“আত্ননিয়ন্ত্রন” এর জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আব্দুল হালিম ১৬ আগস্ট, ২০১৪, ১০:০৯:১৮ রাত
প্রত্যেক মানুষই জীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মনের অন্তর্নিহিত কোন্দলকে মোকাবেলা করে এবং হয় সে জয়ী হয় নয়ত এর মধ্যে তার ধ্বংস হয়ে যায়।
আল্লাহ মহান রাব্বুল আলামিন বলেনঃ
”শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তাঁর, অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন যে নিজেকে শুদ্ধ করে, সেই সফলকাম হয়। এবং যে নিজেকে কলুষিত করে, সে ব্যর্থ মনোরথ হয়।” সূরা আশ-শামসঃ৭-১০
মানব সম্প্রদায়কে দুটি গ্রুপে ভাগ করায় যায়ঃ
১) যারা তাদের ইচ্ছের কাছে পরাজিত হয়। এ ধরনের মানুষগুলো দুনিয়াদারী জিনিসগুলোকে মান্য করে চলে এবং দুনিয়াদারীর মধ্যে মশগুল থাকে। এরা হলো অবিশ্বাসী। যারা তাদের অনুসরন করে থারা আল্লাহকে ভূলে যায় ফলে আল্লাহ ও তাদের ভূলে যায়।
আল্লাহপাক কুরআনে বলেনঃ
”আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল-খুশীকে স্বীয় উপাস্য স্থির করেছে? আল্লাহ জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তাভাবনা কর না?”
সূরা জাশিয়াঃ ২৩
২) যারা নিজের খায়েসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে। এটি করতে গিয়ে তারা কখনও জয়ী হয় আবার কখনও তারা পরাজিত হয়। তারা যখন ভূল করে তারা অনুশোচনা করে। যারা তখন পাপ করে তখন নিজেদের ভর্তসনা করে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেনঃ
”তারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোন মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের উপর জুলুম করে ফেললে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন? তারা নিজের কৃতকর্মের জন্য হঠকারিতা প্রদর্শন করে না এবং জেনে-শুনে তাই করতে থাকে না।” সূরা আল ইমরানঃ ১৩৫
নবী করিম (সাঃ) বলেনঃ ” সব আদম সন্তান ই ভূল/গোনাহ করে। তাদের মধ্যে সর্বোত্তম হলো তারা যারা ভূল/গোনাহ করে এবং ক্ষমা চায়/তওবা করে” (তিরমিজি)
এ বিষয়ে আর ওয়াহিব ইবন মুনাব্বিহ বর্ণনা করেন, একবার ইবলিশ ইয়াহিয়া ইবন জাকারিয়ার সাথে দেখা করতে গেল। ইয়াহিয়া তাকে বললো, “আমকে বলো তুমি কিভাবে আদম সন্তানদের মোকাবেলা কর।” ইবলিশ বললো, “তাদের মধ্যে কেউ কেউ তোমার মত; তারা সকল প্রকার গোনাহ থেকে মুক্ত। দ্বিতীয় শ্রেনীর লোকদের নিয়ে আমি সহজেই খেলতে পারি যেমন শিশুরা বল নিয়ে খেলে। তাদের মানসিক আকাংখা তাদেরকে আমাদের কাছে পরাজিত করে। কিন্তু তৃতীয় এক শ্রেনীর মানুষ আছে যারা আমাদের কাছে খুবই জটিল প্রকৃতির। আমরা তাদের পেছনে লেগে থাকি যতক্ষন না আমরা সফল হই, কিন্তু পরক্ষনে তারা তওবা করে/ক্ষমা চায়, এবং আমাদের সকল অর্জনকে ধ্বংস করে দেয়। সুতরাং আমরা কখনই তাদের হতাশ করতে পারিনা বা তাদেরকে হারাতে পারিনা।”
শারীরিক চাহিদার বিরুদ্ধে যুদ্ধে শক্তির উপাদানসমূহঃ
শারীরিক চাহিদা ম্যানেগ করতে শক্তির দুটো উতস বিদ্যমান।
১) হৃদয়
আলি ইবন আবি তালিবঃ “পৃথিবীতে আল্লাহর একটি পানির আধার আছে, আর সেটি হলো হৃদয়। আল্লাহ সেসব হৃদয়কে বেশি পছন্দ করে যেগুলো কোমল, পবিত্র এবং শক্তিশালী।” তারপর আলি (রাঃ) ব্যাখ্যা করেছেন সে শব্দগুলোর অর্থ হলো, “ধর্মে শক্তিশালী, বিশ্বাসে বিশুদ্ধ, এবং অন্যর প্রতি কোমল।” আলি (রাঃ) আরো বলেনঃ” বিশ্বাসীদের হৃদয় হলো পবিত্র এবং আলোয় পরিপূর্ণ। অপরপক্ষে, অবিশ্বাসীদের হৃদয় কালো এবং অসুস্থ্য।”
কুরআনের ভাষায়ঃ
”তিনিই তোমাদেরকে মাটির দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর নির্দিষ্টকাল নির্ধারণ করেছেন। আর অপর নির্দিষ্টকাল আল্লাহর কাছে আছে। তথাপি তোমরা সন্দেহ কর।” সূরা আল আ´নামঃ২
”তারা কি এই উদ্দেশ্যে দেশ ভ্রমণ করেনি, যাতে তারা সমঝদার হৃদয় ও শ্রবণ শক্তি সম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারে? বস্তুতঃ চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তু বক্ষ স্থিত অন্তরই অন্ধ হয়।” সূরা হজ্জ্বঃ ৪৬
”তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ?” সূরা মুহাম্মাদঃ ২৪
২) মন এবং বুদ্ধি
চলবে……
লিখাটি “টু বি মুসলিম-ফাতি ইয়াকান” বই থেকে সংকলিত
বিষয়: বিবিধ
১১২৫ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন