ভয়ংকর বিপদে পড়েছিলাম আফ্রিকার জঙ্গলে!
লিখেছেন লিখেছেন নেহায়েৎ ২৯ মার্চ, ২০১৬, ১০:৪৩:১৯ সকাল
এতদিন শুধু আফ্রিকার জঙ্গলের গল্প শুনেছি। নেটে দেখেছি। কিন্তু এ জঙ্গল যে এতোটা ভয়ংকর সেটা গভীরভাবে উপলব্ধি করলাম! চারদিকে গহীণ অরণ্য, বিচিত্র কিছু প্রাণীর অপরিচিত আওয়াজ ব্যাতিত নিরব-নিস্তবদ্ধ এক পৃথিবী! আমি একা চলছি অন্যরকম এক অনুভূতি নিয়ে। কোন লোকজন বা গাইড আমার সাথে নাই। আজ বোঝা যাচ্ছে একা জঙ্গলে যাওয়ার মজা! সেটা যেন-তেন জঙ্গল নয়। আফ্রিকার অন্ধকার গহীন বন!
আফ্রিকার জঙ্গলে একা বেড়ানোর অনুভূতি কাউকে বুঝানোর মতো নয়। এটা শুধু যে যায় সেই উপলব্ধি করতে পারে! কোন দিকে উত্তর আর কোন দিকে দক্ষিণ সেটা বোঝার কোন উপায় নাই। বিশাল বিশাল উঁচু উঁচু সব বৃক্ষ আকাশটাকে ঢেকে রেখেছে। রোদ না পড়ায় কেমন স্যাঁত সেঁতে একটা পরিবেশ। চলছি তো চলছি অজানা একটা শংকাযুক্ত ভয় নিয়ে!
কতক্ষণ এভাবে চলেছি জানি না। সামনে একটা ফাঁকা মতো জায়গা নানা জাতের শ্যওলায় মাটি ঢাকা। পানির ঝিরঝিরি শব্দ, দেখলাম পাহাড়ের উপর থেকে পড়ছে ছোট একটা ঝরণা।ঝরণার পানি আর খোলা জায়গা পেয়ে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। অনেক সময় পর অন্ধকার মতো জঙ্গল হতে বের হতে পেরেছি এটাই অনেক! চারদিক একটু আলোকিত পরিবেশ, মন্দ না।
ঝরণার দিকে এগুতে গিয়ে অপর পাড়ে চোখে পড়ল একটা পোড়োবাড়ী! অনেক পুরান দালান। দেয়ালগুলোতে শ্যাওলা ধরা। কৌতুহল-শংকা-ভয় মিশ্রিত একটা অনুভূতি নিয়ে বাড়ীটার দিকে এগুতো থাকলাম। ছোট ছোট জঙ্গলে ভরা রাস্তা পেরিয়ে মূল ফটকের কাছে এগিয়ে গেলাম। ভাঙ্গা ধসে পড়া দরজা পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলাম। বোঝা যাচ্ছে অনেকদিন কোন মানুষ বা প্রানীর পা পড়েনি। আস্তে আস্তে উঠোন পার হয়ে দালানের ভিতরে ঢুকলাম। সিড়ি পেরিয়ে দোতলায় গেলাম।
দোতলায় উঠে পিছনের দিকে একটা বড় সড় বারান্দার মতো খোলা জায়গা। তিনদিকে দেয়াল ঘেরা। সেখানে দাড়িয়ে জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে আছি। ইতিমধ্যে সন্ধ্যা নেমেছে প্রায়। দেয়ালে হেলান দিয়ে দেখছি আর ভাবছি এ আমি কোথায় এলাম আর কেনই বা এলাম। কিভাবে বের হব এখান থেকে!
হঠাত কিছুর একটা শব্দে আমার শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। আমার বাম পাশের দরজার উল্টাদিকে দেয়ালটা আস্তে আস্তে নেমে আসছে! দেখলাম ফেরিতে গাড়ী উঠার পর যেভাবে পাটাতন উঠে যায় ফেরি ছেড়ে দেয়। গাড়ী নামার সময় আবার নেমে যায়। সেভাবে দেয়ালটা নেমে গেল। সেটা বারান্দা বরাবর একটা ফ্লোর হয়ে গেল।ভয়ংকর দর্শন কিছুটা মনুষ্য আকৃতির অদ্ভুত একটা জন্তু বারান্দায় এসে দাড়াল! ভয়ে আতঙ্কে আমার হাত-পা অসাড় হয়ে গেল! যেন নড়ার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি!
জন্তুটা যদি ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকায় যেন তৎক্ষনাৎ আমি জ্ঞান হারাব! কিন্তু সে তাকিয়ে আছে সোজা সামনের দিকে, আর কোন এক রাগে-আক্রোশে সে মুখে অদ্ভুত শব্দ করছে! জন্তুটি যেদিকে তাকিয়ে আছে সেদিক থেকে ঢোলের মতো এক ধরণের বাদ্য-বাজনার আওয়াজ আসছে।সন্ধ্যার অন্ধকার হয়ে ঘনিয়ে আসায় একটু দূরে তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না।
জন্তুটা আক্রোশে কিছু সময় ফোঁস ফোঁস করে দালানের ভিতরে ঢুকে গেল।দেয়ালটা আবার উঠে গেল। আমি যেন আবার নতুন করে প্রাণ ফিরে পেলাম! ভাবছি আজ রাতটা এখানে কাটাব নাকি পুণরায় জঙ্গলের মাঝে ফিরে গিয়ে রাতটা কোন রকমে কাটিয়ে সকাল হলেই আবার রাস্তা খোঁজা শুরু করব। বসে বসে এসব চিন্তু করছি আর দেখছি খুব দ্রুত যেন চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছে। এমন সময় দেখলাম আমার বাম পাশের দেয়াল টপকিয়ে এক জঙ্গলী মহিলা আবার কাছে আসার চেষ্টা করছে! লজ্জার ব্যাপার, তার শরীরে কোন পোশাক নাই! আমি বসা থেকে দাড়াবার চেষ্টা করতেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল!
উঠে ওয়াসরুমে থেকে ফ্রেশ হয়ে আবার শুয়ে পড়লাম। শুয়ে শুয়ে ভাবছি কি দেখলাম! কিছু সময় পর ফজরের আজান দিল। অজু করে মসজিদের দিকে রওয়ানা করলাম।
(ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন আমি খুব কমই দেখি। সেদিন এরকম একটা স্বপ্ন দেখলাম। সকালে বউকে বললাম। পুরো স্বপ্নের কথাটা কতটুকু এদিক-ওদিক হয়েছে আল্লাহ ভাল জানেন। তিনি ক্ষমাশীল)
আর ছবি গুলো নিয়েছি গুগল থেকে।
বিষয়: বিবিধ
৭৭১৫ বার পঠিত, ৫৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে ভালো লেগেছে, এভাবে মাঝে মাঝে চন্দ্র ও মঙ্গল ভ্রমন করে আসলে আমরা অন্তত কিছুটা জানতে পারবো। ধন্যবাদ
পড়ে খুব ভালো লাগলো।
ভাল লাগল ধন্যবাদ ।
বেশ ভালো লাগলো। তবে স্বপ্নের ব্যাখ্যাটা জানতে পারলে আরো ভালো লাগতো।
-
একটি পরামর্শ: মানুষগুলো প্রায় বিবস্ত্র!! ওই ছবিটা এডিট করা জরুরি। জাযাকাল্লাহ খাইর।
স্টিকি করার মতোই লেখা - সুন্দর।
ঐ আপনার স্বপ্নটা খুব ভালো!
ঐ জন্তুটার বাইরে থাকা খুবই দরকার, কিন্তু ওটা বারবার দালানের ভেতরে ঢুকে যায়! আর দেয়ালটাও উঠে যায়!
কয়েক কোটি মানুষ এখন এমনটাই ভাবছে!
সত্যিই চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছে!
ঐ জঙ্গলী উলঙ্গ মহিলা কাছে আসার চেষ্টা করেই যাচ্ছে! আপনার মত জাতির ঘুমটাও যদি ভেঙ্গে যেতো!!
না্য়ুজু বিল্লাহি মিন কুল্লি শাররিন..
ভাবি স্বপ্নের কথা শুনে কি বললেন, তা তো জানালেন না।
ভালো লেগেছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন