তিনজন তরুনের পায়ে গুলি নিয়ে আমর প্রতিক্রিয়া

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আব্দুল হালিম ১৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৩:৫৬:০১ রাত

তোমরা পারো না তাইলে রাজনীতি নিষিদ্ধ করে দাও। কিন্তু দেশের সম্ভাবনাময় তরুনদের পংগু করে তো জাতির ভবিষ্যতকেই পংগু করে দিচ্ছো। জাতির বিবেক এখন ফেরারী আসামী। কার্তুজে ভরা বন্দুকের নল প্রতিপক্ষ দলের তরুনের পায়ের গোড়ালী নয়ত বা পাজরের দিকে আজ হায়েনার হিংস্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে....

অনেকদিন আগে একটি নাটক দেখেছিলাম। শান্ত স্বভাবের এক তরুনের জীবন নিয়ে ছোট একটি সিকুয়েন্স ছিলো। তরুনটি ছিলো অনেক শান্ত স্বভাবের কারো সাথে উচ্চস্বরে কথা বলতো না। কেউ তাকে খারাপ কথা বললেও এড়িয়ে চলত। হঠাৎ তরুনটির হাতে আগ্নেয়াস্ত্র চলে আসে। অস্ত্র হাতে আসার সাথে সাথে শান্ত তরুনটির মেজাজ কেমন জানি বদলে গেলো। সামান্য ব্যাপারে তার রাগ, ক্রোধ প্রকাশ পেতে থাকলো। কথায় কথায় সেই আগ্নেয়াস্ত্রের গরম তার আচরনে প্রকাশ পেতে থাকলো এভাবেই একদিন সে অপরাধী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরলো।

পুলিশের হাতে অস্ত্র থাকার কারনে তাদের বেশি দ্বায়িত্বশীল হওয়া উচিত। তাদের পর্যাপ্ত ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা রাখা উচিত, যাতে করে নিজেদের রাগ-ক্রোধকে দমন করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। তাদের উপর যে দ্বায়িত্ব তার গুরুত্বও অনেক বেশি। তাই অস্ত্রধারী এসব বাহিনীর মানুষদের বেশি বেশি মনুষ্যত্ববোধের ট্রেনিং থাকা উচিত।

সুইডেন পুলিশদের দেখলে মনেহয় মাটির মানুষ। বিশেষ করে কোথাও কোনো ইয়াং ছেলে বেয়াদবি করলে, বা ট্রেনে কেউ কাউকে ডিসটার্ব করলে পুলিশের আচরন গুলো দেখলে মনেহয় ইশ! বাংলাদেশের পুলিশ গুলো যদি এমন হতো? সুইডিশ পুলিশদেরকে কারো গায়ে হাত দিতে ও দেখিনি। কেউ বেয়াদবি করলে পুলিশ কত সময় নিয়ে যে বোঝায় দেখলেই ভালো লাগে। পুলিশদের মধ্যে ধৈর্য্য, সহনশীলতা চোখে পড়ার মত। পুলিশের এমনই হওয়া উচিত। এখানে পুলিশ হয় মানুষের সেবা করতে, বাংলাদেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুলিশ হয়, টাকা আর ক্ষমতার জন্য (যদিও পুলিশদের অনেক কষ্ট করতে হয়), এই জন্যই পুলিশের জবের উদ্দেশ্যকে সার্ভ না করে নিজেদের খায়েস পুরুনে সদা ব্যস্ত থাকে বেশির ভাগ পুলিশ। এটিও হয় সমাজের দৃষ্টিভংগির কারনে। বাংলাদেশে টাকা না জমালে, ক্ষমতা না থাকলে জীবনকে সিকিউর মনেকরা হয় না। অথচ দৃষ্টিভংগির একটু পরিবর্তন ঘটালেই জীবনের নিরাপত্তাবোধের যে ধারনা সেটিরও পরিবর্তন হতে পারে।

পুলিশের জব যে একটি দ্বায়িত্বপূর্ণ জব, এটাতে যেমন অনেক কষ্ট আছে, অনেক ক্ষমতাও আছে। একটু ইচ্ছে করলেই মানুষের অধিকার রক্ষা করায় যেমন সহজেই ঠিক তেমনি অধিকার হরন করাও যায় মূহুর্তেই। তাই মানুষ হিসেবে পুলিশের বেশি সচেতন হওয়া উচিত। পাশাপাশি সমাজের সব মানুষদেরও পুলিশকে সহযোগিতা ও সন্মান করা উচিত যাতে করে পুলিশরা কষ্টের পর নিজেদের ছোট না ভাবতে পারে। বাংলাদেশ সরকার পুলিশদের পর্যাপ্ত ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি অফিসারদের বেতন বাড়িয়ে দিয়ে বিশেষ সুবিধা দিতে পারে (যদিও এটি চিন্তা করা বাহুল্য) যাতে করে পুলিশরা অর্থের দিকে, রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহৃত হওয়া থেকে নিজেদের দ্বায়িত্ববোধ বাচিয়ে রাখতে পারে।

মানুষের ভিতর ভয়ানক একধরনের অস্ত্র আছে সেটি হলো পাশবিকতা। এই পাশবিকতাকে মানুষ নিয়ন্ত্রনে রাখে তার বিবেক নামক ভালোর প্রভাব দিয়ে। সমাজে যখন ন্যায় প্রতিষ্ঠিত থাকে তখন এসব ভালো মানুষের বিবেক তার পাশবিকতাকে নিয়ন্ত্রন করে ধৈর্য আর ক্ষমার মাধ্যমে। তবে সমাজে যখন বিশৃংখলা দেখা দেয়, যখন অন্যায়ের রাজত্ব কায়েম হতে থাকে, অন্যায় ভাবে যখন মানুষের বিবেককে আঘাতের পর আঘাত করে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়া হয়, তখন বিবেক হেরে যায় পাশবিকতার কাছে তখন মানুষ হিংস্র হয়ে উঠে প্রতিশোধের আগুনে। মানুষের যখন বেচে থাকা মৃত্যুর সমান হয়ে যায় তখন মানুষের মধ্যে "সারভাইভাল অফ দ্যা ফিটেস্ট নামক থিওরি" কাজ করে মানুষ সুস্থ্যভাবে বেচে থাকার এক অদম্য লড়াইয়ে নিজেকে সামীল করে আর তখন বন্দুকের নলের গুলি বের হওয়ার আগেই হয়ত নিরিহ মানুষগুলো হায়েনার মত নিজেদের রূপ দেখাতে শুরু করে বিবেক তখন চেয়ে চেয়ে দেখে পশুত্বের কাছে মানবিকতার পরাজয়কে আর শয়তান তখন দুরে দাড়িয়ে হাসে.....

আশাকরি সুদিন ফিরে আসবে, তরুন না নিশ্চিন্তে নিজেদের মত করে বাচার অধিকার ফিরে পারে...

বিষয়: বিবিধ

১৪৭৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

357155
১৮ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:১০
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


যথার্থ বলেছেন, সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ,

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File