প্রিয় চন্দ্রনিশি এ শহর তোমার জন্য নয়

লিখেছেন লিখেছেন নোমান সাইফুল্লাহ ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৯:৫৬:২৬ রাত



এক.

ধুসর শহরে প্রগাঢ় অন্ধকারে ডগমগে চাঁদটা খুব বেমানান। এই সিগ্ধ পবিত্রতা আমাদের যাপিত জীবনের স্তব্ধতার সাথে কিছুতেই মেলানো যায় না। ধুলো জমা মুক্ত বাতাসে প্রশ্বাস নিতে আমরা অভ্যস্ত। কেন যেন ফুটপাতের অন্ধকার গাছের নিচে রাষ্ট্রের গঠনতন্ত্রের অবমাননা কিছুতেই মনে হয় না। বরং নাগরিকের উন্নতির খবর হকারের চিল্লাচিল্লিতে চাউর হয়। রাজা মহোদয়ের কন্ঠে আমরা এই সুসংবাদকে কিভাবে মিথ্যা বলি? এত মহান সভ্য মানুষেরা কি মিথ্যা বলতে পারেন? মিথ্যা বলা মহাপাপ। এমন নর্মসগুলো অধ্যয়ন করে মূলতঃ আমরা সভ্য হওয়ার প্রথমপাঠ গ্রহণ করি। মানব হত্যা আর ঈশ্বর হত্যা সমান কথা। প্রতিনিয়তঃ কত ঈশ্বরকে আমরা হত্যা করি? সেই সংবাদ কেন হেডিং আকারে নগরের প্রসিদ্ধ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় না! কারণ সদা সত্য কথা বলিব এমন নীতিশাস্রের উপর সোশাল ভ্যালু নির্মিত হয়েছে আদি সভ্যতার প্রথম উদ্বোধন সভায়। সভ্যতার ভান ধরে নাগরিক সংলাপে মাউথ পিসের সামনে দাঁড়ালেই কি সভ্য হওয়া যাবে?

দুই.

চাঁদের আলোয় এই শহরের রুপসী কন্যাকে বড় বিদঘুটে চেহারা মনে হয়। কারণ চাঁদের মাঝে অনিঃশেষ নির্মল ফেসিয়াল আছে। যা পবিত্র নুরের আচ্ছাদনের মত। আবেদনময়ী শারিরিক বিজ্ঞানের এই মেকাপের উপর চাঁদের আলো পড়লে হাঁড় মাংসগুলো কেমন যেন রূপকথার সেই ডাইনীর মত মনে হয়, যে ডাইনী প্রতি রাতে এক জনের রক্ত শুশে খেত! নীলাঞ্জনা এই লেখা পড়ে দুঃখ পেয়ো না। তোমার নেকাবের আড়ালে ঢেকে রাখা পবিত্রতাকে শহরের কিছু লুটতরাজ চুরি করতে চায়। ওদের লুটতরাজ বললে সভ্য মানুষেরা দুঃখ পায়। তাই আমরা ওদের সোশাল মানুষ উপাধীতে ভুষিত করব। কিন্তু সভ্যতার প্রথম বাণী ঈশ্বরের দেয়া পবিত্র বন্ধনের বাইরে যারা সভ্য হতে চায়, তারা কবে সভ্য ছিল এই বিষয় একটা থিসিস লেখার প্রয়োজন আছে।

তিন.

আবারও বলি প্রিয় চাঁদ, তুমি এ শহরে এসো না। এই শহরের নগরিকরা হুমুত পেঁচার মত অন্ধকারে থাকতেই ভালোবাসে। আলোর আকাশ উদ্ভাসিত হলে ওরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। রাজপথে বেশ্যার বাজার জমায়। লাসসার লালা ফেলতে ফেলতে লুল পুরুষেরা সংস্কৃতিসেবায় মগ্ন হয়। কতই না সভ্য আমরা! শাহবাগের অন্ধকার রাজপথে, রমনা বটমুলের ঘন অন্ধকারে ডুগডুগি বাজাতে বাজতে ন্যায়ের দাবী নিয়ে মহান শরীর উদযাপনে ব্যস্ত হয় নগরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। আর এক চোখ কানা এক ল্যাংড়াকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ আসনে বসানো হয়। তারপর ঐ কানা মাতাল লোকটা একের পর ঈশ্বর হত্যার নির্দেশ প্রদাণ করে। এই নিয়ে বেশ্যার বাজারে বেশ সাড়া পড়েছে। কারণ মক্কেলরা বেজায় খুশি!

প্রিয় চন্দ্রনিশি তুমি এই নষ্ট শহর ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাও....

বিষয়: বিবিধ

১৯০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File