ঈদের আনন্দ
লিখেছেন লিখেছেন মিকি মাউস ১২ আগস্ট, ২০১৩, ১২:০৫:০৪ রাত
ঈদে বাড়ী যাওয়ার জন্য অফিস থেকে ছুটি পেলাম বুধবার। সকালে অফিস শেষ করে বিকেলে নিউ মার্কেট থেকে কিছু কেনাকাটা করে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। সেখানে গাড়ী নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন আমার বড় ভাইয়া।
১১.৪৫ মিনিটে গাড়ী ছাড়লো বাড়ীর উদ্দেশ্যে। বাড়ীতে মা অপেক্ষা করছিলেন কখন আমরা আসব। আল্লাহর রহমতে কোথাও জ্যাম এ না পড়ে ভালোভাবেই বাড়ী পোঁছলাম রাত ৩ টায়। বাড়ী গিয়ে দেখি মা বসে আছেন খাবার নিয়ে। ফ্রেস হয়েই সেহরি খেতে বসে গেলাম। খাওয়ার মাঝে অনেক কথায় হলো সবার সাথে। এরপর ফজর নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
বৃহস্পতিবার:
পরদিন ১১ টায় থানা সদরে গিয়ে কিছু কেনাকাটা করলাম। বাড়িতে লাগানোর জন্য কিনলাম অনেকগুলো গাছ। তারপর বাড়ী এসে একটু রেস্ট নিয়ে গেলাম মেজ চাচার ঘরে। ইফতার করলাম সেখানে। বাড়ীর সকলের দাওয়াত ছিল সেখানে। সবার কুশল বিনিময় হলো।
বাড়ী এসে খাওয়া দাওয়া করে আবারও বের হলাম স্থানীয় কয়েক বন্ধুর সাথে। অনেক রাত পর্যন্ত সবার সাথে আড্ডা দিলাম। সে এক জম্পেস আড্ডা। যাতে উঠে এসেছিল ছোটবেলা থেকে বর্তমান পর্যন্ত অনেক বিষয়। তারপর বাড়ী এসে ভাইবোনদের সাথে আরও অনেক গল্প করে রাতে ঘুমালাম। তার আগেই জানলাম পর হতে যাচ্ছে কাংখিত ঈদ।
ঈদের দিন:
সকালে ঘুম থেকে উঠেই প্রতিবারের ন্যায় এবারও মাইকে এলাকাবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি ঘোষনা করলাম ঈদের নামাজের সময় সূচী। যে কাজটি আমি প্রতি বছর করে থাকি।
(একবছর আমি এই ঘোষনাটি আমি না দেওয়ায় অনেকেই পরে আমাকে বলেছিল যে, ঈদের দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই তোমার কণ্ঠে ঈদ মোবারক শব্দটি শুনতে খুব ভালো লাগে। এবার কেন তুমি বলনি? তারপর থেকে এই কাজটি আর মিস হয়না আমার।)
বাড়ী এসে মাকে তার কাজে সাহায্য করলাম। এরপর মিস্টিদ্রব্য খেয়ে ৯টায় গোসল করে পাঞ্জাবী-পাজামা পরে গেলাম ঈদের নামাজ পড়তে। নামাজ পড়ে বন্ধু আত্মীয়স্বজনসহ অনেকের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও কোলাকুলি করলাম।
এরপর বাসায় এসে দিলাম এক ঘুম। মোবাইলে ‘ও মন রমজানের ঐই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ টোন এ ঘুম ভাঙল। রাজনীতিবীদ বন্ধু শাহাদাতের ফোন। ব্যস্ত কিনা জানতে চেয়ে বলল, চল ঘুরে আসি।
বললাম চলে আয় আমাদের বাড়ী এখান থেকে একসাথে যাব। যে কথা সে কাজ। রাজনীতিবীদের সাথে যোগ হলো আরেক জন, সে হলো বুদ্ধিজীবি বন্ধু রানা।
সন্ধ্যার সাথে সাথে খাবার খেয়ে চললাম তিন বন্ধু। বাইক চালাচ্ছিল বুদ্ধিজীবি বন্ধু। রাজনীতিবীদ কেন জানি বার বার বলছিল বুদ্ধিজীবি নির্ঘাত বাইক নিয়ে নদীতে পড়বে।
আমি মাঝখানে বসে সাহস যোগাচ্ছিলাম। কিন্তু এর কিছুক্ষন পরেই সকলের দুষ্টুমির মাঝেই বুদ্ধিজীবি বন্ধু বাইক নিয়ে চললাম অজানার পথে। এই পতন কেউ আমরা ঠেকাতে পারলাম না। সোজা গিয়ে পড়লাম নদীতে।
পানিতে পড়ে তিন বন্ধু হাবুডুবু খাচ্ছি। পাশে অনেকেই আসলো আমাদের উদ্ধার করতে। সবাই এসে দেখে পানির মধ্যেই আমরা হাসাহাসি করছি। এর মাঝেই এক অতি উৎসাহী ভদ্রলোক আমার বাবাকে ফোন করে এই দুর্ঘটনার কথা বলছে, ‘ভয়ানক ভাবে আপনার ছেলে এবং তার বন্ধুরা মোটর সাইকেল এ্যাকসিডেন্ট করেছে।’
আসলে গ্রামের মানুষগুলো সহজ সরল হওয়ায় ছোট্ট একটা ঘটনা দেখে ভয় পেয়েছিল।
এই ঘটনায় আমাদের যা ক্ষতি হলো তার বিবরণ দেওয়া হলো:- সবাই একটি করে মোবাইল ফোন নস্ট হওয়া, সবার নতুন জামা-কাপড় নষ্ট হওয়া, মানিব্যাগ টাকা-পয়সা ভিজে যাওয়া, মোটর সাইকেল নস্ট হওয়া সেই সাথে প্রেষ্টিজ নামক বস্তুটির চাকা পাংচার হওয়া ইত্যাদি। চলবে...
বিষয়: বিবিধ
১৮৬২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন