেরা সমাবেশ করে সরকারকে আওয়ামিলিগের হাতে ক্ষমতা দেয়ার আহবান ও করে, ২৫শে মার্চ যখন পাকিস্থানি সামরিক জান্তা পুর্ব পাকিস্তানে অভিযান শুরু করেন তার ফল হিসেবে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের ঘোষণা দিয়ে পুর্ব পাকিস্তানের আপমর জনতা এগিয়ে আসে ,শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ,

ঠিক এই মুহুর্থে জামায়াতে ইসলামী জরুরী বৈঠক করে তাদের কেন্দ্র পুর্ব পাকিস্থানের জামায়াত কে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দেয়, তখন বলা হয় আপনারা ইচ্ছা করলে স্বাধীনতার পক্ষে বা বিপক্ষে যেতে পারেন , তখন পূর্ব পাকিস্থানের সবাই বসে সার্বিক অবস্থা চিন্তা করে ভারতীয় আগ্রাসনের কথা চিন্তা করে এক পাকিসতানের পক্ষে থাকতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, কারণ ভারত আমাদের ৩ দিকে ঘিরে আছে, ওরা যেভাবে হায়দারাবাদ দখল করে ভারতের অংশ করে নেয়, তেমনি যদি পুরর পাকিস্তানেক ও দখল করে নিতে পারে এই আশংখায় পাকিস্থানের পক্ষে থাকতে এক মত হন, তখন যেমন মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী, পূর্বপাকিস্থান সমাজতান্ত্রিকদল ও এই একই আশংকায় পাকিস্থানের পক্কে ছিল, যে সরকার জামায়াতে ইসলামী কে সয্য করতে পারেনি, সেই সরকার কে জামায়াতে ইসলামী কেন সাহায্য করছে, শুদু ভারতের কথা ভেবে, এবং এই আশংকায় যে যদি ভারতের অংশ হয়ে যায় তাহলে মুসলিম হিসেবে নিজেদের ২য় শ্রেনির নাগরিক হিসেবে ভারতিয়দের অধিনে থাকতে হবে, এখানে ইসলামকে রক্ষার করা জন্য পাকিস্থানি বাহিনিকে সাপোর্ট করা হয় নি, কারণ জামায়াতে ইসলামীর সাথে অন্যদের আদর্শিক সমস্যা ছিল, যা আগে ই বলেছি, যারা বলে জামায়াতে ইসলামী , ইসলামের নামে যুদ্ধের বিরুধিতা করেছেন উনারা ভুল বলছেন, না জেনে সত্য প্রকাশ করছেন না রাজনৈতিক সুবিধার কারনে, জামায়ত ইতিহাসের আর এক ভুল করল, ( আজ এটা ভূল ভাবলে ও ঐ সময় হয়তু সঠিক ভেবেছিলেন, তবে আজকের ভারতের আগ্রানের অবস্থা ই বলে দেয় উনাদের ভাবনা সঠিক ছিল, ৭৫ সালের পটভুমি পরিবর্তন না হলে হয়তু তাদের আশংখা সঠিক হত আর ও আগে )

৪৭ এ এক ভারতের পক্ষে থাকার পর ও কেউ পাকিস্থানের স্বাধীনতা বিরুধি না বললে ও ৭১ এ এক পাকিস্তানের পক্ষে থাকায় আজ কেন স্বাধীনতা বিরুধি বলা হবে ? জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান তাদের কর্মিদের স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দিয়েছিল। কেউ মুক্তিযুদ্ধে যেতে ছাইলে ও বাধা নাই আবার পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করলে ও কিছু বলা হবেনা, এটা ইমার্জেন্সি সময় যে যা ভাল মনে করেন তা করতে পারেন, তাইতু দেখেই জামায়াতে ইসলামী অনেক আছেন যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, আবার অনেকে নিস্কিয় ছিলেন, কিন্তু কেউ কলাকাতার হোটেলে যুদ্ধ করেন নি, বা যুদ্ধের পড়ে দেশে আসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারি হননি, ( এখানে উদাহরন দিতে পারি আমার চাচাত ভাই যিনি মুক্তি যুদ্ধে শহীদ হয়ছিলেন, তিনি ছিলেন তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠনের কর্মি, ছোট বেলায় শুদু শুনেছি উনি শহীদ হয়েছেন, আমার বয়স যখন ২০ এর উপরে তখন জানতে পারি আসলে উনি জামায়াত করতেন, এই ভাবে হয়তু অনেকে ই মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন,)

কিন্তু দুর্ভাগ্য এই যে, জামায়াত প্রচার বিমুখ হওয়ার কারনে কেন তারা এক পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন, আবার তাদের কত কর্মি যে মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন, আবার সেই সময় কারা দেশের ভিতর মানবতাবিরুধি কাজ করেছে তা জনগনকে জানাতে ব্যর্থ হয়েছে, যদি না আজকের এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারি সরকার অবৈধ ট্রাইব্যুনাল না বানাত তাহেল হয়তু এই দেশের মানুষ জানতে ই পারতনা কারা কারা স্বাধীনতা বিরুধি ছিল আর তাদেরকে কে পনর্বাসন করেছিলেন, জামায়াতের উচিত ছিল জাতির সামনে সব কিছু তুলে ধরা, কেন উনারা পাকিস্থানের পক্কে ছিলেন আর কারা কিভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, জামায়াত ইসলামের জন্য পাকিস্তানের পক্কে যায়নি, পাকিস্তানের পক্ষে যাওয়ার একমাত্র কারণ ভারতের আগ্রাসনের ভয়, যারা আজ বলে জামায়াত ইসলামের নামে রাজনীতি করে তাদের জেনে রাখা উচিত জামায়াত যেদিন তাদের আদর্শ হিসেবে ইসলাম বেছে নিয়েছে সেই দিন থেকে ই বাতিল শক্তি তাদের বিরুদ্ধে আছে, আর থাকবে, ওরা একেক সময় একে ভাবে আসে ইসলামের উপর আঘাত হানবে, আর কিয়ামত পর্যন্ত এই ভাবে ই চলবে, , , , ,

বিষয়: বিবিধ

১৩৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File