সিটি নির্বাচন এবং আমাদের হলুদ মিডিয়া।
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নতরী ১৬ জুন, ২০১৩, ০১:২১:২৮ দুপুর
নির্বাচনে জিতলো আঠারো দল অথচ হলুদ মিডিয়ার প্রচারনায় কেবল মাত্র বি এন পির নাম। আজকে যদি চৌদ্ধ দলের প্রার্থীরা জয় লাভ করতো তাহলে শিরোনাম হতো মহাজোটের বিশাল জয়। এভাবে তারা মহাজোটের ভাবমুর্তি উদ্ধারে নিজেদের কলমের শেষ বিন্দু পর্যন্ত লাগাতো। অথচ আঠারো দলিয় জোটের বেলায় তার উল্টোটা। এভাবে তারা আঠার দলের ভিতরে স্নায়ুবীক যুদ্ধ লাগাবোন চেষ্টা করছে। এত বড় পরাজয়ের পরেও কিছু কিছু মিডিয়ার হেডলাইন পড়ে হতাশ হয়েছি। তাদের দলিয় পরিচয় সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকার পরেও আমরা আশা করছিলাম যে তারা সংবাদপত্রের মানসম্মান বিবেচনায় নিয়ে তাদের সম্পাদকীয় নিতীমালায় কিছুক্ষনের জন্য হলেও পরিবর্তন আনবে। কিন্তু তারা জনগনের পক্ষে না দাড়িয়ে কতিথ চেতনার টেবলেট খেয়ে এখনো অচেতন হয়ে আছে। জনগনের ভাষা যে মিডিয়া পড়তে পারে না তাদের কপালে দালালী ছাড়া টিকে থাকার কোন সম্ভাবনা নেই।
চারটি সিটি কর্পোরেশানের নির্বাচনে জনগন কেবল মাত্র প্রার্থী দেখে ভোট দিয়েছেন বা ব্যক্তিগত বিষয়কে প্রধান্য দিয়েছেন এমন প্রচারনা চালানোর কোন সুযোগ নেই। কোন কোন মিডিয়া এই ভরাডুবির কারণ হিসেবে বর্তমান মেয়রদের অপশাষন কে দুষেছেন যাতে আওয়ামী লীগের গায়ে অপশাষনের আচরটুকো পর্যন্ত না লাগে। অথচ এটা সবাই জানেন যে, আওয়ামী লীগ নাস্তিকদের পক্ষাবলম্বন করে দেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করে দিয়েছে। এর ফল হিসেবে আওয়ামী প্রার্থীরা নিজেদের দলিয় পরিচয় প্রকাশ করতে ইতস্ত করেছেন। তাদের মুখে উন্নয়নের স্রোতধারা যে বয়ান মানুষ শুনেছে তার সাথে বাস্তবতার কোন মিল খুজে পায়নি। এসব দিক বিবেচনায় নিলে একটি বিষয় পরিস্কার হয়ে যায় যে, এই নির্বাচনে কোন কলা গাছও যদি আওয়ামী প্রার্থীর বিরুদ্ধে করানো হতো তাহলে সেও জিততো। কারণ এদেশের নিরীহ মানুষদের কে অস্ত্রের ভয়ে, পুলিশি নির্যাতের জোড়ে চুপ করিয়ে রাখা গেলেও সঠিক সময়ে তারা এসবের জবাব দিতে ভুল করেন না। মিডিয়া বন্দনার হিড়িক তুলে শেখ হাসিনা জনগনের দৃষ্টি যতই অন্যদিকে নিতে চান না কেন জনগন নাস্তিকদের সহযোগী আওয়ামী রাম বামদের প্রত্যাক্ষান করার স্বিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বহু আগে থেকেই।
এতদিন টেলিভিশনের পর্দায় শুনতাম নতুন প্রজন্ম কেবল আওয়ামী লীগের মল মুত্র থেকে জন্ম নেওয়া শাহবাগের গনজাগরন মঞ্চের চেতনা কে ধারন করে উগ্রসাম্প্রদায়ীক শক্তিকে প্রত্যাখান করেছে। শাহরিয়ার কবির নামের অর্ধ উম্মাদ, জ্ঞান পাপীতো নাস্তিক ব্লগারদের পক্ষ হয়ে শেখ হাসিনা কে পরামর্শ দিয়েছেন যাতে নতুন ভোটার এই প্রজন্ম কে আগলে রাখে। কোন অবস্থায় হেফাজতের কর্মকান্ডকে প্রশ্রয় া দেয়। কিন্তু কি ফল হলো। নতুন ভোটাররা বিশেষ করে নারী ভোটাররা মন খুলে আঠারো দলের প্রার্থীদের কে ভোট দিয়েছেন। কতিপয় নাস্তিক তাদের ব্লগে আক্ষেপ করেছেন যে, এ দেশের মানুষকে ধর্মের দোহাই দিলে সহজে কাবু হয়ে যায়। সুজনের কতিথ নেতা বলেছেন ভোটের মাঠে ধর্মের ব্যাবহার ভোটের হিসেবে কে পাল্টে দিয়েছে। তাদের ইংগিতও সেই হেফাজতের দিকে। তাহলে তো আমাদেরও প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে যে, শাহবাগের চেতনা যদি চারটি সিটিতেই পৌছানো না গেলো তাহলে এত বিরিয়ানী আর মিডিয়ার সার্কাসের কি ফল হলো। অপরদিকে ল্যাংটা পায়ে পথ চলা, অন্যের টাকায় দিনপাত করার অপবাদ যেই মাদ্রাসা ছাত্রদের কে দেওয়া হতো তাদের চেতনার কাছে বুমেরাং হয়ে গেল কতিথ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আসলে আমাদের মহান মুক্তি যুদ্ধে চেতনাকে আওয়ামী ভন্ডরা এত পরিমানের কষেছেন যে, এটা এখন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছেও তিতা লাগে। যেমনটা লেবুকে বেশি কষলে তিতা হয়ে যায়। হেফাজতের রক্তে যে চেতনার দাওয়াত দেওয়া হয়েছে, যে চেতনা ধারন করে সাধারন মানুষ ঘুম থেকে উঠে সেই চেতনার সাপোর্ট কাজে লাগিয়ে আঠার দল প্রমান করেছে যে, তারাই বিজয়ী চেতনাধারী সেটা উপলদ্ধি করার মতো জ্ঞান এদেশের সম্পাদকরা বোধ হয় হাড়িয়ে ফেলেছেন ক্ষমতাধরদের পা চাটতে গিয়ে। আমি বুঝতে পারিনা যে, এ দেশের মিডিয়াগুলো নিজেদের কে কেন কর্পোরেট চক্র থেকে বের করে এনে জনগনের কাতারে আনতে পাড়ছে না ? শাষকদের বিশেষ করে আওয়ামী চেতনার টেবলেট প্রচারে বিনামুল্যে বিজ্ঞাপন প্রচার করে নিজেদের এরা আর কত উলুংগ করলে পরে তাদের বোধদয় হবে।
অনেক ভন্ডরা দাবি করেছেন হেফাজত কেন আঠারো দলের প্রতি সমর্থন পেশ করলো। আসলে এই ভন্ডরাও জানে যে, এই মুহুর্তে হেফাজতের কাউকে সমর্থন না দেওয়ার মানেই হচ্ছে আওয়ামী লীগের কল্যাণ কামনা করা যেটা এই মুহুর্তের জন্য একেবারে হারাম পর্যায়ে। যারা বলেন যে, আমরা কাউকে সমর্থন দেই নি তারা ইসলামের দুষমন আওয়ামী দালাল। তাদের দালালীর স্বরূপ প্রকাশি হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হতে থাকবে। আজকে আওয়ামী লীগের পরাজয়ে কেবল মাত্র একটি সত্য ফুটে উঠেছে যে, এদেশের আলেম ওলামাদের মাইনাস করে কোন প্রকার নীতিমালার প্রবর্তন করা বা দেশের অভ্যান্তরে ইসলাম বিরোধী কোন প্রচেষ্টা কে লালন করার পরিনতি এটাই হবে। এই পরিনতি ভবিষ্যতে বি এন পিকেও ভোগ করতে হতে পারে যদি তারা পুর্বের কার মতো কতিপয় নাস্তিক আর মুরতাদদের কে প্রশ্রয় দেওয়ার নুন্যতম প্রয়োজন মনে করে। আমরা আশা করছি নির্বাচিত মেয়রারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে দুর্নিতীমুক্ত থেকে আলেম ওলামাদের পরামর্শ কে অগ্রাধিকার দিয়ে দেশের কল্যানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন