এলোমেলো চিন্তা

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আব্দুল হালিম ২৬ মে, ২০১৫, ০২:৩১:১৪ রাত

ছেলেটার অনেক পরিবর্তন হয়েছে বা মেয়েটা কেমন জানি হয়ে গেছে বাইরে থেকে অথবা দোস্ত জানিস ঐ বন্ধুটি কেমন জানি হয়ে গেছে আগের মত আর আমাদের সম্পর্ক ভালো নেই। সময়ের সাথে মানুষের পরিবর্তন হয়, এই পরিবর্তনের দায় পুরোটাই হয়ত শরীরের ভেতরের সিগনাল গুলোর পরিবর্তনের ফসল। একজন মানুষ পরিবেশের দ্বারা প্রভাবিত হলে তার শরীরের ভেতরে অনেক কিছু পরিবর্তন ঘটে তার ফল স্বরূপ বাইরের পরিবর্তন চোখে পরে অথচ মানুষের ভেতরের পরিবর্তনের কথা কেউই চিন্তা করে না। একজন মানুষ ট্রেসে থাকলে তার শরীরেও স্ট্রেস হরমোন নিঃসরন হয় ফলে সেই হরমোনের প্রভাবে শরীরে বা আচরনগত ও পরিবর্তন ঘটে। হয়ত এই পরিবর্তনে মানুষটির কোন হাত নেই পরিবেশই এর জন্য দ্বায়ী কিন্তু আমরা পরিবেশের কথা বা মানুষটির অবস্থার কথা চিন্তা করি কদাচিতই।

অন্যান্য প্রানীর মত মানুষও পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করে ফলে তার মনস্তাত্তিক যে পরিবর্তন ঘটে তার প্রভাব আচরনে পরিলক্ষিত হয়। যার ভেতর যে হরমোনের বা সিগন্যাল মলিক্যুলের নিঃসরন হয় তার আচরন ও সেভাবে পরিবর্তিত হয়। এজন্য মানুষের আচরনগত সমস্যার সমাধানে কাউন্সিলিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশে স্কুলে কোন বাচ্চার যদি পড়ায় মনোযোগ না দেখে বা মনমরা দেখে তারা সাথে সাথে ব্যাপারটি নিয়ে ডিসকাস করে বাচ্চার কোন সমস্যা হয়েছে কিনা বের করে তার ব্যবস্থাগ্রহন করে, আবার অনেকের মধ্যে লার্নিং ডিসঅরডার থাকে তার জন্য হয়ত একটু অন্যরকম কেয়ার দরকার হয় যেগুলোর চর্চা আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই বললেই চলে।

কিছুদিন আগে পাশের ল্যাবের একজন গবেষক আলোচনা করছিলো যে মানুষ সুইসাইড কেনো করে সেটা নিয়ে তারা গবেষনা করছে। তাদের পরিকল্পনা হলো সুইসাইড যারা করতে গিয়ে ফেইল করেছে সেগুলোর শরীরের মধ্যে কোন ধরনের হরমোনের নিঃসরন বেশি সেটা বের করা, আবার যাদের মধ্যে উদ্ভ্রান্ত, উদাসীন ভাব আছে সেগুলো ও যাচাই করা সেগুলো থেকে বের করা যে সুইসাইডের আগে মানুষের মধ্যে কি ধরনের হরমোন বা সিগন্যাল মলিকিউলের নিঃসরন হয়।

সুন্দর সমাজ বিনির্মানের জন্য তাই সমাজের মানুষদের প্রতি আমাদের দর্শনের পরিবর্তন করতে হবে। মানুষের প্রতি স্বাভাবিক আচরন হয়ত অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। সমাজে মানুষের মধ্যে হতাশা আসে শ্রদ্ধা থেকে বঞ্চিত হয়ে। আর হতাশা থেকে একটি রোগাগ্রস্থ শ্রেনীর উদ্ভব হয়।

উন্নত বিশ্বে একটি জিনিস অনেক ভালো সেটি হলো এখানে মানুষের পেশা শ্রদ্ধার পথে বাধা হয়ে দাড়ায় না। সবাই মানুষ হিসেবে মানুষকে শ্রদ্ধা করে। আবার টাকা পয়সা কার বেশি এগুলোও এখানে ফ্যাক্টর না, এখানে যে যার অবস্থানে থেকে অন্যের শ্রদ্ধা থেকে বঞ্চিত হয় না। ফলে যে যে পেশাতে আনন্দ পায় সে সে পেশাকেই বেছে নেয়। আবার টাকা পয়সার মানুষের শ্রদ্ধার জন্য ফ্যাক্টর না হওয়ায় অবৈধ উপারে টাকা কামানোর ধান্ধাও কারো থাকেনা। ফলে সামাজিকভাবে একটি সুস্থ পরিবেশ বিরাজ করে ফলে এখানে মেধার বিকাশ হয় স্বভাবতই। নোবেল পুরষ্কার বলেন আর আবিষ্কার বলেন উন্নত বিশ্বের মানুষ এগিয়ে থাকার কারন হলো মনের বিকাশ এবং চিন্তার বিকাশ। ছোট বেলা থেকে এরা ভালোবেসে কাজ করে, আমরা কাজ করি টাকা কামানোর জন্য সেখানে ভালোবাসা থাকেনা ফলে কাজ হয় দায়সারা ভাবে।

সুতরাং পরষ্পর শ্রদ্ধাশীল একটি সমাজ বিনির্মান করতে পারলে সমাজে স্বাভাবিক সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করবে। আবার কাউন্সিলিং এর মাধ্যমের মানসিক সমস্যার গুলোর সমাধানে জোড় দিলে সমাজের তরুনদের মধ্যে যেমন স্বাভাবিক মনের অবস্থা বিকাশ করবে তেমনি মেধার স্বাভাবিক বিকাশ হবে স্বভাবতই।

বিষয়: বিবিধ

১০৭৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

322562
২৬ মে ২০১৫ রাত ০৩:৪৭
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : আলহামদুল্লিলাহ। ভাল লাগলো।
০১ জুন ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১৩
265366
মুহাম্মদ আব্দুল হালিম লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই
322581
২৬ মে ২০১৫ সকাল ০৮:১২
শেখের পোলা লিখেছেন : আপনার মতের সাথে সহমত হলাম৷ ঠিকই বলেছেন৷ধন্যবাদ৷
০১ জুন ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১৩
265367
মুহাম্মদ আব্দুল হালিম লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
322667
২৬ মে ২০১৫ বিকাল ০৫:৩৫
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : সুন্দর পোষ্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
০১ জুন ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১৪
265368
মুহাম্মদ আব্দুল হালিম লিখেছেন : আপনাকে ও অনেক অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File