আমাদের মুক্তিযুদ্ধে চীনাবাদামদের ভূমিকা থেকে কিয়দাংশ By Muzahidul Islam Timu
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তবাতাস ২৩ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৮:২১:০১ সকাল
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ যদিও একটা অধিকার আদায়ের সংগ্রাম ,জুলুমের বিরুদ্ধে মজলুমের সংগ্রাম ও একটি মুক্তির জন্য যুদ্ধ ছিল ,তথাপি এই যুদ্ধটির একটি আন্তর্জাতিক রূপ ছিল ।সোভিয়েত রাশিয়া ,চীন ,ভারত ,আম্রিকা সহ প্রায় সকল নেতা ও পাতিদেশের সু এবং কু নজর ছিল এই যুদ্ধকে ঘিরে ।
(আমি নিম্মে চীনাবাদামদের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা নিয়ে কিছু লিখবো ।সবতথ্য ,আর্টিকেল ,ব্লগ থেকে নেয়া ।)
পাকিস্তান আমলে চিনাবাদাম উগ্র বামরাজনীতিকদের ভূমিকা কী ছিল? বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলনের বিরোধিতা করা, সামরিক আইয়ূব খানকে নিঃশর্ত সমর্থন করা, ৬ দফাকে সিআইএর দলিল ঘোষণা, বাঙালি সংস্কৃতিকে ফ্যাসীবাদি বলা, রবীন্দ্রনাথকে বর্জন করা, সত্তরের নির্বাচনকে বাতিল করার জন্য জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন করা, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে গাটছড়া বাঁধা, মুক্তিযুদ্ধকে দুই কুকুরেরলড়াই বলা, পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, আর চাঁদাবাজি-লুটপাট করা—এইতো চিনাবাদাম বিপ্লবীদের ইতিহাস।
যখন সারা বাংলার কৃষক থেকে শুরু উচ্চপদস্হ কর্মকর্তারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল তখন চীনাবাদামরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিলো ।এরা বলেছিলেন, ডোন্ট ডিস্টার্ব আইয়ূব। আইয়ুব খান খুব ভাল মানুষ। তিনি আমগো চেয়ারম্যান ম্যাও সাবের দোস্তি। সুতরাং আমগো তিনি খুইব দোস্তি বটে। ইয়াহিয়া খান লোক ভাল। ভালমদ খায়। টিক্কা খান আরও ভাল। মিস্টার ভুট্টোর তুলনাই নাই। তিনি লারকানার ভূস্বামী বটে--কিন্তু সর্বহারা বলা যাইতে পারে--সমাজতন্ত্রীও। টিক্কা খানের সঙ্গে জামাতের গোলাম আযম মিটিং করেছে। সে ছবি পত্রিকায় এসেছে। আর চিনাবাদামদের এরকম কোনো ছবি পাওয়া যায় না টিক্কা খানের সঙ্গে, ভুট্টোর সঙ্গে। কিন্তু একটা চিঠি পাওয়া যায়। লিখেছেন কমরেড আব্দুল হক। প্রাপক পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টো। সময়কালটা উনিশ তেয়াত্তুর। বাংলাদেশ তখন স্বাধীন। তিনি লিখেছেন কমরেড ভুট্টোর কাছে—ভাইলোগ, কিছু টেকা পয়সা আর অস্ত্রপাতি পাঠায়া দ্যান। আমরা পেয়ারা পাকিস্তানরে পুনরুদ্ধার কইরা ফালাই। বোঝেন। এই চিনাবাদম কমরেড আব্দুল হক মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতা করেছেন, প্রচুর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছেন এবং তিনি জীবনে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করেননি । হক মুক্তিযুদ্ধকে বলেছেন-- মুক্তিযুদ্ধের নামে পূ্র্ব পাকিস্তানে ভারতীয় আগ্রাসন । অতএব বিপ্লবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য হল মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করা । তখনকার সময়ে, একাত্তরের জুনে পূর্ব পাকিস্তান প্রশ্নে নকশালী চারু মজুমদার স্পষ্টই সমর্থন দিয়েছেন হক-তোয়াহাদের।
আর শোনা যায়, বরিশালের পেয়ারা বাগানে সিরাজ সিকদার মরণপণ যুদ্ধ করছেন। ও যুদ্ধের বিস্তৃতি কি ছিল?সিকদার থাকতে পাক বাহিনী শর্ষিণার রাজাকারদের দিয়ে কী করে পেয়ারা বাগান কেটে ফেলল? কি করে পেয়ারা বাগানের নাকের ডগায় শর্ষিণার পীর নেছারউদ্দিনের বাড়িতে জল্লাদখানা খোলা হয়েছিল? সিরাজ সিকদার কি তখন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মাও সে তুংএর নামছাপা করা লাল মলাটের বই মাথায় রেখে পাক বাহিনীর সঙ্গে মনে মনে যুদ্ধ করছিলেন? আর কবিতা লিখেছিলেন?
মুক্তিযুদ্ধের আগে-পরে যার যে ভূমিকাই থাকুক না কেন , একাত্তরের স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী রাজাকার ,আল বদ ,মালেকের মন্ত্রীসভার সদস্যরা, হক-আলাউদ্দিনের চীনাপন্থী কমিউনিষ্ঠদের ভূমিকা ঘৃন্য ছিল, আছে।
৩০ লক্ষ বাঙালীর রক্ত আর ৩ লক্ষ ধর্ষিতার আর্তনাদের অন্যতম কারিগর সেই চিনাবাদাম উগ্র বাম বিপ্লবীগণ কিন্তু বিদেশে পালালেন না। জেলেও তাদের খুঁজে পাওয়া গেল না। দালালআইনে কি তাদের কেউ কেউ গ্রেফতার হলেন? উত্তর—একেবারে নো। তাইলে তাদের কীহল? জনগন দেখলো—সদ্য স্বাধীন দেশের নবজাত সরকারের বিরুদ্ধে তারা রীতিমত যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে।
একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরের বাংলাদেশ যুদ্ধ বিধ্বস্ত এক দেশ। এক কোটি শরণার্থীর সর্বস্ব হারিয়ে দেশে ফেরা,৩০ লক্ষ স্বজন হারানো মর্মবেদনা আর দেশী-বিদেশী চক্রান্তের ফোস ফোসানী নিয়ে সাড়ে সাত কোটি মানুষগ্রুপ ডিপ্রেশনের শিকার। এর মধ্য বন্যা, মারী ও মড়কের মধ্যে একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা বিদেশে থেকে চাঁদা তুলছে আর থুবড়েপড়া পাকিস্তান পুনরুদ্ধারআন্দোলন করে বেড়াচ্ছে। এ সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র জমা দিয়েছিল। কিন্তু রাজাকাররা ও চীনাবাদামরা জমা দেয়নি। তারা গোপনে গোপনে অর্থ, অস্ত্র আর তাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকবল দিয়ে সরকারকে অস্থির করে তুলছে। এই লোকবলের মধ্যে আছে—পাকিবাহিনীর হাতে গড়া সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন যারা মুক্তিযুদ্ধ অংশ নেয়নি— যারা পাকিদের সহায়তা করেছে। এরা সবাই মিলে সরকারকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। সরকারের মধ্যেকার সুবিধাবাদি গ্রুপকে কিনে ফেলেছে। তখন এই চিনাবাদাম বিপ্লবীরা বসে নেই—তারাও নবোদ্যমে নেমে পড়েছে। নতুন দেশে বোমাবাজি, লুটপাট, শ্রেণীশত্রু হত্যার নামে গলাকাটা অভিযান পরিচালনা, ডাকাতি, রাহাজানি, ব্যাংক-থানা লুট, জ্বালাও পোড়াও কর্মকাণ্ড, বিজয় দিবসের দিয়ে হরতাল ডাকা—এইতো তাদের কর্মসূচি। চিনাবাদামদের এইসব কর্মসূচি কাদের পক্ষে গেল? একাত্তরে পাকিস্তানের সমর্থকদের পক্ষে না?
পরবর্তীতে এই চীনাবাদামরা ঢুকে গেল আওয়ামীলীগ ,বিএনপি ও জাতীয় পার্টিতে ।আজ আওয়ামীলীগের পাশে বসে মুক্তিযুদ্ধের গীত গায় স্বাধীনতা বিরোধী চীনাবাদামরা ।আজ চীনাবাদামরা গলা ফাটায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ।
(আমি মেলা দুক্কা মানুষ ।ভূল ভ্রান্তি ধইরা দেন)
বিষয়: বিবিধ
১৫৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন