বীনা ডি কস্টার নেয়া ২০০২ সালে ডক্টর জিওফ্রে ডেভিসের সিডনিতে একটা সাক্ষাৎকার এবং কিছু মিথ্যার বেশাতি
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আব্দুল হালিম ০১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১১:১৮:৪০ রাত
ডক্টর জিওফ্রে ডেভিস। বীনা ডি কস্টা বলে এক ভদ্রমহিলা ২০০২ সালে ডক্টর জিওফ্রে ডেভিসের সিডনিতে একটা সাক্ষাৎকার নেন যুদ্ধ পরবর্তী এদেশের নারীদের অবস্থা জানার জন্য। এখানে মূল সাক্ষাৎকারটি দেয়া হলো।
Click this link
ধর্ষন এবং হত্যা মাত্রই পরিত্যাজ্য। সত্যকে সত্যভাবে উপস্থাপন জাতির নতুন প্রজন্মের জন্য খুবই জরূরী। আমরা অনেক সময় ঘটনাকে নিজেদের মত করে প্রচার করতে অভ্যস্ত। কস্তার এই সাক্ষাৎকারটিকে অনেকেই বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে। প্রথম ফেইসবুকে দেখলাম এক ভদ্রলোক কস্তার সাক্ষাৎকারটিকে সূত্র হিসেবে তুলে ধরে লিখেছেন, ডাঃ ডেভিড জিওফ্রে বলেছেন ১০০০০০ মহিলা ও শিশু গর্ভপাত করানো হয়। এখানে সংখ্যাগত অমিল লক্ষ্যনীয়, লিখাটিতে বলা হয়েছে ডাঃ জিওফ্রে বাংলাদেশে ৬ মাস ছিলেন, এবং তিনি বলেছেন দৈনিক প্রায় ১০০ জন করে গর্ভপাত করিয়েছিলো।
উনি ধর্ষনের কথা সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেননি। এখন যদি গর্ভপাতই ধরা হয়, তাহলে দৈনিক ১০০ গড়ে ৬ মাসে সংখ্যা দাড়াঁয় ১৮০০০ জন, তাহলে ১০০০০০ জন আসলো কোথা থেকে?? আবার যুক্তির খাতিরে যদি ধরে নেয়া হয় যে একটু কম বেশি হতে পারে, তবে কোন উপস্থাপিত সংখ্যা যদি আসল সংখ্যা থেকে ৫ গুন বেশি হয় তাহলে ধরে নেয়া যায় যে কোথাও না কোথাও মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
আবার বলছি ধর্ষন মাত্রই নিন্দনীয়, এখানে পাকিস্তানীদের পক্ষে সাফাই কিংবা রাজাকারদের পক্ষে বলার জন্য বিভ্রান্তিকর লিখার বিপক্ষে লিখা না, লিখার আসল উদ্দেশ্য সত্য ঘটনাকে যাতে সবাই বুঝতে পারে সেটি তুলে ধরা।
ডাঃ জিওফ্রের সাক্ষাৎকারের সন্ধানে ইন্টারনেট সার্চ দিলে ডাঃ ডেভিড জিওফ্রে কে নিয়ে উকিপিডিয়ায় একটা লিখা পেলাম, লিখাটিতে
https://en.wikipedia.org/wiki/Geoffrey_Davis_(doctor)
মজার বিষয় হলো লিখাটিতে উল্লেখ ছিলো যে ডাঃ ডেভিড জিওফ্রে এস্টিমেট করেছেন যে ৪০০০০০ লাখ মহিলা ও শিশু ধর্ষনের শিকার হয়, সেখানে আরো উল্লেখ করে যে আল বদর এবং আল শামস, এবং তাদের সহযোগীরা এসব ধর্ষনে জড়িত, এখানেও সূত্র হিসেবে সাক্ষাৎকারটিকে ব্যবহার করা হয় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সাক্ষাৎকারটিতে আল শামস এবং আল বদরের কোন কথা উল্লেখ নেই,। আমি লিখাটি এডিট করে সাক্ষাৎকারে উল্লেখিত সঠিক তথ্যনুসারে লিখি
"According to Davis around 100 women and children per day were performing abortion who had been raped by the Pakistani armed forces"।
ক্ষনিক পরে আমার কাছে নোটিফিকেশন আসলো আমি নাকি ভূল তথ্য দিয়ে এডিট করেছি, আমার উচিত সাক্ষাৎকারের সঠিক তথ্যকে তুলে ধরা। সে আবার লিখাটিকে আগের মত করে, নিজের মনগড়া তথ্য দিয়ে তার মত করে লিখে। আমি আর একবার সাক্ষাৎকারটি পড়লাম। আমার চোখে কোথাও আল বদর, আল শামস চোখে পড়লো না। আমি সেই লেখককে বার্তা প্রেরন করলাম উকিপিডিয়া টক অপশনের মাধ্যমে যে তার উচিত সঠিক তথ্য তুলে ধরা, এবং সঠিক ভাবে তথ্যকে ব্যবহার করা। এবং ইথিকস মেইনটেইন করা।
পরে দেখি আমার দেয়া তথ্য অনুসারে লিখাটি পরিবর্তন করেছে।
https://en.wikipedia.org/wiki/Geoffrey_Davis_(doctor)
মিথ্যা তথ্য দিয়ে সত্যকে প্রমান করার কিছু নেই। পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতা কোন ভূলবার নয়। ক্ষমার অযোগ্য। আমরা সব সময় ধর্ষন এবং হত্যাকে ঘৃণা করি, এবং ন্যায়বিচার দাবি করি। কিন্তু উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে তরুন প্রজন্মকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশের মধ্যে বিভেদ তৈরী, মিথ্যার উপর আশ্রিত ভবিষ্যত প্রজন্ম আমরা কামনা করিনা। উন্নত জাতি গঠনে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাকে অসৎ উদ্দেশ্য রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার রোধে আমাদেরকে সত্য প্রকাশের জন্য, মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে স্ব স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে সত্যের উপর ভিত্তি করে যে প্রজন্ম গড়ে উঠবে তার ভিত হবে অনকে মজবুত। বিজয়ের মাসে আমাদের প্রত্যাশা হোক বিভেদমুক্ত সমাজের, ব্যক্তিস্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ও পারাস্পারিক শ্রদ্ধাশীল একটি জাতি গঠনের।
আমার প্রিয় বাংলাদেশ, আমি তোমায় ভালোবাসি
যত দুরে থাকি না কেন, হৃদয়ে তোমায় রাখি
তোমায় অনেক ভালোবাসি!!
বিষয়: বিবিধ
১৩৫২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এটা নিয়ে আদালতে কেস ঠুকে দেন না কেন দলের হয়ে ?
ভাল হয় পাকিস্তানের আদালতে এটা করেন
মন্তব্য করতে লগইন করুন