পুলিশের মামলা বানিজ্য বনাম একাত্তরের আওয়ামী বানিজ্য।

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নতরী ২০ মার্চ, ২০১৩, ০৯:১৯:২১ রাত



গত দুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন গনমাধ্যমে পুলিশের মামলা বানিজ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করা হচ্ছে। এসব প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয়েছে যে, দেশের প্রতিটি জায়গায় ক্ষমতাশীন ব্যক্তিবর্গরা তাদের ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক এবং পারিবারিক শত্রুদের কে দমন করার জন্য রাজনৈতিক মামলা গুলোর সাহায্য নিচ্ছেন। পুলিশের সহায়তায় তারা এসকল অনৈতিক কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এর কারণ হচ্ছে, পুলিশ এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরকারের উর্দ্ধতন পর্যায় থেকে নিশ্চিত করা হযেছে যে, দেশের চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলন দমন করতে প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা মাঠে থাকবে এবং যে কোন প্রয়োজনে প্রশাসনকে সহায়তা দিতে মাঠে থাকবে ক্ষমাতশীনরা।

এতদিন এ সকল বক্তৃতা বিবৃতি কেবল আওয়ামী নেতাদের বিকৃত চিন্তা চেতনার বহিঃপ্রকাশ এবং বিকৃত মানসিকতার রাজনৈতিক বক্তৃতা বলে এড়িয়ে যাওয়া হলেও এখন আর সে রকম ভাবা হচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের কে অনৈতিক ফায়দা দেয়ার কৌশল হিসেবেই প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্রদের কে মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। এসব বিষয়ে পত্র পত্রিকায় ইদানিং বিস্তর আলোচনা হয়েছে বিধায় আমরা সেদিকে যাবো না। পুলিশের মামলা বানিজ্যের সাথে আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্রদের কে সম্প্রক্ত করতে সরকারের উর্দ্ধতন মহল তাদের দলীয় নেতৃবৃন্দের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে যে, পাড়া মহল্লায় জামায়াত শিবিরের কর্মীদের তালিকা কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য এবং যেখানে জামায়াত শিবিরের দেখা পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাদের কে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে দেয়ার জন্য।

আমার এক বন্ধু আমাকে প্রশ্ন করলো , জামায়াত শিবিরের কর্মীদের তালিকা নিয়ে আওয়ামী নেতারা কি করতে পারে, এসব তালিকা নিয়ে তারা কিভাবে জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। দেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর কাজ কি তাহলে। আমি তাকে বলেছিলাম যে, আসলে তালিকা কেন্দের জন্য করা হবে না, বরং সেটা করা হবে মামলা বানিজ্যের অনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য এবং সাধারন মানুষকে বিপদে ফেলে কর্মীদের কে কিছু অর্থনৈতিক সুবিধা দেওয়ার জন্য। সংবাদ পত্রগুলো আমাদের কে জানিয়েছে যে, ইতিমধ্যে প্রতিটি জেলায় আওয়ামী লীগের যে সিন্ডিকেটগুলো রাজনৈতিক এবং সামজিক প্রভাব খাটিয়ে টেন্ডারবাজি, মামলাবাজি, জমি দখল এবং দেশের নদী মাতৃক সম্পদ লুটপাটে ব্যাস্ত ছিল, আজকে তারাই মামলা বানিজ্যের রমরমা দোকান খুলে বসেছেন থানা গুলোতে। থানা গুলোকে এখন মানুষ মারার কসাই খানায় রূপান্তরিত করে ফেলা হয়েছে। সাধারন মানুষকে অহরহ মামলায় ফাসানেরা হুমকি দিয়ে আওয়ামী নেতারা অনৈতিক ফায়দা নিচ্ছেন এবং তাদের এই কর্মকান্ডে কুশিলবের ভূমিকা নিয়েছে পুলিশ বাহিনী নামের নব্য বাকশালী রক্ষিবাহিনী।

অন্যদিকে পুলিশ প্রশাসনের বর্তমান কর্মকর্তা বৃন্দ তাদের অঞ্চল ভিত্তিক কোঠার মর্যদা রক্ষায় দেশের সাধারন মানুষকে হয়রানী এবং নিঃস্ব করার লাইসেন্স দিয়ে দিলেন এই বলে যে, জামায়াত শিবিরের লোকজনকে চিহ্নিত করতে পুলিশকে সহায়তা করুন এবং তাদের কে আমাদের হাতে তুলে দিন। তাদের এই আহ্বান যে, সাধারন জনগনের জন্য ছিলনা বরং আওয়ামী নেতাকর্মীদের উদ্ধেশ্যে ছিল তা বুঝতে এক মুহুর্ত্যও দেরি করেনি আওয়ামী বন্ধুরা। ফলশ্রুতিতে দেখা গেল যে, একান্ত ব্যক্তিগত শত্রুতার বসে একজন নিরীহ কোন ব্যক্তিকেও আওয়ামী লীগের নেতারা জামায়াত শিবির বা বিরোধী নেতা হিসেবে তালিকা দিয়ে থানার সহযোগীতায় তাকে হয়রান করছেন। অবশেষে নিজেদের জীবন এবং সম্মান রক্ষার্থে এ সকল নিরীহ লোকগুলো কে বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে মামলার ঝামেলা থেকে আতœরক্ষা করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি এখন আর কোন গোপন বিষয় নয়, বরং খুলখুল্লাম ব্যাপার হয়ে গেছে।

পুলিশের অত্যাচার সহ্য করার ক্ষমতা আল্লাহ পাক যাকে দিয়েছেন, তার আখেরাত যে অনেকটা কণ্টকমুক্ত তা আমি হলফ করে বলতে পারি। এমন কোন পদ্ধতি নেই যা পুলিশ সাধারন জনগনের ওপর প্রয়োগ করেনি। অত্যাচারের স্টিম রূলারের নমুনা আমরা দেখতে পেয়েছি কিছু দিন আগেও। একজন নিরীহ ব্যাবসায়ীকে কেবল মাত্র ব্যাক্তিগত শত্রুতার জের ধরে নির্মম নির্যাতন করে তার জীবনটাই নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। গোপন অংঙ্গে ইলেক্ট্রিক সর্ট দেওয়ার কারনে সেই বেচারা আর কোন সন্তানের মুখ দেখবেন না বলে ডাক্তারা নিশ্চিত করেছেন। একজন মানুষের জন্য এর চাইতে নির্মম ঘটনা আর কি হতে পারে।

অন্যদিকে পুলিশের এই সব অত্যাচারকে এতদিন জামায়াত শিবিরের তান্ডব্যের বিরুদ্দে প্রতিরোধ, নিজস্ব দায়িত্ব্যপালন ইত্যাদি চমৎকার শিরোনামের আখ্যায়িত করলেও, বর্তমান সুশিল নামের কুলাংগার মিডিয়াগুলোও সম্ভবত বুঝতে পেরেছে যে, বর্তমান সরকার যদি একজন মাহমুদুর রহমানকে উলংগ করে নির্যাতন করার সাহস দেখাতে পারে, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সাথে সাথে হয়তো অসংখ্য মাহমুদুর রহমানের নাম এই তালিকায় যোগ হতে পারে। আমাদের মিডিয়াগুলো প্রথমে হুজুগের ওপর ভর করে প্রচারনা চালায়, অতঃপর হুজুগকে বাস্তব রূপ দেয়ার জন্য নিজেদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে কিন্ত যখন তাদের ঘুম ভাংগে ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে যায়। পুলিশের বাড়াবাড়ির শেষ কোথায় তা আমরা কেউ বলতে পারি না। এই বিষয়ে হলফ করে কিছু বলাও যায় না। এতদিন আমরা শুনতাম ডাক্তারদের ছেলে মেয়েরা বিকালাংঙ্গ বা প্রতিবন্ধি হয়ে জন্ম নেয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা লোক মুখে শুনতে পাচ্ছি যে, বাংলাদেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর লোকেরাও নাকি ডাক্তারদের পাপের ভাগিদার হচ্ছেন। নচিকেতার সেই কাল জয়ী গানের কসাইখানা এখন আর হাসপাতাল নয়, সেটা বর্তমানে পুলিশী থানা হাজত বলতে হবে। কসাই ডাক্তারের জায়গায় পুলিশ শব্দটি বসিয়ে দিলে অন্যকোন রিদমের পরিবর্তন আনার প্রয়োজন পড়বে না এবং এই গানটি কালের ঠিকানায় স্থান করে নিতে পারবে আমাদের পুলিশ বাহিনী কির্তীকাথার কারনে।

এতক্ষনে পুলিশের মামলা বানিজ্যের কিছু নমুনা নিযে আলোচনার কালে আমি আমার মুল আলোচনাই ভুলে গিয়েছিলাম। যে বিষয়টি মাথায় নিয়ে আমি লিখতে বসেছি সেটা ভুলে যাওয়ার কারণ হলো প্রাসঙ্গিক এত কথা রয়েছে যে, তা না বলে পাড়া যায় না। পুলিশের কর্মকান্ডে আমাদের আওয়ামী মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সাহেবের অন্তরে কোন মর্মজ্বালা না থাকলেও, দেশপ্রেমীক জনগন এই বাহিনীটির হতশ্রী অবস্থার জন্য অত্যান্ত পিড়ীত। তারা জানতে চায় যে, দেশের জনগনের টাকায় পোষ্য এই বাহিনীটির আওয়ামী পশুত্ব্যের সাথে তাল মিলিয়ে এত নিচে নেমে যাওয়ার কারণ কি।

এবার আসা যাক আসল আলোচনায়।

পুলিশের এই মামলা বানিজ্যের সাথে আওয়ামী নেতা কর্মীদের মামলা বানিজ্যে আর আপশরফায় দালালের ভূমিকায় দেখে সেদিন আমাদের এক কাকা, যিনি প্রায় সত্তর বছর বয়সি হবেন, তিনি আক্ষেপ করে বললেন যে, একাত্তরেও আওয়ামী লীগের কিছু নেতা কর্মী এবং কিছু দুস্কৃতি কারীরা ব্যক্তিগত শত্রুতাকে চরমে নিয়ে দুর্যোগ কালিন সময়টিকে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করেছেন। কেউ সাধারন মানুষকে রাজাকার বানিয়ে মুক্তি বাহীনির হাতে তুলে দিয়েছেন, কেউ মুক্তিবাহিনী বানিয়ে হানাদারদের হাতে তুলে দিয়েছেন। সারা দেশের এই চরম ভিতীকর অবস্থার মধ্যেই কিছু লোক নিজেদের আখের গোছাতে পেরেছেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরেই তারা ধনে ধান্যে বিশাল বৃক্ষের রূপ ধারন করে মুক্তিযোদ্ধা বনে গেছেন। অন্যদিকে গোটা কয়েক কর্মী বাহিনী নিয়ে আদর্শিক কারনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নেওয়ার অপরাধে সকল পাপের বোঝা এখন জামায়াতের গাড়ে এসে পড়েছে। জামায়াতের সেদিনের লোকবল এবং সত্তরের নির্বাচনের প্রাপ্ত ভোট হিসেবে আনলে যে সত্যটি প্রকাশিত হয়, সেই ইতিহাস অতি কারুকার্যের সাথে মুছে দেয়া হয়েছে ।

ইতিহাসের অতি চমৎকার সত্য কথন হচ্ছে এই যে, ইতিহাসের পাতায় কলম রাখতে পারে কেবল বিজয়ীরাই, পরাজিতরা তো কেবল ইতিহাস হয়ে যায়। আমাদের দেশের ইতিহাসের পাতায় সেই সত্য যেন বার বার আমাদের বিবেক বোধকে নাড়া দিয়ে যায়। একটি দেশের স্বাধীনতা নিয়ে এত বহুমুখী ইতিহাস নির্মান হয়েছে এমন রেকর্ড মনে হয় আর কোন দেশে নেই। আমরাই পেড়েছি নিজেদের প্রয়োজনে ইতিহাসের পাতাকে বার বার সংশোধন করতে। এত বিকৃত ইতিহাসকে পুজি করে যারা নিজেদের জীবন আদর্শ বা চেতনার লালন করে জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে খরড় হস্ত হয়েছেন তাদের বিবেকের কাছে আমাদের একটি প্রশ্ন যে, সামান্য বিরোধী আন্দোলন দমনের নামে যদি ডিজিটাল আওয়ামী চরিত্র এমন হয় তাহলে একাত্তরের প্রতিটি দিনে তারা কতটা নির্মম ছিল ব্যক্তিগত হিংসা আর বিদ্ধেষের বলে পারস্পরিক শত্রুতাকে ব্যবহার করতে তা কি আপনাদের অন্তরে নাড়া দেয় না। একাত্তর পরবর্তি গনতন্ত্র হত্যাকারী রক্ষিবাহিনীর কথা কি এরা ভুলে গেছে। এরা ভুলে গেছে বলেই দেশের জনগন ভুলে যাবে এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই।

ইতিহাসের প্রকৃত সত্য কথাকে জনগনের দৃষ্টি থেকে দুরে সরিয়ে রাখার জন্য যে সকল মিডিয়ার জন্ম হয়েছে তাদের কাছ থেকে যখন স্বাধীনতার ইতিহাস শুনি তখন দারুন আক্ষেপ করি। আমাদের চিন্তা আর চেতনাকে জড়তায় ফেলার জন্য মিডিয়াগুলো এত কষ্ট করার পরেও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিটি স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী চেতনাকে ধারন করার জন্য যে শক্তির উন্মেষ ঘটেছে তাকে দমিয়ে রাখার জন্য আলাদা একটি পেজ এবং ফান্ড খুলে রেখেছে এদেশের চুশিল মিডিয়া নামের টয়লেট পেপারগুলো। সেদিন এক নিবন্ধে আমাদের শাহবাগী ছাগলদের জন্য আক্ষেপ করেই বলে ছিলাম যে, নিজের ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কর্মীর হাতে ধ্বর্ষনের শিকার এক শত নারীর আর্তনাদ যাদের কর্নকুহরে পৌছে না, রেডিমেট একটি আবাসিক হোস্টেলের জন্য গ্রামের সাধারন ছাত্রীদের কে যে দলের নেতারা মন্ত্রীদের বাড়িতে রাত্রী যাপনের জন্যে যেতে বাধ্য করে, সেই দলের নেতৃত্ব্যকে নিয়ে একাত্তরের অখ্যাত ধ্বর্ষকদের বিচার প্রার্থনা করে যারা ডুগডুগি বাজায়, সেই সকল বিবেক বোধলোপ পাওয়া জড় পদার্থের কাছে আমাদের জাতির আর কি প্রাপ্তি থাকতে পারে। একটি জাতির কিছু কুলাংগারকে যখন জাতীয় বীর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, তখন ধরেই নিতে হয় যে, এ জাতির কপালে দুর্ভোগ আছে। নৈতিকতার শিক্ষাকে যারা এত ভয় পায় তাদের দ্বারা জামায়াত শিবিরের সমালোচনা না হওয়াটাই বরং বেমানান। জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা কেবল মাত্র তারাই চালাতে পারে যারা নৈতিকতাকে তালাক দিয়েছে অনেক আগে। ধর্মকে যাদের কাছে আফিমের মতো মনে হয়। আল্লাহ খোদার নাম শুনলে যাদের শরীরে বহুমাত্রিক এলার্জির সৃষ্টি হয়। অনৈতিক শিক্ষা আর জীবন যাপনে অভ্যস্ত ব্যক্তিবর্গের কাছে শিবির একটি আতংকের নাম।

বিদায় নেয়ার আগে কয়দিন আগের একটি ঘটনা দিয়ে শেষ করতে চাই। আমার জেলার শির্ষপর্যায়ের এক আওয়ামী নেতার বাসায় গিয়েছিলাম কোন এক প্রয়োজনে। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি আমাকে খুব ভালো বাসেন। মাঝে মাঝে তিনি আক্ষেপ করে বলেন তোমরা কেন যে এসকল জানোয়ারের দলকে সাপোর্ট করে প্রত্রিকায় লিখতে যাও আমার বুঝে আসেনা। তাছাড়া তোমার মতো ভালো ছেলেদের মাথা তারা কিভাবে নষ্ট করে আমি তা বুঝতে পারি না। এরপরে তিনি আমাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জ্ঞান দিতে লাগলেন। আমি চুপ চাপ সব কিছু শুনছিলাম কিন্তু কোন জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি। কারণ হলো এদের কে যতই বুঝানো হোক লাভ হবে না কারণ এরা দুনিয়াকে প্রাধান্য দিয়েছে এবং আখেরাত বিক্রি করে দিয়েছে এটাই সত্য কথা। অবশেষে আমি যখন বিদায় নিয়ে চলে আসছিলাম তখন তিনি আমাকে বললেন আমার কথাগুলো একটু মনোযোগ দিয়ে ভেবে দেখো। আমি ভাবলাম এটাই হলো দায়িত্ব্য পালনের মোক্ষম সুযোগ।

আমি কোন রূপ ভনিতা না করে বললাম, ভাইজান কি আজকে ফজর নামাজ পড়েছেন ? তিনি বললেন কেন ? আমি বললাম জবাব দিলে আপনার পরবর্তি প্রশ্নের জবাব দিতে সুবিধা হবে। তিনি বললেন যে, শরিরটা ভালো না তাই পড়া হয় নাই। আমি আবার প্রশ্ন করলাম যে, গত কয়েক মাসে কোন দিন পড়েছেন মনে পড়ে। তিনি এবার কিছুটু অপ্রস্তত হয়ে গেলেন এবং বললেন সব কিছুর সাথে তোমরা ধর্ম কর্মকে টানো এটা একটি বদ অভ্যাস। আমি বললাম, ধর্ম পালন না করাই বদ অভ্যাস। আমি জানি আপনি নামাজ রোজার কাছেও যান না। মাঝে মাঝে বিপদে পড়লে দেন দরবারে সবার সামনে নামাজ পড়তে বাধ্য হন তাও নাপাক শরিরে। আপনি আমাকে বলূন তো যে ব্যক্তি মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ কে ভয় করে তার হক আদায় করে না, সেই ব্যক্তি কি করে নাদান জনগনকে ভয় করে তার হক রক্ষা করার দায়িত্ব্য নিতে পারে। অন্যদিকে যে ব্যক্তি নিজের হাতে নিজের ভবিষ্যতকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তাকে সাধারনত বোকা বলা হয়। আপনি বলুন তো একজন বোকা লোকের কথায় জ্ঞানীরা কি করে পথ চলতে পারে। যদি আমার কথা বুঝে থাকেন তাহলে হয়তো আপনার জীবনে কোন পরিবর্তন আসতেও পারে। তিনি আমার কথার কোন জবাব দিলেন না শুধু চেয়ে রইলেন। অতি স্নেহের হওয়ার কারনে হয়তো তিনি কথা গুলো ততটা গুরুত্ব্য সহকারে ভেবে দেখবেন না, কিন্তু আমাদের পাঠকরা হয়তো এত বোকা নন, তারা হয়তো ভেবে দেখতেও পারেন।



বিষয়: রাজনীতি

১০৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File