শুদ্ধতার আর্তি!
লিখেছেন লিখেছেন ইক্লিপ্স ১১ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:০৬:২৫ রাত
মাঝে মাঝে এই ঘৃণার দেয়ালটাকে বড় দুর্বোধ্য মনে হয়! কতটুকু ঘৃণার স্তুপে গড়া ,কতটুকু আহত বাঘিনীর আহাজারী,কতটুকুই বা ঘৃণার মোড়কে সীমাহীন ভালোবাসা! তবে এতটুকু বেশ ভালো বুঝি! ভালোবাসার উপর ঘৃণার প্রলেপণ পড়ে ভালোবাসা চিমসে গেছে! দম আটকিয়ে অস্ফুট আওয়াজে চাইছে পরিত্রাণ! কিন্তু কোথায় আছে তার মুক্তিসনদ? যেখানে ইনফিরিওরিটির শেষ সীমানাতে আহত হৃদয়ের বাস, দুরাকাশে আঁখি মেলে খুঁজে ফেরে বিধাতাকে! ''প্রভু তুমি তো দেখছো! কেউ জানে না জানুক, তুমি তো জানো! এত বড় অশুদ্ধতার কাছে শুদ্ধতা হেরে যেতে দিও না প্রভু!''
অতঃপর কষ্টরা নিস্তেজ হয়! কেউ ভালো না বাসুক প্রভু তো আমাদের ভালোবাসেন। প্রভু আমাদের এতটাই ভালোবাসেন তিনি আমাদের নিজেদের উপর পর্যন্ত জুলুম করা নিষেধ করেছেন! অথচ আমরা অহরহই ভেঙ্গে পড়ি! ভেবে নেই এখানেই বুঝি জীবনের পরিসমাপ্তি! প্রভুর রহমকে ভুলে যাই। কিন্তু আমাদের প্রভু অশুদ্ধতার মাঝে কোন গল্পের ইতি টানেন না। আর এটাকে করে দিয়েছেন নিয়তির অখণ্ডনীয় নীতি। তাই অশুদ্ধতা আছে যদি অন্তর থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় ধরে নিন এটা গল্পের শেষ নয়! এখনো আরো কিছু এপিসোড বাকি!
প্রকৃতিতে যখন বড় কোন অন্যায় হয় তখন প্রতিশোধের সমীকরণটাও প্রকৃতি সাজায়। প্রকৃতি কাউকে ক্ষমা করে না! তাই এখানে কাউকে ধোঁকা দিতে পেরে নিজেকে বড় কিছু ভাবার কিছু নেই। আপনি কাউকে ধোঁকা দিতে পেরেছেন তারমানে এই না যে সে বোকা! তার মানে এই যে সে আপনাকে এতখানি বিশ্বাস করতো যে এই কাজ আপনি করতে পারেন বলে সে ধারণা করেনি! আর এই সব ধোঁকার প্রতিশোধও প্রকৃতি নেয়! নিভৃতে নিশ্চুপে! কখনো লোক চক্ষুর সামনে, কখনো বা আড়ালে! তাই অন্যকে ঠকালে নিজের সর্বনিম্ন পরাজয়ের জন্যও তৈরী থাকুন। কেননা হৃদয়ের প্রতিটা রক্তবিন্দুর হিসেব প্রকৃতি রেখে দেবে! পাই পাই করে শুধে আসলে সব হিসেব সে পুষিয়ে নেবেই!
আমরা মানুষেরা মানুষকে ভালোবেসে ভুল করি! এখনো বহু মানুষ যে ভালোবাসতেই জানে না। তারা ভালোবাসার অভিনয় করে! এখন প্রশ্ন হল কে কতখানি এই অভিনয়ে দক্ষ? কতখানি দক্ষ হাতে মুনাফিকির খোলশ পরে থাকে! সেই খোলশ অহরহই খুলে যেতে দেখে বিস্ময়ে চেয়ে থাকি! মানুষ হবার দায় যে অনেক! মানুষের গর্ভে জন্ম নিয়েই মানুষ হওয়া যায় না!
মাঝে মাঝে ভাবি উপহাস, ঈর্ষা বিদ্বেষ, পরনিন্দা চর্চার মত মনোরোগগুলোর জন্য প্রভু এত কঠিন আজাব কেন ঠিক করে রেখেছেন? কেন মানব হত্যার সাজা আর সংকীর্ণ মনোবৃত্তির সাজা একই পাল্লায় মাপা হয়? কখনো কখনো বা তার চেয়েও বেশি! সদা কুৎসায় আহত মুখগুলো দেখে বুঝি, আর হিংসুকের ঈর্ষিত লাল চক্ষু দেখে বুঝি, হীনমন্যতা কত ব্যাথা ঢালে প্রাণে! কত খানি নিশ্চুপ করে দেয়! যে নীরব হয়ে শুধু নিয়তির দিকে চেয়ে থাকতে হয় আমাদের!
অবশেষে নিয়তিও আমাদের থামিয়ে দেয়! তবে সে নিজে থেমে থাকে না! সে অবিরাম নিশ্চুপে কাজ করে যায়! তাই কখনো কখনো জীবনের সব থেকে বড় পরাজয় সব থেকে বড় জয় হয়ে যায়! আর সব থেকে বড় জয় হয় সব থেকে বড় পরাজয়! এ হল শুদ্ধতার আর্তি।
বিষয়: সাহিত্য
২৭৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন