ভেজা সমীরণের মেঠোশব্দ
লিখেছেন লিখেছেন নোমান সাইফুল্লাহ ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৯:২৮:২৮ রাত
অথৈ লাবন্যের বৃষ্টিতে মুখরিত দিগন্ত। বৃক্ষের ছায়াপথে তোমার নিটোল ঠোঁটে রক্তিম পাপড়ির ছোঁয়া, প্রতিবারই এমন হয় যখন অগ্নি ফাল্গুনের স্পর্শে কাঁপতে থাকে প্রকৃতির শরীর। যেন প্রকৃতির মৈথুনে জেগে উঠবে নতুন পৃথিবী, ফুলের বক্ষ চিরে নেমে আসবে ফুল। অনন্যতার ভেতর থেকে তৈরী হবে নতুন অনন্যতা। ভালোবাসার ভেতর থেকে জন্ম হবে নতুন প্রেম। সময়ের শিশু হেঁটে যাবে ভবিষ্যতের দিকে। আমাদের অভিযাত্রাও হবে সেই দিকে। যেখানে ফুল,পাখি,নদী অরন্য মিলে রঙ আর স্রোতের আলোড়নে অনন্ত যৌবনের স্বরলিপি লেখা হয়েছে অনাদিকাল ধরে। প্রতিদিনই সেই লগ্নের অপেক্ষায় আমি মাঝি নায়ের গলুই ধরে বসে থাকি, আমার সম্মুখে অনাগত বিমুগ্ধ রূপালী রঙের আকাশের আলপনা। বিষণ্ন তারা গুলো মাঝরাতে ঝরে যায়, শেষ অবধি জেগে শুধু সম্ভবনার শুকতারা। আর সব মৃত ইতিহাস। ঘাসের রঙগুলো ধুসর হবার আগেই সবুজ হয়ে যায়, তুমি ফিরে আসবে এই তাড়নায়।
ছোট ছোট অভিমান আর ভুলের স্তুপে তোমার আগুনের তাপ, অবশেষে অবগুন্ঠিত স্বচ্ছতোয়া জলের মত হাস্যজ্জ্বোল করে হৃদয়ের আঙ্গিনা। একবিন্দু ক্লেদ আর বিষাদের ক্ষতচিন্হে ঢেলে দাও অবারিত ঐশর্য্যের জোসনার ধুলো। সেই ধুলো ঝড় হয়। সেই ঝড়ে উড়ে যায় শুকনো পাতা, জরাজীর্ন রক্তের স্রোত, অবসন্ন বিকেলের কালো শব্দের অনুভূতিগুলো। ফেরেশতার নুরের মত সমস্ত শরীর নীল হয়। আমি ফেরেশতা নই আদমের রক্তের স্রোত। তবু এই অনিঃশষ পবিত্রতায় অবনত হই পশ্চিম দিগন্তে।
এই বাধাহীন উত্তাল হাওয়ার প্লাবনে কিশোরীর বুকে সম্মোহিত মিলনের আবাহন আসে। চোখের নেকাব খুলে দেয় দখিন জানালা। প্রিয়মত মুখ এবং নিঃসংকোচিত সুখের সুরভিতে সারাঘর জুড়ে মৌ মৌ মৌতাতের শিহরন ফুল এবং মৌমাছির মত। এই প্রেম পরিপূর্ণ জীবনের অর্থময় পান্ডুলিপি। উদাস বাউল সেই কথা বলতে বলতে নিজেকে ভুলে যায়, যেভাবে নিজেকে ভুলে শ্রেষ্ঠতম শিল্পী, শুধু অন্যকে সাজায় নিজের মত করে। নিজেকে বিলিয়ে উন্মন কবি কি সুখ পায় সে জানে, তুমিও কি নিজেকে বিলিয়ে দাও এই মাহেন্দ্র পুর্ণিমায়?
আজ নিষ্প্রান অনুভুতিগুলো প্রাণে প্রাণে প্রানিত হোক। নিঃসঙ্গ জীবনের অভ্যন্তরে নেমে আসুক প্রিয়তম স্পর্শের বৈভব। ফেলে আসা স্মৃতির কলরব, প্রিয় ভালোবাসার অনুভবগুলো বিষাদের বিপরীতে হয়ে উঠুক হোমের আগুন, পবিত্র প্রার্থনার প্রশান্তিতে নেমে আসুক প্রাণের সম্ভার। মাছের আঁটশে গন্ধের সাথে বেঁচে থাকুক পাললিক ইতিহাস। মেঠোপথে অচেনা কিছু শব্দ। একমুঠো বীজ হাতে নিয়ে হেসে উঠুক স্বপ্নের কিষাণ। যেন আমাদের উদ্দেশ্য বর্তমান নয়, ভবিষ্যতের মায়াবী উঠোন। কবি এবং কাব্যের শক্তিতে ভাষা এবং শব্দের শরীর লাবন্যময় নারীর মত উপ্ত হোক, যে নারীর শরীর বেয়ে নেমে আসে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সন্তান।
বিষয়: বিবিধ
১২৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন