পৃথিবী বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের জগৎ

লিখেছেন লিখেছেন বখতিয়ার শামীম ২৭ জানুয়ারি, ২০১৩, ০২:০৬:৩৮ দুপুর

Nature's-Art

পৃথিবী বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের জগৎ

——————————

১.

আমি চাই এই ছিটকে পড়া পৃথিবী নামক

গ্রহের অপার বিশ্বাস এবং পবিত্রতা।

যা সৃষ্টি হয়েছে একটি জমাট পিন্ড থেকে

অতঃপর পরিণতি ধবংস হওয়া খন্ডে

যেখানে প্রাণের আবির্ভাব হবে।

হাজার কোটি বছর ধরে, যেখানে প্রাণের উৎপত্তি হবে।

এমনি করে কালের পরে কাল, যুগের পরে যুগ

পিরিয়ডের পর পিরিয়ড, পার হয়ে যায়…

জমিনে সৃষ্টি হয় লক্ষ কোটি জীববৈচিত্র্যের বিশাল সমাহার।

সৃষ্টি হয় বৃক্ষরাজি, গাছ পালা, পোকা মাকড়,

আর এক সময় সৃষ্টি হয় এই মানুষ।

প্রথম এবং আদি অন্ত অসভ্যতায় সে বড় হয়, বড় হতে থাকে…

মানুষ সৃষ্টির হাজার হাজার বছর পরে

প্রাণসত্তা পায়, নানা কর্মের মাঝে জ্ঞানদ্বীপ্ত আশানুভব

কাজ করে, বিবেক বুদ্ধি, ভালো মন্দ, সুখ দুঃখ, পাপ পুর্ন্যি,

নানা দিক নিদর্শনের মাঝে মানুষ সভ্যতা জমিনে ফলায় ফসল।

এখান থেকেই শুরু হতে থাকে সব কিছুর…

ভালো মন্দ বিশ্বাস অবিশ্বাস পবিত্র অপবিত্রের।

আর প্রয়োজন বোধ থেকেই এই মানুষের মাঝে

সর্ব প্রথম লোভ নামের পাপটা কাজ করতে শুরু করে,

প্রয়োজন বোধ থেকেই মানুষ মানুষকে প্রথম খুন করে।

রক্তে রঞ্জিত করে, এই ফসলের মাট। স্তব্ধ অবুঝ

অবহেলিত, পরিশোধিত দুনিয়ার উর্বর জমিন।

মানুষ, মানুষ হয়ে খেতে শুরু করে মানুষের রক্ত!

তবু সর্বপ্রথম মানুষকে কোরআনে বলা হলো

হে মানুষ তোমরা আশরাফুল মাখলুকাত;

আল্লাহর সকল সৃষ্টির মধ্যে মানুষ হয় বিশ্বশ্রেষ্ঠ জীব।

মানুষি হবে মহাপুরুষ, মানুষ হবে মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞ

মহা জাগতিক অজাগতিক জ্যোতি নিয়ে মানুষ

করবে শাসন, এই পৃথিবী এই ভ্রমান্ড।

আর খুনো খুনির মধ্যেই মানুষ দলবদ্ধ ভাবে বসবাস করতে

শুরু করে, নারী পুরুষ যেখানে কোন ভেদাভেদ ছিলনা

এরই মধ্যে মানুষের মাঝে দেখা দিলো জাতি ভেদ,

সৃষ্টি হলো অগ্নিপূজা চন্দ্র, তারা, নক্ষত্র পুঁজ।

একেক জন একেক পূজায় হয় আসক্তি।

তবে তারাও বুঝতে পারতো স্রষ্টা বলে কেউ আছে এই মহা পৃথিবীর।

বর্তমানে পৃথিবীতে একশত চৌদ্দটি কিতাবের বই আছে

তার মধ্যে সর্বোত্তম কিতাব হলো চারটি,

যার মধ্যে বাছাই করা সর্বোত্তম একটি,

যার নাম হলো আল কোরআন।

অতপর প্রত্যেকটি ধর্মই বলছে আমি সঠিক।

এক ধর্মের মানুষ আরেক ধর্মকে উপেক্ষা করে, অবিশ্বাস করে।

অথচ মানুষ আছে দ্বিধা দ্বন্দে আসলে সত্যটা কি?

———————————

২.

মানুষ স্রষ্টার দেয়া তার মধ্যের তাবৎ জ্ঞান প্রয়োগ করে

কোন এক নতুন দিক উন্মোচনের জন্যে,

নতুন উপাখ্যান তৈরির জন্যে।

খুঁজতে খুঁজতে সৃষ্টি করে নতুন ইতিহাস,

সৃষ্টি করছে মহা রহস্যকে

ঘুরছে এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে,

খুঁজতে, কোনো এক সৃষ্টির বর্তিকা,

যা কিনা একদম সচ্ছ, একদম সঠিক,

উন্মোচন করতে আরো নতুন কিছু,

অন্যরকম থেকে অন্যরকম নতুন কিছু,

এভাবেই খুঁজছে, খুঁজবে কালে কালে, আকাশে

বাতাসে আগুনে পানিতে ,

আছে এবং নাই এর মধ্যে, একটি সত্যকে,

একটি মাত্র নির্ভেজাল বিশ্বাসকে।

স্থাপন করতে জগৎ বিখ্যাত সত্য অতঃপর বিশ্বাসকে।

মানুষ এমনি ভাবে খুঁজতে থাকবে সময়ের পরে সময় ধরে,

যুগের পরে যুগ ধরে রহস্যের ধরার প্রকৃত রহস্য, প্রকৃত ঘটনা,

যা কিনা অনাদিকাল থেকে রহস্যে ঘিরে আছে

এই মানব সভ্যতার মাঝে

এক অনবদ্য অন্ধকারের রহস্য পুরিতে জোত্স্নার আলোয়,

সূর্যের রশ্মিতে, অন্ধকারের গভীরে দেখা আর না দেখার মধ্যে।

কোথায় লুকায়িত আছে সেই প্রকৃত ঘটনা?

কোথায় লুকায়িত আছে সেই প্রকৃত সত্য ও রহস্য?

নাকি মানুষের মনে?

নাকি আমরা যা কিছু দেখছি যা কিছু ভাবছি এটাই সত্য?

নাকি এই নশ্বর পৃথিবীকে আমরাই প্রতিনিয়ত ভরে দিচ্ছি

প্রতিটি মুহুর্তে নতুন নতুন রহস্যে?

পরিপূর্ণ করছি জটিল থেকে জটিল তরে?

আমি বিশ্বাস করি এই পৃথিবীতে আমি অবস্থান করছি

এবং এই পৃথিবীতেই বসবাস করছি

আমি বিশ্বাস করি সবুজ বৃক্ষ, বিশ্বাস করি সকল সৃষ্টিকে

বিশ্বাস করি কোনো কিছু প্রকৃতির নিয়মে ঘটে না

বিশ্বাস করি সাগরের গর্জন, বিশ্বাস করি তার মাধ্যে বিরাজ মান জলরাশি

বিশ্বাস করি বসবাস করা ওইসব জল জীবকে,

বিশ্বাস করি সাগরের জল মিছে মিছি নিজে নিজে

এমনি করে চিৎ হয়ে আছড়ে পড়ে না শুকনা জমিনের বুকে।

আমি বিশ্বাস করি জলের একক বা

নিজস্ব বলে কোনো শক্তি নাই এবং কখনো ছিলনা

আমি বিশ্বাস করি বাতাসের কোন একক বা

নিজস্ব বলে কোনো শক্তি নাই এবং কখনো ছিলনা।

আমি বিশ্বাস করি তেমনি আগুন কেও।

আমি বিশ্বাস করি মহান স্রষ্টাকে

বিশ্বাস করি তিনিই এই শক্তির মালিক

আমি বিশ্বাস করি এই শক্তির মালিক একমাত্র একজন।

যার কোন শরীক নাই এবং কখনো ছিলনা

আমি বিশ্বাস করি এই নশ্বর

পৃথিবীর একমাত্র মালিক তিনি।

আমি বিশ্বাস করি এই আশরাফুল মাখলুকাতকে

আমি বিশ্বাস করি এই আশরাফুল

মাখলুকাত মিছে মিছি সৃষ্টি হয়নি

আমি নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করি এর

পেছনে অবশ্যই বড় কোন প্রেরণা আছে

এর পেছনে বড় কিছু উদ্দেশ্য আছে।

আমি বিশ্বাস করি এর পেছনে মহৎ

কিছু ব্যাখ্যা আছে, আমি বিশ্বাস করি প্রকৃতির

নিয়মে এই বিশ্ব জগতের মাঝে কোন কিছু সৃষ্টি হয় না।

আমি বিশ্বাস করি কোন কিছু

কারো ইশারা ছাড়া সঞ্চালন হয়না।

অথবা জগতের কোন কিছু কাল নিয়মে চলেনা।

——————————

৩.

আমি বিশ্বাস করি আমাদের মাঝের এই বিশ্বাসই, পবিত্রতা।

এই বিশ্বাস থেকেই সৃষ্টি হয়েছে নানা ধর্ম

এই বিশ্বাস থেকেই শুরু হয়েছে নানা পথ পরিক্রমা।

এখানেই মাঝে মাঝে বিশ্বাসের হয় ভুল ব্যাখ্যা

আসলে বিশ্বাস কি?

তবে এই বিশ্বাসই যদি থাকে অন্ধকারের নিবিড় গর্তে

তবে সম্ভব নয় তার প্রসার ঘটানো,

সম্ভব নয় তাকে প্রকাশ করা!

আমি চাই এই খন্ড আকৃতির গ্রহ ঘিরে এই সব

জীব বৈচিত্র্যের বেড়ে ওঠার মাঝে যে কারন আছে

আমি চাই তার উন্মোচন,

যত না রহস্য আছে চাই তার সতত,

চাই একই ভাবে উন্মোচন করতে

এরকম গ্রহ আরেকটি সচল কীনা?

একই ভাবে পরিচালিত হচ্ছে কীনা,

আমি চাই এই পৃথিবী নামক

বিশ্বজগতের অপার বিশ্বাস

এবং তার মধ্যে প্রচলিত পবিত্রতা।

আমি জানতে চাই সত্য কি?

আমি জানতে চাই এই সত্যের মাঝে রত

কোন সে গঠন-তন্ত্র

কোন সে ক্রিয়া আর প্রক্রিয়ায় দানা বাঁধা

অর্পূব এই জাক জমক মহাজগত।

কি উদ্যেশ্যে সৃষ্টি হলো এই আকাশ,

বাতাস, তরু, লতা, বৃক্ষরাজি,

জীন ইনছান, চন্দ্রতারা,

গ্রহ নক্ষত্র, ছায়াপথ, শুন্য, মহাশূন্য,

আসমান-জমিন ভুমি-মহা ভুমি

সাগর-মহাসাগর নদী-নালা পাহার-পর্বত?

আমি জানতে চাই এই সৃষ্টির বাণী,

জানতে চাই এইসব সৃষ্টির কথা।

তবে কোনো কিছুর সাহায্য ছাড়াই

কেন কোনো সৃষ্টির গতিপথ নির্ণয় করা যায় না?

কেন তৈরি করা যায় না অজানা কোন বস্তু?

কেন সম্ভব কর হয় না এমন সৃষ্টি,

তবে কেন শুধু অবিকল করা?

কেন সত্য জানা যায় না,

কেন সম্ভব নয় সঠিক তথ্য উদ্ঘাটন করা?

আমি জানতে চাই, আমি জানতে চাই

এই সৃষ্টির পেছনে রহস্য কি?

আমি জানতে চাই তার পবিত্রতা,

জানতে চাই তার অপার বিশ্বাস।

জানতে চাই আমার অবচেতন মনের সকল ভাষা গুলো।

কোন সে নিয়মে আটকে আছে

এই পৃথিবীর সমস্ত সীমারেখা?

পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে আমার বিশ্বাসের গভীরে ঢুকাতে চাই।

সাজাতে চাই বিস্ময়কর ভাবে অন্যরকম কিছু।

যা কিনা থাকবে বিশ্বাসের উপর ভর করে

যা কিনা থাকবে এই মহাজগতে সতত

একমাত্র বিশ্বাসের উপর দাড়িয়ে।

সবকিছুই যখন নিয়ম নীতিতে চলে,

সবকিছুই যখন নিয়ম নীতিতে বদলায়,

সবকিছুই যখন একটি নিদিষ্ট কক্ষের মাঝে অবতরণ করে

সবকিছুই যখন একটি শক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে

তবে আমি বিশ্বাস করি একজন নিয়ন্ত্রক আছে এর পেছনে

আমি বুঝতে চাই সৃষ্টি কি?

আমি বুঝতে চাই এই সৃষ্টি কোথা থেকে এলো?

কেন এত বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের আলোড়ন চলে ধরণীর বক্ষে?

এই মহাবিশ্বের মানুষের মনে কেন বারবার কাজকরে দ্বিধা দ্বন্দ।

কেন চলে ভাগা ভাগি কেন এই আশরাফুল মাখলুকাত?

কেন এত উৎকৃষ্ট আর নিকৃষ্টের দমন পীড়ন?

কেন এই সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ?

কেন এই মানুষের মাঝে ঘটে রক্তপাত?

কেন এই কাটাকাটি হানা-হানি মারা-মারি?

আমি জানতে চাই বুঝতে চাই এই নশ্বর পৃথিবীকে,

জানতে চাই কেন এই পৃথিবী

কেনই বা এতো বুঝ আর অবুঝের মেলা।

কেনই বা প্রশ্ন কেনই বা উত্তর প্রত্যুত্তরের খেলা,

জানতে চাই এসব কিছু

যত না জানা আর অজানায় ভরা পন

আমাদের এই বিশ্বজগত জানতে চাই আপন মনে,

জানতে চাই পৃথিবীর বিশ্বাস

এবং অবিশ্বাসের জগত,

জানতে চাই বিশ্বাস অবিশ্বাসের পবিত্রতাকে

———————————-

বখতিয়ার শামীম/-

বিষয়: সাহিত্য

১৭৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File