আল্লাহতায়ালা ও তার রাসূলের ইজ্জতকে মহান করতে রাস্তায় নামা কি পশুত্ব?

লিখেছেন লিখেছেন জুনাইদ হোসেন সবুজ ১২ মে, ২০১৩, ১০:৫৪:১০ সকাল

আজ থেকে প্রায় শতবছর আগে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ লিখেছিলেন,“বলকান যুদ্ধে কোন তুর্কি সৈনিকের পায়ে যদি কাঁটা বিদ্ধ হয় আর সে কাঁটার ব্যাথা যদি তুমি হৃদয়ে অনুভব না কর তবে খোদার কসম তুমি মুসলমান নও”,মুসলমান হওয়ার অর্থই হলো আরেক মুসলমানের ব্যাথার সাথে একাত্ম হওয়া এবং সে ব্যাথা হৃদয়ে অনুভব করা। কে কত বড় ঈমানদার সেটি তার দাড়ি-টুটি বা লম্বা জুব্বা দেখে বুঝা যায় না। সেটি বুঝা যায় তার মুসলিম ভাইয়ের ব্যাথায় ব্যাথীত হওয়া দেখে। মাওলানা আবুল কালাম আযাদ যখন এ কথাটি লিখেছিলেন তখন ইসলামের শত্রুরা খেলাফত ধ্বংসের লক্ষ্যে মুসলমানদের ভূগোলে হাত দিয়েছিল। ইউরোপের বলকান এলাকায় কাফেরদের পক্ষ থেকে পরিচালিত হচ্ছিল সে বিচ্ছিন্নতার যুদ্ধ। মুসলিম ভূমির ভূগোল বাঁচানোর লড়াই ইসলামে জিহাদ। সে জিহাদ লড়ছিল তুর্কি সৈনিকেরা। ভারতের মুসলমানগণ তখন উসমানিয়া খেলাফতের পক্ষ নিয়েছিল। কারণ, তাদের সাথে একাত্ম হওয়াটাই ছিল ঈমানদারি। যেখানে ঈমান আছে সেখানে সে সহমর্মিতা থাকবেই।

একমাত্র কাফেরগণই মুসলমানের ব্যাথা বেদনায় আনন্দ পেতে পারে। মুসলমানের ব্যাথা-বেদনা তাদের কাছে উৎসবের কারণ হয়। ঢাকার মতিঝিলে যে হত্যাকান্ড হয়ে গেল তাতে কি কোন মুসলমান ব্যাথীত না হয়ে পারে? অথচ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আজ হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নিহত ও আহত হওয়ায় এবং ঢাকা থেকে তাদের সরাতে পারায় এখন আনন্দে ডুগডুগি বাজাচ্ছে। সেটি বোঝা যায় তাদের পত্র-পত্রিকা পড়লে। অনেক আওয়ামী লীগ কর্মী তাদের ব্লগে লিখেছে,“হেফাজতের কর্মীদের হত্যা করে সরকার ভালই করেছে। তারা পশু। হত্যাই তাদের পাওনা।” আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঈমানহীনতা এবং সে সাথে বিবেকহীনতা যে কতটা প্রকট -এহলো তার নমুনা। আল্লাহতায়ালা ও তার রাসূলের ইজ্জতকে মহান করতে রাস্তায় নামা কি পশুত্ব? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চেতনা যে কতটা খারাপ এ হলো তার নমুনা। সিরাজ সিকদারকে হত্যা করার পর মুজিব যেমন “কোথায় আজ সিরাজ সিকদার?” বলে উল্লাস করেছিল তেমনি মতিঝিলের শত শত মুসল্লি হত্যার পর উল্লাস শুরু হয়েছে আওয়াম লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি বড় নাশকতা এই নয় যে,তারা অগণিত মানুষ হত্যা করেছে,বা দেশকে দূর্নীতিতে ডুবিয়েছে বা বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান ভেঙ্গে ভারতের মুখ উজ্বল করেছে। বরং আওয়ামী রাজনীতির সবচেয়ে বড় নাশকতাটি সংঘটিত হয়েছে জনগণের বিবেক ও চেতনার রাজ্যে। তারা মানুষকে প্রচন্ড ঈমানহীন এবং দুর্বৃত্তও করেছে। তাদের কর্মীগণ তাই উল্লাস ভরে দেশের সম্মানিত আলেম-উলামাদের হত্যা করতে পারে। তাদের ফাঁসীর হুকুমও শুনাতে পারে। হত্যার পর লাশের পর দাঁড়িয়ে উল্লাসও করতে পারে। আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দাও ওহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের সেনাপতি ও নবীজী(সাঃ)র চাচা হামজার কলিজা চিবিয়ে এরূপ উল্লাস করেছিল। মুসলমানদের হত্যাকরা যেমন কবিরা গুনাহ,তেমনি সে হত্যায় আনন্দিত হওয়াটাও কবিরা গুনাহ। অথচ আওয়ামী লীগ আজ দেশে সে কবিরাগুনাহর রাজনীতি শুরু করেছে। সেটি শুধু আজ থেকে নয়, একাত্তরের পূর্ব থেকেই। সে গুনাহর রাজনীতিতে তাদের বন্ধু হতে তাই ছুটে আসে ভারতের কাফেরগণই শুধু নয়, বরং বিশ্বের তাবত ইসলামবিরোধীগণও। বাংলাদেশেও ইসলামের সকল শত্রুপক্ষ তাদের নেতৃত্বে একতাবদ্ধ হয়েছে।

বিষয়: বিবিধ

১৭৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File