বই এর ভীড়ে হেঁটে যাওয়া সময়
লিখেছেন লিখেছেন নোমান সাইফুল্লাহ ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৮:৪৮:০৫ রাত
একুশের বইমেলা মানেই অন্যরকম অনুভূতি। শুধু একুশের বইমেলা আসলেই বাঙালীকে চেনা যায় আপন রূপে। অন্যসময়গুলোতে এত বিভেদের দেয়াল, এত রক্ত, এত ক্লেদ বড় বিভৎস সময়! আমি মাঝে মাঝে আহতবোধ করি, স্রষ্টা কেন বাঙালী করে পাঠাল? তবে একুশের বইমেলাতে অথবা বাঙালীর নিজস্ব দিনগুলোতে স্বচ্ছন্দবোধ করি। কেননা একজন বাঙালী হিশাবে আমি ধন্য। যে জাতি জ্ঞানের জন্য মেলার আয়োজন করে, সে জাতি সাংস্কৃতিক দীনতায় ভোগতে পারে না।
নিজের বই প্রকাশ এবং অন্যান্যঃ
এবারের বইমেলার অনুভূতিটা একটু ভিন্ন। এতসব বইয়ের ভেতর আমার মত ক্ষুদ্র লেখকের বই ঠাঁই পেয়েছে। সাভাবিকভাবে ভালো লাগার মত। এবারের বইমেলাতে আমার লেখা বই ”অন্ধকারে অজস্র পাখি”এবং ব্লগার ইক্লিপ্সের লেখা বই ''নৈশব্দের জলছবি'' স্বরবৃত্ত প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হয়েছে, বইমেলায় স্টল নং ৩৩৩ এবং ৩৩৪। তাই বই এর বিক্রি সম্পর্কে জানতে সুবিধা হলো। প্রকাশক জানালেন, তরুণ লেখক-লেখিকা হিশাবে আমাদের বই পাঠক বেশ ভালোভাবে গ্রহন করেছে। অনেক পাঠকই বই কিনেছেন। পাঠকদের আন্তরিক ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
প্রথম বই এবং কবিতাঃ
বাংলা সাহিত্যে কবিতার চেয়ে গদ্যের পাঠক বেশী। বিশেষ করে হুমায়ুন আহমেদের হাতধরে বাংলা কথাসাহিত্য প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তরুণ-তরুণীদের মাঝে হুমায়ুন আহমেদের প্রভাব অনেক বিশাল। আমার কাছের বন্ধুরা একই প্রশ্ন করেন। কবিতার বই কেন? আমার যতদূর মনে পড়ে, হুমায়ুন আহমেদকে একবার স্বাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভালো গল্প লেখার জন্য কি করা উচিত? উনি জবাবে বলেছিলেন, ভালো কবিতা লেখা উচিত। পাঠক হয়ত জানেন, হুমায়ুন আহমেদ প্রথম জীবনে কবিতা লিখেছিলেন। এবং তাঁর লেখা অনেক জনপ্রিয় গান রয়েছে।
কবিতাহীন কোন ধর্ম, সাহিত্য অথবা শিল্পের অস্তিত্ব নেই। হতে পারে সেটা কথা সাহিত্য, নাটক, চিত্রশিল্প, ভাবদর্শন-ধর্ম। একজন শিল্পী ততটাই শিল্পের গভীরে বিচরন করতে পারেন, ঠিক যতটা একজন কবি বিচরন করতে পারেন। কেননা গল্প, গান, শিল্প, চলচ্চিত্র সব কিছুই মানুষের স্বপ্ন। কবিতা সেই স্বপ্নেরই হুবহু বয়ান।
একজন মানুষ হিশাবে নিজের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখতে চাই। যেভাবে নিজের পাশে দাঁড়িয়ে ধর্ম-পরকাল সব কিছু অনুভব করি।
তরুণ লেখকদের বই প্রকাশঃ
তরুণ লেখকদের বই প্রকাশনার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। কারণ কোন প্রকাশকই নিজ খরচে বই প্রকাশ করতে আগ্রহী নয়। এর কারণ হচ্ছে পাঠকদের দৃষ্টি সব সময় প্রতিষ্ঠিত লেখকদের প্রতি। তাই কেউ স্বীকার করুক বা না করুক একমাত্র স্বনামধন্য হাতে গোনা কয়েকজন লেখক ছাড়া প্রায় সব লেখকই প্রকাশনার ক্ষেত্রে কিছুটা অথবা সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করেন। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। তবে যতদিন পাঠকদের দৃষ্টিভঙ্গি না বদলাবে ততদিন তরুণ লেখকদের এই বাড়তি চাপ বহন করেই সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে হবে।
আমার নিজস্ব চিন্তায় লেখালেখির জন্য সর্ব প্রথম যে বিষয় প্রয়োজন, তা হচ্ছে সাধনা, অধ্যয়ন এবং প্রচেষ্টা। সাময়িক লাভ-ক্ষতি নয়। কেননা যে কলমের শক্তি আছে, তা কখনো থেমে যায় না, নিঃশেষ হয় না। সে কলম জ্বালিয়ে দিতে পারে বিপ্লবের আগুন।
বিষয়: বিবিধ
১৫৮৭ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের দেশে বই প্রকাশনা ও পাঠক কোনটাই গড়ে উঠেনি ঠিক মত। প্রতি বছর বইমেলায় যে অর্থ সেমিনার ইত্যাদিতে অপচয় হয় সেগুলি অন্যকোনভাবে বই বাজারজাতকরন এবং পাঠক সৃষ্টির জন্য ব্যায় করলে আরো ভাল হতো। বই এর পাঠক হ্রাস এর জন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষরাও অনেকাংশে দায়ি। একসময় স্কুলের লাইব্রেরি ছিল বই এর প্রধান উৎস। এখন অনেক শিক্ষক সিলেবাসের বাইরের বই পড়লে শিক্ষার্থিদের শাস্তি দেওয়ার কথা বলেন।
শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ শুভেচ্ছা....
আপনার এবং ইকি আপুর বইটির সাফল্য কামনা করছি।
খুব ভালো লাগলো ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন