লবষ্টার কাহিনী।
লিখেছেন লিখেছেন নেহায়েৎ ১৬ অক্টোবর, ২০১৬, ১১:১৪:৫৫ সকাল
ছাত্র জীবনে কোন এক সময় পত্রিকায় পড়েছিলাম। নিকারাগুয়ার লবষ্টার শিকারীদের কাহিনী। একবার নয় বার বার পড়েছিলাম। খুব ভাল লাগত। কিভাবে শিকারীরা সাগরে ডুব দিয়ে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে বিশাল বিশাল সাইজের লবষ্টার কৌশলে ধরে নিয়ে আসে।
তখন জানতাম না বাংলাদেশে লবষ্টার পাওয়া যায় আর দামই বা কতো! পরে ছাত্র জীবনেই কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন গিয়ে লবষ্টার দেখেছিলাম। কিন্তু তখন দাম জিজ্ঞেস করিনি ভয়ে। টাকা পয়সা নাই দাম জিজ্ঞেস করে কি লাভ! খাওয়ার শখ থাকলেও পুরণ হয় নি।
এখন চাকরি করি তাই, এবার কক্সবাজার গিয়ে টিচারকে বললাম লবষ্টার এর কাহিনী। একদিন সন্ধ্যার পর সাগর পাড়ে গেলাম লবষ্টার খাওয়ার উদ্দেশ্যে। সুন্দর সুন্দর বিশাল বিশাল লোভনীয় লবষ্টার, কাকড়া আর কতো রকমের সামুদ্রিক মাছ দোকনের সামনে ফ্রিজে সাজানো। খেতে চাইলেই ইন্সট্যান্ট ভেজে দিচ্ছে।
আমি কয়েকটি দোকন ঘুরে দরদাম করে হতাশ হইলাম।প্রতিটির দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা! এতো দাম দিয়ে লবষ্টার খাব না! টিচারকে বললাম। তিনি বললেন দাম কোন ব্যাপার না! তিনিই আমাকে খাওয়াবেন! এখানকার দোকানের সবচেয়ে বড় লবষ্টার এবং সবচেয়ে বড় একটি কাকড়া তিনি আমাকে খাওয়াবেন। উপহার স্বরূপ!!
আমরা আবার দোকান গুলোর সামনে দিয়ে ঘুরতে থাকলাম। কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখে দরদাম করে একটি দোকানের সবচেয়ে বড়টির অর্ডার দিলাম।
অর্ডার দিয়ে বসে আছি। দোকানে লোকজন ঠাসাঠাসি। টেবিলে টেবিলে আসছে মাছ ভাজা, কাকড়া ভাজা, লবষ্টার ভাজা সবাই মজা করে খাচ্ছে। আমারটার আর কোন খবর নাই! অধৈর্য হয়ে একবার যে সার্ভ করে তাকে বললাম ভাই, আমার লবষ্টার কোথায়? সে পাত্তা না দিয়ে চলে গেল!
আমি দাড়ী-টুপি ওয়ালা মানুষ গেরাম থেকে আইছি আমাকে পাত্তা দেওয়ার কি আছে! কতো স্মার্ট স্মার্ট ছেলে-মেয়েরা বসে বসে লবষ্টার আর কাকড়া খাচ্ছে! কয়েক মিনিট পর আবার আমি বললাম ভাই আমার লবষ্টার? এই বার সে বলল আনছি!
আরো কিছু সময় পর গরম গরম ধোয়া উঠা লবষ্টার আমার সামনে এল! বিশাল সাইজ প্লেট এর মাঝ খানে। এনেই আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেখে আমি হাত টেনে ধরলাম! ভাই কই নিয়ে যান? সে বলল কেটে আনি! আমি বললাম, কেঁচি আমার সামনে নিয়ে আসেন! একবার যখন এনেছেন আর ফিরিয়ে নিয়েন না!
ছেলেটি কেঁচি নিয়ে এসে আমার সামনে লবষ্টার কাটা শুরু করল আর আমি একপাশ থেকে খাওয়া শুরু করলাম! আলহামদুলিল্লাহ আমার জীবনে প্রথম লবষ্টার খাওয়া! টিচার ছবি তুলে রাখলেন সেই কাহিনীর। আর কাকড়া আগামী বারের জন্য জন্য তুলে রাখলাম টিচারকে বলে।
ইনশা আল্লাহ পরেরবার এলে কাকড়া খাব।
বিষয়: বিবিধ
২০৯৪ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভাই সাহেব - কাঁকড়া কি হালাল ?
ভাই জান কাকড়া খাইয়েন না......
আপনর নাম্বারটা দিন, দেশে আসতেছি ইনশাআল্লাহ,....আপনার বাকি সখগুলো পুরণ করার চেস্টা করবো।
জিবনে দুটা দামি খাবার খাওয়ার তেীফিক আল্লাহ তায়লা দিয়েছেন।ছোট বেলা থেকেই এই দুই দামি খাবার এর নাম শুনে আসছি একটা লবষ্টার আর একটা ক্যাভিয়ার। কিন্তু কেন জানি এই দুইটা খাবার ই খেয়ে আমার কোন মজা লাগেনি!!!
খাইনি বলতে পারবো না, স্বাদ কি রকম? আমেরিকায় কাকড়ার দাম বেশী।
দামে সস্তা। দেখুন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন