বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র চান শাহবাগের নেতারা

লিখেছেন লিখেছেন এখলাস মাহেমাদ িসকদার ২৫ মার্চ, ২০১৩, ০৪:৫২:৩৫ বিকাল



আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন শাহবাগকারী ৫০ ছাত্র নেতা ও ব্লগার। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, মার্চের শুরুতে অর্ধশত শাহবাগকারী অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। আবেদনকারীদের বিষয়টি নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রেখে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আবেদনগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ধর্মীয় গোষ্ঠী হেফাজতে ইসলাম প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়ায় শাহবাগকারীদের ‘নিরাপত্তাহীনতা’র কথা বিবেচনা করে তাদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘মার্চের শুরুতে ৫০ ব্লগার অস্ত্রের লাইন্সেসের জন্য আবেদন করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

ওই কর্মকর্তা জানান, আবেদনকারীর মধ্যে সবাইকে লাইসেন্স দেয়া হবে না। নেতৃস্থানীয় কয়েকজনকে দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সবার অতীত ও বর্তমানের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।

যারা অতীতে বা বর্তমানে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়ে অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

জানা গেছে, গত ১৩ মার্চ ঢাকা থেকে গাড়ি বহর নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে শাহবাগকারীদের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারসহ সরকার সমর্থিত ছাত্রসংগঠনগুলোর কয়েকজন নেতা ফেনী জেলার ফতেহপুরে র‌্যাবের হাতে অস্ত্রসহ আটক হন। পরে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপে তারা মুক্তি পেয়ে পুলিশি প্রহরায় ঢাকা ফিরে আসেন। এরপরই নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সঙ্গে রাখা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নেয়ার উদ্যোগ নেন তারা।

শাহবাগকারীদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে ৫০ জন আবেদন করলেও সবার কাছে এখনো আগ্নেয়াস্ত্র নেই। এদের মধ্যে ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন নেতার কাছে লাইসেন্সবিহীন অস্ত্র আছে। বাকিরা লাইসেন্স পেলে অস্ত্র সংগ্রহ করবেন।

এদিকে, পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সাত শাহবাগকারী ব্লগার ও ছাত্রনেতার নিরাপত্তায় গানম্যান নিযুক্ত রয়েছে। তাদেরসহ ১৯ জন শাহবাগকারী পাচ্ছেন বিশেষ নিরাপত্তা।

গানম্যান পাওয়া সাত শাহবাগকারী হলেন- ডা. ইমরান এইচ সরকার, অমি রহমান পিয়াল, আসিফ মহিউদ্দিন, মাহবুব রশিদ, লাকি আক্তার, মুক্তা বাড়ৈ ও মাহমুদুল হক মুন্সী।

বিশেষ নিরাপত্তা পাওয়া অন্য শাহবাগকারীরা হলেন- আরিফ জেবতিক, প্রীতম আহমেদ, কামাল পাশা চৌধুরী, শাকিল আহমেদ অরণ্য, আলামিন বাবু, গোলাম রসুল মারুফ, কানিস আলমাস সুলতানা কিনু, জাকির আহমেদ রনি, মোরসালিন মিজান, ডা. রাশেদুল হাসান, পলাশ আহমেদ ও রাকিবুল বাশার রাকিব।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেয়ার আগে একটি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে তার কার্যালয়ে ১৯ ব্লগারের নামের একটি তালিকা পাঠানো হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী এসব ব্লগারের নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশ দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহবাগকারীদের মুখপাত্র ও রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডা. ইমরান এইচ সরকারের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছেন সাত-আটজন পুলিশ সদস্য। তিনি সরকারি খরচে রাজধানীর একটি পাঁচ তারা হোটেলে বাস করছেন।

ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী লাকী আক্তারও সার্বক্ষণিক পুলিশি প্রহরায় চলাফেরা করছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মোল্লার ফাঁসির দাবিতে ওইদিন সন্ধ্যায় ‘ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিষ্ট ফোরামের’ ব্যানারে শাহবাগে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে সরকার সমর্থক ব্লগার ও সরকার সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

শাহবাগকারীদের এই আন্দোলন এক পর্যায়ে মহানবী মুহাম্মদ (সা.), তার পরিবারের সদস্য ও ইসলাম অবমাননার বিতর্কে জড়িয়ে যায়। এ নিয়ে সারা দেশে তীব্র জনঅসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এই অসন্তোষে সংকটে পড়েছে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

বিষয়: বিবিধ

১৩৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File