নবী (স) চরিত্রের ওপর আনা অভিযোগ গুলোর মধ্যে যে কয়টি উল্লেখযোগ্য, তার জবাব - ১।

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নতরী ১১ জুন, ২০১৩, ০২:০৫:০০ দুপুর

প্রশ্ন : আমি বর্তমানে আমেরিকার অধিবাসী। এখানে খৃষ্টানদের সাথে ধর্মীয় বিষয়ে প্রায়ই আলাপ আলোচনা হয়ে থাকে। তারা বিশেষত তাদের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের একাধিক বিয়ের ব্যাপার নিয়ে প্রায়ই তর্কে লিপ্ত হয়। এ জিনিসটা কিছুতেই তাদের বুঝে আসেনা। এ প্রসঙ্গে তারা আমাদের রসূল সা.-এর নয়টি বিয়ের উপর নানা রকম আপত্তি তোলে এবং বলে, তিনি হযরত আয়েশাকে অত্যন্ত অল্প বয়সে বিয়ে করেন। এর কি প্রয়োজন ছিলো তা তাদের কাছে দুর্বোধ্য।

আমি এবং আমার অন্য কতোক মুসলিম বন্ধু সাধ্যমত তাদের উত্তর দিতে চেষ্টা করি। তবে জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে তাদেরকে পুরোপুরি সন্তুষ্টি করতে পারিনি। আপনি যদি এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করেন এবং একাধিক বিয়ে, বিশেষত রসূল সা. এর একাধিক বিয়ের যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয় এমন তথ্যাদি ও দলিল প্রমাণ সরবরাহ করেন, তাহলে আমাদের আলোচনা ও যুক্তি প্রদর্শন সহজতর হবে এবং আমরা ইনশাল্লাহ সকল বিষয়ে সমপর্যায়ে দাঁড়িয়ে মতামত ব্যক্ত করতে সক্ষম হবো।

জবাব : এটা একটা বিস্ময়কর ব্যাপার যে, আধুনিক পাশ্চাত্য জাতিসমূহ বহুবিবাহকে একটা ধর্মীয় ও সামাজিক অনাচার হিসেবে গণ্য করে এবং তাদের অনুকরণে কিছু পাশ্চাত্যমনা মুসলমানও এ নিয়ে নাক সিটকায়। অথচ আধুনিক খৃষ্টবাদের আবির্ভাবের আগে মানবেতিহাসে কখনো বহু বিবাহকে ধর্মীয় ও নৈতিক দিক দিয়ে দুষণীয়, অনভিপ্রেত কিংবা খোদাভীরুতার পরিপন্থি মনে করা হয়নি। আপনি ঐসব খৃষ্টান আপত্তি উত্থাপনকারীদেরকে জিজ্ঞেস করবেন এবং নিজেও বাইবেল পড়ে দেখবেন যে, তাতে হযরত ইবরাহীম আ. হযরত ইসহাক আ. হযরত ইয়াকুব আ. এবং অন্যান্য নবীগণের একাধিক স্ত্রী থাকার কথা উল্লেখ করা আছে কিনা আমাদের রসূল সা.-এর বিয়ে সম্পর্কে যারা আপত্তি তোলে, ভাবতে অবাক লাগে, তাদের মনে বাইবেলে বর্ণিত এসব বহু বিবাহে কোনো আপত্তি ওঠেনা।

আসল ব্যাপার হলো, পাশ্চাত্যের আধুনিক জাতিগুলোর মাথায় একদিকে চড়াও হয়ে আছে যৌন আকর্ষণ ও কামোন্মত্ততা, অপরদিকে ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা ও বিদ্বেষ আচ্ছন্ন করে রেখেছে তাদের মনমগজ। এ জন্য তারা ভাবতে বাধ্য যে, বিয়ের উদ্দেশ্য নিছক কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করা ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু ইসলামের পারিবারিক ও দাম্পত্য জীবন সংক্রান্ত শিক্ষা ও নীতিমালা এবং মুহাম্মদ সা.-এর জীবনবৃত্তান্ত যে ব্যক্তিই নিরপেক্ষ ও খোলা মনে মনোনিবেশ সহকারে পড়বে, সে সহজেই বুঝতে পারবে, ইসলাম বিয়ের নির্দেশ দেয়ার সময় বহু সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক লক্ষ্য সামনে রেখেছে। অধ্যয়নকারী এ কথাও উপলব্ধি করতে পারবে যে, রসূল সা. নিছক বিয়ের জন্যই বিয়ে করেননি, বরং প্রত্যেক বিয়েতেই কোনো না কোনো মহৎ উদ্দেশ্য ও ইসলামের সামষ্টিক স্বার্থ নিহিত ছিলো। তিনি প্রথম বিয়ে করেন একাধিক সন্তানের জননী, বিধবা ও তাঁর চেয়ে পনেরো বছরের বয়জ্যেষ্ঠা হযরত খাদিজাকে। এই বিয়ে করার সময় রসূল সা.-এর বয়স পঁচিশ এবং খাদিজার রা.-এর বয়স চল্লিশ বছর ছিলো। এমন টগবগে যৌবনেও তাঁর চরিত্র এতো পবিত্র ও নিষ্কলুষ ছিলো যে, কাফেররাও তা স্বীকার করতো। তাছাড়া তিনি যখন ইসলামের দাওয়াত দিতে শুরু করেন, তখন তা থেকে তাকে থামাতে মুশরিকরা যে আপোসমূলক প্রস্তাব দেয়, তাতে এই প্রলোভনও দেয়া হয়েছিল যে, হেজাযের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ের সাথে তার বিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু সে প্রস্তাব তিনি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। হযরত খাদিজাও তাঁর চরিত্র ও সততায় মুগ্ধ হয়ে নবুওয়াত লাভের আগেই তাঁর কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। অথচ এই বয়সে তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের কোনো ইচ্ছে ও প্রয়োজন ছিলনা। তিনি একজন অত্যন্ত ধনবতী মহিলা ছিলেন এবং ইতিপূর্বে বেশ কয়েকটি বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। রসূল সা. ইচ্ছে করলে যে কোনো কুমারী যুবতীকে বিয়ে করতে পারতেন। কিন্তু তিনি হযরত খাদিজার নির্মল ও অনমনীয় চরিত্রের জন্য তাঁকে বিয়ে করেন এবং তিনি বেঁচে থাকতে অন্য কোনো বিয়ে করেননি। ইতিহাস সাক্ষী, এই বিয়ে অত্যন্ত কল্যাণকর প্রমাণিত হয়েছিল। হযরত খাদিজা রসূল সা.-এর নবুওয়াত লাভের পর সর্বপ্রথম ঈমান আনেন এবং যতোদিন জীবিত ছিলেন নিজের জীবন ও সহায়সম্পদ রসূল সা.-এর জন্য উৎসর্গ করে রেখেছিলেন।

হযরত খাদিজার ইন্তিকালের পর রসূল সা. আরেকজন প্রবীণ মাহিলা হযরত সওদাকে বিয়ে করেন, যাতে তিনি তাঁর অল্প বয়স্কা কন্যাদের রক্ষণাবেক্ষণ ও লালন পালন করতে পারেন এবং অন্যান্য সাংসারিক কাজকর্ম সম্পাদন করতে পারেন। হযরত সওদাও অত্যন্ত মজবুত ও বলিষ্ঠ চরিত্রের অধিকারীনী ছিলেন। শুধুমাত্র ইসলামের জন্য তিনি আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন এবং বহু কষ্টে ও বিপদ মুসিবত সহ্য করেন। চার বছর পর্যন্ত একমাত্র তিনিই ছিলেন তাঁর সহধর্মিনী। এরপর তিনি এমন অল্পবয়স্কা মেয়েকে গৃহিনী করে আনার প্রয়োজন অনুভব করেন। যিনি ইসলামি পরিবেশেই জন্মেছেন এবং নবীগৃহে এসে বড় হবেন। এতে তাঁর শিক্ষাদীক্ষা ও মানসিক বিকাশ সর্বদিক দিয়ে পূর্ণাঙ্গ আদর্শ মানের হবে এবং তিনি মুসলিম নারী ও পুরুষের মধ্যে ইসলামি শিক্ষা বিস্তারের কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন। এ উদ্দেশ্যে আল্লাহর ইচ্ছাক্রমে হযরত আয়েশা সিদ্দীকা নির্বাচিত হলেন। তাঁর পিতামাতার গৃহ তো আগে থেকেই ইসলামের আলোয় উদ্ভাসিত ছিলো। আর শৈশবেই তাঁকে নবীগৃহে পাঠিয়ে দেয়া হলো, যাতে তার নির্মল মানসপটে ইসলামি আদর্শের ছবি অক্ষয়ভাবে ক্ষোদিত হয়ে যায়। এ কারণেই আমরা দেখতে পাই, হযরত আয়েশা সেই কৈশরেই কুরআন ও সুন্নাহর জ্ঞানে গভীর পারদর্শী হয়ে উঠেন। রসূল সা.-এর সুমহান জীবন চরিত এবং তাঁর বাণী ও কর্মের এক বিরাট অংশকে স্মৃতিতে সংরক্ষণ করেন এবং শিক্ষাদান ও বর্ণনার মাধ্যমে তা সমগ্র উম্মাহর নিকট হস্তান্তর করেন। হযরত আয়েশোর নিজস্ব উক্তি ও বাস্তব কর্মের দৃষ্টান্ত ছাড়াও দু'হাজার দু'শো দশটি (২,২১০) বিশুদ্ধ হাদিস তিনি সরাসরি রসূল সা.-এর কাছ থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা ব্যতীত আর কোনো পুরুষ কিংবা মহিলা সাহাবি এর চেয়ে বেশি হাদিস বর্ণনা করেননি। হযরত আয়েশার কোনো সন্তান ছিলনা। তিনি বহু শিশুকে লালন পালন করেছেন এবং ইসলামি শিক্ষা দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে তৈরি করে দিয়ে গেছেন।

রসূল সা.-এর দাওয়াত শুধুমাত্র মৌখিক প্রচার ও উপদেশ বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলনা। এটি ছিলো গোটা সমাজ জীবনের কার্যকর বিপ্লব সংঘটনের লক্ষ্যে পরিচালিত এক মরণপণ সংগ্রামের ভিত্তি ও সূচনা। এই পটভূমিতে রসূল সা. কর্তৃক তাঁর ঘনিষ্ঠতম ও সর্বাপেক্ষা নিবেদিত প্রাণ সঙ্গীতের সাথে আত্মীয়তা স্থাপনের মাধ্যমে তাদেরকে সমাজে বিশিষ্ট স্থান ও মর্যাদায় অভিষিক্ত করা খুবই প্রয়োজনীয় ও গুরুত্ববহ কাজ ছিলো। তাই একদিকে তিনি হযরত উসমান রা. ও হযরত আলী র.-এর সাথে নিজের মেয়েদের বিয়ে দেন, অপরদিকে হযরত আবু বকর রা. ও হযরত ওমর রা.-এর মেয়েকে বিয়ে করেন। এভাবে এই চারজনের সাথেই নিজের সম্পর্ক অটুট ও চিরস্থায়ী করেন। অনুরূপভাবে কয়েকটি প্রভাবশালী নওমুসলিম গোত্রের সাথেও আত্মীয়তা স্থাপন করে তাদেরকে ইসলামের সমর্থকে পরিণত করেন এবং তাদের মধ্যে যারা ইসলামের বিরোধী ছিলো, তাদের বিরোধীতার তেজ কমান। হযরত উম্মে সালমা ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ বুদ্ধিমতী মুমিন মহিলা। কিন্তু বনু মখযুম গোত্রের যে পরিবারে আবু জেহেলের জন্ম, তিনি সেই পরিবারেরই সদস্য ছিলেন। হযরত উম্মে হাবিবা ইসলাম গ্রহণ করে নিজের জীবনের উপর কতো বড় ঝুঁকি গ্রহণ করেছিলেন এবং কতো বলিষ্ঠতা ও অনমনীয়তা প্রদর্শন করেছিলাম, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অথচ তাঁর পিতা আবু সুফিয়ান মক্কা বিজয়ের সময় পর্যন্ত কাফেরদের সরদার ছিলেন। এ দুই মহীয়সী মহিলাকে রসূল সা.-এর স্ত্রী হিসেবে বরণ করায় একদিকে যেমন উভয়ের ব্যক্তিগত গুণাবলী স্বীকৃতি পেয়েছিল, অপরদিকে এর ফলে এই উভয় পরিবারের চরম শত্রুসূলভ তৎপরতারও অবসান ঘটেছিল।

কয়েকজন তালাকপ্রাপ্তা মহিলা সাহাবিকে বিয়ে করে রসূল সা. তাদের মনন্ত্তষ্টি সাধন করেন। দত্তক গ্রহণের জাহেলী প্রথা উচ্ছেদের খাতিরে স্বয়ং আল্লাহ রসূল সা.-কে তাঁর পালিত পুত্র হযরত যায়েদের তালাক দেয়া স্ত্রী হযরত যয়নাব বিনতে জাহাশকে বিয়ে করার নির্দেশ দেন। হযরত যয়নাব রসূল সা.-এর ফুফাতো বোন ছিলেন। ইচ্ছে করলে তিনি হযরত যায়েদের আগে তাঁকে স্ত্রীরূপে বরণ করতে পারতেন। কিন্তু বংশগত উঁচু নিচুর ভেদাভেদ খতম করার জন্য তিনি মুক্ত গোলাম যায়েদের সাথে তাঁর বিয়ে দেন। এরপর যখন এই দম্পত্তির মধ্যে কিছুতেই বনিবণা হলোনা এবং তালাক অনিবার্য হয়ে পড়লো, তখন তিনি যয়নাবকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করে একদিকে তাঁর মনের প্রবোধের ব্যবস্থা করলেন, অপরদিকে পালিত পুত্রকে আসল পুত্ররূপে গণ্য করার জাহেলী প্রথারও উচ্ছেদ ঘটলেন। একই নামের আর এক উম্মুল মুমিনীন হযরত যয়নাব বিনতে খুযায়মাকে বিধবা হওয়ার পর বিয়ে করে রসূল সা. তার শোকাহত মনে সান্ত্বনা দেন। তাঁর তৃতীয় ও সর্বশেষ স্বামী হযরত আব্দুল্লাহ বিন জাহাস ওহুদ যুদ্ধে শহীদ হন। কিন্তু নবীর সহধর্মিনী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জনের মাত্র দু'তিন মাস পর তিনি জান্নাতবাসিনী হন। এখানে উল্লেখ যে, হযরত উম্মে সালমার স্বামী আবু সালমাকেও ওহুদ যুদ্ধে আহত হয়ে ইন্তিকাল করেন। রসূল সা. হযরত উম্মে সালমাকে বিয়ে করেন এবং তার চারটি এতিম শিশু সন্তানকেও নিজের অভিভাবকত্বে গ্রহণ ও লালন পালন করেন। হযরত উম্মে হাবিবার স্বামী প্রথমে মুসলমান হয়ে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে আবিসিনিয়ায় হিজরত করে। কিন্তু সেখানে গিয়ে সে খৃষ্টধর্ম গ্রহণ করায় হযরত উম্মে হাবিবা নিজের শিশু কন্যা হাবিবাকে নিয়ে বিদেশ চরম অসহায় অবস্থায় নিক্ষিপ্ত হন। এ কথা জানতে পেরে রসূল সা. আবিসিনিয়াতেই তাঁর কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। নাজ্জাশী স্বয়ং রসূল সা.-এর প্রতিনিধির মাধ্যমে বিয়ে সম্পাদন করে উম্মে হাবিবাকে রসূল সা.-এর কাছে পাঠিয়ে দেন। হাবিবাও তাঁর মায়ের সাথে নবীগৃহে আসে এবং পালিত কন্যা হিসেবে রসূল সা.-এর অভিভাবকত্বে বড় হয়।

উম্মুল মুমিনীন হযরত জুয়াইরিয়া ছিলেন ইহুদি গোত্র বনু মুসতালিকের সরদার হারেস বিন আবি যিরারের কন্যা। মুরাইসীর যুদ্ধে তিনি যুদ্ধবন্দিনী হয়ে সাহাবি সাবেত বিন কায়েসের হাতে অর্পিত হন। রসূল সা. তার পারিবারিক মর্যাদার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তাঁর মুক্তিপণ নিজেই দিয়ে দেন এবং তাকে স্বাধীন করে বিয়ে করেন। এর তাৎক্ষণিক সুফল দাঁড়ালো এই যে, সাহাবায়ে কিরাম তাঁর গোত্রের একশোরও বেশি যুদ্ধবন্দির সবাইকে মুক্তি দেন।

হযরত সুফিয়ার অবস্থাও তদ্রুপ। তিনি ছিলেন যুদ্ধবন্দিনী। প্রথমে তিনি হযরত দিহইয়া কালবীর ভাগে পড়েন। কিন্তু তার পিতাও ইহুদি নেতা ও গোত্রপতি। এজন্য রসূল সা. তার পক্ষ থেকেও মুক্তিপণ পরিশোধ করেন এবং তাকে বিয়ে করেন, যাতে তার মন আহত না হয়। এ আত্মীয়তার ফলে ইহুদিদের শত্রুতার তীব্রতাও কমে যায়।

মোটকথা যতো চিন্তা গবেষণাই করা হবে, এ কথা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, রসূল সা. যে কয়টি বিয়েই করেছেন, তার প্রত্যেকটিতে ইসলাম ও মুসলিম জাতির কোনা না কোনো বৃহত্তর স্বার্থ, মহত্তর কল্যাণ এবং গভীরতম প্রজ্ঞা ও দূরদর্শীতা নিহিত ছিলো। আর এটাও ঐতিহাসিক সত্য যে, রসূল সা.-এর স্ত্রীদের মধ্যে একমাত্র হযরত আয়েশাই ছিলেন কুমারি, আর সবাই বিধবা, না হয় তালাকপ্রাপ্তা বা স্বামীগৃহের পূর্ব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। কিন্তু যাদের স্নায়ুতে নারীর কেবল যৌনতার দিকটিই প্রাধান্য বিস্তার করে রাখে এবং পেটের ক্ষুধা ও যৌন ক্ষধা ছাড়া আর কিছুই যাদের চোখে পড়েনা, তারা যদি এসব মহৎ উদ্দেশ্য ও কল্যাণের দিকগুলো দেখতে না পায়, যা রসূল সা.-এর প্রতিটি বিয়েতেই ছিলো, তবে তাতে অবাক হবার কিছুই নেই। প্রাগ-বিয়ে যৌন সম্পর্ক, বিয়ে বহির্ভুত লাম্পট্য এবং স্ত্রী থাকা অবস্থায় রক্ষিতা পোষা যাদের নৈমত্তিক ব্যাপার, তারা কোন মুখে ইসলামের বহু বিবাহ রীতির সমালোচনা করে ভেবে পাইনা।

জবাব দিয়েছেন মাওলানা মওদূদী। তরজমানুল কোরআন-মে ১৯৬৮

বিষয়: বিবিধ

২০৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File