স্বাধীন জাতির নৈতিক পরাধীনতা কাম্য নয়।
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নতরী ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৭:৫৬:৩৩ সন্ধ্যা
ব্লগ লেখা ছেড়ে দিয়েছিলাম এক প্রকার বিরক্ত হয়ে। সত্য বলে কমেন্ট করলে নোটিশ মারে, পোষ্টে সরকারের বিভিন্ন নেতা কর্তাদের বা তাদের দেশ বিরোধী কর্মকান্ডের সমালোচনা করলে মন্তব্য করার ক্ষমতা কেড়ে নেয়। প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দিয়ে নিজেদের মনে ঝাল মিটায়। এসব খবরদারীর কারনে ব্লগগুলো নিজেদের নিরপেক্ষতা হাড়িয়ে ফেলে। এরা বার বার ভুলে যায় যে, ব্লগে হাজারো লেখা পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু সত্যিকারের ব্লগার পাওয়া খুবই কঠিন। একটি প্রতিষ্টিত ব্লগে জাতির পিতা হিসেবে শেখ মুজিবকে নিয়ে মন্তব্য করাতে আমাকে ব্যান করা হয়েছে দীর্ঘ্য দিনের জন্য। ফিডব্যাকে যোগাযোগ করা হলে বলা হলো ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে বার্তা পাঠাতে হবে। আমি ফিরতি ম্যাসেজে জানতে চাইলাম যে, আমার ভুলটি কি ? তারা জবাব দিয়ে বলল, শেখ মুজিব সম্পর্কে কোন নেতিবাচক কথা বলা যাবে না। আমি বললাম তাহলে ব্লগে আর কাদের বিরুদ্ধে বলা যাবে না তার একটি তালিকা দিয়ে দিলে ভবিষ্যতে এই বিরম্বনায় হয়তো পড়তে হবে না। তারা কোন জবাব দেয়নি। আমি ফিরতি ম্যাসেজে বললাম, আপনার মতাদর্শ লালন করলে আপনি আমাকে ভালো বাসবেন, অন্যথায় ছুড়ে ফেলে দিবেন, অন্য দিকে সকল মতের প্রতি সম্মান দেখানোর সবক শিখাবেন, এটা তো এক প্রকার মোনাফিকি। তারও কোন জবাব দেয়নি। আমি স্বিদ্ধান্ত নিলাম যে, ব্লগিং আমার পেশা নয়, আমার মতের বিপরিত বিশ্বাস কে কোন সাময়িক স্বার্থ্যের জন্য জলাজ্ঞলী দেব, তা হবে না। আমি আমার স্বিদ্ধান্তে আজো অটল আছি। তারাও আমাকে আগের মতোই ব্যান করে দিয়েছে। তাদের মতের প্রতি আমার কোন অশ্রদ্ধা ছিল না, আমি কেবল এটুকো দাবি করেছিলাম যে, আমাকে যেন নিজের কথা স্বাধীন ভাবে বলতে দেওয়া হয়। সেটা তারা করতে পারেনি।
ঘটনাটি উল্লেখ করলাম এই কারনে যে, আমাদের দেশের প্রতিটি সেক্টরে একটি সর্বনাশা ধারা চালূ হয়েছে। নিজের মতের লোকদের কে তোষামদ করে সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দাও। পরমতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে তাদের কে দমিত করার চিন্তা ফিকির শুরু করে দাও। এই ধারা থেকে বেড়িয়ে না আসতে পারলে কোন সেক্টরেই উন্নতি আসতে পারে না। দেশের উন্নতি তো আরো পরের কথা।
আমরা চাই প্রত্যেকটি নাগরিকের মতামতকে গুরুত্ব্য না দেওয়া হোক, অন্তত্য দমন করার চিন্তা যেন না করা হয়। যে কোন নাগরিকের মস্তিক থেকে দেশের জন্য কল্যাণকর যে কোন ভাবনা যে কোন মুহুর্ত্যে বেড়িয়ে আসতে পারে। তাকে সঠিক ভাবে পর্যালোচনার অধিনে নেওয়া এবং সেই মোতাবেক ব্যাবস্থা গ্রহণ উত্তম ব্যাবস্তাপনার কথাই স্মরন করিয়ে দেয়। সরাসরি জনগনের সাথে সম্পর্কিত না হলে কোন দেশের সরকার কোন অবস্থায়ই ভালো কিছু করতে পারে না। দেশের জনগনের আশা আকাংখাকে পদদলিত করে, নিজেদের ক্ষুদ্রস্বার্থ্যকে প্রদান্য দেওয়া এক মস্তবড় রোগ। এই রোগে যারাই আক্রান্ত হয়েছে তারা সবাই বিপদে পড়েছে। আমাদের দেশের প্রতিটি সরকার কোন না কোন ভাবে কেন জানি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। আমার মনে হয় দেশে এমন কোন শক্তির উপস্থিতি রয়েছে যারা সরকারের মধ্যে এই ভাইরাসকে খুব সহজে ছড়িয়ে দেয়। গনবিচ্ছিন্ন হওয়া আর এর জের ধরে দেশের বারোটা বাজানোর চিরচারিত কৌশলের দিকে তিব্র বেগে ছুটে চলে আমাদের সরকার গুলো। আমি জানিনা আমার মন্তব্য ঠিক কিনা। তবে আমার মনে হচ্ছে সমাজের প্রতিটি অংঙ্গে জনগনের সরাসরি সম্পৃক্ততা বাড়াতে না পারলে, আমার সোনার বাংলা কেবল কাগজে কলমেই থাকবে। বাস্তবে হবে তলা বিহীন ঝুড়ি।
উদাহারন হিসেবে আমরা দেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর দিকে তাকাতে পারি। দেশের কোথাও কোথাও আইন শৃংখলা বাহিনীকে এড়িয়ে গিয়ে জনগন লাঠি শোটা হাতে নিয়ে রাতে পালাক্রমে পাহারা দেয়। দেশের আইন শৃংখলা রক্ষা কারী বাহিনীর প্রতি জনগনের এই অনাস্থার চিত্র হয়তো অনেক জায়গায় খুজে পাওয়া যাবে। দেশের সরকার যখন আইন শৃংখলা বাহিনীকে কেবল মাত্র বিরোধী মত দলনে ব্যবহার করতে শুরু করে, তখন সেই বাহিনীর সাথে জনগনের বহুমাত্রিক দরত্ব্য তৈরি হয়ে যায়।
অপর দিকে সন্ত্রাসীরা এই সুযোগকে কাজে লাগায় দারুন ভাবে। তারা বেপরোয়া হয়ে যায়। দেশের সাধারন জনগনের জান মাল হয়ে পড়ে নিরাপত্তাহীন। তারা ঘোষনা দিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়। ডাকাতরা আগে বাগে ঘোষনা দিয়ে দেয় যে, আইন শৃংখলা বাহিনীও তাদের সাথে থাকবে। আইন শৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে সাধারন মানুষ কে গ্রেফতার করে নির্যাতন করে হত্যার পরে নদীতে ফেলে দেওয়া একটি রসমে পরিনত হয়েছে।
সেদিন আমার এক বন্ধু বলল যে, প্রতি পক্ষকে ঘায়েল করতে ধনীক শ্রেণীর লোকদের ভরসা ভাড়াটে খুনির চাইতে আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি বেশি। কারণ হচ্ছে আইন শৃংখলা বাহিনীর অবৈধ কর্ম কান্ডকে সাংবিধানীক ভাবে বৈধতা দিয়ে দেয় যে কোন গন বিচ্ছিন্ন সরকার। কারণ জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে এই অস্ত্রধারী বাহিনী হয়ে পড়ে তাদের একমাত্র আশা ভরশা। এভাবেই চলে আসছে আমাদের দেশ। এই সর্বনাশা খেলা থেকে বাচঁতে হলে চাই জনগনের সঠিক উপলদ্ধি। নিজেদের দায়িত্ব্যশীল নির্বাচনে যারা জাগতিক বিষয়ের দিকে তাকায় তাদের পরিণতী এমনটি হবে সেটাই স্বাভাবিক। সৎ ও যোগ্য শব্দটি এখন আমাদের কাছে বিভিষিকা মনে হয়। অনেকের কাছে এখন এই শ্রেণীর প্রজাতির অস্তিত্ব বিলুপ্ত প্রায়।
আল্লাহ জানেন কবে আমাদের জনগনের হুশ ফিরে আসবে। এক বোতল ঠান্ডা পানিয় আর এক কাপ চায়ের বিনিময়ে ভোটাধিকার বিক্রির নেশা কবে ছাড়বেন আমাদের আপামর জনগন। সেই দিনের প্রতিক্ষায় বসে থাকা ছাড়া আমরা আর কি করতে পারি। সত্য উচ্চারন এখন অনেক সমষ্যার বিষয়।
বিষয়: রাজনীতি
১০৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন