এবারের বই মেলায় আমার প্রথম বই এবং প্রিয়জনদের অনুভূতি।
লিখেছেন লিখেছেন ইক্লিপ্স ২১ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:১৯:০৭ সকাল
আলহামদুলিল্লাহ্! সবাইকে আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে আমার প্রথম কবিতার বই ''নৈশব্দের জলছবি''। যদিও গল্প,উপন্যাসের দিকেই আমার ঝোঁক বেশি, তবুও কবিতা সাহ্যিতের প্রাণ। তাই প্রথম বইটা কবিতা দিয়েই শুরু করলাম। আর তাছাড়া আমার কয়েকটা লেখার কপিরাইট পাবারও ইচ্ছে ছিল। সবার আগে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি মহান আল্লাহ রাব্বুলআলামিনের যার অশেষ মেহেরবানীতেই আজ আমি লিখতে পারছি।
তারপর গভীর ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা দিয়ে স্মরণ করছি ব্লগগুলোকে। কেননা এই প্লাটফর্মেই আমার লেখালেখির হাতে খড়ি। এখানে না আসলে হয়ত আমার এই লেখালেখির সুপ্ত স্বপ্নটা সারা জীবন আমার নিজের মাঝেই সুপ্ত থাকত। কোন দিন ''নৈশব্দের জলছবি'' হয়ে বাস্তবে ধরা দিত না। সেই অধরাকে আমি পেয়েছি মূলত ব্লগের মাধ্যমে।
আজকালকার যুগে অনেক বড় এবং শক্তিশালী মিডিয়া হচ্ছে ব্লগ। এখান থেকে মানুষ এমন অজস্র নিউজ জানতে পারছে যা পত্রিকার মাধ্যমেও সম্ভব হচ্ছে না। সেই দিন বেশি দূরে না যে দিন ব্লগ পত্রিকাগুলোকেও ছাড়িয়ে যাবে এবং হয়ে উয়ে উঠবে এই ইয়োলো জারনালিজমের সময়ে সত্য প্রকাশের অনেক বড় হাতিয়ার। এখান থেকে বেড়িয়ে আসবে দেশের সব থেকে জনপ্রিয় বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক,কলামিস্ট,কবি, সাহিত্যিক। ইতোমধ্যে ব্লগের কারণে আমার মত অলেখিকা প্রথম বই প্রকাশের সাহস পেয়েছে! এমন আরো বহু দৃষ্টান্ত এবং এর থেকে হাজারগুণ ভালো দৃষ্টান্ত তৈরী হবে ইনশাআল্লাহ। সেই দিন আর বেশি দূরে নেই।
এখানে অজস্র মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর উৎসাহই আমাকে লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। ব্লগের অসাধারণ মানুষগুলোকে দেখে বিস্মিত হয়েছি তারা কত সহজে আমাকে আপন করে নিয়েছেন। আরো বিস্মিত হয়েছি যখন দেখেছি কোন ফ্যান আমার লেখাগুলো নিয়ে তার ব্যক্তিগত ব্লগে আমার নাম সহ যত্ন সহকারে রেখে দিয়েছেন।ব্যাপারগুলোকে আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে।
এখন আসি বইয়ের প্রসঙ্গে। এই ব্যাপারে এক ব্লগার ভাইয়ের কথা না বললেই না। আমি আমার বইএর দায়িত্ব তার উপর দিয়ে নিশ্চিন্তে আমার পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। পরীক্ষার কারণে আমি বইয়ের পেছনে খুব একটা সময় দিতে পারি নি। এই ব্লগার ভাই প্রকাশকের সাথে যোগাযোগ থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সব কাজ একাই করেছেন। অনেক কৃতজ্ঞতা তার প্রতি। এই ব্লগার ভাই হলেন ব্লগার নোমান সাইফুল্লাহ। তিনি নিজেও বই মেলাতে বই প্রকাশ করছেন।
''নৈশব্দের জলছবি'' নিয়ে অনেক স্বপ্ন আমার। কেননা এই স্বপ্নের পথ ধরে আরো অনেক রঙিন স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দিবে। তাই নৈশব্দের জলছবিকে সেই সব স্বপ্নের প্রবেশদ্বার করে সাহিত্যের বিশাল জগতে আমার প্রবেশ। আর সেই জগত যে কত মধুময় প্রথম বুঝেছি যখন দু দিন আগে আমার বাবা হলেন আমার প্রথম বইয়ের খরিদদার। তিনি মূলত আমাকে উৎসাহিত করতে আমার বই আমার কাছ থেকে কিনেছেন। তিনি অত্যাধিক খুশি ছিলেন এই বই হাতে নিয়ে। তার খুশি দেখে আমার মনে হয়েছে আমার বইয়ের বাজারে কাটতি পড়ুক না পড়ুক এই যে নির্মল আনন্দ আমি আমার প্রিয়জনদের দিতে পেরেছি এতেই আমি সার্থক। তারপর আমার বইয়ের খরিদদ্বার হয়েছেন আমার খালামনি। তিনিও অনেক খুশি হয়েছেন।
তারপর আমার বাবা আমার স্কুলের হেড স্যারকে বইয়ের সৌজন্য কপি উপহার দিয়েছেন। হেড স্যার অনেক প্রশংসা করেছেন। তিনি নাকি ক্লাসে গিয়ে বইয়ের পেছনে আমার ছবি বের করে স্কুলের স্টুডেন্টদের দেখিয়ে বলেছেন,''এই হল সেই টুম্পামনি, যার কথা তোমাদের সব সময় বলি।'' আমার স্কুলের হেড স্যার আমাকে অত্যাধিক স্নেহ করেন। তিনি স্টুডেন্টদের সাথে আমাকে নিয়ে এত গল্প করেছেন যে আমার স্কুলের স্টুডেন্টরা আমাকে দেখার জন্য মাঝে মাঝেই আমাদের বাসাতে ভিড় জমায়। লাস্ট যে বার বাসায় গিয়েছিলাম আমার চাচাতো বোনের কাছে শুনলাম একটা দশ-এগারো বছরের মেয়ে নাকি প্রায়ই তার গিয়ে বসে থাকে আর বায়না ধরে '' তোমার টুম্পা আপুর সাথে পরিচয় করি দাও।'' এখন আসি কলেজের প্রসঙ্গে। আমার কলেজের ফর্মটিচারকেও সৌজন্য কোপী দেয়া হয়েছে। তিনিও অনেক খুশি হয়েছেন। আমার এই টিচার আমাকে এত ভালোবাসতেন যে আমার কলেজের মেয়েরা জেলাস হয়ে বলতো ,''তুমি তো মেডামের মে।''
আলহামদুলিল্লাহ্ এই ভালোবাসাগুলোর তুলনা হয় না। এই ভালোবাসাগুলো দেখি আর বিস্মিত হই মহান আল্লাহ তায়ালা আমাকে এত মানুষের স্নেহভাজন করে কত বড় নেয়ামত দান করেছেন। কোন একটা উপন্যাসে একটা লাইন পড়েছিলাম ,''আমার দুঃখ অনেক! কিন্তু আমার চারিদিকে ভালোবাসার সমুদ্র! সেই সমুদ্রে দুঃখগুলো পড়ে টুপ করে ডুবে যায়!'' এই ভালোবাসাগুলোকে দেখলেও আমার তাই মনে হয়। এই পুঁজিবাদির যুগে কি অকৃত্রিম অনুভূতি! এ গুলো কোন অর্থ বিত্ত দিয়ে কেনা যাবে না।
আলহামদুল্লিলাহ এই বইয়ের অসীলায় আমি প্রিয়জনদের আরেকটি আনন্দঘন মুহূর্ত উপহার দিতে পেরেছি। এই বইমেলাটি আমার বইয়ের জন্য প্রিয়জনদের কাছে হয়ে উঠবে স্পেশাল। জাস্ট এতটূকুই আমার প্রত্যাশা ছিল।
আমার বই ''নৈশব্দের জলছবি''
প্রকাশনাঃ স্বরবৃত্ত,
প্রকাশকঃ মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ,
স্টল নংঃ ৩৩৩,৩৩৪
৪৫বাংলা বাজার,ঢাকা-১১০০।
ফোন নংঃ ০১৫১৯৫২১৯৭১-৩,
http://www.rokomari.com/book/76263
বিষয়: বিবিধ
৩১৩৩ বার পঠিত, ১৪১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর থাকুন
সুন্দর থাকুন
সুন্দর থাকুন প্রতিনিয়ত।
সব সময় সুন্দর থাকুন।
সুন্দর থাকুন।
অজস্র শুভকামনা জানবেন।
==========
তবে ব্যতিক্রম সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন, শুধুমাত্র হুমায়ন।
=================
কিছু লিখি, দেখা যাক কি হয়! এই মানষিকতা নিয়ে লিখলে ব্যর্থতা অনিবার্য। আমি লিখব, নিজের জন্য, মানুষের জন্য কিন্তু দ্বীনকে বিসর্জন দিয়ে নয়। ইনশাআল্লাহ সফলতা আসতে বাধ্য কিন্তু প্রয়োজন ধর্য্যের।
একচুয়েলি আমার নিজের একটা টার্গেট আছে লেখালেখি নিয়ে। আমি সে পথেই হাঁটবো ইনশাআল্লাহ্। সাহিত্যে নাস্তিক আর ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রাধান্য কমিয়ে আনতে আমাদের সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।
আর হুমায়ুন আহমেদ আসলে সব দিকে সখ্যতা বজায় রেখে ছিলেন। এমনটা ক জন পারে?
বইমেলায় গেয়ে আমার প্রিয় আপুটার একটা বই আমিও আমার প্রাইভেটের টাকা দিয়ে ভালবেসে খরিদ করিব ইনশাআল্লাহ।
দোয়া...
এক গুচ্ছ দুপুরে আলো এবং
ভালবাসা আপনার জন্য।
এগিয়ে চলুক ইক্লিপ্সের দোয়াতের কলম।
আমার যখন এস এস সি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আমি এক মাস টিউশনি করেছিলাম। ওরা আমাকে পাঁচশত টাকা দিয়েছিল। ওটা দিয়ে আমি আর না হয় বিশ জনের জন্য গিফট কিনেছিলাম। ওটা ছিল ভালোবাসার উপহার। আপনার এই ''ভালোবাসা খরিদের'' কথা পড়ে ঐ কাহিনী মনে পড়ল।
শুধু কবিতা কেন আপনার প্রবন্ধের হাত কিন্তু খুব ভাল।
এবার আসলে পরীক্ষা নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম। তাই আমি নিজে খুব একটা ইনভল্ভ হতে পারি নি। তবে কবিতার বই বের করার সুযোগও হাত ছাড়া করতে ইচ্ছে করে নি।
এই বই মেলার পরের বই মেলা নিয়ে প্লান আরো বিশাল। দোয়া রাখবেন।
জোনাকীর আলো নিভে আর জ্বলে শাল মহুয়ার বনে।
শুভকামনা জানবেন।
সুন্দর থাকুন।
সুন্দর থাকুন।
সতত শুভেচ্ছা।
খুব ভালো লাগলো ।
আপনি নৈশব্দ থেকে ''ঃ'' বাদ দিয়ে দিয়েছেন? আসলেই কিন্তু বইয়ের নামে ''ঃ'' নাই। এই ছবি টা একদম প্রথমে যখন প্রচ্ছদ আঁকা হয়েছিল তখনকার।
আপনার নামটা এমন হতে পারে
"ইক্লিপ্স টুম্পা বোন"
তাহলে এখনকার প্রচ্ছদের ছবি দেন???
না হলে কিভাবে চিনব??? প্রাকটিক্যালি??
প্রচ্ছদের ছবি এটা। শুধু নামের বানান থেকে ''ঃ'' উঠে গেছে।
তোমার নামে একটা স্লোগান আছে,
হারিকেনের চামরা তুলে নিব....
এটা প্রকাশ করতে আমার পঁচিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গল্প, উপন্যাস প্রকাশকরা ফ্রি ছাপেন। কিন্তু কবিতার বইয়ের জন্য লেখককেই ব্যায়ভার নিতে হয়।
সুন্দর থাকুন।
অনেক দিন পর আমার ব্লগে এলেন।
সুন্দর থাকুন।
দোয়া করবেন আমার জন্য।
ধন্যবাদ।
ডু দোয়া ফর মি।
তবে আমি কিনবো না, নিশ্চিত কারন আমি কবিতা বুঝিনা আর আপনার ভাষা এমনিই কঠিন
থাক! আপনার কিনতে হবে না।
সুন্দর থাকুন প্রতিনিয়ত।
দোয়া করবেন আমার বইয়ের সাফল্যের জন্য।
অনেক ধন্যবাদ
দেখি এড্রেস জানলে পাঠাইতাম।
দোয়া করবেন বইয়ের সাফল্যের জন্য।
আগামী মাসে দেশে আসছি।
চট্টগ্রামের কোথাও পাওয়া যায় কিনা জানাবেন।
আর চট্রগ্রামে তো বোধয় পাওয়া যায় না। তবে
http://www.rokomary.com থেকে অর্ডার করলে পৃথিবীর সব খান নাকি পাওয়া যাবে। এমনটাই তো বলল।
দোয়া আমার জন্য।
অন্য প্রান্তে। আল্লাহ যেন আপনার হাত কে
শক্তিশালী করেন।
কেনা হোক আর না হোক, দোয়া করবেন আমার জন্য।
অভিনন্দন এবং শুভকামনা রইলো।
দোয়া করবেন আমার জন্য।
দোয়া করবেন আমার জন্য।
সতত শুভকামনা।
উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি
দোয়া করবেন। কেমন।
কুবিতা না থাকলেই ভাল্লো।
আপনারা বড় মাপের মানুষ। আমার মত ক্ষুদ্রের কোন ভুল পেলে উদার দৃষ্টি দেখবেন সেই আশাই করি। ধন্যবাদ।
আপনার মত ব্লগারের কাছ থেকে এমন অনুপ্রেরণামুলক মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগল। আপনারা সত্যিই অনেক ভালো মানুষ।
সুন্দর থাকুন।
সুন্দর থাকুন সব সময়।
দোয়া করবেন আমার জন্য।
শুভসকাল
এ ব্লগে প্রথম মন্তব্যটি আপনাকে দিয়েই শুরু।
মন্তব্যের জবাবে ফুল দেয়ার ব্যবস্থা নেই। তাই আমি আপনাকে তিনটা পাতা দিলাম।
আমার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ হল, যারা কবিতা লিখেন, তাদের গল্প এবং প্রবন্ধ দুই ভাল হয় । আপনার কবিতার কথা ছেড়ে যদি এই পোস্টের কথাই বলি, তাহলে বলব, আপনার ভাষায় মান, এর গতিশীলতায় আমি মুগ্ধ । আমার নিজের লেখার মান খুব ভাল না-হওয়ায় এবং সময় সংকীর্ণ বলে নিজে খুব একটা লিখিনা, বেশির ভাগ সময় শুধু পড়ে যাই । যারা ভাল লিখে না, তাদের লেখাও খুব একটা পড়ি না ।
আপনার এই লেখাটি--যেখানে আমি মন্তব্য করছি, সেটি আমি আবারও পড়ব ।
কবিতা বা গল্প লেখার একটি অতিরিক্ত ফায়দা আছে । লেখা মনে আনন্দ দেয় । একজন মানুষ যতক্ষণ লিখে ততক্ষণ সে ভাবের সাগরে, আনন্দের সাগরে সাঁতার কাঁটতে থাকে । তাই লেখা আমার কাছে elating, mood elevating substance বলে মনে হয় ।
আপনার কাছে অনুরোধ, আপনি আমাদের ভুলে যান, কিছুই মনে করব না । কিন্তু আল্লাহ রাহমানুর রাহীমকে কখনও ভুলবেন না, লেখালেখি করতেও কখনও ভুলবেন না । আল্লাহ যাকে যে যোগ্যতা দেন, তার উচিত সে যোগ্যতাকে যত্নের সাথে চর্চা করা ।
আপনি এখনও অনুঢ়া । যিনি আপনার জীবনসঙ্গি হবেন, তার সাথে আগেই দফারফা করে নিবেন, তিনি যেন আপনাকে লেখায় আজীবন সহযোগিতা করেন ।
প্রতিভা বসুর লেখা 'জীবনের জলছবি' বইটি যেভাবে সমাদৃত হয়েছিল, তেমনি আপনার নৈঃশব্দের জলছবি নামের 'সন্তান'টি সবার কাছে সমাদৃত হবে এ আশা করছি ।
আর এই বই পেছনে আমার কলেজের কয়েকজন টিচারও অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করেছেন। সর্বোপরি অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করেছেন তারাচাদ ভাইয়ার মত সুন্দর মনের মানুষগুলো। দোয়া করবেন বইয়ের সাফল্যের জন্য।
সুন্দর থাকুন।
ভুমিকায় না হয় ভিশুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালুম, কিন্তু ভিশু ২টা বই দিয়ে কি করবে শুনি? একটা না হয় তার, আরেকটা কার জন্য হুম? আমার ধারণা ভিশুটা চুপি চুপি মিসেস ভিশু নিয়ে এসেছে। আমাদের বলেনি। : : :
শুভ সকাল
সারা দেশে এবং সারা বিশ্বে বইটি ছড়িয়ে পড়ুক।
আপনার বইটির জন্য শুভকামনা রইলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন