নাজমুস সাকিবের জন্য রইলো শুভকামনা।
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নতরী ০৬ আগস্ট, ২০১৩, ১১:৫৫:৪০ রাত
টেলিভিশনের কোন প্রোগ্রাম দেখার সুযোগ হয়না কত বছর সেটাও মনে নেই। সাধারনত খবর দেখা ছাড়া টিভির কোন কাজ নেই। এই রমজানের এন টিভির পি এইচ পি কোরআনের আলো অনুষ্টানটি খুবই ভালো মানের একটি অনুষ্টান ছিল। অনুষ্টানটির কয়েকটি পর্ব দেখেছি কেবল মাত্র নাজমুস সাকিবের তেলাওয়াত শুনার জন্য। এই ছোট ছোট ছেলেদের তেলাওয়াত শুনলে বুক ফেটে কান্না বের হয়ে আসে। পাষান কোন হৃদয়ও মোমের মতো গলে যায়। আমার বেনামাজি এক ভাই রাতে কান্নার কারনে ঘুমাতে পারেননি।
কেবল মাত্র সাকিবের জন্য অনুষ্টানটি দেখার চেষ্টা করেছি কিন্তু ব্যস্ততার জন্য সেটাও অনেক বার সম্ভব হয়নি। আজকের ফাইনালের অনুষ্টান দেখে খুব ভালো লেগেছে । কয়েকটি বিষয়ের দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষন করার কথা ছিল , জানিনা তারা সেটা পেরেছেন কিনা, তাই পাঠকদের সাথে শেয়ার করতে চাইলাম।
প্রথমঃ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমি যাকে সাপোর্ট করি তার জেতা হয়না, এবার ব্যতিক্রম হলো, সাকির জিতেছে। আমার খুব আনন্দ লাগছে। ছেলেটার তেলাওয়াত হৃদয় ছুয়ে যায়। আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। ভবিষ্যতে আরো ভালো করে দেশ ও উম্মাহর কল্যানে কাজ করার সুযোগ দিন এই কামনা করছি।
দ্বীতিয়তঃ এক সময়ের খ্যতিমান নাস্তিক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তার বক্তৃতায় কোরআনের সার্বজনিনতার প্রশংসা করেছেন এবং এই ধরনের প্রোগ্রামে আসতে পারাকে নিজের ভাগ্য হিসেবে মেনে নিয়েছেন। আজকে হাফেজদের প্রোগ্রাম ভালো লেগেছে, হয়তো কয়দিন পরে হাফেজ তৈরির কারখানা কওমী মাদ্রসাগুলো ও তার শিক্ষকদের কেও ভালো লাগতে পারে। যদিও কিছু দিন আগে তার দল এরকম হাজারো হাফেজদের কে রাতের আধারে গুলি করে মেরেছে এবং এই হাফেজ তৈরির কারিঘর শিক্ষকদের কে জেলে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করেছে। এত কিছুর পরে কেবল মাত্র নির্বাচনী বৈতরিন পার হবার জন্য তারা ধর্মেল শেকরে আসতে চান যদিও ধর্ম সব সময়ই আফিমের মতো মনে হয়। এর ব্যতিক্রম কেবল মাত্র নির্বাচন কালিন সময় ছাড়[া। আমরা আশা করছি নাহিদ সাহেবরা তাদের পুর্বকৃত কর্মের জন্য জাতির কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা চেয়ে নিয়ে এ জাতিয় অনুষ্টানে আসার চেষ্টা করবেন। যদিও এরকম আশা করা অত্যান্ত কঠিন বিষয়। অন্যথায় তাদের কে এ জাতিয় প্রোগ্রামে আনা হবে ধর্মের সাথে প্রতারনার শামিল।
তৃতীয়তঃ হু মু এরশাদ সাহেবের বাঘারম্বর পুর্ন বক্তৃতার জন্য তাকে আবারো ধন্যবাদ দিতে হয়। তিনি বললেন, এ সকল অনুষ্টানের মাধ্যমে আমাদের ওপর সন্ত্রাসী হওয়ার অপবাদ ঘুচাতে হবে। আমি তাকে প্রশ্ন করতে চ্ইা যে, মুসলমানদের কে যারা সন্ত্রাসী বলে চিহ্নিত করে তাদের বেদিতে মালা দিয়েই তারা কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া স্বপ্নে বিভোর থাকেন। অন্যদিকে এটাও প্রমানিত সত্য যে, হুসাইন মুহাম্মাদ এরশাদ টাইপের শাষকদের কর্মপদ্ধতির কারনেই আজকে মুসলমানরা সন্ত্রাসী সনদ কাধে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কথায় কথায় আলেম ওলামাদের কে জ্ঞান দেওয়ার চাইতে এই ভদ্রলোকের উচিত হবে ইসলাম সম্পর্কে আরো বেশি করে অধ্যায়ন করা। নাস্তিক দের সহযোগীদের জোটে আরাম কেদারায় বসে থাকবেন আর মাঝে মাঝে জোশ মারকা কথা বার্তা বলে আলেমদের সহানুভুতি নিয়ে ভোটের মাঠের ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করবেন এটা মোটেও ঠিক নয়। এরকম মুনাফিকি রীতি থেকে তাদের সরে আসা উচিত হবে।
চতুর্থ- অনুষ্টানে অনেকের মধ্যে মোযাজ্জেম হোসেন আলাল ছিলেন। যিনি যুবদলের বর্তমান সভাপতি। সরকারের বিচক্ষন বদন্যতায় তিনি এখন জেল বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞ। বলতে গেলে জেল খানার বিষয়ে থিসিস করেছেন তিনি। তাকে রিতীমতো জেলের দায়িত্য দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাঝে মাঝেই শুনি বিভিন্ন মামলায় তাকে কারাঘারে পাঠানো হয়। জামিন পেলে আবার জেল গেটেই আটক করা হয়। যুবদলের কেউ একজনও যদি রাস্তায় মলমুত্র ত্যাগ করেন তাহলে সিটি কর্পোরেশানের হরিজন সম্প্রদায়দের কে দিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল কে এক নম্বর আসামি করে আরো অজ্ঞাত কয়েকশ জনকে উল্লেখ্য করে মামলা করতে এই সরকারের সামান্য দেরি হয় না। যদিও রাস্তায় মল মুত্র ত্যাগ করেছে মাত্র একজন। এই আলাল সাহেব কে কোন কথা বলতে দেওয়া হয়নি। আমরা জানি যে আওয়ামী সরকার বর্তমানে ওয়াজ মাহফিল গুলোতে সেন্সরসিপ কার্যকর করে রেখেছে। কোন মাহফিল হবে আর কোনটা হবে না, হলেও কোন কোন ধরনের বক্তারা আলোচক হিসেবে দাওয়া পাবেন সেটাও স্থানীয় প্রশাসন ঠিক করে দেন। কোরআনের আলো অনুষ্টানটিও মনে হয় তেমনি একটি সেন্সর করা অনুষ্টান ছিল। নইলে আলাল সাহেব কে দু চারটি কথা বলার সুযোগ দিলে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত। হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারের ক্রেকডাউনের কঠোর সমালোচনা করে টক শো গুলোতে যিনি প্রান খুলে কথা বলতেন তিনি হলেন আলাল সাহেব। এটাই হয়তো তার অপরাধ।
পঞ্চমঃ কয়েকটি চ্যানেলে এক সাথে চলা কোরআনের হাফেজদের অনুষ্টান নিয়ে এক চায়ের দোকানদার মন্তব্য করলেন যে, একদিকে চ্যানেলে চ্যানেলে শিল্পী তৈরির নামে ছোট্ট ছোট্ট ছেলে মেয়েদের যেসব কে অনৈতিক সম্পর্ক আর বেহায়াপনা শিক্ষা দিচ্ছে, তার মোকাবেলায় এ জাতিয় অনুষ্টান অত্যান্ত সময় উপযোগী। উল্লেখ্য যে, চ্যানেল আইতে এই রোজার মাসেও খুদে গান রাজ অনুষ্টানের নামে যখন অশ্লিল গান আর বাদ্যের মহড়া হচ্চে ঠিক তখন আমাদের নাজমুস সাকিব আর ইয়াসিনরা কোরআনের আয়াত তেলাওয়াত করে সাধারন মানুষের চোখে পানি এনে প্রমান করে দিয়েছেন যে, মানুষের হৃদয় ছুয়ে যাওয়া অত্যান্ত কঠিন কাজ। হাততালি পাওয়া যায় সহজে কিন্ত এক ফোটা চোখের পানি বের করা অত্যান্ত কঠিন কাজ। এই কাজটি ভবিষ্যতে আরো বেশি পরিমানে হোক এই প্রত্যাশা করছি। বাতিল মিডিয়ার মোকাবেলায় মুসলমানরা তাদের মিডিয়া যুদ্ধ শুরু করে দিক এই কামনা।
বিষয়: বিবিধ
২৯২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন