ঢাকার আশ-পাশে সুন্দর বেড়ানোর জায়গুলো।
লিখেছেন লিখেছেন নেহায়েৎ ৩১ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৪৫:৪৭ সকাল
ঢাকার আশেপাশেই এক দিনে কম খরচে বেড়ানো যায় এমন অনেক সুন্দর জায়গায় আছে। যেখানে আপনি সহজেই ঘুরে আসতে পারবেন পরিবার নিয়ে।
চলুন জেনে নেই জায়গাগুলো সম্পর্কে – জায়গার বর্ণনা দেয়া আছে এখানে
১/ গোলাপ গ্রাম সাদুল্লাহপুর।
নদী পথ পার হয়ে ছোট্ট একটি গ্রাম। তবে গ্রাম হলেও পুরোটাই গোলাপের বাগান দিয়ে পরিপূর্ণ। এখানে গেলে আপনার মনে হবে যেন বিশাল একটি গোলাপের বাগানে ভেতর আপনি ঘুরছেন। সরু পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখবেন রাস্তার দুপাশ গোলাপের বাগান দিয়ে ঘেরা।
যাতায়াত ব্যবস্থা
মিরপুর দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট থেকে সাহদুল্লাহপুর ঘাটের উদ্দেশ্যে ৩০ মিনিট পরপর ইঞ্জিনচালিত বোট ছাড়ে। সাহদুল্লাহপুর যেতে যেতে ৪৫ মিনিট- ১ ঘণ্টা লাগবে। সেখানে একেক জনের জন্য ২০-৩০ টাকা করে নিবে। অথবা নিজেরা হাতে চালানো বোট নিতে পারেন, যেতে দেড় ঘন্টার মতো লাগবে।
২/ পানাম ও মেঘনার পাড়
পানাম সিটি ঢাকা শহর থেকে একদমই আলাদা এবং অন্য রকম। পুরনো বাড়িগুলো দেখে দেখেই দিন পার হয়ে যাবে। পৃথিবীর ১০০ টি ধ্বংস প্রায় ঐতিহাসিক শহরের একটি পানামনগর। World Monument Fund ২০০৬ সালে পানামনগরকে বিশ্বের ধ্বংস প্রায় ১০০টি ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায় প্রকাশ করে। ঈসাখাঁ-র আমলের বাংলার রাজধানী পানামনগর। এখানে কয়েক শতাব্দী পুরনো অনেক ভবন রয়েছে, যা বাংলার বার ভূইয়াঁদের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত।
ওখান থেকে কাছেই মেঘনা নদী। নদীর ওপারে গেলেই দেখবেন কাশফুলে ঘেরা বিস্তৃত মাঠ! চাইলে পানাম ঘুরা শেষে সেখানেও ঘুরে আসতে পারেন।
যাতায়ত ব্যবস্থা
ঢাকার অদূরে ২৭কি.মি দক্ষিণ-পূর্বে নারায়নগঞ্জ এর খুব কাছে সোনারগাঁতে অবস্থিত এই নগর।ঢাকা থেকে যাতায়াত ব্যবস্থাও সহজ।গুলিস্থান থেকে ‘মোগরাপারা ‘ এর যেকোনো বাসে (সোনারগাঁপরিবহন) করে চলে আসা যায় ‘মোগরাপারা’, সেখান থেকে অটোরিকশাযোগে দশ-পনের মিনিটে চলে আসা যায় পানামনগরীতে।
৩/ বালিয়াটি জমিদার বাড়ি
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জমিদারবাড়িগুলোর একটি। ঢাকা জেলা সদর থেকে পয়ত্রিশ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে অবস্থিত।মোট সাতটি স্থাপনা নিয়ে এই জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। জমিদার বাড়ির পুরটাই মনোরম পরিবেশে ঘেরা।
যাতায়ত ব্যবস্থা
ঢাকার গাবতলী থেকে মানিকগঞ্জ বা সরাসরি সাটুরিয়া যাওয়ার বাস পাওয়া যাবে। জন প্রতি ভাড়া পড়বে ৬০-৭০ টাকা। সাটুরিয়া পৌঁছে সেখান থেকে রিকশা বা লোকাল সিএনজিতে করে জমিদার বাড়ি যাওয়া যাবে। জন প্রতি ভাড়া ১০ টাকা। বালিয়াটি জমিদার বাড়ি রোববার পূর্ণদিবস আর সোমবার অর্ধদিবস বন্ধ থাকে। অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও বন্ধ থাকে।
জমিদার বাড়িতে প্রবেশের জন্য টিকেটের মূল্য জন প্রতি ১০টাকা।
৪/ মহেরা জমিদার বাড়ি, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে ঘোরার মতন অনেক জায়গা আছে যা আপনি এক দিনে ঘুরে শেষ করতে পারবেন না। তবে তার মধ্যে মহেরা জমিদার বাড়ি সবচেয়ে সুন্দর। এটি তিনটি স্থাপনা নিয়ে তৈরি। বাড়ির ভেতরের দিকে বিশাল খাঁচায় বিভিন্ন রকম পাখি পালা হয়।
তিনটি স্থাপনার প্রতিটাতে অসাধারণ কারুকার্য করা। এসব কারুকার্য দেখলেই মন ভরে যাবে।
যাতায়ত ব্যবস্থা
টাঙ্গাইলের জমিদার বাড়ি দেখতে হলে খুব সকালে বাসা থেকে বের হতে হবে। কারণ যেতে প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা লাগবে। মহাখালি থেকে “ঝটিকা সার্ভিস” নামে বাস ছাড়ে। এছাড়া টাঙ্গাইল জাওয়ার আরো বেশ কিছু ভাল বাস আছে। মহেরা জমিদার বাড়ির বর্তমান নাম মহেরা পুলিশ ট্রেইনিং সেন্টার। ওখানে যেতে হলে নামতে হবে”নাটিয়া পাড়া” বাস স্ট্যান্ড এ। সময় লাগবে ২-২.৩০ ঘন্টার মত। নেমে একটা অটো রিকশা নিয়ে যেতে হবে। রিক্সায় করে সরাসরি মহেরা জমিদার বাড়িতে যাওয়া যাবে। ভাড়া ২০-৩০ টাকা। জমিদার বাড়ি ঢুকতে টিকেট কিনতে হবে, জন প্রতি ২০টাকা।
৫/ পদ্মা রিসোর্ট
ঢাকা থেকে ৪০ কি.মি. দূরে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং নামক স্থানে পদ্মা নদীতে চড়ের উপর এই রিসোর্টটি অবস্থিত। পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত বলেও জায়গাটি অতি মনোরম আর সুন্দর। বর্ষা ঋতুর সময় গেলে আপনার বেশি ভালো লাগবে।
যাতায়াত ব্যবস্থা
ঢাকার গুলিস্তান, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী থেকে এই রুটে বিভিন্ন পরিবহনের অসংখ্য বাস প্রতি ১০/১৫ মিনিট পর পর চলাচল করে। গুলিস্তান সুন্দরবন স্কোয়ার মার্কেটের পূর্ব পাশ এবং যাত্রাবাড়ী গোলচত্বরের পূর্ব-দক্ষিণ দিক থেকে ঢাকা-মাওয়া ও ঢাকা-লোহজং এর বাস ছেড়ে যায়। ঢাকা থেকে সড়কপথে এই জেলার ভাড়া ৬০ টাকা। মাওয়া ফেরিঘাট থেকে রিসোর্টে যাওয়ার জন্য রিসোর্টের নিজস্ব স্পীডবোট রয়েছে।
পদ্মা নদীর টাটকা ইলিশের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে চাইলে যেতে পারেন পদ্মা রিসোর্টে। এছাড়া আরও রয়েছে টাটকা শাকসবজি, গরু, মুরগি ও হাসের মাংস। এছাড়া মৌসুমি ফলমূল তো রয়েছেই। সকালের নাস্তার জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ১০০ টাকা এবং দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ৩০০ টাকার মতো।
পর্যটকগণ ইচ্ছা করলে অর্ধেক বেলা অথবা পুরো ২৪ ঘন্টার জন্য কটেজ ভাড়া নিতে পারেন। সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ভাড়া ২,০০০ টাকা। সকাল ১০ টা থেকে পরের দিন সকাল ১০ টা পর্যন্ত ভাড়া ৩,০০০ টাকা।
৬/ মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাটঃ
ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে আসার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়টি হচ্ছে গুলিস্তানের গোলাপ শাহর মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা যমুনা পরিবহনে চেপে বসা। ৯০ টাকা ভাড়া আর দেড় থেকে আড়াই ঘণ্টার বিনিময়ে আপনি পৌঁছে যাবেন মৈনট ঘাট। ফেরার সময় একই বাসে আবার ঢাকা চলে আসবেন। মৈনট থেকে ঢাকার উদ্দেশে শেষ বাসটি ছেড়ে যায় সন্ধ্যা ৬টায়।
গুলিস্তানের একই স্থান থেকে এন মল্লিক পরিবহনেও আসতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আপনাকে নামতে হবে নবাবগঞ্জের মাঝিরকান্দা নামক স্থানে। ভাড়া ৭০ টাকা। মাঝিরকান্দা থেকে লোকাল অটোতে দোহারের বাঁশতলা। ভাড়া ১৫ টাকা। চাইলে লক্ষ্মীপ্রসাদ নামক স্থানে নেমে পোদ্দারবাড়ি নামক পুরোনো বাড়িটিও দেখে নিতে পারেন। আর জজবাড়ি, উকিলবাড়ি, কোকিলপ্যারি দালান, খেলারাম দাতার বাড়ি যাকে স্থানীয়ভাবে আন্ধার কোঠা বলা হয়, এসব দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখতে চাইলে মাঝিরকান্দার আগে কলাকোপা নামক স্থানেই নামতে হবে।
যাইহোক, মাঝিরকান্দা থেকে বাঁশতলা আসার পর কার্তিকপুরগামী আরেক লোকাল অটোতে উঠতে হবে। ভাড়া ১৫ টাকা। কার্তিকপুর বাজার থেকে আরেক অটোতে মৈনট ঘাট। ভাড়া ১০ টাকা। রিকশায় গেলে ২০ টাকা। গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া থেকে নগর পরিবহনেও আসতে পারবেন। ভাড়া ৯০ টাকা।মাঝির কান্দা থেকে সরাসরি সিএনজি বা ব্যাটারি অটোতে মৈনট ঘাট যাওয়া যায়। ভাড়া ত্রিশ টাকা। নগর পরিবহন নবাবগঞ্জের রুট ব্যবহার করে না। এই বাসটি আসে মুন্সীগঞ্জ হয়ে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে কার্তিকপুর বাজারে নামতে হবে। ঢাকার বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে কদমতলী থেকে সিএনজিতেও আসতে পারবেন। লোকাল সিএনজি কদমতলী থেকে জনপ্রতি ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা ভাড়া নিয়ে কার্তিকপুর বাজার পর্যন্ত আসে। এ ছাড়া যমুনা পরিবহন অথবা এন মল্লিক পরিবহন গুলিস্তানের যে স্থান থেকে ছাড়ে, একই স্থান থেকে জয়পাড়া পরিবহন নামক মিনিবাসটিও ছেড়ে আসে দোহারের জয়পাড়ার উদ্দেশে।
৭/ বেলাই বিল
গাজিপুরের বেলাইবিল মনোরম একটি জায়গা। চেলাই নদীর সাথেই বেলাই বিল।এখানে ইঞ্জিনচালিত আর ডিঙ্গি নৌকা দুটোই পাওয়া যায়।যেটাতে ভালো লাগে উঠে পড়ুন। সারাদিনের জন্য ভাড়া করে নিতে পারেন এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিলে নিজেরাই চালিয়ে ঘুরতে পারেন।
বিকেলে এই বিলের চারপাশে অপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয়, সাথেশাপলার ছড়াছড়ি। শুধু চারিদিক তাকিয়ে থাকবেন। আবার কিছুক্ষণ পরপরই বাতাসের ঝাপটা লাগবে গায়ে। বেশি সময় নিয়ে গেলে অবশ্যই খাবার নিয়ে যাবেন। যাওয়ার সময়নদীরপাড় দিয়ে হাঁটতে থাকি,রওনাদেই আমাদের গন্তব্যে।
যেভাবে যাবেন
গাজিপুর সদর পর্যন্ত যাওয়ার পর, সেখান নেমে টেম্পুতে কানাইয়া বাজার যাবেন। ভাড়া নিবে ১০ টাকা করে। রিকশাতেও যেতে পারেন।কানাইয়া বাজারে নেমেই সামনে ব্রিজ আছে,ব্রিজ পার হয়েই নদীতে বাধা নৌকা ঠিক করে উঠে পড়ুন।
এছাড়াও নদীর পাশে‘ভাওয়ালপরগণা’ (শ্মশান ঘাটবা শ্মশান বাড়ি) আছে। চাইলে নদীর পাশেই এই শ্মশান বাড়িটি দেখে আসতে পারেন।
৮/ নুহাশপল্লী
হুমায়ূন আহমেদ-কে সবাই চেনেন, তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৪০ বিঘা জায়গা নিয়ে তৈরি করেছেন ‘নুহাশ পল্লী’।নুহাশপল্লী গাজীপুরে অবস্থিত একটি বাগানবাড়ী, নুহাশ চলচিত্রের শুটিংস্পট ও পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র।নুহাশপল্লীতে ঢুকে মাঠ দিয়ে একটু সামনে এগিয়ে গেলে হাতের বামপাশে শেফালি গাছের ছায়ায় নামাজের ঘর।এরপাশেই পুরনো লিচু বাগানের উত্তর পাশে জাম বাগান আর দক্ষিণে আম বাগান। ওই লিচু বাগানের ছায়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ।
নুহাশ পল্লীর পুরো জায়গাটি সবুজ গাছপালা দিয়ে আবৃত। দেখলেই মন জুরিয়ে যাবে। এখানে অনেক প্রজাতির এবং অনেক রকমের গাছ রয়েছে।গাছের গায়ে সেটে দেয়া পরিচিতিফলক রয়েছে। আরও রয়েছে সুইমিংপুল আর ছোট্ট পুকুর। মাঠের মাঝখানে একটি গাছের উপর ঘর তৈরি করা আছে, যা আবাক করবে আপনাকে!হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত প্রায় অনেক নাটক সিনেমার অন্যতম শুটিংস্পট এটি।
তাই যারা হুমায়ূন আহমেদ স্যারের ভক্ত আছেন তারা অবশ্যই এই জায়গায় ঘুরে আসুন।
যেভাবে যাবেন
প্রথমে গুলিস্তান থেকে প্রভাতী-বনশ্রী বাসে হোতা পাড়াবাজারে নেমে সেখান থেকে ছোট টেম্পুতে করে পৌঁছে যাবেন নুহাশ পল্লী। এছাড়া নিজস্ব গাড়ি বা মাইক্রো ভাড়া করে যেতে পারেন। এপ্রিল থেকে নভেম্বর নুহাশপল্লী দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।
১২ বছরের উপরে জন প্রতি টিকেট লাগবে ২০০ টাকা।
৯/ শালবন বৌদ্ধ বিহার, কুমিল্লা
শালবন বৌদ্ধবিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতির অসংখ্য এবং চমৎকার সব প্রাচীনস্থাপনাগুলোর একটি।
দেববংশের চতুর্থ রাজা শ্রীভবদেব এ বৌদ্ধ বিহারটি নির্মাণ করেন।
যেভাবে যাবেন
প্রথমে কুমিল্লা শহরে যাবেন। কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কি. মি. দূরে কোট বাড়িতে শালবন বিহার অবস্থিত ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত বাসে যেতে ২-৩ ঘণ্টা লাগবে।কুমিল্লা এসে চলে যান টমটম ব্রীজ সিএনজি স্ট্যান্ডে। সেখানে সিএনজি করে কোটবাড়িতে এবং সেখান থেকে অটোরিকশা বা রিকশায় করে যেতে হবে শালবন বিহার।
১০/ আড়াইহাজার মেঘনার চর:
ঢাকার কাছে আড়াইহাজার চর এলাকা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খুব অল্প সময়ে।বিস্তীর্ণ এলাকায় এরকম মনোরম পরিবেশ আর কোথাও নেই শহরের আশেপাশে!
সারাদিনের জন্য ঘুরতে আসতে পারেন এখানে।নদীর তীরে ট্রলারে সন্ধ্যার সময়টা কাটাতে পারেন।ঢাকার কাছে মেঘনা নদীর মাঝখানে এই বিশাল বালির চর। তার মধ্যে অর্ধেকের বেশিই কাশবন। এখানেবালি অনেক শক্ত তাই কোন চোরাবালির ভয় নেই। ভাটার সময় এখানে ঘুরতে যাওয়া বেশি সুবিধার। এ সময় ১০-১৫ ফিট বালির চরথাকে। দেখতে পারবেন কাশবন, খোলা আকাশে পাখির মেলা আর মাঝে মাঝে ট্রলার আর জাহাযের শব্দ।
যেভাবে যাবেন-
প্রথমে গুলিস্তান থেকে দোয়েল বা সদেশ পরিবহন এ মদনপুর যাবেন। ভাড়া নিবে ৪৫ টাকা। সেখানে নেমে আড়াইহাজার এর জন্য সিএনজি নেবেন। ভাড়া নিবে ৫০ টাকা।
মদনপুর নামার পর আশেপাশে অনেক দোকানপাট বা হোটেলে খেয়ে নিতে পারেন।
যাতায়াত, খাওয়া-দাওয়া এবং ট্রলারের খরচ মিলিয়ে মোটামোটি ৩/৪ জনের জন্য ৭০০-১০০০ টাকা খরচ হতে পারে।
১১/ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক:
বিস্তৃত শালবনের ভেতর প্রাচীর দিয়ে তৈরি এই পার্ক। ভেতরআছে সরু পিচঢালা সড়ক। দু’দিকে নানা প্রজাতির গাছ দিয়ে বিস্তৃত।থাইল্যান্ডের সাফারি ওয়ার্ল্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখেএশিয়ার সর্ববৃহত্তম বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক বাংলাদেশের গাজীপুরে নির্মিত হয়েছে । ২ ইঞ্চি কাচের দেয়াল দিয়ে ঘেরা আছে হিংস্র বন্য পশুদের জায়গা। তাই আপনি তাদের কাছ থেকে দেখতে পারলেও ভয়ের কোন কারণ নেই। তাছাড়া খুব সুন্দর ব্যবস্থায় তৈরি করা হয়েছে এটি।
যা যা আছে-
পার্ক সমন্ধে যেকোনো তথ্য জানার জন্য এখানে প্রথমেই রয়েছে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও শিক্ষা কেন্দ্র।কোর সাফারি পার্কে বন্য প্রাণীরা স্বাধীনভাবে বিচরণ করে।পার্কের গাড়িতে চড়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পারেন বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক, আফ্রিকান চিতা, চিত্রা হরিণ,জলহস্থি, নীল গাই, এবং আরও অনেক বিদেশী বন্য পশুও। তবে এখানে ঢুকতে ২০০ টাকা দিয়ে জন প্রতি টিকিট কাটতে হয়। সাফারি কিংডমে রয়েছে প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র, জিরাফ ফিডিং স্পট ও পেলিকেন আইল্যান্ড।মজার বিষয় হলো এখানে বিশাল জায়গা নিয়ে পাখিদের রাখা হয়েছে। পাখির খাঁচার কাছে যেতেই আপনার মন আনন্দে ভরে উঠবে। নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখি এখানে আছে।
খাওয়া-দাওয়ার জন্য আছে টাইগার ও লায়ন রেস্টুরেন্ট।ওয়াচ টাওয়ার থেকে আপনি দেখতে পাবেন সমগ্র সাফারি পার্কের মনোরম দৃশ্য। দেখতে পাবেন পার্কের ভিতর বিচরণরত বন্যপ্রাণী।
এশীয় তৃণভোজী এবং ছোট মাংসাশী প্রাণী, পাখি সরিসৃপ ও উভয়চর প্রাণী নিয়ে এক্সটেনসিভ এশিয়া সাফারি প্রতিষ্ঠিত।এ ছাড়া তৈরি করা হয়েছে হাতির আশ্রম।বন্য পশুপাখির জলের চাহিদা পূরণ করার জন্য আছে আটটি জলধারা ও দুটি কৃত্রিম হ্রদ। এ ছাড়াও সাফারি পার্কে আছে বাটারফ্লাই পার্ক,বায়ো-ডাইভারসিটি পার্ক,স্নেক পার্কে ক্রোকোডাইল ও লিজার্ড পার্ক।সাফারি পার্কে হাতির পীঠে উঠার ব্যবস্থাও আছে।
যেভাবে যাবেন-
গাজীপুরে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত বাঘের বাজার। সেখান থেকে আরও সামনে কিছু দূর থেকে দেখা যাবেবঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের গেইট।সেটি পার করে দেখতে পারবেন বাঘ, সিংহ, বাজ পাখি বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর ভাস্কর্য।
১২/ মানিকগঞ্জের হরিরামপুর কিংবা ঝিটকা:
ঢাকার কাছে সরিষা ফুলের রাজ্য মানিকনগর। কয়েকজন মিলে একটি গাড়ি ভাড়া করে নিন।তাহলে ইচ্ছেমতো ভালো লাগা যেকোনো জায়গাতেই থেমে যেতে পারবেন।
যেভাবে যাবেন-
ঢাকার হেমায়েতপুর থেকে সিঙ্গাইরের রাস্তা ধরে কিছুদূরসামনে গেলে ধলেশ্বরী ব্রিজপেরিয়ে বিন্নাডিঙ্গি বাজার থেকে বাঁয়ের সড়কে আরও সামনে মানিকনগর। সেখানে সড়কের দুইপাশে সরিষা ক্ষেত। সেখান থেকে আরেকটু দূরে গেলে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর কিংবা ঝিটকা এলাকায় আছে বিস্তীর্ণ সরিষা ক্ষেত। এখানে বিকাল কিংবা সকালে গেলে আপনার মন ভরে যাবে।
১৩/ জল জঙ্গলের কাব্য, পুবাইল:
অসাধারন সুন্দর জায়গা,জল জঙ্গলের কাব্য একটি প্রাকৃতিক রিসোর্ট এর নাম। রিসোর্টটি পূবাইলে এক সাবেক পাইলট তৈরি করেছেন। তবে রিসোর্টে আধুনিক কিছু নাই বললেই চলে। পাইলট ভদ্রলোক খুব বেশি পরিবর্তন করতে চায়নি গ্রামটিকে।প্রকৃতিকে খুব বেশি পরিবর্তন না করে বিশাল এক জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে রিসোর্ট।
বিশাল একটি বিল, পুকুর আর বন-জঙ্গল আছে এখানে। যে কেউ চাইলে একটা দিন এখানে কাটিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। খুবই অন্যরকম পরিবেশ নিয়ে তৈরি এই রিসোর্ট।
যাতায়াত
নরসিংদী, ভৈরব বা কালিগঞ্জ এর বাসে পুবাইল কলেজ গেট নেমে পড়ুন।বামে রাস্তায় ব্যাটরী চালিত রিক্সায় করে প্রায় তিন মাইল গেলেই পাইলট বাড়ি বা জল জঙ্গলের কাব্য।
খরচটা একটু বেশী। তবে খাবার সেই খরচের ভেতরেই থাকবে। সারাদিনের জন্য জনপ্রতি ১৫০০ টাকা (সকালের সাস্তা, দুপুরের খাবার আর বিকেলে স্ন্যাক্স)।এক দিন এবং একরাতের জন্য ৩০০০ টাকা জন প্রতি। শিশু, কাজের লোক ও ড্রাইভারদের জন্য ৬০০ টাকা জন প্রতি।
নাস্তায় চিতই পিঠা, গুড়, লুচি, মাংশ, ভাজি, মুড়ি এবং চা। দুপুরের খাবার হিসেবে ১০/১২ রকম দেশী আইটেম। মোটা চালের ভাত, পোলাও, মুরগির ঝোল, ছোট মাছ আর টক দিয়ে কচুমুখির ঝোল, দেশী রুই মাছ, ডাল, সবজি এবং কয়েক রকমের সুস্বাদু ভর্তা।
১৪)হাজীগঞ্জ জলদূর্গ।
নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া হয়ে ঈসা খান রোড দিয়ে হাজীগঞ্জের পথে ঢুকেই বাম দিকে হাজীগঞ্জ দূর্গ। ভিতরে হাজীগঞ্জ দূর্গের এরিয়াটা গোলাকার।কর্তৃপক্ষের অযত্ন আর অবহেলায় হাজীগঞ্জ দূর্গটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে বাসে নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া নেমে রিক্সায় হাজীগঞ্জ জলদূর্গ।
১৫) সোনাকান্দা জলদূর্গ।
এটি একটি মোঘল জলদুর্গ। দুর্গটি নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকার শীতলক্ষা নদীর পূর্বতীরে অবস্থিত। মোঘল আমলে কিছু জলদুর্গ নির্মাণ করা হয়েছিল ঢাকার পানিপথকে সুরক্ষিত করার জন্য। সোনাকান্দা দুর্গ তাদের মধ্যে একটি। এটি ১৭ শতকের মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত।
যেভাবে যাবেন- হাজীগঞ্জ জল দূর্গ দেখা শেষ করে নৌকায় ধলেশ্বরী নদী পার হয়ে। যেতে হবে সোনাকান্দা জলদূর্গ।
১৬) ইদ্রাকপুর কেল্লা।
মুঘল শাসনামলে বিখ্যাত বারোভূঁইয়ারা বাংলারবিভিন্ন অঞ্চলে স্বাধীনভাবে দেশ শাসন করতেন। বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম ছিলেন বিক্রমপুরের চাঁদ রায়, কেদার রায়। চাঁদ রায়-কেদার রায়দের শায়েস্তা করার লক্ষ্যে মুন্সীগঞ্জের ইদ্রাকপুর নামক স্থানে মুঘল ফৌজদার একটি কেল্লা নির্মাণ করেন। ধলেশ্বরী-ইছামতির সংগমস্থলে চাঁদ রায় ১৬১১খ্রি. ডাকচেরা ও যাত্রাপুর দূর্গ হারিয়ে পরাজিত হন। ফলে সমগ্র বিক্রমপুর মুঘলদের শাসনে চলে আসে। বিশাল বিক্রমপুরে মুঘলদের করতলে রাখতে এবং বিদেশি সৈন্যদের হাত থেকে সুবে-বাংলার রাজধানী ঢাকাকে রক্ষার জন্য মুন্সীগঞ্জের ইদ্রাকপুর নামকস্থানে মুঘল সুবেদার মীর জুলমা ১৬৬০ খ্রি. একটি দূর্গ বা কেল্লা নির্মাণ করেন।এটিই বর্তমানে ইদ্রকাপুর কেল্লা নামে পরিচিত।
যেভাবে যাবেন- নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জ মোক্তারপুর ব্রীজ পার হয়েই হাতের বামের দিকে রাস্তা দিয়ে গেলেই যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দিবে ইদ্রাকপুর কেল্লা।
খাবারের আয়োজনের ত্রুটি রাখেননি এখানকার কর্তৃপক্ষ।
একটু সময় বের করে বন্ধুদের অথবা পরিবার নিয়ে ঘুরে আসুন এসব জায়গায়।
১৭) জিন্দাপার্ক। কাঞ্চন নারায়ণগঞ্জ।
১৮) ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান।
১৯) মধুপুরগড়।
২০) জাতীয় স্মৃতি সৌধ।
২১) আহসান মঞ্জিল।
২২) লালবাগের কেল্লা।
২৩) সাতগ্রাম জমিদার বাড়ী:- এই জমিদার বাড়িটি সাতগ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত। বৃটিশ আমলে নির্মিত এটি বাবুদের জমিদার বাড়ী। এই জমিদার বাড়ী থেকেই জমিদার বাবুরা অত্র এলাকা শাসন করতেন। জমিদারগন প্রজাদের মাঝে খাজনার বিনিময়ে জমি বরাদ্ধ দিতেন। খাজনা পরিশোধ করতে না পারলে তারা সাধারন প্রজাদের উপর খুবই অত্যাচার করতেন। জমিদার বাড়ীর চারদিকটা খুবই সুন্দর। জমিদার বাড়ীর পুকুর ঘাট, বাগান সহ অনেক সুন্দর জায়গা আছে। সিলেট মহাসড়কের পুরিন্দা বাস স্ট্যান্ডে নেমে পায়ে হেটে বা রিক্সা যোগেও যাওয়া যায়।
২৪) বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ী:- স্থানীয়ভাবে একে বাইল্যাপাড়া জমিদার বাড়ি বলা হয়ে থাকে। ঐতিহ্য বুকে ধারন করে লাল ইট ও চুন সুরকির মিশ্রণে তৈরি বাড়িটি এখনো কালের সাক্ষী হিসেবে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে।তিন তিলা এল প্যাটার্ণের বাড়ি। এই জমিদার বাড়িটির সাথে মিশে আছে অনেক ইতিহাস আর ঐতিহ্য। বর্তমানে এই বাড়িটি ইউনিয়ন ভুমি অফিস হিসাবে ব্যবহিত হচ্ছে। সদর উপজেলা থেকে বাসে বা টেম্পু করে মাঝেরচর প্রভাকরদীর আগে ইদবারদী চৌরাস্তা দিয়ে রিক্সা বা টেম্পু যোগে ৪ কিমি পশ্চিমে গেলেই দেখা মিলবে এই বাড়িটির। ভাড়া ১৫-২০ টাকা বাস / টেম্পু আর রিক্সায় ৩০ টাকার মতন। অথবা মদনপুর থেকেও সি এন জি করে যাতায়াত করা যায়।
২৫) বিশনন্দী ফেরিঘাট ও মেঘনা নদী:- এই ফেরিঘাট টি সদর উপজেলা থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে। বর্তমানে অনেকে মিনি কক্সবাজার নামেও এই স্থানটিকে চিনে থাকে।একদিকে মেঘনা নদীর বিশাল জলরাশি। অপরদিকে তীরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বালুময় প্রান্তর।সে হিসাবে দিন দিন ভ্রমন পিপাসুদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে জায়গাটি। সদর উপজেলা থেকে বাসে করে অথবা সি এন জি করেও এই স্থানে যাওয়া যায় ভাড়া ১৫-২৫ টাকা। এবং ঢাকা থেকে সরাসরি এই ফেরিঘাট এ যাবার জন্য বাস আছে ভাড়া ৬০ টাকার মতন।
২৬) গোপালদী জমিদার বাড়ি:- গোপালদীতে জমিদার ছিল তিনজন সর্দার, তেলী, ও ভূঞা। সর্দার ছিলো অত্র এলাকার সবচেয়ে বড় জমিদার। বড় বাবুর নাম ছিলো শ্রী প্রসন্ন কুমার সর্দার। বিশেষ করে তিনিই জমিদারী দেখাশুনা করতেন। খুব প্রভাবশালী জমিদার ছিলেন তিনি। জমিদার শ্রী প্রসন্ন কুমারের ভাইয়ের নাম ছিলো মরিন্দ্র কুমার সর্দার আর অন্য ভাইয়ের নাম ছিলো শ্রী গোপাল চন্দ্র সর্দার।সর্দার বাড়ির বিশাল দ্বিতলা দালান। দোতলা দালানের ভিতরের দিকটায় কারুকাযগুলো এখানো একেবারে ম্লান হয়ে যায়নি। এখনো যেন সুন্দর স্পষ্ট হয়ে ফুটে আছে।
২৭) কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন ও চর অঞ্চল: যারা চর অঞ্চল ভ্রমণ করতে চান তারা এই ইউনিয়নের ১৪ টি গ্রামের যে কোন একটি গ্রামে ভ্রমন করতে পারেন, সাথে ক্যাম্পিং। এই ইউনিয়নের সব গুলি গ্রাম বর্ষা মৌসুমে প্রায় এক একটা দীপের মতন হয়ে যায়। আর তখন গাছগাছালির সবুজের সমারোহে মনরোম এক ছবির মত দৃশ্য ফুটে উঠে প্রতিটি গ্রামে। বিশেষ করে খালিয়ারচর, রাধানগর, কালাপাহাড়িয়া, কদিমচর, খাগকান্দা গ্রাম গুলো ক্যাম্প করার জন্য বিশেষ উপযোগী। এই ইউনিয়নে দুই ভাবে যাতায়াত করা যায়। খাগকান্ডা কদিমচর যেতে হলে বাসে করে আগে আড়াইহাজার সদর যেতে হবে সেখান থেকে অটো করে খাগকান্দা খেয়া ঘাট।খেয়া পাড় হলেই খাগকান্দা গ্রাম।সেখান থেকে সড়ক পথে পায়ে হেটে অথবা নৌকা করে কদিমচর ও অন্যান্য গ্রামে যেতে পারবেন।এছাড়াও খালিয়ারচর্,কালাপাহাড়িয়া,রাধানগর যেতে চাইলে ঢাকা থেকে মোগড়াপাড় বাস স্ট্যান্ডে নেমে সি এন জি করে বৈদ্যের বাজার ঘাটে আসুন ভাড়া ৪০-৫০ টাকা পড়বে। সেখান থেকে লোকাল লাইনের ট্রলারে করে এই গ্রাম গুলোতে আসা যায়। ট্রলারে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘন্টার মত।লোকালে ভাড়া পড়বে ৩০/৪০ টাকা। আবার চাইলে রিসারভ ট্রলারেও যাওয়া যায় ভাড়া ৫০০-৭০০ টাকা।
২৮)ঐতিহ্যবাহী জজ বাড়িঃ এটি নবাবগঞ্জের কলাকোপা নামক স্থানে অবস্থিত। একটি সুন্দর বাগান ঘেরা এবং বিশালাকৃতির এই জমিদার বাড়িটি মূলত জজ বাড়ি নামে পরিচিত। বাড়ির পাশেই রয়েছে শান বাঁধানো পুকুর। রয়েছে পোষা হরিনের একটি খামার। বাগানের হাজারো রকমের ফুল আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে অনায়াসে। জমিদার বাড়িটি অতি প্রাচীন কালের ঐতিহ্যবাহী নকশায় তৈরী। যা আপনাকে কিছুক্ষনের জন্য হলেও সেই পুরোনো দিনের কথা মনে করিয়ে দিবে। এই বাড়িটি প্রায়্ই নাটক এবং চলচিত্রের সুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
২৯)কোকিল প্যারি জমিদার বাড়িঃ এই জমিদার বাড়িটি জজ বাড়ির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বলা যেতে পারে এটি জজ বাড়ির ওল্ড ভারসন। জজ বাড়ি বিভিন্ন সময়ে সংস্কার করা হলেও এটি রয়ে গেছে সেই আগে যেমনটি ছিল। এই জমিদার বাড়িতেও রয়েছে শত শত দৃষ্টিনন্দন ফুলের গাছ আর বাড়ির ঠিক সামনে রয়েছে বিশালাকৃতির স্বচ্ছ পানির পুকুর। রয়েছে বিশালাকৃতির পুকুর ঘাট। ঘাটে বসে ইচ্ছা করলে পানিতে পা ভিজিয়ে আড্ডাও দিতে পারবেন অনায়াসে। হয়তো কিছু ছোট ছোট মাছ আপনার পায়ে কামর দিয়ে ছুটে পালাবে।
৩০)খেলালামদার বাড়ি (আন্ধার কোঠা):এটি এক সময় সকলের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। কিন্তু সংস্কার এবং রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এটি এখন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। এখনো মাটির উপর ২ তলা একটি জড়াকীর্ণ ভবন দেখতে পাবেন। কথিত আছে এই পাঁচ তলা ভবনটি এক রাতে ৩তলা পর্যন্ত মাটির নিচে চলে গিয়েছিল। ভবনটির উপরের তলাতে একটি বড় চৌবাচ্চা আছে। কথিত আছে জমিদার খেলালামদা এর মা একদিন তার সন্তানের কাছে দুধ খেতে চাইলে সে তার মায়ের জন্য এই চৌবাচ্চা বানানোর নির্দেশ দেন। পড়ে সেই বিরাট চৌবাচ্চায় দুধ এবং কলা দিয়ে পূর্ণ করে তার মাকে সেই চৌ্বাচ্চায় নামিয়ে দেন। তার মা সাতার কেঁটে কেঁটে মনের সাধ মিটিয়ে দুধ খেয়েছিল। এই বাড়িটির পাশেও একটি বিরাট পুকুর আছে। কথিত আছে এই পুকুরের পাশে এসে কেউ কিছু চাইলে তার পর দিন তাই মিলে যেত। তবে এসব কাহিনীর সত্যতা কতটুকু তা নিয়ে কোন যুক্তিতে যেতে চাচ্ছিনা। এক সময় এই ভবনের নিচের তলাগুলোতে সিড়ি বেয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু সিড়িগুলো ধীরে ধীরে ক্ষয় প্রাপ্ত হওয়ায় এখন এর প্রবেশমুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই ভবনের ভেতরে অন্ধকার এতই ঘন যে অতি উজ্জল আলোও এখানে স্তিমিত হয়ে যায়। এর জন্যই এই ভবনকে আন্ধার কোঠা বলা হয়ে থাকে।
আর কলাকোপা আনসার ক্যাম্প, বান্দুরা ভাঙা মসজিদ, ইছামতি নদী,বান্দুরা গির্জা, মহাকবি কায়কোবাদের জন্মভুমি, মরিচা এবং তুলসীখালী সেতু।
এছাড়াও আছে ঢাকা ও ঢাকার আশপাশে- সদরঘাট, জাতীয় জাদুঘর, চিড়িয়াখানা, ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দনপার্ক, ইত্যাদি বিস্তারিত পরে ইনশা আল্লাহ।
(সংগৃহীত)
বিষয়: বিবিধ
৬৮৬৪ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখানের সবটাই ফাঁকিবাজি। ছোট ছোট ডেরার মতো করে এক এক আইটেম রাখা আছে, যার জন্য আলাদা আলাদা পয়সা গুনতে হয়। নামটা শুনতে যতটা সুন্দর লাগে বাস্তবে ততটা নয়।
http://www.bdface.net/blog/blogdetail/detail/2120/abdulmazed/76172#.V_nV6Pl97IU
কিছু জায়গায় যাওয়া হয়েছে কিছু জায়গায় যাওয়া হয়নি। বাংলাদেশে বেড়ানর জন্য অনেব জায়গা। অভাব শুধূ উদ্যোগ আর নিরাপত্তার।
সাদুল্লাহপুর কি টঙ্গী না গাজীপুরের দিকে না কি কেরানীগন্জের দিকে ?
সোনারগাঁয়ে ১৯৯৮/৯৯ এ একবার গিয়েছিলাম , শিক্ষাসফরে ।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ির পুকুর ঘাটের ছবিটা তো বিদেশ বিদেশ লাগতেছে । ওখানে জমিদারদের বংশধরেরা থাকে না ?
এভাবেই বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত ও পর্যটন স্পটগুলো নষ্ট করা হচ্ছে।
মহেরার ছবি মনে হয় দেন নাই ।
পদ্মা রিসোর্ট এর বর্ণনা শুনে ভালই লাগলো । এখন গেলে কি ভাল বলে ? পদ্মা নাকি এখন সর্বোচ্চ সীমায় প্রবাহিত হচ্ছে ! সিকিউরিটি কেমন ? কেউ কি স্টে করে ২/৩ রাত?
মৈনট ঘাটের আশে পাশে থাকার কোন সুযোগ নাই ? নাকি ভ্রাম্যমান তাবু দিয়ে কাজ চালাতে হয় ? যমুনা পরিবহন কি সোজা যাওয়ামত নামিয়ে দেয় ?
বেলাই বিলে সারাদিনের জন্য কত ভাড়া চায় ?
এরকম একটা জায়গায় বেড়ানোর খুব শখ ।
নুহাশপল্লীর নাম তো শুনেছিই কিন্তু সেখানে যেতে কেন জানি মন সায় দেয় না । মনে হয় খুব বেশী লোক সমাগম হয় বলে এরকমটা লাগে।
ঢাকার কাছের গুলোতে থাকার চেয়ে অভ্যন্তরীন যাতায়াত ও খাবার দাবারের ব্যবস্থা থাকা বেশী গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি ।
নারায়ঙন্জের যে দূর্গের ছবি দেখলাম সেটা খুব পরিচিত লাগতেছে । বন্দর পার হয়ে নদীর অপর পারে এরকমই একটা মাঠে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলাম স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় । সেটাকে কিল্লার মাঠ বলে ওরা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন