ঢাকার পাশেই সুন্দর ভ্রমণ!!!
লিখেছেন লিখেছেন নেহায়েৎ ০১ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:২৩:১৬ সকাল
কষ্টদায়ক কিন্তু অসাধারণ সুন্দর একটা ভ্রমণ করে আসলাম!
-
-
গতকাল সকাল ৮.১৭ যাত্রা টায় শুরু করে রাত ৯টার দিকে বাসায় ফিরলাম। ঘুরে আসলাম শাইখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা, আল-জামি'আহ আস সালাফিয়া। প্রথমে খিলক্ষেত গিয়ে সেখান থেকে সিএনজিতে করে সোজা কাঞ্চন ব্রীজ।
ইছাপুরা পর্যন্ত রাস্তা মোটামুটি ভাল। এর পর রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ খারাপ, গাড়ি একটা গেলে ধূলার মেঘে রাস্তা অন্ধকার হয়ে যায়। তিনশ ফিট যে রাস্তার কাজ চলছে সেটা শেষ হলে খিলক্ষেত-বিশ্বরোড হতে যেতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ আধা ঘন্টা। কিন্তু বর্তমানে সিএনজি ড্রাইভার যেদিক দিয়ে নিয়ে গেল,লালমাটির উঁচু-নিচু টিলা ঘুরিয়ে, যেন কোন পাহাড়ী এলাকায় এসে পড়লাম। তবে সেই জায়গুলো নতুন কারো কাছে অসাধারণ সুন্দর লাগবে কোন সন্দেহ নাই।
ধূলোয় মাথা শরীর সাদা করে নিয়ে গিয়ে সিএনজি থেকে নামতে হলো কাঞ্চন ব্রীজের কাছে। তারপর ছোট্ট একটা ধূলার নদী পাড়ি দিয়ে কাঞ্চন ব্রীজের নিচ হতে আবার সিএনজিতে করে দেবুই বাজার পর্যন্ত। দেবুই বাজার হতে ব্যাটারি চালিত রিক্সা নিয়ে গ্রামের রাস্তার ভিতর দিয়ে পৌছালাম মাদ্রসা, আল-জামি'আহ আস সালাফিয়া।
মাশা আল্লাহ! আসলেই অসাধারণ সুন্দর একটি জায়গায় মাদ্রাসাটির অবস্থান। কিন্তু রাস্তার কাজ পুরো শেষ না হওয়ায় যেভাবে যেতে হয় তাতে যে কারও কাছে জায়গাটা দূর্গম মনে হতে পারে। বিশাল জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার কাজ চলছে। বর্তমানে দশরুমের পাঁচ তলা একটি বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে।
আমরা একজনকে জিজ্ঞেস করে সরাসরি প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে গিয়ে তার সাথে আলাপ করলাম। অমায়িক হাসি-খুশি মানুষ তিনি। খুবই আন্তরিক। বেশ কিছু সময় তার সাথে কথা বলে পুরো ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখলাম। যে বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে তার উল্টোদিকে মাদ্রাসার মসজিদ, মসজিদের পিছনে মাদ্রাসার পুকুর। মাদ্রসার ক্যাম্পাস যেখানে শেষ তার পরই খুবই সুন্দর বিশাল একটি দিঘীর মতো জায়গায় অনেক শাপলাফুল।
যেহেতু হাতে সারাদিনের সময় নিয়ে গেছি, তাই আশপাশের কিছু গ্রাম ঘুরে দেখলাম, কিছু হেঁটে কিছু রিক্সায়। প্রিন্সিপাল স্যারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়ে বেশ কিছু সময় হাঁটলাম। গ্রামের মাঝে মাঝে লালমাটির টিলাগুলো খুবই সুন্দর লাগে।
এক জায়গায় দেখলাম, বহু পুরোনো একটা বট গাছকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলেছে মাজার! গাছের গোড়ায় ইট-বালি-সিমেন্ট দিয়ে তৈরী করেছে বেদী! সেখানে দিনের বেলায় জ্বলছে দুইটা বড় সাইজের মোমবাতি।
শুনলাম এখানে প্রতি বছর ওরস হয়। অনেক লোক জমায়েত হয়। আশপাশের সব গ্রামগুলো আহলে হাদীস বা সালাফি বলে পরিচিত। এরা কবর মাজার পূজার বিরোধী! কিন্তু এটা দেখে মনে হলো প্রদীপের নিচেই অন্ধকার!!!
রাস্তায় একটি রিক্সা পেয়ে তাতে উঠে পড়লাম। এর পর গ্রাম দেখতে দেখতে কালনী বাজার চলে আসলাম। সেখানে আশপাশ কিছুক্ষণ হাঁটাহাটি করে, বাজার মসজিদে জুম্মার সালাত আদায় করলাম। কালনী প্রাইমারী স্কুলের মাঠে আসবেন- শাইখ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, মোজাফফর বিন মহসীন সহ বিখ্যাত শাইখগণ। সেখানে ষ্টেজ সাজানো হয়েছে।
বাজারে কোন খাবার হোটেল না পেয়ে, লোকজনকে জিজ্ঞেস করে আবার হাঁটা দিলাম। ঢাকা জয়দেবপুর মেইন রোড ধরে হাঁটতে হাঁটতে একটা হোটেল পেয়ে সেখানে দুপুরের খাবার সেরে, টেম্পুতে উঠে সোজা কাঞ্চন ব্রীজ।
কাঞ্চন ব্রীজ হতে পূর্বের রাস্তা অনুসরণ করে আবার ইছাপুরা বাজার। সেখান থেকে কিছু বাজার করলাম এবং গ্রামের হাঁটের মজাদার কিছু সদাই কিনে নিয়ে, ইছাপুরা ব্রীজ হতে সিএনজিতে করে খিলক্ষেত হয়ে সোজা বাসায়।
(বেরাইদ হতে ইঞ্জিন চালিত বোট যায় ইছাপুরা বাজার পর্যন্ত। এরপরের বার ইনশা আল্লাহ নৌকা ভ্রমণের ইচ্ছা আছে এই সুন্দর জায়গায়। যে কেউ চাইলে সঙ্গী হতে পারেন।)
বিষয়: বিবিধ
২১২২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নারায়নগঞ্জ এর সোনারগাঁ সন্নিহিত এই অঞ্চলগুলিতে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন আছে। আপনার দেয়া ছবি থেকে সেই রকম কোন নিদর্শন এর অপব্যাবহার হচ্ছে বলে মনে হয়। হাতাব,তারাব রুপগঞ্জ এর এই সব অঞ্চলে গিয়েছি।তবে সোনার গাঁই দেখা হয়নি!!! বিশেষ ইচ্ছা রয়েছে এই অঞ্চল ভ্রমন করার।
মন্তব্য করতে লগইন করুন