“আত্ননিয়ন্ত্রন” এর জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ-০১
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আব্দুল হালিম ২১ আগস্ট, ২০১৪, ১২:০৭:১৫ দুপুর
মানুষের আত্নার যৌক্তিক ভাগটি মন নামে পরিচিত এবং আধাত্নিক ভাগটি বু্দ্ধি বা স্পিরিট নামে পরিচিত, যা বস্তুগত জিনিসের (শরীর) উপর বিজয় লাভে সাহায্য করে, যদি মন এবং স্পিরিট কে অভিজ্ঞতা এবং স্টাডির মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান সহ সরবরাহ করা হয়। এই ধরনের জ্ঞানই ভাল-মন্দের মধ্যে পার্থক্য নির্নয় করে , একজনকে আল্লাহর কাছে নিয়ে যায় তাই মানুষ আল্লাহর শক্তি ও মাহাত্য সম্বন্ধে জানতে পারে।
আল্লাহ তার ওহীতে এটাই বুঝিয়েছেন।
"অনুরূপ ভাবে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ, জন্তু, চতুষ্পদ প্রাণী রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাময়।" সূরা ফাতিরঃ ২৮
রাসুল (সাঃ) বলেনঃ
আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের উপর সবচেয়ে বড় মর্যাদা হলো মানুষের মন এবং স্পিরিট।" তিরমিজি
একদা রাসুল (সাঃ) বলেন, "আলী ইবন আবি তালিবঃ একজন মানুষ তার আল্লাহর নিকট বিভিন্নভাবে কাছে যাওয়ার চেষ্টা করে, তুমি জ্ঞানের মাধ্যমে তার নিকটবর্তী হওয়ার চেষ্টা কর।"
সবচেয়ে বড় অর্জনটি আসে মন এবং স্পিরিট থেকে। কারন এগুলোই মানুষকে সঠিক পথে ধাবিত করে এবং খারাপ পথ থেকে বিরত রাখে। এবং এজন্যই ইসলাম আমাদেরকে জ্ঞান আরোহন করতে উৎসাহিত করে যাতে এবং আমাদের দ্বীনের জ্ঞানকে গভীরতর করতে উৎসাহিত করে যাতে করে আমাদের মন ভালো-মন এবং সঠিক-বেঠিকের পার্থক্য বুঝতে পারে।
রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ "আল্লাহ কাউকে যদি ভালো কিছু দিতে চান তাহলে তিনি তাকে দ্বীনের বুঝ দান করেন।"
যারা শুধুমাত্র উপাসনা করে তাদের চেয়ে শিক্ষিত মানুষের সুবিধা হলো যেমন,আমার সাহাবাদের মধ্যে সর্বনিম্ম মানুষের উপর আমার সুবিধা।
এই সুবিধাগুলো আসে নৈতিক মানের অবস্থা থেকে এবং আমাদের বিশ্বাসকে গভীরতর করা এবং বিশ্বের রহস্যকে আবিষ্কার করার উপর জ্ঞানের ভূমিকা থেকে। একজন সজাগ বিশ্বাসীর মন ভাল-মন্দ, সঠিক-বেঠিক, ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য করতে পারে কারন এমন বিশ্বাসীর সচেতনতা থাকে যা তাদের আল্লাহর আলোয় দেখতে সহায়তা করে।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেনঃ
"অথবা (তাদের কর্ম) প্রমত্ত সমুদ্রের বুকে গভীর অন্ধকারের ন্যায়, যাকে উদ্বেলিত করে তরঙ্গের উপর তরঙ্গ, যার উপরে ঘন কালো মেঘ আছে। একের উপর এক অন্ধকার। যখন সে তার হাত বের করে, তখন তাকে একেবারেই দেখতে পায় না। আল্লাহ যাকে জ্যোতি দেন না, তার কোন জ্যোতিই নেই।" সূরা আন-নুরঃ৪০
আধাত্নিক আলোকে নির্বাপিত করা যায়, শুধুমাত্র অন্যায় কর্মের দ্বারা, ক্রমাগতভাবে অন্যায় অবস্থার মধ্যে অবস্থান করে, এবং ইচ্ছাকৃত পাপ কাজ করা এবং পাপ করার পর কখনও তওবা না চাওয়ার মাধ্যমে।
রাসূল (সাঃ) বলেনঃ "যদি কোন মানুষ পাপ করে তাহলে তার আত্না তার কাছ থেকে চরমভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়"
আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেনঃ "যখন আমি ওসমানের সাথে দেখা করার জন্য রওনা হলাম, আমি একজন মহিলাকে দেখলাম। আমি মহিলাকে পূর্নদৃষ্টিতে দেখলাম এবং আমি তার সৌন্দর্য্য সাথে করে নিয়ে গেলাম। যখন আমি প্রবেশ করলাম, ওসমান বললোঃ "তোমাদের মধ্যে একজন এই ঘরে প্রবেশ করেছো আমাকে দেখার জন্য অথচ এখনও দুচোখে ব্যাভিচারের চিহ্ন রয়ে গিয়েছে। তোমরা কি জানোনা যে মানুষ চোখ দিয়েও ব্যাভিচার করতে পারে!" তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, "নবী (সাঃ) এর পরে কি কোন ওহী নাজিল হয়েছে?" ওসমান (রাঃ) উত্তর দিলেন, "না, কিন্তু আমার মতামত উদ্দেশ্যপূর্ণ এবং পরিষ্কার প্রমান এবং সতর্ক বিবেচনার উপর ভিত্তি করে বলা।"
আধ্যাত্নিক পরাজয়ের চিহ্ন
যখন কারো হৃদয় স্থবির হয়ে যায়, মন যখন বিকৃত হয়ে পড়ে, এবং যখন কারো হৃদয় অন্ধকারে ডুবে থাকে, বিশেষত শয়তানের সাথে সুষ্পষ্টত পরাজয়ের পর তখন তার হৃদয়ে শয়তানের সকল দরজা খুলে যায়। তখন শয়তানী শক্তি আদম সন্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পরে যেমন রক্ত তাদের শরীরে ছড়িয়ে পরে। আমাদের অবশ্যই এই বিপদের জন্য সজাগ থাকা লাগবে এবং মনে রাখতে হবে যখন কারো আত্নার প্রতিরক্ষা কমে যায় তখন শয়তান তার কাছে বন্ধু হয়ে যায়।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেনঃ
"শয়তান তাদেরকে বশীভূত করে নিয়েছে, অতঃপর আল্লাহর স্মরণ ভূলিয়ে দিয়েছে। তারা শয়তানের দল। সাবধান, শয়তানের দলই ক্ষতিগ্রস্ত।" সূরা আল-মুজাদিলাঃ ১৯
কুরআন আমাদের বলে যে, শয়তান হলো মানুষের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ শত্রু, যে আল্লাহর কাছে ঘোষনা দিয়েছিলো জান্নাত থেকে বহিস্কৃত হওয়ার পর।
শয়তান বলেছিলোঃ
"সে (শয়তান) বললঃ আপনি আমাকে যেমন উদভ্রান্ত করেছেন, আমিও অবশ্য তাদের জন্যে আপনার সরল পথে বসে থাকবো।রপর তাদের কাছে আসব তাদের সামনের দিক থেকে, পেছন দিক থেকে, ডান দিক থেকে এবং বাম দিক থেকে। আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না।" সূরা আল-আ´রাফঃ১৬-১৭
বইটি একটু একটু করে অনুবাদ করার চেষ্টা করছি। অনেকদিন বাংলা চর্চা না থাকায় কিছু কিছু জায়গায় হয়ত সঠিক বাংলা ব্যবহার করতে পারিনি পরে ঠিক করে নিবো ইনশাল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
১৩২৮ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন