ডঃ বিলাল ফিলিপস : এক নওমুসলিমের কাহিনি (কপি পেষ্ট)
লিখেছেন লিখেছেন নেহায়েৎ ১১ জুন, ২০১৪, ০৪:১৫:১৯ বিকাল
ডঃ আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস ১৯৪৭ সালে জ্যামাইকায় একটি খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কানাডায় বড় হন। ষাটের দশকের শেষ দিকে ভ্যানকুভারে সাইমন ফ্রেসার ইউনির্ভাসিটিতে পড়া অবস্থায় সেখানকার বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনে যোগদান করেন। ধীরে ধীরে তাঁর কম্যুনিজমের প্রতি আগ্রহ জন্মায় এবং তিনি কম্যুনিস্ট আদর্শ গ্রহণ করেন। তিনি একবছর স্যান ফ্রান্সিস্কোতে কম্যুন্সিট পার্টির সাথে কাজ করার পর এই দলের কর্মকান্ডের আসল রূপ দেখতে পেয়ে পুনরায় কানাডায় ফিরে আসেন। কম্যুনিস্ট দর্শন তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারছিল না, এ দর্শন সমাজকে পরিবর্তনের কথা বললেও পরিবর্তন আনার মত বাস্তবধর্মী হাতিয়ার এর ছিল না, তাছাড়া কম্যুনিস্ট দর্শন প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ছিল ব্যর্থ, আর শ্রমজীবী শ্রেণীর স্বার্থের নামে পরিচালিত গণ নির্যাতনকে তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। তাছাড়া বহু বামপন্থী নেতাই ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন অত্যন্ত অসৎ ও অনৈতিক। অবশেষে তিনি কম্যুনিজম ত্যাগ করেন এবং হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম প্রভৃতি অন্যান্য ধর্ম ও দর্শন পরখ করে দেখেন।
১৯৭১ সালে তাঁর এক কম্যুনিস্ট বন্ধু ইসলাম গ্রহণ করলে তিনি ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ইসলাম সম্পর্কে পড়াশুনা শুরু করেন। তিনি উপলব্ধি করেন যে ইসলামই মানবজাতির জন্য শ্রেষ্ঠ সমাধান উপস্থাপন করে, এতে রয়েছে সমাজবাদী এবং পুঁজিবাদী দর্শনের ভাল দিকগুলোর সমন্বয়। ছয়মাসের পড়াশুনা এবং আলোচনা-পর্যালোচনার পর তিনি ১৯৭২ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এর একবছর পর তিনি মদীনার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি মদীনার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুল আল দ্বীন অনুষদ থেকে আরবী ভাষায় ডিপ্লোমা এবং বি.এ. ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইসলামিক থিওলজি’ তে এম.এ. ডিগ্রী লাভ করেন। একই বিষয়ের ওপর তিনি ১৯৯৪ সালে ডক্টরেট ডিগ্রী নেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস এর ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ থেকে। উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ও এর ঠিক পরপর তিনি তাঁর কয়েকজন সঙ্গী সহ সৌদি আরবে অবস্থিত মার্কিন বাহিনীর কাছে ইসলামের বিশুদ্ধ শিক্ষাকে উপস্থাপন করার এক প্রোজেক্ট হাতে নেন, মার্কিন সেনাদের মাঝে বিদ্যমান ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করা ছিল তাঁদের এই প্রোজেক্টের লক্ষ্য। তাঁদের এই প্রচেষ্টায় তিন হাজারের ওপর মার্কিন সেনা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি আরব আমিরাতে বসবাসরত ছিলেন। সেখানে থেকে তিনি অধ্যাপনা, প্রকাশনা, খুতবা এবং বক্তৃতার মাধ্যমে ইসলামের বিশুদ্ধ শিক্ষাকে প্রচারের কাজ করে আসছিলেন।
অল্প কিছুদিন আগে ইসলামের বাণী প্রচারে তাঁর স্পষ্টবাদিতার কারণে তাঁকে আরব আমিরাত ত্যাগ করতে হয়। উল্লেখ্য যে তাঁর ৩০টিরও বেশী প্রকাশনা রয়েছে এবং তিনি সারজাহতে দার আল ফাতাহ প্রেস, দুবাইতে ডিসকভার ইসলাম নামক ইসলাম প্রচার কেন্দ্র, সারজাহ টিভি চ্যানেল-২, স্যাটেলাইট (ইসলামী চ্যানেল), আজমান টিভি চ্যানেল-৪ এবং সৌদি টিভি চ্যানেল-২ এর সাথে ইসলাম প্রচারের কাজে জড়িত ছিলেন।ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটি প্রখ্যাত স্কলার ডক্টর আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসের চিন্তা ও প্রচেষ্টার ফসল এক মহতী উদ্যোগ। তিনি বর্তমান বিশ্বের নামকরা ইসলামী পন্ডিত এবং চিন্তাবিদদের অন্যতম।
আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসের কিছু উক্তি--
“কোন সৃষ্টির প্রতি মানুষের ভালোবাসা, বিশ্বাস ও ভয় যখন আল্লাহর চাইতে বেশি হয়, তখন তা শিরক।”
”একজন মুসলিম স্বামীর প্রথম কর্তব্য হলো তার স্ত্রীকে আধ্যাত্মিক পথের নির্দেশনা দেয়া।”
“আমরা যা শিখছি তা যদি আমাদের বিশ্বাসের উপর কোন প্রভাব ফেলতে না পারে, আমাদেরকে আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যেতে না পারে, আমাদের বিশ্বাসকে আরো মজবুত করতে না পারে… তাহলে এর অর্থ হচ্ছে আমাদের উদ্দেশ্যে, নিয়্যতে ভুল আছে”
“আপনি যেদিন উপলব্ধি করবেন ইসলামের জন্য কী বিশাল পরিমাণ কাজ করা প্রয়োজন অথচ হাতে কতটা কম সময় রয়েছে, সেদিন বুঝতে পারবেন ছুটির দিন কাটানোর মতো কোন সময় নেই।”
বিষয়: বিবিধ
১৮৬৪ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
"অতঃপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, পথঃভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথ প্রদর্শন করেন। তিনি পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।" (সূরা ইব্রহীম, আয়াত-০৪)
জবাব দিতে একটু দেরী হয়ে গেল ভাই!
“কোন সৃষ্টির প্রতি মানুষের ভালোবাসা, বিশ্বাস ও ভয় যখন আল্লাহর চাইতে বেশি হয়, তখন তা শিরক।”
“আপনি যেদিন উপলব্ধি করবেন ইসলামের জন্য কী বিশাল পরিমাণ কাজ করা প্রয়োজন অথচ হাতে কতটা কম সময় রয়েছে, সেদিন বুঝতে পারবেন ছুটির দিন কাটানোর মতো কোন সময় নেই।”
মন্তব্য করতে লগইন করুন