সু্ইপার-ঝাড়ুদার দিয়ে সকল ধরণের অপারেশন!!!
লিখেছেন লিখেছেন নেহায়েৎ ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:২৫:৫৯ সকাল
এটা কোন গল্প নয় বাস্তব ঘটনা! দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসার প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এর ঘটনা। বছরের পর বছর ধরে এমন ঘটনা ঘটে আসছে! জটিল জটিল সব অপারেশন হচ্ছে সুইপার-ঝাড়ুদারে হাতে! হাতে-নাতে ধরা, ছবি প্রমাণ থাকার পরও কর্তৃপক্ষ বার বার অস্বীকার করে আসছে!!!
-
পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের একটা গল্পের বই আছে। নাম বাঙ্গালীর হাসির গল্প। সেই বইতে একটা গল্প আছে- নাপিত ডাক্তার।
অতি সংক্ষেপে সেই গল্প-
এক শহরে এক নাপিত ছিল। সে লোকজনের ছোট-খাট চিকিৎসা করত। ফোঁড়া কাটা, জ্বর, মাথাব্যাথা, পেটখারাপ ইত্যাদি। সে এমন করতে করতে বিভিন্ন অপারেশন করত। পেটা কেটে ভেতরে সেলাই করে বাইরে হলুদের গুড়া লাগিয়ে দিত রোগী কখনও ভাল হতো কখনও মরত! তাতে কি হয়েছে! ডাক্তার এর কাছেওতো রোগী মারা যায়!
শহরের লোকজন এসব নিয়ে পরোয়া করত না। তারা তাদের যে রোগে চিকি'ৎসার জন্য নাপিত ডাক্তারকেই ডাকত। অল্প টাকায় চিকিৎসা করানোর জন্য। এভাবে চলতে থাকায়। এসময় শহরের পাশ করা বড় বড় ডাক্তাররা সব বেকার হয়ে পড়ল! বছরের পর বছর এভাবে চলায় দূর্মুল্যের বাজারে তারা ডাক্তারী করার যন্ত্রপাতি বিক্রি করে চাল কিনে খেতে লাগল। তাদের সন্তানদের ফল-ফলাদি কিনে দিতে পারে না। আর নাপিতের বাড়িতে উঠল বিশাল দালান। তার ছেলে-মেয়েরা খায় ফল-মূল চকলেট ।
এভাবে তারা দূর্দশার কথা চিন্তা করে ডাক্তাররা এক আলোচনায় বসল। তারা বিভিন্ন আলাপ-আলোচনার পর
সিদ্ধান্ত নিল তাদের শহরের বৃদ্ধ ডাক্তার এর কাছে যাবে এ সমস্যা সমাধানের জন্য। সেই বৃদ্ধ ডাক্তার তাদের উস্তায। সে ভাল পরামর্শ দিতে পারে।
একদিন তারা সেই বৃদ্ধ ডাক্তারের নিকট গিয়ে নাপিতের বিষয়ে সব কথা খুলে বলল। বৃদ্ধ ডাক্তার তাদের বললেন নাপিত ডাক্তারকে আমার কাছে নিয়ে এস। নাপিত আসার পর বৃদ্ধ ডাক্তার নাপিতকে বললেন, শুনলাম ডাক্তার হিসেবে তুমি খুব ভাল, তোমার কাঁটা-ছেড়ার হাত খুব পাকা। তোমার অনেক নাম-যশ। তবে তুমি যদি আমাদের কাছে মানুষের শরীর বিদ্যা সম্পর্কে আরো একটু শিখে নাও তাহলে তোমার জ্ঞান আরো বাড়বে এবং আরো বড় ডাক্তার হতে পারবে।
এমন প্রস্তাব নাপিতের খুব মনে ধরল। সে ডাক্তারি শেখা শুরু করল। শরীরের কোথায় কোন শিরা, কোথায় কোন উপশিরা, কোথায় কাটলে রোগীর রক্ত বন্ধ হবে না। কোথায় কাটলে রোগী মারা যেতে পারে ইত্যাদি । অপারেশনের যন্ত্রাপাতি কিভাবে জীবানূমুক্ত করতে হয়, তাছাড়া কি কি ইনফেকশন হতে পারে, অপারেশনের পূর্বে হাত কিভাবে জীবানু মুক্ত করতে হয়। এবার সে পূর্ণাঙ্গ ডাক্তার হয়ে গেল!
তাকে রোগী এনে অপারেশন করতে দেওয়া হল। কিন্তু সে বার বার হাত জীবানুমুক্ত করতে থাকল তার যন্ত্রপাতি মুক্ত করতে থাকল, তবুও তার মনের মতো হয় না! সে ভাবে জীবানু বুঝি রয়ে গেল। আবার ইনফেকশন হয় কি-না!
এরপর সে রোগীকে অপারেশন করতে নিয়ে হাত কাঁপতে লাগল! কোন শিরা কেটে গেলে রোগীর রক্ত বন্ধ হবে না, রোগী মারা যেতে পারে। এই ভয়ে তার হাত কাঁপতে কাঁপতে হাত থেকে অপারেশনের যন্ত্রপাতি পড়ে গেল!
সে আর আগের মতো নাপিত ডাক্তার রইল না!!!
(এই গল্পের কথা মনে পড়ে এখন আমার মনে হচ্ছে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এর সেইসব সুইপার-ঝাড়ুদারদের শাস্তি না দিয়ে ডাক্তারি প্রশিক্ষন দিয়ে ডাক্তার বাননো দরকার)
লিংক-http://www.first-bd.net/newsdetail/detail/200/193761
বিষয়: বিবিধ
১৪২৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন