ছিঃ ছিঃ কি নোংরা ভাষারে বাবা !!!!!

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নতরী ১৫ জুলাই, ২০১৩, ০১:২৬:১০ দুপুর

সম্প্রতি আল্লাহ পাকের বয়ানের কিতাব কোরআন শরীফ থেকে কিছু লাইনকোড করছেন জনৈক স্বঘোষিত নাস্তিক সাহেব। চৌদ্দ বছর পুর্বে কিভাবে আল্লাহ তায়ালা নারীদের নিয়ে নোংরা ভাষায় মন্তব্য করেছেন তার কিছু উদাহারন তিনি দেখিয়ে দিয়ে একটি স্টেটাস দিলেন ফেসবুকে। আর যায় কোথায়। আমাদের দেশের নারী প্রেমীক নাস্তিক্যবাদের ধারকরা লুফে নিলেন সেই মহান স্টেটাসকে। আল্লাহ মিয়ার গুষ্টি শুদ্ধ উদ্ধার শুরু হয়ে গেল। সোস্যাল মিডিয়া সহ গোটা ইন্টারনেট জগত সহ সংসদ ভবনে বিস্তর আলোচনা হলো এই বিষয়ে। এক মহুর্তের জন্য মনে হলো এটাই বুঝি দেশের একমাত্র সমষ্যা। যার সমাধানে এত টাকা খরচ করে সংসদে আলোচনা চলছে। গরম গরম বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে সংসদ সদস্যরা এসব ভন্ডামীর বিচার চাইলেন। প্রথমে আমরা দেখে নেই যে আসলেই কি ছিল সেই সব বয়ানে।

“মানুষের জন্য নারী, সন্তান, সোনা রুপার স্তূপ, সেরা ঘোড়া(বর্তমানে গাড়ি), গবাদী পশু ও কৃষি ক্ষেতের (বর্তমানের শিল্প কারখানা) প্রতি আসক্তিকে বড়ই সুসজ্জিত ও সুশোভিত করা হয়েছে৷ কিন্তু এগুলো দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের সামগ্রী মাত্র৷ প্রকৃতপক্ষে উত্তম আবাস তো রয়েছে আল্লাহর কাছে৷

(সুরা আলে ইমরান- ১৪)

“হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা সাধারণ নারীদের মতো নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করে থাকো, তাহলে মিহি স্বরে কথা বলো না, যাতে মানুষ গলদে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে, বরং পরিষ্কার সোজা ও স্বাভাবিকভাবে কথা বলো।

নিজেদের গৃহ মধ্যে অবস্থান করো। এবং পূর্বের জাহেলী যুগের মতো সাজসজ্জা দেখিয়ে বেড়িও না। নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো। আল্লাহ তো চান, তোমাদের নবী পরিবার থেকে ময়লা দূর করতে (নবী পরিবারেও ময়লা পাওয়া গেল) এবং তোমাদের পুরোপুরি পাক-পবিত্র করে দিতে( নারীরা কি অপত্রিত ?)। সুরা আহযাব-৩২-৩৩।”

উপরোক্ত বয়ান থেকে আমরা জানলাম।

১. প্রকৃতিগত ভাবেই নারীদের কে সুসজ্জিত ও সুশোভিত করা হয়েছে। এমন ভাবে তাদের কে তৈরি করা হয়েছে যে, দুর্বল চিত্তের কেউ তাদের নরম কণ্ঠ শুনলেও তার মধ্যে খায়েশাত মাথা চারা দিয়ে উঠতে পারে। এই কারনে তাদের কে পর পুরুষদের সাথে মোটা কন্ঠে কর্কশ ভাষায় কথা বলতে বলা হয়েছে। এটা নারীদের কণ্ঠ স্বাধীনতাকে চরম ভাবে হেয় করেছে এবং নারীদের কণ্ঠকে একপ্রকার তেতুলের মতো করেই তুলনা করা হয়েছে। তেতুল দেখলে যেমন লোকদের জিবে পানি আসে, তেমনি নারীদের নরম সুরেলা কণ্ঠ শুনলে রোগা চিত্তের লোকদেরও অন্তরে উসাতন শুরু হয়ে যায়। নারীদের বিষয়ে কোরাআনের এই সাবমিশন প্রমান করে যে, আসলেই কোরআন একটি জাহেলী, বর্বর মধ্যযুগিয় কিতাব।

২. নারীদের কে জাহিলে যুগের মতো করে ভেশভুষা সহকারে বাইরে চলা ফেরা করতে নিষেধ করা হয়েছে। এর দ্বারা নারীদের অবাধ চলাফেরা এবং মেলামেশায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দিয়ে কিছু লোককে চরম সমষ্যায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। এটা নারী জাতির জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর। কেননা নিজেদের কে বাজারে উপস্থান না করলে তাদের দাম বৃদ্ধির কোন সম্ভবনাই থাকেনা। খরিদ্দার দের কে দেখার সুযোগ না দিলে তারা দাম হাকায় কিভাবে শুনি। এরা দ্বারা নারীদের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে চরম ভাবে অবমুল্যায়ন করে নারী সমাজকে ঘরের পুতুল বানানোর ষরযন্ত করা হয়েছে। যেটা মেনে নেয়া যায় না।........................................................”

নাস্তিক সাহেবের এই স্টেটাস আপলোডের পরে কি হয়েছে সেটা দেখুন এবং উপরোক্ত আয়াত সমুহের তাছির কার ওপর কিভাবে পরেছে সেটা লক্ষ করতে নিচের প্রতিক্রিয়া গুলো দেখুন। মনে রাখুন, যে যেমন তার প্রতিক্রিয়াও তেমনি হয়। এই কোরআনের যে আয়াতটি দিয়ে আল্লাহ পাক একজন মুমিনের ঈমানের নুর বাড়িয়ে দেন, সেই একই আয়াত দিয়ে ফাসেকদের কে গোমরাহ করে দেন। এটাই কোরআনের মুজেজা।

প্রতিক্রিয়া সমুহ।

শেখ হাসিনা-(দৈনিক এক পাড়া (অবৈধ নোংরা ভাষায় ভরপুর কিতাবটি) তেলাওয়াত কারীদের স্বঘোষিত দাবিদার)

“ছি ঃ ছিঃ ! কোরআনের ভাষা কত নিকৃষ্ট, এত নিকৃষ্ট ভাষা কোন বিবেকবান,জ্ঞানী লোক উচ্চারন করতে পারে ? আল্লাহর কি মা বোন নেই, নারী জাতির প্রতি কি আল্লাহর কোন শ্রদ্ধা বোধ নেই। তিনি কি নারীর জাতির সম্মান রাখবেন না। এই বিষয়ে নারী জাতির আরো সচেতন হতে হবে যাতে এসব নোংরা কথার জবাব দিতে পারেন। আগামী নির্বাচনে সময় আমরা এই কিতাব কে প্রত্যাখান করতে নারী সমাজের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।...........................................”

পালিত নারী নেত্রীরা-:(এরা হচ্ছে এক প্রকারের প্রজাতি। পরিবার প্রথা বিলপ্তীর স্বপ্ন দেখা নারী নামের হিজরা সংঘ)

“এসব কথা বলে নারীদের প্রাপ্ত অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। নারীদের কে পুরুষের ভোগ্য পন্য বানানোর জন্যই তাদের কে ঘরের কোন অবস্থান করার কথা বলা হচ্ছে। এসব মধ্যযুগিয় বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে আল্লাহ মিয়া নারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে দুনিয়ার সকল নারী সমাজ কে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”................................................

রোকেয়া প্রাচী-:(পুরুষ ভোজী নারী মডেল, ইতিমধ্যেই কয়েক ডজন চেখে নিয়েছেন)

“নারীদের সম্পর্কে এমন কুৎসিত মধ্যযুগিয় ভাবনা কেবল কোন অজ্ঞের পক্ষের সম্ভব হতে পারে। অবিলম্বে আল্লাহ কে তওবা করতে হবে নতুবা নারী সমাজ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।........................................”

রুখো দাড়াও বাংলাদেশ-:(অধুনা হিজরাদের তৈরি করা নতুন ভুইফোর সংগঠন)

“নারীদের অবমাননা করে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে দেশের মহান পবিত্র সংবিধানের অবমাননা করেছে কথিত আল্লাহর বয়ানের কিতাব কোরআন শরীফ। অবিলম্বে এই কোরআন কে নিষিদ্ধ করে দিয়ে নারী জাতির স্বাধীনতাকে প্রশস্ত করতে হবে।.................................

স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন অধুনা বিশেষ অজ্ঞ খেতাব পাওয়া ডক্টর আকবর আলী খান, আবেদ খান সহ কয়েক ডজন চুশিলী বাবুরা।”

সিপিবির নেতৃবৃন্দ-:(ঢাল তলোয়ার বিহীন সরদার)

“গার্মেন্টস এর নারীদের কে নিয়ে কুরুচিপুর্ন মন্তব্য করার দায়ে এখনি কোরআন ব্যান করা দরকার। নইলে এটা পড়ে পড়ে সাধারন ছাত্ররাও নারীদের প্রতি ক্ষদ্ধ হয়ে উঠতে পারে। নারীদের অবাধ চলাফেরায় (মেলামেশায়) বাধা প্রদান কারী যে কোন বক্তৃতা বিবৃতি বা আয়াত সরাসরি বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বিধায় সেগুলো অবৈধ করতে হবে।..............................................”

ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসী পালিত নেতা হু মু এরশাদের দল জাতিয় পার্টি।-:

“আমরা এমন সব আয়াত কে সমর্থন করি না, সেটা আল্লাহয় বলুক আর যেই বলূক। এসব কথা বার্তা নারী সমাজের স্বাধীনতা ও স্বকিয়তা কে আরো পিছনে ঠেলে দিবে। গার্মেন্টেসের নারীরা সবাই দেশের সম্পদ। তাদের কে সঠিক ভাবে ব্যাবহার করতে পারে দেশের উন্নয়নের ধারা বৃদ্ধি পাবে।..........................................”

বাংলাদেশ নিরীহ পার্টি( বি এন পি)

“এমন সব আয়াত যদি থেকেই থাকে তাহলে এর বিরুদ্ধে আমরাও অবস্থান নেবো। নারী স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হয় এমন কোন রুল আমাদের দল মেনে নেবে না। আমাদের দলের নেত্রীও নারী এটা ভুলে গেলে আমাদের পদ পদবি থাকবে না। আমাদের কে আগে জানতে হবে এমন বয়ান কোরআন শরীফে আছে কিনা। কোরআন পড়ার সুযোগ আমাদের হয় না। নাস্তিকরা তো কোরআনের বিরুদ্ধে বলার জন্য হলেও মাঝে মাঝে দু চার পৃষ্টা পড়ে দেখে কিন্তু আমাদের সেটা হয় না কারণ রেডিমেট কিছু কোরআন প্রেমিক আমাদের গলায় ঝুলে আছে পুর্বে থেকেই। এদের দেখিয়ে আমরা কোরআন প্রেমিক দের ভোট পাই। আসলে নাস্তিকদের সাথে আমাদের তুলনা মুলক কোন মত পার্থক্য নেই।..........................”

ঘনঝাগরন মঞ্চ( পালিত কুকুর, যার কাজ হচ্ছে প্রভুর বাড়ি পাহাড়া দেওয়া।)-:

“ এসব নোংরা আয়াতের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে, আমরা তরুনরা ততদিন ঘরে ফিরে যাবো না যতদিন না নারী সমাজকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে রাস্তায় অবাধে মেলামেশার সুযোগ করে দিতে পারবো। সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে বিশেষ ট্রাইবুনাল তৈরি করে এই কিতাব কে ব্যান করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আগামী সপ্তাহে আমরা এর প্রতিবাদের নারী সমাবেশ করবো.............।”

আরো প্রতিক্রিয়া দেওয়ার ইচ্ছে থাকলেও সময়ের কারনে সম্ভব হচ্ছে না। এবার আপনাদের প্রতিক্রিয়া দেবার পালা। স্টেটাসটি যেহেতু রূপক তাই এর কোন দায় ভার আমি নেবো না। আমি কেবল কয়েক শত বার নাউজুবিল্লাহ পড়েছি। আপনারাও স্ব স্ব স্থানে নাউজুবিল্লাহ পড়তে ভুল করবেন না। আল্লাহ আমাদের কে বেশি বেশি করে অবৈধ (???) বয়ানের ভরপুর কিতাবটি পড়ার সুযোগ দিন আমিন।

বিষয়: বিবিধ

১৫৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File