জামায়াত,সাম্প্রদায়িকতা এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন:
লিখেছেন লিখেছেন কথার কথা ০৮ মার্চ, ২০১৩, ১২:১৬:৫৬ দুপুর
সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংখ্যালঘু নির্যাতন,সরকার ও একশ্রেনীর মিডিয়া বা তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক বাহকশ্রেনী বলছেন বি এন পির সহযোগীতায় জামায়াত শিবির ই সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করছে। জামায়াত বি এন পি বলছে সরকার বিরোধীদলকে বিশ্বের দরবারে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এ হীন কাজ করছে।
আসুন আমরা একটি বিশ্লেষণে যাই। বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জল উদাহরণ সৃষ্টিকারী দেশ। পার্শ্ববর্তী ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনা আমাদের নিকট স্পষ্ট অথচ সে অনুযায়ী এ দেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর মুসলমানদের নির্যাতনের রেকর্ড নেই।ইসলামে ভিন্ন ধর্মাবলম্বিদের উপর নির্যাতন দূরে থাক তাদের অধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হবার নির্দেশ দেয়। রামুর ঘটনা ছাড়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ছিঁটে ফোটা ঘটনা যা শোনা যায় তা হয়তো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আবার মায়ানমারের রোহিঙ্গা নিধনের বর্বরতার তুলনায় রামুর ঘটনা কিছুই না। ভারত বা মায়ানমারের উদাহরণ দেয়া হয়েছে ভয়াবহতা বোঝানোর জন্য।বিভিন্ন সময়ে ঘটা ছোট খাট ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় অতি উৎসাহী কিছু লোক আবেগের বশবর্তী হয়ে এ ধরনের হীন কাজ সংঘটন করেছে এতে রাজনৈতিক কোন নির্দেশনার প্রশ্নই উঠেনা।রাজনীতিবিধরা তাদের লাভ ছাড়া কোন কাজই করেনা।
১/ জামায়াত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে থাকায় তৎকালীন পাক হানাদার বাহীনির সংখ্যালঘু নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি করছে।এ যুক্তিটি গ্রহণ করা যায়না কারণ যুদ্ধকালীন নির্যাতন নিপীড়ন আর একটি স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষদের নির্যাতন এক নয়।তাছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াত এ দেশ স্বাধীন হোক তা যেমন চায়নি আবার এদেশের সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করেছে তারও কোন প্রমান নেই তবে অন্যায় যে সহে আর অন্যায় যে করে উভয়ে সম অপরাধী।একাত্তরের অন্যায় সহে যে অপরাধ করেছে তার জন্য বর্তমানে অন্যায় না করেও তাদের অপরাধী করা নি:সন্দেহে যুক্তিযুক্ত নয় তবে রাজনীতির ফায়েদা হাসিল করার জন্য তাদের উপর দোষ চাপানোর কৌশল যদি হয়ে থাকে তবে অচিরেই তা বুমেরাং হবে,জামায়াতের বিচলিত হবার কোন কারণ নেই।
২/ ক্ষমতাসীন সরকার বর্তমানে জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা না করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে দমন নিপীড়নের পৈশাচিকতা প্রদর্শন করছে শুধুমাত্র তা নয় বরং বিভিন্ন কুটকৌশল অবলম্বন করছে। জামায়াত ক্ষমতাসীন সরকারের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সম্পূর্ণ ওয়াকিফহাল কারণ এ বেয়াল্লিশ বছরে জামায়াতকে বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে আসতে হয়েছে।বর্তমানে জামায়াতের জোট বন্ধু বি এন পি যে জামায়াতের বন্ধু নয় শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার, জামায়াত ভালোভাবেই জানে। আন্তর্জাতিকভাবে একটি উদার গণতান্ত্রিক ইসলামী দল হিসেবে পরিচিত জামায়াত কোন ভাবেই চাইবেনা সংখ্যলঘুদের উপর নির্যাতন করে আন্তর্জাতিক মহলের বিরাগভাজন হতে। জামায়াতের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলের আস্থার বিষয়টি সরকার ভালো ভাবেই জানে,তারা এও জানে বর্তমানে জামায়াতকে কোনঠাসা করার একমাত্র পথ সংখ্যালঘুদের বিষয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করা তাই বিভিন্ন ভাবে সরকার এ হীন কর্মটি করার জন্য সরকারী বেসরকারী বা পাগল সাজিয়ে দলীয় লোকদের দ্বারা এ কাজটি করাচ্ছে। বর্তমান মিডিয়ায় এ বিষয়ে প্রধান দুটি খবর হলো যুবলীগ নেতা (যাকে পাগল সাজানো হয়েছে) অপকর্মটি করতে এসে জনতা কর্তৃক ধৃত আর অপরটি হলো জামায়াত শিবিরের মন্দির পাহারা দেয়া।
৩/ কোন রাজনৈতিক দল ইচ্ছে করে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারবে তা আবার চাইনিজ কুড়াল এটা দেশের সচেতন মানুষ কোন ভাবেই বিশ্বাস করবেনা।আর করবেনা বলেই বিষয়টি প্রমানের জন্য মিডিয়া আদাজল খেয়ে লেগেছে। দু:খজনক বিষয় হলো জনগণের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য যে বাহীনি এবং জনগণকে সঠিক তথ্য দেয়ার জন্য যে বাহীনি অর্থ্যৎ পুলিশ ও হলুদ সাংবাদিকতার উজ্জল নক্ষত্ররাজি আজ রাষ্ট্রের সহোযোগী সংগঠনে পরিনত হয়েছে। সরকার ফ্রাঙ্কেনস্টাইন আচরণ করার জন্য মিডিয়া আর আইন শৃঙ্খলা বাহীনি অন্যতম ভূমিকা রাখছে।আবার বিরোধীদল দমনে অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি পদক দেয়ার মাধ্যমে গোটা পুলিশ বাহীনিতে মেসেজ পৌছে দেয়া হয়েছে যে বিরোধী দল দমন করো মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হবে। হায়রে দেশ। বি এন পি তাদের আমলে শুধু একটি কাজই করতে পেরেছে তা হলো নিজেদের আখের গোছানো।মিড়িয়া বা পুলিশ বাহিনীতে লোকবল নিয়োগে এ সরকারের তুলনায় তারা ছিল দুগ্ধপোষ্য শিশু।
মিডিয়ার ভূমিকা যাই থাকুক একজন সচেতন মানুষ সে যে মাধ্যমে কাজ করুক না কেন স্ব-স্ব অবস্হানে থেকে সঠিক তথ্য পৌছে দিতে পারে।জনগণের সচেতনতাই পারে সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করতে।মনে রাখতে হবে শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায়না।মিথ্যে তথ্য মিথ্যে আশ্বাস আর মিথ্যে প্রলোভন দিয়ে সাময়িক সুবিধা আদায় করে নেয়া যায় সত্য একদিন প্রকাশ পাবে তখন লজ্জার শেষ থাকবেনা।অবশ্য আমাদের রাজনীতিবিধদের এ মহামূল্যবান জিনিষটি নেই বললেই চলে।আদর্শহীন একজন নেতার নিজের রুপ বারবার পরিবর্তন করাই হলো আদর্শ।সত্য সমাগত মিথ্যা বিতাড়িত সত্যের বিজয় অবশ্যম্ভাবী।সত্যের জয় হোক।
বিষয়: রাজনীতি
১১৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন