অশ্রুর স্পর্শ অথবা দীর্ঘশ্বাস!

লিখেছেন লিখেছেন শুকনোপাতা ০৩ মে, ২০১৩, ১০:৫০:১৫ রাত



গেটের সামনে এসে মনে পড়ল আজ মনের ভুলে যাবার সময় মেইন গেটের চাবিটা নিয়ে যাইনি,কলিংবেলে চাপ দেবার আগে একবার দোতালায় তাকালাম। সন্ধ্যে হয়েছে অনেকক্ষন,এখনো রুমটা অন্ধকার,তার মানে রুমে বিকেল থেকে কেউ নেই! অবশ্য আমার রুম অন্ধকার থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু না,আমি অন্ধকার প্রিয় মানুষ!তাই আমার রুমে খুব একটা দরকার না হলে আলো জ্বলে না। তিনতলার ভাবি কোথাও বের হচ্ছেন,তাই আর কলিংবেল চাপতে হলো না,উনি বের হয়ে গেলে গেটে তালা লাগিয়ে দ্রুত উপরে আসলাম। রুমে ঢুকে ফ্রেশ হতে হতে বুয়াকে জিজ্ঞেস করলাম,

--খালা,তিয়াসী এখনো আসেনি?

--আইছে তো,ছাদে গেছে বিকালে এহনো নামে নাই

--ওহ

আমি ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে,কফি বানালাম দু'মগ। তিয়াসীর অবশ্য চা/কফির তেমন একটা নেশা নেই,তবে আমি বানালে আগ্রহ নিয়েই খায়। ছাদে এসে দেখলাম ও সেই একই ভাবে রেলিং এর উপর বসে আছে,আমি ধমকে উঠলাম,

--এই মেয়ের সাহস কেন যে এতো বেশি বুঝি না!এতো উপরে ছাদের রেলিং এ পা ঝুলিয়ে বসে থাকতে একটুও ভয় লাগে না?!

তিয়াসী মুখ না ঘুরিয়ে বলল,

--তুমি একদিন এভাবে বসে দেখো,কেমন লাগে!

--হু,আমার এতো সাহস দেখানোর শখ নেই!

তিয়াসী হাসল কি না জানিনা,তবে বেশ কিছুক্ষন নীরব হয়ে রইলাম আমরা দু'জন। সন্ধ্যের আবেশ কেটে এখন রাত হতে চলেছে,আকাশে আধো পূর্ণিমা দেখতে পাচ্ছি,তারাও আছে বেশ কিছু... আমি মগটা এক পাশে রেখে তিয়াসীর পাশে যেয়ে দাঁড়ালাম। ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললাম,

--নীচে যাবি না?পড়া নেই আজ?

তিয়াসী কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরল। না চাইলেও আমার বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো...

--তিসু,জীবনটা তুই যেমন ভাবছিস,য়াসলে তেমনটা নারে,আর তোর তো জীবন মাত্র শুরু,এখনই এতো ভেঙ্গে পড়লে হবে?

--আপি,আমি কিছু বুঝতে পারি না!আমি কিছু ভুলতে পারি না!

আমি কিছু না বলে ওকে জড়িয়ে রাখি,মৃদু বাতাসের মাঝে আমি আপ্রান চেষ্টা করি তিয়াসীর কষ্টের ভাগ নিতে,ওর ছোট্ট বুকের কষ্ট গুলো খানিকটা কমাতে!ওকে এটা বুঝাতে,জীবন কখনো কারো জন্য থেমে থাকে না,কিছু ভুলের মাশুল হিসেবে সারা জীবনের জন্য কষ্ট বয়ে বেড়াতে হয় না!...কিন্তু মানুষ কখনো কখনো বুঝেও বুঝতে চায় না,মানতে পারে না!আবেগের কাছে বন্দী হয়ে থাকে অনেক সময় ধরে,সময় চলে যায়,আস্তে আস্তে সব বদলায়!

টেবিল ল্যাম্পটা অফ করে আমি বিছানায় এসে মোবাইলে ঘড়ি দেখলাম,রাত ১.২৫ বাজে। চূল আঁচড়াতে আঁচড়াতে খেয়াল করলাম,বিছানায় কম্বল মুড়ি দিয়ে শোয়া তিয়াসী ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে! আমি চুপ করে কিছুক্ষন বসে রইলাম... কেন জানি ইচ্ছে করলো না,ওকে ডাকতে। কাঁদুক একা একা,কাঁদলে মনটা হয়তো হালকা হবে,কান্না চেপে বেঁচে থাকা অনেক কষ্টকর,আমি চাই না তিয়াসীও সেভাবে কষ্ট পাক। শোয়ার ইচ্ছেটা আবারো চলে গেলো, ল্যাম্পটা আবারো অন করলাম,ডায়েরী বের করে লিখতে শুরু করলাম,

''এই মূহুর্তে আমার পাশে বিছানায় শুয়ে যে মেয়েটি কাঁদছে সে সদ্য কৈশর পাড় করে তারুণ্যে পা রেখেছে বলা যায়। কিন্তু জীবনের সুন্দর সময়ের শুরুতেই ভুল আবেগের মাশুল দিতে হচ্ছে তাকে। ক্লাস নাইন থেকে সে মনের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলে কাজিন ভাইকে,কাউকে বলেনি কখনো। এসএসসি পাড় হবার পর একদিন ফুপাতো বোনের কাছে বলেছিলো তার ভালো লাগার কথা,ব্যাস...জানা জানি হয়ে গেলো পুরো পরিবারে!! কনজারভেটিভ পরিবারের সবার সমস্ত রাগ এসে পড়ল মেয়েটির উপর!মেয়েটিও তখন রাগের মাথায় বলে বসল,আমি ওকে ছাড়া বাঁচবো না,বিয়ে করলে ওকেই করবো!আর যায় কোথায়?শুরু হলো মানুষিক অত্যাচার। বাড়িতে বিয়ের তোড়জোড় চলছে,তাদের ধারনা,বিয়েই একমাত্র সমাধান!পড়াশুনা বিয়ের পরেও করা যাবে,কিন্তু মানসম্মান একবার গেলে তা ফিরে পাওয়া যাবে না!ঐ ছেলের সাথে যেনো কোন ভাবে যোগাযোগ করতে না পারে তাই তাকে বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে হয়েছে এতো দূরে। কিন্তু সবাই যা দেখে আমি কেন জানি তা দেখতে পাই না!আমি তাই এই মেয়েটির চোখে,কষ্টের নোনা জল দেখতে পাই শুধু... আমি অনুভব করতে পারি,মেয়েটির বুকে কারো প্রতি সুপ্ত ভালোবাসার কষ্ট,এতোদিনের চেনা মানুষ গুলোর বদলে যাওয়া রুঢ় বাস্তবতা সহ্যের কষ্ট,একের পর এক অপমান আর চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত গুলোর কষ্ট...কতোই বা বয়স হয়েছে?সব কিছুই সে সঠিক করবে,ভালো ভাবে বুঝবে এমন বয়স কি হয়েছে?কি জানি!এখনো অনেক অবুঝ সে,বাইরের পৃথিবী কিংবা মানুষ সম্পর্কে ওর এখনো অনেক কিছুই অজানা,আমি শুধু বুঝি,নিজের মনের কথা গুলো মেয়েটি কাউকে বলতে পারে না,কেউ শুনতেও চায় না। চাপা অভিমান,জমানো কষ্ট আর অনিশ্চিত ভবিষত মেয়েটিকে নিঃশ্বাস নিতেও দেয় না যেনো! আমার খুব ইচ্ছে করে,ওকে আরেকবার প্রাণ খুলে হাসতে দেখতে,আরেকটা বার আমার সাথে কলেজে,কোচিং এর গল্প করতে দেখতে...আমার কাছে যদি কোন যাদুর কাঠি থাকতো,আমি তা দিয়ে আরেকটা বার ওর উচ্ছ্বলতা ফিরিয়ে দিতে চাইতাম!''

মাথাটা ঝিম ঝিম করছে মনে হয়!লেখা বন্ধ করে আমি শুয়ে পড়লাম। চোখ বন্ধ করে থাকলেও ঘুম আসছে না! এপাশ-ওপাশ করতে লাগলাম,কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হলো খুব,কথাটা মাথায় আসতেই আমার সেতুর কথা মনে পড়ে গেলো...আবারো দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো বুক চিরে! সেতু আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো,ও 'স' গোত্রীয় মানুষ ছিলো! মানে সৌন্দর্য্য,স্বপ্ন,সাধনা,সফলতা এই নিয়েই ছিলো সেতুর জগত। আমার সাথে শুধু একটা জায়গায় মিলতো 'সাধনা' আমি সাধনা করে যেতাম,আর সেতু উৎসাহ দিতো,আবার সেতু স্বপ্ন দেখতো,সাধনা করতো সফলও হতো আর আমি সাথে থাকতাম,ওর স্বপ্নের চাকাটাকে সচল রাখতাম!সেতু খুব উচ্ছ্বল মনের মানুষ ছিলো,অপূর্ণতার কষ্ট কখনো বুঝতে হয়নি!... বন্ধু মহলে আমার 'ভালো নীরব শ্রোতা' বলে নাম আছে,তাই সেতু বলতো আর আমি শুনতাম....আমার কিছু বলা হতো না,কিন্তু আফসোসও হতো না! তবে একট সময় আফসোস হতে শুরু করলো,যখন সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে যেয়ে সেতু ধীরে ধীরে বদলে যেতে লাগল! আমি বদলে যাওয়াকে ভয় পাই খুব,আর তাই বদলে যাওয়া মানুষদের থেকে দূরে সরে আসি... সেতুর কাছ থেকেও আমি দূরে সরে আসলাম ধীরে ধীরে। দূরত্বের দূর অথবা মানুষ বদলের দৌড়...যাই বলি না কেন,খুব কাছে বন্ধুকে হারিয়ে আমি আরো বেশি নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিলাম,কিন্তু নিজেকে বদলাতে পারিনি তবুও! মানুষ চলে যায়,কিন্তু মায়া ঠিকই রয়ে যায়!!আমাকে মাঝে মাঝে সেই মায়াগুলো খুব কষ্ট দেয়,কিন্তু কাছের মানুষরা একবার বদলাতে শুরু করলে কোন মায়াই ফেরাতে পারে না... তিয়াসীর কাছের মানুষ গুলোও এভাবেই বদলে গেছে,তাই তিয়াসী রোজ কাঁদে এভাবে!কতো দিন কাঁদবে ও জানিনা...

বিকেলে আমি তিয়াসীকে নিয়ে বের হলাম,আমি আজকাল সুযোগ পেলেই বিকেলে ওকে নিয়ে বের হই। কখনো টিকাটুলি হয়ে ওয়ারীতে মিঠু মামার দোকানের বাকরখানি খেতে,কখনো তালতলা মার্কেটে বনহারী বাবুর দোকানের মালাই চা খেতে,অথবা বনশ্রী হয়ে নন্দীপাড়া রিকশায় ঘুরতে,বেইলি রোডে বুটিক শপের নতুন ক্রিয়েটিভিটি নিয়ে গবেষনা করা। আমি চেষ্টা করি তিয়াসীকে বুঝাতে,মানুষের জীবনটা অনেক বেশি ব্যাস্ততায় ভরা,তাই কারো জন্য কিছুই থেমে থাকে না কোথাও,ভুল হয়ই মানুষের তবে তা সংশোধন করে নিয়েই আবারো পথ চলতে হয়,এমন হাজারো ভুলে ভরা আমাদের সবার জীবন,কিন্তু তাই বলে কেউ থেমে নেই। আমার চেষ্টা পুরোপুরি বিফলে যায়নি বলা যায়,ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে তিয়াসী। এডমিশন টেস্ট নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে,আমিও ওকে নিয়ে ব্যাস্ত,আমাকে নিয়ে ব্যাস্ত। অনেক দিন পর মনে হলো,আমিও এখন ব্যাস্ত...!

মোবাইলটা অনেকক্ষন ধরেই বাজছে,আমি তবুও পিসি থেকে চোখ সরাচ্ছি না,নাহ...বেজেই চলছে! অপরিচিত নাম্বার,

-হ্যালো,আপনি রুপন্তি আপু বলছেন?

কন্ঠটা শুনে কিছুটা হচকিয়ে গেলাম!

-জ্বী,কে বলছেন?

-আপু,আমি শিহাব,তিয়াসীর কাজিন

আমার কপাল কিছুক্ষন কুঁচকে থাকল,ধীরে ধীরে আ স্বাভাবিক হয়ে,চোখের পাতা পিট পিট করতে লাগল!

-তুমি?আমার নাম্বার কোথায় পেয়েছো?আর কেন ফোন করেছো?

-আপু,আমি জানি,আপনি রাগ হচ্ছেন,কিন্তু আমি আসলে তিয়াসীর সাথে একটু কথা বলতে চাচ্ছিলাম,বেশি না একটা বার!

আমি হতবুদ্ধ হয়ে গেলাম মনে হচ্ছে!!এই ছেলের সাহস কি?সে আমাকে ফোন করে তিয়াসীর সাথে কথা বলতে চায়,অথচ ওর জন্যই আজকে তিয়াসীর উপর দিয়ে এতো ঝড় যাচ্ছে...সব কিছুর পর যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে,তিয়াসীও সব ভুলে নতুন করে জীবন শুরু করছে ঠিক তখনই শিহাব!!নাহ...ভাবতেই মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো!

-শিহাব,তুমি কি চাওনা,তিয়াসী ভালো থাকুক?ওর পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু শান্তিতে থাকুক?কেন ওকে আবার বিরক্ত করছো!

-আপু,আমি খুব গিলটি ফিল করছি,ওকে সরি বলতে চাই!

-আমি বুঝতে পারছি,কিন্তু আমি চাইনা,তিয়াসীর সাথে তুমি আর কোন ভাবে যোগাযোগ করো,অনেক চেষ্টার পর পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হচ্ছে কিছুটা,এটাকে আরেকবার বিগড়ে যাক আমি তা চাই না। তুমি তোমার মতো পড়াশুনা করো,ওকে ওর মতো থাকতে দাও...তোমাদের জন্য আত্নীয়-স্বজনদের মধ্যে আর কোন ঝামেলা হোক তা চাই না!

-আপু,প্লিজ একটা বার আমাকে কথা বলার সুযোগ দিন,না হলে আমি কাল আপনাদের বাসায় আসবো!!

হায় হায়...!কি বলে এই ছেলে?!!আমি কিছুক্ষন ভেবে মোবাইলটা তিয়াসীকে দিলাম। আমি চলে আসছিলাম,তিয়াসী আমাকে আটকালো,কলটা কেটে দিয়ে আমাকে মোবাইলটা হাতে দিয়ে বলল,

--আপু,আমি আর আম্মু-আব্বুকে কষ্ট দিতে চাই না,আমি আমার লাইফটা গড়তে চাই,আমি সঠিক ভাবেই আল্লাহর কাছ থেকে মাফ পেতে চাই!

আমি এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তিয়াসীর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম...আমার মুখ থেকে 'আলহামদুলিল্লাহ' বেড়িয়ে এলো অজান্তেই...

তিয়াসীকে বিদায় দিয়ে,বাসায় ফিরে এসে কেন জানি রুমে থাকতে ইচ্ছে করলো না। তাই ছাদে চলে আসলাম। তিয়াসী শাবিপ্রবি তে চান্স পেয়েছে,ওর বাবা ওকে আজ নিয়ে গেলো। এ ক'দিন বাসায় থেকে ক্লাস শুরু হলে ওখান থেকে সিলেট চলে যাবে। মোটামোটি চিন্তামুক্ত হয়েছে সবাই,যদিও এখনো আশংকা কাটেনি,কারন বলা তো যায় না কি হবে ভবিষতে!

আমার যদিও ওভাবে কিছু ভাবতে ইচ্ছে করেনা। অনেক চেষ্টার পরেও কিছু ব্যাপার মানুষকে তার ভাগ্যের উপরই ছেড়ে দিতে হয়,না হলে চলে না। এক নাগারে পায়চারী করতে করতে কিছুটা ক্লান্ত হয়ে বসলাম চেয়ারে,আজ অনেক দিন পর কেন জানি সেতুর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে খুব!... সেতু যখন বুঝতে পেরেছে,একজন ভালো বন্ধু জীবনে কতোটা দরকার তখন থেকে এ পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করেছে আমার সাথে যোগাযোগ করার,কিন্তু আমি এতো দূরেই চলে এসেছি,যে ও আর নাগাল পেলো না। আজো যখন বিভিন্ন দিবসে,অন্য বন্ধুদের কাছ থেকে আমার তৈরী উইশ গুলো ঘুরে ফিরে ও পায়,তখন আর কিছু না হোক,একটা ফাঁকা মেইল ঠিকই পাঠায়,কখনো এক লাইনে কিছু লিখে। শেষবার লিখেছিলো ''তুই যে এতো অভিমানী,তা কখোনই বুঝিনি!'' আমি মেইলটা দেখে বুঝতে পেরেছিলাম ওর দীর্ঘশ্বাস,কিন্তু জবাব আর পাঠানো হয়নি।

ধীরে ধীরে ছাদের একপাশে এসে দাড়ালাম। বাসার পাশেই মেইনরোডে চলন্ত বাস গুলোর দিকে তাকিয়ে মনে হলো,এর মধ্যেই কোন একটা বাসে হয়তো তিয়াসী যাচ্ছে,কিংবা ঐ ভীনদেশের কোন এক বাসে দিন শেষে সেতুও হয়তো বাড়ি ফিরছে...আমি সাথে না থাকলেও দিব্যি দেখতে পাচ্ছি,ঘুমন্ত বাবার পাশে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে তিয়াসী,মাঝে মাঝে চোখের কোনে জমে উঠে জল গুলো মুছছে!

দিন শেষে প্রচন্ড ক্লান্তি নিয়ে সেতু ফিরছে,জানালা দিয়ে আনমনে বাইরে তাকিয়ে ফেলে আসা কোন সময়ের কথা ভাবছে,না চাইলেও সেখানে আমিও আছি!

এবং এখানে থেকেও ওদের দু'জনের সাথে ওখানে এই মূহুর্তে আমিও আছি। আমিও এভাবেই ওদের কথা ভাবছি...অনেক দূর থেকে আমিও না চাইলেও অনুভব করতে পারছি,চোখের কোণে জমে উঠা অশ্রুর স্পর্শ অথবা অভিমানী দীর্ঘশ্বাস!

আমি জানি অন্তমিলের এই কষ্ট কেবল দীর্ঘশ্বাসই বাড়ায়,তবুও ভাবতে হয়, স্মৃতির দায়টা এখানেই হয়তো বেশি তাই...

বিষয়: সাহিত্য

১৮৭১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File