এখনো কি এসব বুজুর্গদের হুশ আসবে না ?
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নতরী ২৫ জুন, ২০১৩, ১১:১১:১৮ রাত
সত্য বললে বিভক্তি তৈরি হয়, আবার চুপ করে থাকলে বেদয়াত প্রসার লাভ করে, এর পরিনতিতে সংগোপনে আস্তে আস্তে ইসলাম বিদায় নেয় মানুষের অন্তর থেকে। কোনটা করা উচিত আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। যারা কথায় কথায় ইসলাম আর ঈমানের দোহাই দেন, শরীয়াতের কতিপয় হুকুম কে ইসলাম আখ্যায়িত করে এর ওপর জোর দিয়ে সাধারন মুমিনদের কে হেয় করার পন্থা খুজে বেড়ান আল্লাহর ওয়াস্তে তারা যদি একটু খ্যান্ত হতেন তাহলে হয়তো আমাদের কে আত্নরক্ষার সার্থ্যে এই সব ফালতু কাজে সময় দিতে হতো না।
সামান্য কোন বিষয়ে কোরআন হাদিসের দলিল এবং বিশেষজ্ঞদের ফতোয়ার বিশ্লেষন দিয়ে কোন পোষ্ট দেওয়ার পরেও কিছু ভাইরা মনে করেন এই বুঝি অমুক কে খাটো করার জন্য করা হচ্ছে। কি লাভ এই সময় এত বিভেদ তৈরি করে। মসজিদ গুলো কে সুন্নাহর পরিবর্তে বেদয়াতের আস্তানা বানানো হয়েছে। নামাজের গুরুত্ব্যপূর্ণ সুন্নাতগুলো কেও মসজিদ থেকে ঝাাটিয়ে বিদায় করা হয়েছে। ইমাম সাহেবরা কমিটির নেতৃত্ব্য কে তুষ্ট করতে কোরআন হাদিস থেকে গল্প খুজে বেড়াচেছন, মনোপুত কোন গল্প না পেলে এ্যারাবিয়ান নাইটসের কাহিনী পর্যন্ত বলার সাহস করছেন। ইউসুফ জুলেখার মিথ্যা প্রেম কাহিনী শুনিয়ে অবৈধ প্রেম কাহিনীকে বৈধতা দেওয়ার প্রাণন্তকর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন আমাদের কতিপয় হযরতরা। এসবের বিরুদ্ধে কোন মন্তব্য করলেই কেউ কেউ অনৈক্যের জিকির তুলেন। আলেমদের সমালোচনা করার অভিযোগ তুলতে থাকেন। কারণ আমাদের দেশের বেশির ভাগ মসজিদের ইমাম কোন কোন কওমী মাদ্রাসার ছাত্র। এদের কাছে আমার প্রত্যাশা কিন্তু বেশি।
মসজিদ গুলোতে মাইক ব্যাবহার করে জিকিরের হালকা করা হচ্ছে। জিকির কে অঘোষিত ভাবে ফরজের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে বহু আগেই। জিকির না করলে কারো মুমিন হওয়ার সম্ভবনাকে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ফুৎকারে। আমাদের বিশিষ্ট আলেমরা এসব অনাচার কে তাদের কতিপয় ফেরকা আর গোত্র প্রিতীর কারনে হজম করে যাচ্ছেন দিনকে দিন। তাদের এই নিরবতাকে নিজেদের পক্ষে দলিল হিসেবে ব্যাবহার করছে বেদয়াতের লালনকারীরা। অন্যদিকে সাধারন মুসলমানের দাড়ির দৈর্ঘ্য ইঞ্চি দিয়ে মেপে দেখে তার ওপর কুফরির ফতোয়া দেওয়ার জন্য আতশী কাচ আর ফিতা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে তাদের একটু কষ্ট হয় না। সামান্য পোষাকের ব্যতিক্রমে তাদের হুশ যায় যায় বলে। আল্লাহ পাক ভালো জানেন কবে এই গুরুদশা থেকে মুক্ত হবে মুসলিম জাতি।
ঈমানের সত্যিকারের সংজ্ঞা পর্যন্ত হাড়িয়ে যাচ্ছে। মুখ দেখে ফতোয়া প্রচার করা হচ্ছে। দেশের শির্ষস্থানীয় একটি দ্বীনি পত্রিকায় প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার পরে কারো ঈমানদার থাকার সুযোগ থাকে কিনা। বিশ্বাস করুন মুফতি সাহেবের উত্তর শুনে আমি যেটুক বুঝতে পেরেছি তা হলো তিনি একে বেমালূম এড়িয়ে গিয়ে কিছু গোজামিলের আশ্রয় নিলেন যে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তিনি অনেক কিছুর মধ্যে এও বললেন, কেউ যদি ধর্মনিরপেক্ষতাকে দ্বীন হিসেবে নিয়ে থাকে তাহলে সে কাফের হয়ে গেছে। অন্যদিকে কেবল মাত্র রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য কেউ যদি একে মতবাদ হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে তাকে সরাসরি কাফের বলার কোন সুযোগ নেই।
আমি মনে মনে ভাবলাম যে আসলে কি তাই ? তাহলে যারা মাজার পুজা করছে বলে হযরতরা দাবি করছেন এবং তাদের কে গোমরাহ বলে ফতোয়া দিচ্ছেন সেই সব লোকদের মধ্যে একজনও কি পাওয়া যাবে যিনি মাজারের ভিতর শায়িত ব্যক্তিটিকে খোদা হিসেবে মনে করেন বা তার কাছে খোদায়ী কোন গুন আছে বলে ধারণা করেন। কোন একজন ব্যক্তিও কি পাওয়া যাবে যিনি কবরের ভিতর শুয়ে থাকা ব্যক্তিটিকে নিজের দ্বীন বানিয়ে নিয়েছেণ। ভবিষ্যতে এই ফতোয়া নিয়ে আরো কিছু লোক যদি মুর্তির সামনে গিয়ে কেবল তাদের কে সিজদা করে আর বলে আমরা কেবল মাত্র রাজনৈতিক কারনে এমনটি করছি তাহলে বোধ হয় তাদের কেও সরাসরি ভাবে কাফর বলা যেতে পারে না।
এতসব প্রশ্ন ছাড়াও আরো যেসব আনুসাংঙ্গিক গলদ আছে তার ওপর ভিত্তি করে এরকম হাজারো প্রশ্নে উদ্রেক ঘটতে পারে। আমি জানিনা পাঠকরা বিষয়টি কিভাবে নিবেন।
অন্যদিকে আরো একটি প্রশ্নের উত্তর শোনা যাক।
এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছেন, জামায়াত শিবিরের সমর্থক কোন ইমামের পিছনে ইক্তিদা করা জায়েজ হবে কি না।
মুফতি সাহেব এক্ষেত্রে কোন যুক্তির অবতারনা না করে সোজাসোজি বলে দিলেন যে, তাদের পিছনে নামাজ পড়া মাকরুহ। তিনি কোরআন হাদিস এবং কয়েকটি ফতোয়া গ্রন্থের হাওলাও দিয়েছেন। আমি বুঝতে পারলাম যে, ফতোয়ায়ে আলমগীরি যখন রচিত হয়েছে তারও আগেই এই জামায়াত শিবিরের জন্ম হয়েছে। আর মনে হচ্ছে স্বয়ং কালামে পাকেও এই দল দুটির ইংগিত রয়েছে যেখান থেকে তিনি তাদের বিরুদ্ধে দলিল গ্রহণ করেছেন। আসলেই জামায়াত শিবিরের তুলনা হয় না।
আমার পিছনে নামাজ কেন হবে না এই জবাব তো আমি পরকালে চাইব-ই, সেদিন তাদের মুফতি ডিগ্রি গুলো কোন কাজে আসবে বলে মনে হয় না কারণ আমার আকীদা বিশ্বাস , আমার আমল গুলোকে আমি সেই মানদন্ডে নিতে চেষ্টায় আছি যেটা কোরআন এবং সুন্নাহতে লিপিবদ্ধ রয়েছে। আমার আকীদা বিশ্বাসের খবর তারা কি করে পেল সেই বিষয়ে তাদের কে জবাব দিহির মুখোমুখি না করে আমি জান্নাত জাহান্নাম কোনটাতেই না যাওয়ার স্বিদ্ধান্ত নিয়েছি। আল্লাহর কাছে আমার আবাদার থাকবে যে, সেই সকল বেটাদের কে একটু জিঞ্জেস করে নিন যে, তারা কি করে জানলো আমার দাড়ির দৈর্ঘ্য কতটুকো, আমি নবীদের কে নিস্পাপ মনে করি কিনা, আমার দ্বারা উম্মাতের কোন ক্ষতি হয়েছে কি না। আমি ইসলাম কে খালেস ভাবে গ্রহণ করেছি কি না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ফতোয়া দিয়ে যারা আমাকে লোক সমাজে হেয় করার চেষ্টা করেছে তাদের বিচার না দেখে আমার বিরুদ্ধে যেন ভালো মন্দ কোন ফয়সালা না দেওয়া হয়। বাকিটা আল্লাহর হাতে। আল্লাহর বিচার করবেন তার ইলম দিয়ে, কারো ফতোয়ার কিতাব দেখে নয়।
বিষয়: বিবিধ
১৭৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন