চলুন যাই প্রেম যমুনার ঘাট।
লিখেছেন লিখেছেন নেহায়েৎ ০৩ মে, ২০১৬, ১০:৪০:২১ সকাল
হামাকেরে বগুড়ায় দেখার যে কতো কিছু আছেরে চ্যাংড়া!!!
নাই শুধু দেখার মতো দুইখান চোখ। আর নাই সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো একখান মন।জি আমাদের বাড়ী বগুড়ায় এমন অনেক সৌন্দর্য ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আমাদের আশ-পাশেই। কিন্তু আমরা চোখে খুলে খুঁজে দেখি না। আমরা চাইলেই অবসরে কয়েক ঘন্টায় ঘুরে দেখে আসতে পারি প্রকৃতিক এসব দর্শনীয় স্থানগুলো।
সারিয়াকান্দি প্রেম যমুনার ঘাটের ওপাশে চর।
বগুড়া শহর হতে সোজা পূর্বদিকে ২০/২৫ কিলোমিটার হতে পারে সারিয়াকান্দি উপজেলায় অনিন্দ্য সুন্দর এই ঘাটের নাম দেয়া হয়েছে প্রেম যমুনার ঘাট। যমুনা নদীর ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে তৈরি করেছে বিশাল এবং অসাধারণ সৌন্দর্য মন্ডিত একটি বাঁধ।যমুনা নদীর অবারিত পানি বিশাল বিশাল চর, নলখাগড়ার বন এবং এই বাঁধের সৌন্দর্য একসাথে মিলেমিশে এখানে তৈরি হয়েছে এক অনিন্দ্য সুন্দর কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক পরিবেশ।যার সৌন্দর্য শুধুমাত্র সেখানে গেলেই বোঝা যায়!
আমাদের বগুড়ার শাখা অফিস এর ইনচার্জ প্রায়ই এই সুন্দরের কথা গল্প করেন। ওই অফিসের ষ্টাফরা কাজের অবসরে সেখানে কিছু সময় চিত্তবিনোদনের জন্য ঘুরে আসেন অফিস মাইক্রো নিয়ে। আমি যখন গেছি অনেক বছর আগে তখন এমন সুন্দর ছিল না জায়গাগুলো। তবে নদীর চরের স্বাভাবিক সৌন্দর্যতো ছিলই।
বর্তমানে এখানে নদীতে ভ্রমনের জন্য আছে ইঞ্জিন নৌকা। পর্যটকরা ইচ্ছা মতো ঘুরতে পারে নদীর বুকে, মন চাইলেই ঘুরে আসে ওই পাড়ের চর থেকে। এখনকার জনশ্রুতি যমুনার বুকে প্রেম যমুনার ঘাট হচ্ছে সবচে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন ঘাট।
ইঞ্জিন নৌকা নিয়ে সুবিশাল নদীর বুকে ঘুরতে ঘুরতে মাঝে মাঝে হঠাৎ করে সামনে-ডানে-বামে পেয়ে যেতে পারেন ছোট বড় অনেক চর। এমন চর পেয়ে গেলে স্মরণ হতে পারে কক্সবাজারের কথা! সেখানে নেমে চরের ঢালুতে গোসলও করতে পারেন মনের আনন্দে। মনের আনন্দে অর্জন করতে পারেন অন্যরকম এক নতুন অভিজ্ঞতা। সেটা হবে ভিন্ন রকম অনুভূতির স্মৃতি! সেখানে গোসল করতে নেমে গাইবেন না আবার- 'যমুনার জল দেখতে কালো স্নান করিতে লাগে ভাল'! তবে যমুনার স্রোত হতে সাবধান! আপনাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেলে পড়তে পারেন বিপদে!
মনকাড়া প্রেম যমুনার ঘাট!
বগুড়া শহর হতে বের হয়ে এই ঘাটে যাওয়ার সময় রাস্তার দু'ধারের মাঠ-গ্রামের সৌন্দর্যে আপনি বিমোহিত হবেন কোন সন্দেহ নাই। আসলেই যাওয়ার গ্রামীন পথটুকু অসম্ভব নজরকাড়া! যাওয়ার পথে দেখা বাঙ্গালী নদী সহ বেশ কয়েকটি নাম না জানা ছোট-খাট নদী খাল। তাদের রুপও কম নয়ন জুড়ানো নয়!
বাঙ্গালী নদী।
যদি গাড়ী নিয়ে যান অথবা বগুড়া শহর থেকে বাসে যান, যাওয়ার সময় খাবার প্যাকেট নিয়ে যাবেন দুপুরের লাঞ্চের জন্য। তাহলে আর ঝামেলায় পড়তে হবে না।
যমুনার চরে চাচাত ভাই শাকিল।
তবে আমার জন্য এই চরে যাওয়ার সময় খাবার নিয়ে যাওয়ার দরকার নাই ওখানেই বিয়ে হয়েছে আমার ফুপাত বোনের। তার বাড়ীতে আমি পেট ভরে যতোবার খুশি খেতে পারি।
যারা ঢাকা থেকে যেতে চান। প্রথমে আপানাদের বগুড়া শহরে আসতে হবে। বিকেল বেলা রওয়ানা করে রাতে হোটেল এ থেকে। পরদিন ভোর বেলা যাত্রা শুরু করুন প্রেম যমুনার ঘাটের উদ্দেশ্যে। ঢাকায় মহাখালী, কল্যাণপুর, উত্তরা হতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বগুড়ার উদ্দেশ্যে গাড়ী ছেড়ে যায়। থাকার জন্য শহরে ফোর ষ্টার হতে বিভিন্ন মানের হোটেল আছে আপনার সাধ্যের মধ্যেই। খাবারও পাবেন সস্তায়।
বগুড়ায় আপনার জন্য আছে হোটেল নাজ গার্ডেন (ফোর স্টার মানের), পর্যটন মোটেল (বনানী মোড়ে), সেফওয়ে মোটেল (চারমাথা), নর্থওয়ে মোটেল (কলোনী বাজার, অফিসের কাজে গেলে আমি এই হোটেলেই থাকি), সেঞ্চুরি মোটেল (চারমাথা), মোটেল ক্যাসল এম এইচ (মাটিডালি)। এগুলা প্রত্যেকটাই শহরের বাইরে, নিরিবিলি পরিবেশে। আর শহরের মধ্যেও অনেক হোটেল আছে তার মধ্যে একেবারে শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হোটেল আকবরিয়া অন্যতম। নবাব বাড়ি রোডেও আছে কয়েকটি হোটেল।
তবে আর দেরী কেন!? তৈরী করে ফেলুন আপনার ভ্রমণ প্লান।
আপনাকে স্বাগতম আমাদের বগুড়ায়
-
(কিছু ছবি ধার করা)
বিষয়: বিবিধ
২৮৭৭ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এই যে দই খান-
http://www.bdnow.net/blog/blogdetail/detail/2120/abdulmazed/24352#.VylsDIR97IU
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
সত্যি খুব সুন্দর। যাব একদিন ইন শা আল্লাহ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন