প্রতিরোধের মুখে জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ
লিখেছেন লিখেছেন মাসুদ রানা ১৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:২০:৫১ দুপুর
গ্রামবাসীর হামলার মুখে জেলার সাতকানিয়ায় জামায়াত নেতা ও চরতি ইউপি চেয়ারম্যান ডা. রেজাউল করিমকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শত শত গ্রামবাসীর বেপরোয়া হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে পুলিশ ১৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে । শনিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে চরতি ইউনিয়নের তালগাঁও বাজারে পুলিশের একটি গাড়ি বহর অবস্থান নেয়। সেখান থেকে কিছু পুলিশ সদস্য পার্শ্ববর্তী গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় জামায়াত নেতা ডা. রেজাউল করিমের বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। খবর পেয়ে গ্রামবাসী পুলিশকে ধাওয়া দিলে পুলিশ লোকজন লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করতে করতে পিছু হটে।
সূত্র আরো জানায়, বিক্ষুব্ধ জনতা চরতি-বাঁশখালী সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে পুলিশ সদস্যদের ঘেরাও করে ফেলে। এক পর্যায়ে পুলিশের গুলিবর্ষণ উপেক্ষা করে লোকজন পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে এবং কয়েক ঘণ্টা ধরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। উচ্ছৃঙ্খল গ্রামবাসীর ব্যাপক হামলার মুখে পুলিশ সড়কে ফেলা গাছের গুঁড়ি সরিয়ে পার্শ্ববর্তী বাশঁখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়ন হয়ে সাতকানিয়া ফিরে আসে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাঈল নতুন বার্তা ডটকমকে জানান, সাতকানিয়া থানা থেকে ৪০ জনের একটি পুলিশ টিম তার নেতৃত্বে চরতি ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা রেজাউল করিমসহ কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতার করতে গেলে স্থানীয় জামায়াত-শিবির ও গ্রামবাসীরা একজোট হয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে পাচঁ পুলিশ সদস্য কমবেশি আহত হন এবং তাদের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে। উচ্ছৃঙ্খল জনতার হামলা থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ ১৫ রাউন্ড গুলি চালায়। রেজাউল সম্প্রতি চরতিতে বৌদ্ধ বিহারে হামলাসহ কয়েকটি ঘটনার আসামি।
তিনি জানান, ভোরে পুলিশ সদস্যরা তালগাঁও বাজারে অবস্থান নিয়ে জামায়াত নেতা রেজাউলের বাড়ির দিকে অগ্রসর হবার সময় গ্রামের সবগুলো মসজিদে একযোগে মাইকিং শুরু করলে শত শত গ্রামবাসী এমনকি মহিলারা পর্যন্ত ঘর থেকে বেরিয়ে এসে হামলায় অংশগ্রহণ করে। মুহূর্তের মধ্যে তারা চরতির প্রধান সড়কের তিন কিলোমিটার পর্যন্ত অসংখ্য গাছের গুঁড়ি ফেলে আমাদের অবরুদ্ধ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
ওসি ইসমাঈল জানান, এ ধরনের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ডা. রেজাউলকে গ্রেফতার করলে সমস্যায় পড়তাম। তাই বিকল্প পথে পুলিশ টিমকে নিয়ে কোনোমতে থানায় ফিরে আসি।
উল্লেখ্য, জামায়াত নেতা মওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর চরতির পার্শ্ববর্তী বাশঁখালী উপজেলায় সৃষ্ট বিক্ষোভ ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। র্যাব, পুলিশ, বিজিবি সদস্যদের সমন্বয়ে পরিচালিত কয়েকদফা যৌথ অভিযানের পরও গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে আসামি ধরতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল বাঁশখালী উপজেলা লাগোয়া সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নে।
চট্টগ্রাম-১৪ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সংসদীয় এলাকা চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত আমির মাওলানা শামসুল ইসলাম এ এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্য। সাঈদীর রায় ঘোষণার পর জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় এক পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে পাচঁজন নিহত হন।
বিষয়: বিবিধ
১০৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন