হিটলার এবং বাংলাদেশী মিডিয়া(রম্য)
লিখেছেন লিখেছেন ইক্লিপ্স ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৪৪:৪১ রাত
সকালবেলা বিমর্ষ মনে দন্ত মার্জন করিতেছিলাম আর ভাবিতেছিলাম ''এমন আজব কান্ড আমার সাথেই 'কেন' ঘটিল? উহার ফিরিয়া আসিয়া আমার সাথেই 'কেন' দেখা করিতে হইবে ? উহা কি জগতে আর মানুষ পাইল না? ''
এমন সময় বাহিরে একদল কাক কর্কশ স্বরে ডাকিয়া উঠিল ''কা কা কা'' (কেন কেন কেন)? উহারাও সারা জীবন একই প্রশ্নের পিছনে ঘুরিয়াছে 'কেন'? কোন মহৎ সুহৃদ ব্যক্তি উহাদের এই 'কেন' প্রশ্নের উত্তর দেয় নাই বিধায় সারাজীবন উহাদের কা কা কা করিতেই পার হইয়াগিয়াছে। যাহা হোক কাক কাহিনী বিশ্লেষণ আমার লেখার উদ্দেশ্য নহে। আমি অন্য কিছু বলিতে চাহিতেছি। এবার মূল কাহিনীতে বলিতেছি।
দিন দুয়েক আগের ঘটনা। আমি কলেজ হইতে আসিতেছি এমন সময় জনৈক ব্যক্তিকে দেখিয়া থমকাইয়াকে দাড়াইলাম। স্বয়ং নাৎসি নেতা হিটলার আমার সামনে দাঁড়ানো! আমি কি ঠিক দেখিতেছি। আমি তাহাকে দেখিয়া বলিয়া উঠিলাম ,'' আপনি কি সেই নাৎসি নেতা হিটলার।''
তিনি বলিলেন জ্বি আমিই সেই হিটলার!
আমি বলিলাম এত দিন পর কেমন করিয়া! আপনি কি বাচিয়া আছেন! শুনিয়া ছিলাম আপনি ভেনিস হইয়া গেছেন আপনাকে আর কেহ খুঁজিয়া পায় নাই। সত্যি করিয়া বলুন তো কাহিনী কি?
হিটলাম বলিলেন ,''মা জননী সে এক বিরাট ইতিহাস! মরু অঞ্চলে যে করিয়া টর্নেডোতে মাছ আকাশে উড়িয়া যায় আবার বৃষ্টির সাথে ঝড়িয়া পড়ে আর তোমরা ভাব অলৌকিক কিছু ঘটিয়াছে আমার সাথেও ঘটিয়া ছিল তেমন ঘটনা।''
''আংকেল বিস্তারিত বলুন'' আমি বলিলাম।
তিনি এক নিঃশ্বাসে বলিয়া গেলেন ,''সেই দিন প্রতিপক্ষ আমাকে লক্ষ্য করিয়া গুলি ছুড়িয়াছিল কিন্তু লক্ষ্য ভেদ হয় নাই। তবে প্রচন্ড প্রকট ধুলির ঝড় তুলিয়াছিল উহাতে আমি উড়িয়া আসমানের তৃতীয় স্তরে উঠিয়া পড়ি। ঐ জায়গায় বায়ু চলাচল স্থির তাই আর নিচে নামিয়া আসিতে হয় নাই।''
আমি সন্দেহ চোখে বলিলাম ,''তবে এতদিন পর যে আসিলেন?''
তিনি বলিলেন,'' পৃথিবীতে বহু দিন হইলেও ঐখানে মাত্র সাত মাস হইয়াছে।''
আমি বলিলাম ,''আংকেল ঐখানে কি খাইয়াছেন এবং থাকিয়াছেনও কেমন?''
তিনি বলিলেন ,'' ঐখানে ভালোই ছিলাম। মরু ঝড়ে যাহা যাহা আসমানে উড়িয়া গেছে তাহা ফ্রাই করিয়া খাইয়াছি। ঐখানের আবহাওয়া পৃথিবীর চেয়েও ভালো থাকিতে কোন অসুবিধা হয় নাই।''
''তবে ফিরিয়া আসিয়াছেন কেন? ওখানে থাকিলেই তো পারিতেন।'' আমি বলিলাম।
হিটলার আংকেল ভ্রু কুঁচকাইয়া বলিলেন ,'' কি আর করিব বল! কিছু দিন তোমাদের দেশের এক নেতা গুম হইয়া সেখানে উঠিয়াছে। উঠিয়াই লাগাইয়া দিল মীর জাফরের প্রেতাত্মার সহিত ঝগড়া। আমি গেলাম মীমাংসা করিতে উল্টো আমাকে সাত আসমান হইতে ধাক্কা দিয়া নিচে ফালাইয়া দিয়াছে।''
আমি বলিলাম ,''ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙ্গে
বাঙালি আসমানে উঠিলেও ক্ষমতা লইয়া মারামারি করে।''
হিটলার আংকেল বলিয়া চলিলেন ,''ইহা সেলুকাসের এক আজব দেশ। এইখানে সব কিছু হইতে পারে!''
আমি জিঙ্গাসা করিলাম ,''আংকেল আপনার সাথে আবার কি ঘটিয়াছে?''
তিনি বলিলেন ,'' আর বলিও না মা জননী! আসমান থেকিয়া টপকাইয়া বড়ই ক্ষুধার্ত ছিলাম তাই এক মুরগীকে বলিয়াছি একটা ডিম দে। সে বলিল ডিমের অনেক দাম ডিম দেয়া যাইবে না।
আমি পকেট হইতে আমার আদিকালের পিস্তালটি নাচাইয়া বলিলাম ডিম দে নয়ত জানে মারিয়া ফেলিব। সে বলিল 'জানিস আমি কে? আমি ঈডেনের মেয়েদের পালা মুরগীর হেড। এবার আমার মেজাজ চরম বিগড়াইয়া গেল। আমি উহাকে ধরিয়া বাজারে বিক্রয় করিয়া দিলাম।''
আমি হাসিয়া বলিলাম ,''তারপর?''
হিটলার কিছুটা গম্ভীর হয়ে বলিলেন,'' তুমি হাসিতেছ মা জননী! তুমি জান তারপর আমার সাথে কি হইয়াছে!''
আমি বলিলাম ''কি হইয়াছে?''
হিটলার বলিলেন ,'' ঐ মুরগীর মালিক ছিল এক বাংলাদেশের এক নারীবাদী। সে আমার নামে আদালতে কেস ঠুকিয়া দেয়।''
এবার আমি বিস্মিত হইয়া বলিলাম তাই! তারপর?
হিটলার বলিয়া গেলেন ,'' তারপর আমাকে আদালতে হাজির করা হইল। মুরগীর লিখিত বয়ান তাহাকে হিটলার একাত্তরে রেপ করিয়াছে। এখন আবার ফিরিয়া আসিয়াছে তাহাকে খুন করিতে।''
''আমাদের দেশে আসলে বিচারের নামে প্রহসন চলে। কিন্তু একটা মুরগীর জন্য এত কিছু! এ কেমন কথা!'' আমি বলিলাম।
হিটলার বলিলেন ,''উহা যে মুরগী তাহাই তো কেহ জানিতে পারিল না। কয়েকটা পত্রিকায় রিপোর্ট হইল '৭১ এর দালাল হিটলার জেলেঃ সাক্ষী মুরগিতা কালালা ভানু।' নারী বাদিরা বলিল নির্যাতিতার চেহারা কিছুতেই পত্রিকায় প্রকাশ হইতে পারিবে না। এইভাবে কেহ জানিতেই পারিল না উহা যে মুরগী ছিল। আম্রিকার মোমেন্টস মেগাজিন উহাকে সেরা নারী ঘোষণা দিল।
''
আমি বলিলাম ,''আংকেল আমাদের দেশের মিডিয়া এখন অনেকটা ইহুদি মিডিয়ার অনুসারী। এখন এই দেশে আক্রমন করিতে হইলে আগে মিডিয়াকে বাগাইয়া লইয়া তাহা দিয়া আক্রমণ করিতে হয়। কি আর করিবেন! ইহাই আমাদের মাতৃভুমি। ইহাকে আবাসযোগ্য করিতেই এত সংগ্রাম !''
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন