সামার ক্যাম্প ২০১৭ হতে কিছু শিক্ষা (SMS Sweden)

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আব্দুল হালিম ২২ জুলাই, ২০১৭, ০২:৪৬:২২ রাত

আমরা প্রতিবারই সামার ক্যাম্পে যাই। প্রতি সামার ক্যাম্পে নতুন গেষ্ট স্পিকার আসেন, প্রতিবারই আমরা নতুন কিছু শিখি। এবার এসেছিলেন, আব্দুল্লাহিল মামুন আযামী ভাই। ৬৪ বছর বয়স্ক একজন মানুষ। উনার বাচন ভংগি এবং উপস্থাপন ভংগি শ্রোতাদের আকৃষ্ট করার মত। নিজে রিসার্চ করে অনেক বড় বিষয়কে ৩-৪ টি letter এর মাধ্যমে প্রকাশ করার সুন্দর পদ্ধতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছিলেন তার দু- একটি এখানে শেয়ার করছি। উনি এক লেকচারে বলেছিলেন।

RRR এর কথা

Read-Reflect-Reform

এই জিনিসটি আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। আমরা এটি একাডেমিক ক্ষেত্রে ফলো করলেও নৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে খুবই কমই করতে পারি। আমরা অনেকেই পড়ি এরমধ্যে খুবই কমজনই সেটি নিয়ে ভাবার/চিন্তার কাজটি করতে পারি। চিন্তা করার পর সে অনুযায়ী নিজেদের অভ্যসকে, নিজেদের attitude কে নিজেদের নৈতিক মানকে পূনর্বিন্যাস ও পুনর্গঠনের কাজটি একদমই করতে পারিনা। এই কাজটিই আমাদের করা লাগবে তাহলে একজন আদর্শ মানুষ তথা একজন আদর্শ মুসলিম হিসেবে নিজেদের কে উপস্থাপন করা আমাদের জন্য সহজ হবে।

HHH

Head-Heart-Hand

Head to heard/think, heart to feel/accept and hand to work

আমাদের ব্রেইনকে কাজে লাগিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে। কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অনেকবার বলেছেন, চিন্তা করার কথা। কুরআন মু্মিনদের জন্য হেদায়াত স্বরূপ। কুরআনের মাঝেই লুকিয়ে আছে আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির পথ। চিন্তা করে বিষয় গুলোকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করে সে অনুযায়ী কাজ করতে পারলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন আমাদের জন্য সহজ হবে।

একদিন এক ভাই বলছিলেন সূরা ওয়াক্বিয়া নিয়ে। আমরা অনেকেই জানি সূরা ওয়াক্বিয়ার ফজিলত। সূরা ওয়াক্বিয়া পড়লে অভাব দুর হয়ে যাবে। আমরা অভাব দুর হওয়ার জন্য, বাচ্চা পাওয়ার জন্য এবং রোগ হতে মুক্তির জন্য অনেক সূরাই নিয়মিত পড়ি। কিন্তু সূরার ভিতরে আল্লাহ যে বার্তা যে সূত্রগুলো আমাদের দিলেন সেগুলো নিজেদের জীবনে প্রাকটিস করি না, আমল করিনা ফলে আমরা সেগুলো হতে ফল সহজে পাই না। হয়ত অনেকেই আল্লাহকে দোষ দেই যে কপালে রাখেনি। এগুলো নিয়মিত পড়ার পরও আমাদের হৃদয়ে যে প্রশান্তি আসার কথা সেটি আসেনা শুধুমাত্র বিষয় গুলোকে অনুভব করতে না পারার কারনে।

QQQ

Quran-Quality-Quantity

Quran

Quality for high standard

Quantity for great result

Quran কে বেইস ধরে আমাদের কোয়ালিটি ডেভেলপ করতে হবে।

T-W-A-H-C-D

Thought-Words-Action-Habit-Character-Destiny

মামুন ভাই এই শব্দগুলো বলেছিলেন সূরা লুকমানের ১৩-১৯ আয়াতের ব্যাখ্যায়।

আমাদের নৈতিক মানকে উন্নয়নের জন্য প্রথম যে কাজটি করা উচিত সেটি হলো। আমাদের চিন্তা করা উচিত কিভাবে আমরা আমাদের নৈতিক মানের পূনর্বিন্যাস করবো। চিন্তাকে আমাদের কথায় পরিনত করার চেষ্টা করতে হবে। এটি করতে পারলে সেটিকে আমাদের বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। কাজ শুরু করে দিতে হবে। আমরা যখন একটি কাজ বার বার করতে শিখবো তখন সেটি আমাদের অভ্যাসে পরিনত হবে। যদি আমরা কোন ভালো কাজকে অভ্যাসে পরিনত করতে পারি তাহলে সেটি আমাদের চরিত্রের একটি অংশ হয়ে জীবিত থাকবে আমাদের সাথেই। ভালো আমলকে আমরা আমাদের চরিত্রের অংশ করতে পারলে আমাদের যে লক্ষ্য সেটিও অর্জন হয়ে যাবে। ইনশাল্লাহ।

মামুন ভাইয়ের দুটি বাক্য-

Inspire to learn and grow

Advice what to learn and why

উনি এখানে আরো দুটি কথা বলেছিলেন, যে বাচ্চাদের প্রশ্ন করাকে উতসাহ দিতে হবে। অনেক বাবা-মা বাচ্চাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে ধমক মেরে চুপ করে দেয়, explain করতে না পারার অক্ষমতা থেকে বাচ্চাদের ধমক মারে। এটি করা ঠিক না। কারন বুদ্ধিমান বাচ্চারাই প্রশ্ন করে। তাদেরকে সুন্দরভাবে উপদেশ দিলে তারা সহজেই তা পালন করতে শিখবে।

উনি তাক্বওয়ার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একটি ছক দিয়েছিলেন

Do................................।Don´t

1) ফরজ.................................হারাম

২) সুন্না...................................মাকরূহ

৩) নফ....................................মুতাশাবিহাত

কোন একটি কাজের/আমলের মানের চিন্তা করে সেটির Priority ঠিক করলে। আমাদের জন্য আমল করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। উনি একটি সুন্দর উদাহরন দিয়েছিলেন,

তারাবিহ নামাজ ৮ রাকাত নাকি ২০ রাকাত এটি নিয়ে মানুষ অনেক সময় মারামারি শুরু করে দেয়। অথচ মানুষ চিন্তা করেনা মারামারির শরীয়াহ হুকুম কি আর তারাবিহ নামাজের শারীয়ায় হুকুম কি। অর্থাত যদি কোন একটি আমল সুন্নাহ হয় সেটির জন্য যদি হারাম কাজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে আগে আমাদের হারাম থেকে বাচা। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা।

পরিবারের সমস্যা/ঝগড়া বিবাদ মিটানোর জন্য 5D এর কথা বলেছিলেন

D-Describe

D-Diagnosis

D-Discuss

D-Decision

D-Do/action

পরিবারে সমস্যা হলে সেটি পারিবারিক মিটিংয়ে আলোচনা করে সমস্যাকে চিহ্নিত করে কিভাবে সেটি সমাধান করা যায় আলোচনা করে সিন্ধান্ত নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করলে পারিবারিক সমস্যার সমাধান হবে খুবই দ্রুত। যারা পারিবারিক মিটিংয়ের ব্যাপারে জানেন না। তারা প্রতি মাসে পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে মিটিং করতে পারেন। পরিবারের সব কিছু নিয়ে সবার মতামত, সবার সমস্যা আলোচনা করলে শক্তিশালী শান্তিময় পরিবার ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। পরিবার যেখানে সমাজ তথা রাষ্ট্রের ক্ষুদ্র একটি ইউনিট সেখানে পরিবার শক্তিশালী হলে, ন্যায়ভিত্তিক পরিবার ব্যবস্থা গড়ে উঠলে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে সহজেই।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের ভালো ভালো আমল করার তৌফিক দান করুন। (আমিন)

বিষয়: বিবিধ

৯৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File