বায়েজিদ বোস্তামি
লিখেছেন লিখেছেন নেহায়েৎ ২৪ আগস্ট, ২০১৫, ০২:২৮:৪৯ দুপুর
বায়েজিদ বোস্তামি (ফার্সি بايزيد بسطامى ) একজন বিখ্যাত ইরানী সূফী সাধক। তিনি আবু ইয়াজিদ বিস্তামি, তায়ফুর আবু ইয়াজিদ আল-বোস্তামি অথবা সুলতান-উল-আরেফিন (৮০৪-৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দ)নামেও পরিচিত। তার জন্ম ইরানের বোস্তাম শহরে।
বোস্তামী নামের অর্থ - যিনি বোস্তাম শহরের বাসিন্দা। হযরত বায়েজিদের দাদা একজন পার্সী ধমাবলম্বী ছিলেন, যিনি পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার দাদার তিন ছেলে ছিল, তারা হলেন - আদম, তায়ফুর এবং আলী। তারা সকলেই কঠোর তপস্বী ছিলেন। তায়ফুর এর ছেলে হলেন বায়েজিদ। তার শৈশব সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না, তবে বেশি ভাগ সময়ই তিনি নিজ বাড়ির নিভৃতে অথবা মসজিতে কাটিয়েছেন। নিভৃতচারী হওয়া সত্ত্বেও সূফী জগৎ থেকে তিনি কখনোই আলাদা থাকেননি। সূফীবাদের আলোচনা করার জন্য তিনি লোকজনকে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রন করতেন। বায়েজিদ কঠোর তপশ্চর্যা করতেন এবং সৃষ্টির্কতার সান্নিধ্য লাভের আশায় দুনিয়ার সকল আনন্দ-ফুর্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। অবশেষে এটি বায়েজিদকে আত্নবিলয়(ফানাফিল্লাহ) - এর অবস্হায় নিয়ে যায়; সূফীবাদের মতে, শুধুমাত্র এ অবস্থাতেই একজন মানুষ সৃষ্টিকর্তার নৈকট্যলাভের কাছাকাছি পর্যায়ে যেতে পারে। বায়েজিদই প্রথম উন্মত্ত সূফী হিসাবে পরিচিতি পান, কেননা তিনি সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিজের অনুভূতিগুলো খোলাখুলি প্রকাশ করতেন (শাতাহাত, English: shatahat )। বায়েজিদকে একজন অন্যতম প্রভাবশালী অলৌকিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু তিনি তার সময়ে বেশ বিতর্কিতও ছিলেন।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ সেনানিবাসের নিকটবর্তী একটি দরগাহ "বায়েজিদ বোস্তামির মাজার" হিসেবে প্রসিদ্ধ। কিন্তু বায়েজিদ বোস্তামি নামের কোন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব কখনো বাংলাদেশে এসেছে, এমন ইতিহাস নেই। চট্টগ্রামে তার নামে পরিচিত মাজারটি হচ্ছে একটি প্রতিকৃতি বা অনুকৃতি মাত্র। তবে অনেক মানুষ বিশ্বাস করেন যে, বায়েজিদ বোস্তামি বাংলাদেশে আগমন করেছিলেন। খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর দিকে আরব বনিকরা চট্টগ্রাম উপকূলে আসা যাওয়া করত। সুতরাং নবম শতাব্দীতে বায়েজিদ বোস্তামির চট্টগ্রামে আগমন অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু এটি একটি ধারণা মাত্র। এর সপক্ষে এখন পর্যন্ত কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় নি।
হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রহঃ) এর একটি কারামত!!!
হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রহঃ) রাসুলে করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়াসাল্লাম এর যিয়ারতের উদ্দেশ্য মদিনা মুনাওয়ারা সফরের প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন।অনেক ভক্ত-মুরীদও তাঁর সফর সঙ্গী হলেন।সফরের প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের বোঝা তিনি উটের পিটের ওপর রাখলেন।বোঝার আকার একটু বড় দেখে কিছু লোক বলে উঠলেন এতবড় বোঝা প্রাণীর উপর রাখা বুযুর্গুদের শানের খেলাপ।যেহেতু এর দ্বারা তাদের কষ্ট হয়।এটা শুনে তিনি বললেন,বোঝা আমি উটের পিটের উপর রাখছি কিনা ভাল করে দেখুন।সবাই মনোযোগ দিয়ে দেখল যে,ঠিকই বোঝা উটের পিটের উপর নয় বরং উটের পিট হতে সামান্য উপরে ঝুলন্ত অবস্থায়।সবাই আশ্চর্য হয়ে ভুল বুঝতে পেরে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন।তিনি ক্ষমা করে দিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন আমি এইসব কিছু গোপন রাখতে চাই।কিন্তু সমস্যা হল অনেক সময় কিছু মানুষ না বুঝে সমালোচনা শরু করে দেয়।ফলে তারা গুনাহের ভাগী হয়ে যায়।সে সময় আমাকে বাধ্য হয়ে তাদেরকে গুনাহ্ থেকে বাঁচানোর জন্য আসল রহস্য প্রকাশ করতে হয়।আবার প্রকাশ করতে গিয়ে আরেক সমস্যা দেখা দেয়।কারামতসমূহ দেখে মানুশ এমনভাবে হতবম্ব হয়ে যায় যে,তাদের হুঁশ আকল পর্যন্ত চলে যায়।
(Source:হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রহঃ) ও তাঁর দরগাহ শরীফ,পৃষ্ঠা-১৪৮)। আল্লাহ ভাল জানেন এর দলিল কি! এরা কোথায় পাইছে।
বিষয়: বিবিধ
৩৩৬৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিয়ে না হওয়া, সন্তান না হওয়া, স্বামীর সাথে কলহ, ব্যবসায় ধস সহ হাজার রকমের সমস্যায় পড়ে ঈমানদারগন সেখানে গিয়ে মুশরিক হয়ে আসে।
আল্লাহ হেফাজত করুক।
মন্তব্য করতে লগইন করুন